পদাবলি : ০২





সত্যায়িত আবেগ
সালমা বিনতে শামছ 

কুয়াশা মোড়ানো রাস্তার বুকে জন্মানো দূর্বাফুল,
মুক্তোদানার ন্যায় শিশির বিন্দু;
আপনি পড়ে নিন কুয়াশার আত্মকথা,
হেঁটে চলা পথের নির্বিকার ব্যাথা।

আমরা দিবস রজনীতে স্বপ্ন পুষি,
সত্যায়িত আকাশের বুকে নক্ষত্র গুনি,
অতঃপর; দেহ থেকে দেহে ছড়িয়ে দেই রঙ্গিন ফানুশ।

আপনি আপনার তত্ত্বে বিভোর,
অথচ, দেখুন আমি সময়ের সিঁথানে হাঁটছি,
একগুচ্ছো হিজল হাতে,
সূর্যের গোধুলী টিপে,
অভিমানী বিকেল সাথে।
সন্ধ্যের গায়ে ঘন জ্বর, উত্তাপ ছড়ানো নিঃশ্বাস,
আপনি চেয়ে দেখুন,
পাথরে পিষ্ট মেহদীপাতার রঙ্গের দাগ,
আমাদের হৃদপিন্ড ছুঁয়ে যায়,
অথচ, রং নেই কোথাও,
বিধবার সাদা থানের মতো চারদিকে ছড়ানো হতাশা।

আমি অপেক্ষমাণ মৃত্যুর বারান্দায়,
আপনি অসীম পথ হেঁটে চলুন,
আমি বরং একটা সমুদ্র বুকে ধারন করি,
সে সমুদ্রে রং করি;
সে রং এ আপনাকে পড়ি।
আমি মৃত্যুর কাছে একটু জীবন ধার করে নিয়েছিলাম,
বহু দেনা হয়ে গেলো,
আপনি একটু সুপারিশ করে দিন,
বৃদ্ধ দুপুরের কাছে,
সত্যায়িত আবেগের ধাঁচে,

চেয়ে দেখুন,
কুয়াশাদের প্রস্থান;
সূর্যের আগমন।
আপনি একবার আমার হাতটা ধরুন,
কিছুটা সময় মৃত্যু বারান্দায় দাড়িয়ে উষ্ণ নিঃশ্বাস নেই,
তারপর ;
তারপর হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে, যাত্রা করি সম্মুখে,
মৃত্যুর অভিমুখে।


এই আর কি!
হাসনাত আসিফ কুশল

শঙ্খচূড়ের বিষফণায় চলছে স্বদেশ,
হাঁটছে তবু এরই ভেতর সে
হাঁটছে, হাঁটছে...

আর কত ?

এই ফুটপাতে তার ঘনিষ্ট সঙ্গী
অমাবস্যার ঘুটঘুটে অন্ধকার
হাভাতে বেশ্যার সঙ্গে নির্জন প্রেমালাপ।

সেদিন তার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল
হঠাৎ করেই; ভদ্রভাবে
লোকদেখানো কথা
শেষ করে ঝেঁড়ে ফেললাম
নিষ্কলুষ সামাজিকতার চিহ্নগুলো।
বললাম- কি করছো এখন ?
সে বললো- এই আর কি!




ভালোবাসার কান্না
কাব্য কবির

তোমার রঙিন ভালোবাসা আজও
আমাকে কাঁদায়।
তোমার ভালোবাসার আগুনে পুড়ে
আজও আমি প্রতি পূর্ণিমা
রজনীতে তারার সাথে কথা বলি
আর কাঁদি। মনে হয়, আকাশের তারার
ঝলমলে জোছনায় লুকিয়ে
আছো তুমি। লুকিয়ে আছে তোমার
লাল ভালোবাসা।

আকাশ থেকে বৃষ্টি নামলেই
কলাপাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
তোমার অপেক্ষায়। অথচ তুমি আস না।
মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা
ভালোবাসা তখন কাঁদে।

একটা হলুদ রুমাল দিয়ে মুছে
ফেলি ভালোবাসার কান্না, তবুও ভালোবাসা
কাঁদে যে রকম কাঁদে
নীড় হাড়া পাখিরা.......


হঠাৎ করে আড়াল হলে
মহিউদ্দিন বিন্ জুবায়েদ

পাশাপাশি যে জন রয় সুখে দুখে সখি,
হঠাৎ কোথাও আড়াল হলে অশ্রু আঁখি।

বুকে ওই স্বজন হারা ব্যথা অনুভব,
খাদ্য যায় না পেটে খানিক নিরব।

ভেসে ওঠে স্মৃতি কেমনে কাটে  দিন,
কি দেখে চোখ জুড়াবো সবই মলিন।

পারিনা বুঝাতে মন ফাটে যে বুক,
হঠাৎ করে আড়াল হলো চিরচেনা মুখ।

যদি জানতাম চলে যাবে হঠাৎ করে দূরে,
বেশি করে দেখে নিতাম নয়ন খানি ভরে।

সবই স্মৃতির পাতা আর হবে না দেখা,
এই পৃথিবীর এমন খেলা এই বেঁচে থাকা।

সায় দিয়ে মন মানিয়ে সুখ চাপা দেই,
কাঁন্নায় বুক ফাটে  হাঁপিয়ে উঠি যেই।





শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট