ইপেপার : ধানশালিক : সংখ্যা ২১৭

ইপেপার : ধানশালিক : সংখ্যা ২১৭

 ধানশালিক : তারুণ্যের শিল্প সরোবর ।। বর্ষ ৮ম ।। সংখ্যা ২১৭

শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৪, ১৯ পৌষ ১৪৩১, ০২ রজব ১৪৪৫





















একজন কানাডিয়ান কবি

একজন কানাডিয়ান কবি

 



 উইলিয়াম ব্লিস কারম্যান

একজন কানাডিয়ান কবি


ভাষান্তর : আকিব শিকদার



উইলিয়াম ব্লিস কারম্যান একজন কানাডিয়ান কবি। তিনি ১৫ এপ্রিল, ১৮৬১ সালে কানাডার নিউ ব্রান্সউইকের ফ্রেডেরিকটনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তিনি ছিলেন একজন কানাডিয়ান সামুদ্রিক প্রদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের আঞ্চলিক কবি।

ব্লিস কারম্যান ফ্রেডেরিকটন কলেজিয়েট এবং নিউ ব্রান্সউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ১৮৯০ সালে নিউ ইয়র্ক সিটিতে যান এবং দুই দশক ধরে বিভিন্ন জার্নালে সম্পাদকীয় কাজ করে জীবিকা অর্জন করেন।

তিনি প্রায় ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, ৩টি নাটক, ৮টি গদ্য সংকলন ও বেশ কয়েকটি অনুবাদগ্রন্থ রচনা করেন। ব্লিস কারম্যান মর্মস্পর্শী প্রেমের কবিতা এবং প্রকৃতি নির্ভর কবিতার জন্য স্মরণীয়। তিনি প্রকৃতি, শিল্প এবং মানব ব্যক্তিত্বের উপর বেশ কিছু গদ্যও লিখেছেন।

১৯০৬ সালে ব্লিস কারম্যান ইউএনবি এবং ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি লাভ করেন । তিনি ১৯২৫ সালে কানাডার রয়্যাল সোসাইটির সংশ্লিষ্ট ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে ইউএনবি ক্যাম্পাসে স্থাপিত একটি ভাস্কর্য দ্বারা কারম্যানকে সম্মানিত করা হয়। ফ্রেডেরিকটনে “নিউ ব্রান্সউইকের ব্লিস কারম্যান মিডল স্কুল” এবং টরন্টোতে “অন্টারিওর ব্লিস কারম্যান সিনিয়র পাবলিক স্কুল” তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।

০৮ জুন ১৯২৯ সালে ৬৮ বছর বয়সে ব্লিস কারম্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান।






গ্রীষ্মের ঝড়


ঝড়ো বাতাসের আনাগোনায়

পাহাড় চূড়ায় বৃক্ষগুলো অবনত,

অনুচ্চ, ধূসর মেঘ ভিড় বাধে

বরষার অস্ত্রপাতি নিয়ে 

মহড়ায় ব্যস্ত যুদ্ধ-বিমানের মতো।

নাকাড়া-বাদক বাতাস সঙ্কেত দিলে

এগিয়ে আসে মেঘ, দাগে অদৃশ্য কামান

গাভীগুলো দাঁড়ায় পাশাপাশি, ভয়ে উচাটন,

রাখাল ছুটে ঘরমুখে,

প্রথম বজ্রটি পড়ে জানালা ভাঙে।

কামান দাগায় শান্ত ফলের বাগানে,

মুহূর্তে তছনছ নাশপাতি ফল;

উপত্যকা ছিড়ে খুড়ে ঝড় ছুটে আসে,

আলেড়িত হয় পুকুরের কালো জল,

তারপরই রোদ এসে করে সব দখল।




প্রথম কম্পন


তার স্পর্শে প্রথম কেপে উঠেছিলাম আমি

যেন এক প্রকা- কাসার থালায়

কেউ সজোরে করেছে আঘাত। 

 

সে কম্পন আজও স্পন্দিত  হয় হৃদয়ে আমার

কিশোরী মেয়ের কানের দোল 

যেমন কাপে মাটিতে পা ফেলার তালে তালে।


এই অনুভূতি রক্তশিরায় থাকবে আমার

যতদিন পৃথিবীতে সূর্য ছড়াবে আলো।  


গয়নার নৌকা

গয়নার নৌকা

 


গয়নার নৌকা 

শফিক নহোর 


অপ্র্যতাশিত ভাবে মুন্নির সঙ্গে আমার ফিজিক্যাল রিলিশিনশিপ গড়ে ওঠে। তার থেকে মুন্নি আমাকে খুন করার জন্য লোক ভাড়া করে। আমি ফেরারি আসামীর মত পালিয়ে বেড়াতে লাগলাম। ঘরের ছোট ছিদ্র দিয়ে আলো আসলেও ভয় করতো কেউ বুঝি আমাকে দেখে ফেলল। এই ভয়কে উপেক্ষা করে একদিন বৃষ্টিভেজা দুপুরে মুন্নি আতœহত্যা করেছে শুনে দৌড়ে গেলাম। 


আমি তখন নানা বাড়ি থেকে লেখাপড়া করি। মুন্নি আমাকে ভয় দেখাত, আমাকে বিয়ে না করলে বড় মামার কাছে বিচার দেবে?’ আমার সামনে এসে এ কথা কখনো বলেনি। তবে সালমা আমাকে বলত, কিরে মুন্নিকে নাকি তুই বিয়ে করবি, আমার কাছে বল না সত্যি কথা।

আমি সালমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। 

এই তাকিয়ে থাকাটা অন্যায় কিছু না সুন্দর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা যায় অনন্ত একশ বছর। ছুটির দিনে চরদুলাই বটগাছের নিচে বসে আছি। আমি গয়নার নৌকায় পাড় হবো। বাড়ি থেকে খবর এসেছে মায়ের শরীর ভালো না। বড় মামা আমাকে প্রায়ই বলে, 

-সেলিম তোকে কিন্তু ডাক্তার হতে হবে। 

আমি মামার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি; তালা ঝুলানো আমার মুখ থেকে কোন শব্দ বের হল না। মামার কথা শুনে আমার চেহারা ম্লান হয়ে যেত; আমি বাণিজ্যবিভাগ নিয়ে লেখাপড়া করছি, আমার দিন কাটে ডেবিট-কেডিট চুড়ান্ত হিসেব নিয়ে। ডাক্তার হবো কীভাবে? কি সব ভাবনা ভাবে মামা আল্লাই ভালো জানেন। সেদিন বাড়ি পাতালক শিশুর মত মামার সামনে থেকে সরে দাঁড়ালাম। 


আমি যে টিনের ঘরে পড়তাম, সেই ঘরের জানাল ছিল না। নতুন ঘর টিন কেটে রেখেছে, জানালা লাগলোর জন্য সেই ফাঁকা জায়গায় শীতের দিনে পাটের বস্তা দিয়ে রেখে দিতাম। যাতে বাহির থেকে কুয়াশা ও ঠা-া বা-তাস না আসে। একদিন সেই খোলা জানালা দিয়ে মুন্নি আমার রুমে এসে মুখ আটকিয়ে ধরল, আমি চিৎকার করবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু মুখ দিয়ে কোন প্রকার শব্দ বের করতে পারছি না। আমার হাতে হালকা একটা কামড় দিয়ে চলে গেল। অথচ কিছুই বলল না। আমি ফিসফিস করে জানতে চাইলাম, 

-এখানে কেন এসেছিস?

 মুন্নি কোন কথা না বলে জানালার ফাঁকা দিয়ে বের হয়ে চলে গেল। সাপের মতো ওর পা নড়ছে, আমার শরীর কাঁপছে, যদি কেউ দেখে ফেলে তবে বেশি ভয় পেতাম মামা যদি কিছু বলে। সেটা আমি সহ্য করতে পারব না। আমার লেখা পড়ার খরচ যদি বন্ধ করে দেয়। এই ভাবনাটা আমাকে ব্যথিত করত, অসহায় করে তুলতো প্রায় সময়। নিজের না থাকলে পরের দিয়ে কিছু হয়না এাঁ মামা বাড়ি পড়তে না গেলে বুঝতে পারতাম না।  

পরের দিন সন্ধ্যায় সালমা এসে বারান্দার সামনে দাঁড়িয়ে রইল। কিছু একটা বলতে চেয়ে আবার থেমে গেল। চলন্ত ট্রেন যেমন করে থেমে যায় ঠিক তেমন। মনে হচ্ছিল অনেক দ্রুত কিছু একটা বলকে বাস্তবে কিছুই বলছে না। 

মুন্নি আমাকে বলল,

-তোর ব্যাকারণ বইখান দে। কাল সকালে দিয়ে দেবো।

 -আমার বই নাই, আমি সালমার বই নিয়ে পড়ি। 

মুন্নি কথা না বাড়িয়ে চলে গেল। 

 

ছোট মামা বিলে কারেন্ট জাল পেতেছে। কৈ, পুটি মাছ পেয়ে কলপাড়ে মাছের বালতি থেকে পানি ঢেলে আবার নতুন পানি দিচ্ছে। আমি একটু এগিয়ে যেতেই সালমা আগ কেটে গিয়ে মুন্নীকে বলল,

-ভালোই তো চলছ, আমি সব জানি।

-জানিস ভালো কথা। সব জানিস তা আমাকে বলছিস কেন? তোর নাঙকে গিয়ে বল।

-খুব জ্বলছে তাই না। বই কিনে নিতে পারিস না। 

-পারি কিনব না, তোর কোন সমস্যা? তুই আমার পেছনে লেগে কিছুই করতে পারবি না। 

সেলিম, তোকে কোনদিন ও বিয়ে করবে না। ‘নদীর মাছ সাগরে পড়লে যা হয়।’

-এতো ভাব দেখাচ্ছিস কেন রে মাগি।

-তোর চেয়ে কি আমার চেহারা কম সুন্দর! 

মুন্নী ও সালমার ধারালো ছুড়ির সেই কথাবান আমার কানের  সদরদরজায় ঠকঠক কড়া নাড়তে শুরু করল।

মনোযোগ না দিয়ে বাহিরে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি তখন রাজীব এসে বলল,

 -ক্রিকেট খেলা শুরু হয়ে গেছে। তুই এখনো বসে আছিস। দ্রুত রেডি হয়ে নে।

 মাঠ থেকে রাজীব আমাকে ডাকতে এসেছে। রাজীব অভিযোগ করে বললো, 

-মাস্টারের ছেলে খেলতে দেবে না। ওরা না কি মাঠের পাশের জমিতে গম বুনছে, খেতের আইলে বল গিয়ে পড়লে। যে আনতে যাবে তার নাকি ঠ্যাঙ ভেঙে দেবে ?

-বলা সহজ, করা কঠিন। চামড়ার মুখে মানুষ কত কথা বলে। আজকাল কথা বলতে পারলেই মানুষ নিজেকে বীরবাহাদুর ভাবে।’ আসলে সমাজে যাদের কাছে এখন টাকা নেই তাদের কোন দাম নেই, চেয়ারম্যানের ছাওয়াল দলের অধিনায়ক। চল দেখি, কার ঠ্যাঙ কে ভাঙে? সময় হলে সবি বিড়াল হয়ে যাবে। 


মাগরিবের আজান হচ্ছে খেলা শেষ। বাড়ি এসে কলপাড়ে হাতমুখ ধুচ্ছি তখন মুন্নি জগ ভরতে এসেছে, আমার পেছনে দাঁড়িয়ে। কোন কথা বলছে না। আমার শরীর ঘেঁসে টিউবওয়েলের হ্যান্ডেল ধরল, আমি বুঝতে পারছি না কি বলবো। আঁধার গাঢ় হতে লাগলো। জগ থেকে পানি নিয়ে হালকা ছিটিয়ে দ্রুত চলে গেল। বুকের ভেতর হাহাকার অনুভব করলাম। 


 নয় ছয় ভাবনা ভাবতেই সালমা চলে আসলো। ওর মুখের দিকে তাকাতেই জগতের মেঘ ওর মুখ জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে। মলিন চেহারা, ঠোঁটে হাসি নেই, সাপের মত ফুলে ফেপে থাকত সে স্বভাব এখন নেই। শান্ত অবুঝ বালিকার মত আমাকে বলল, 

-এখন খুব খুশি হয়েছিস তাই না? আমি জানতাম তুই কিছুই বলবি না। তোর সাহস আছে? আমাকে আজ রাতে পালিয়ে নিয়ে যেতে। 

কথা শুনে আমার কান গরম হয়ে গেল। গলা শুকিয়ে আসছে। আমি মাটির দিকে চেয়ে আছি, ছালমার চোখ বেয়ে অশ্রু মাটিতে গড়িয়ে পড়লো এই মহুর্তে ঠিক কি বলবো বুঝতে পারছি না। কাঁপা কণ্ঠে জিগ্যেস করলাম।

- তোর কি বিয়ে ঠিক হয়েছে?

- সেটা জেনে তোর কি? তুই তো একটা কাপুরুষ!

- মৃদু পায়ে সামনে এগিয়ে গেলাম। বড় মামি বলল,

-জানিস, কাল না ছালমার বিয়ে! 

- আচ্ছা মামি মেয়েদের কি অল্প বয়সেই বিয়ে দিতে হয়।

- ধূর পাগল, মেয়ে মানুষ কি ঘরে তুলে রাখার জিনিস। ভালো ছেলেপক্ষ পেলেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে হয়। তুই এ সব বুঝবি না। বুঝিনা বলেই তো আমার মুখের সামনে সালমা কাপুরুষ বলতে পারে? মুন্নির স্মৃতি আমাকে ভীষণভাবে তাড়িত করে, আমাকে অস্থির করে ফেলে। কি এমন ভুল ছিল আমার। এতো তাড়াতাড়ি তার নিজস্ব একটা কালো অন্ধকার ভুবন হবে। তাকে আর কখনো দেখবো না। কথা বলতে পারব না। এই আপরাধবোধ আমাকে পাগল করে দেয়। ভেতরের কষ্টটা আমি কাউ বলতে পারি না। মুন্নি চলে যাবার পর থেকে ছোট মামি আমার সঙ্গে কথা বলে না। অথচ প্রতিদিন রাতে সে আমার জন্য খাবার টেবিলে রেখে যায়। আমি অশ্রুজলে সিক্ত হই। এই বেদনার করুন সুর আমার বুকের ভেতর মুন্নি বলে যে চিৎকার করে ওঠে। তা তো আমি কাউকে দেখাতে পারি না, বলতে পারি না। সেচ্ছায় অগ্নিদহনে নিজেকে জ¦ালিয়ে অন্তর আতœাশুদ্ধ করা গেলেও বেদনার ক্ষত নিজেরই রয়ে বেড়াতে হয় অনন্তকাল। মুন্নির স্মৃতির সঙ্গে অন্য কারো স্মৃতি আমার জীবনে যুক্ত হোক আমি চাই না। মুন্নি অসাধারণ রুমাল সেলাই করত, আমাকে বলেছিল, তোর নামের প্রথম অক্ষর আর আমার নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে রুমাল তৈরি করবো শেষ হলে তোকে দেবো! আজ হঠাত পুরনো আলমারি খুঁজতে গিয়ে সেই রুমাল পেলাম। একটি রুমাল এত ওজন হতে পারে আমি হাতে নিয়ে বেশিক্ষণ রাখতে পারিনি। চোখ ঝাপসা হয়ে আসতে লাগল।

আজ সালমার বিয়ে গয়নার নৌকা ঘাটে চলে আসছে পাশের বাড়ির কে যেন সংবাদ দিয়ে গেল।

মামি আমাকে ডাকছে, 

-জামাই নামাতে হবে। তোর বড় মামা এই অসময়ে বাজারে গেল কেন? দেখতো।

- আমি রুম থেকে বের হবো এমন সময় দেখি মুন্নি দাঁড়িয়ে আছে। আমি চিৎকার করে মামিকে ডাক দিলাম। মামি দেখে যাও মুন্নি বাড়ি ফিরে এসেছে।


তার পর আমার আর কিছুই মনে নেই, হেমায়েতপুর থেকে সাতাশবছর পর ফিরে এসে দেখি, পরিচিত মুখগুলো নেই। নেই সেই গয়নার নৌকা, আমার মানসিক সমস্যা হয়েছিল। আগের সেই স্মৃতি মনে করতে পারি না। তবে ভেতর থেকে কে যেন বলে ওঠে মুন্নী তোকে ভালোবাসতো খুব। 



ঘটনাক্রমে মানুষ এবং আমুর একজীবন

ঘটনাক্রমে মানুষ এবং আমুর একজীবন

 



ঘটনাক্রমে মানুষ এবং আমুর একজীবন

ইয়াকুব শাহরিয়ার


আমি একটি অবরুদ্ধ ঘোড়া কিংবা সাদা কবুতরের মতো। কথাটি কেনো বললাম তার একটু ঘোর থেকে যাক্। চালাক কিংবা ‘সমজদার’ পাঠকেরা সেটা বুঝে নিবেন নিজ দায়িত্বে। নিজেকে নিয়ে ইদানিং আমি যা-তা মন্তব্য করে ফেলছি। আগ-পিচ কিছুই ভাবছি না। যেমনটি ভাবেননি বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, আইনজ্ঞ ও ‘টকিস্ট’ জনাব মিরা হামিদ। মিরা একটি মেয়েলি নাম কিন্তু এখানে মি. মিরা একজন পুরুষ। টকিস্ট মানে টকশোতে যিনি নিয়মিত কথা বলে থাকেন। একবার দেশের নামকরা সব সাংবাদিকদের সামনে বলে উঠলেন ‘কিছু মানুষ ঘটনাক্রমে মানুষ হয়ে জন্মেছেন, হয়তো তার পশু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কোনো এক ঘটনার পটভূমিতে তিনি মানুষ হয়ে জন্মেছেন। বর্তমানে তার অবয়ব টিক মানুষের মতো। হতে পারে তার পেশাগত পরিচয় শিক্ষক, সাংবাদিক কিংবা ডাক্তার। কিন্তু সে মানুষ। তার হাত আছে। পা আছে। মাথা, মাথার চুল, বড় বড় গোঁফ, পাওয়ারফুল চশমা অনেক কিছুই আছে। আর এসব কারণেই সে মানুষ।’ মাথায় মগজের জায়গায় যদি ‘মানুষের বিষ্টা’ অথবা গোবর থাকে তাও সে মানুষ। মি. মিরা’র অনেক কথাই কানে এসেছিলো সেদিন, কিন্তু একটি কথা আমার কানে আজও বাজে। ‘মানুষ কখনো কখনো ঘটনাক্রমে মানুষ হয়ে জন্মায়।’


আমার মনে এসব দর্শন তত্ত্বের কথাবার্তা উদ্রেক হওয়ার কোনো কথা না। আমি সাধারণ একজন মানুষ। চৌহাট্টায় বসে থাকি। রিকশা গুনী। মানুষের হাটাহাটি দেখি। লেবু মিয়ার আদা-চিনি মিশ্রিত রং চা খাই। চায়ে হাল্কা লবণের ফ্লেভার থাকে। কুকুর দেখি। মাঝে মাঝে মানুষ দেখি। আমার দেখার শেষ নেই। দেখতে দেখতেই আমি ক্লান্ত প্রাণ এক। দার্শনিক চিন্তার সময় কোথায়? মাঝে মাঝে ভাবি বই পড়বো। কখনো ভাবি পত্রিকা পড়বো। কিছুই করা হয় না আমার। এই ভাবনা পর্যন্তই আটকে থাকে আমার ভাবনার জগত। আবার কখনো চিন্তা করি ‘মাস্টার সাহেব’ হয়ে যাই। পরক্ষণেই আবার এই চিন্তা থেকে বেড়িয়ে আসি। এ পেশায় যাওয়া যাবে না। এই পেশার অনেক ওজন। যাচ্ছে তাই মানুষ মাস্টারিতে গেলে পেশার ওজন কমে। তাই আমার মতো পাতলা মানুষ ভারী এ পেশায়  যাওয়া যাবে না। যেমন-তেমন নীতি হীন বা লাজ লজ্জাহীন মানুষ এই পেশায় ঢুকেছে বলেই পেশাটার এমন দশা! নীতিনৈতিকতার স্খলন ঘটেছে মাতরাত্মকহারে, ছাত্ররা শিক্ষক পেটায়। তাই ভাবছি এই পেশায় যাওয়া যাবে না। আমি বরং চৌহাট্টাতেই বসে থাকি। এখানে বসে গান গাই, রিকশা গুনী। লেবু মিয়ার রং চা খাই।


হঠাৎ করে বিমানের স্পীডের মতো ধুম করে আমার সামনে এসে একটি রিকশা থামলো। রিকশাটির হুড তোলা ছিলো। রিক-াবী বাজারে দিক থেকে এসেছে। হুড ফেলে রিকশাতে থেকেই কুসুম বলছে ২৫ টাকা দাও। আমার কাছে টাকা আছে কিন্তু বললাম নাই। মন মরা হয়ে বসে আছি। ড্রাইভার মামা ২ শ’ টাকার নোট ভাংতি করে ৩০ টাকা রেখেছে। কুসুম এসেছে নবাব রোড থেকে। কুসুম আমার প্রেমিকা। আমাকে সে ভালোবাসে আবার বাসে না। আমিও তাকে ভালোবাসি আবার বাসি না। এসব কথার মানে হয় তো সাধারণ পাঠকরা বুঝবেন না। যারা বুঝেন তারা অস্বাধারণ পাঠক। ঊর্ধ্ব শ্রেণিক পাঠক হওয়ার জন্য তাঁদেরকে একটি বিশেষ সম্মাননা দেওয়া উচিৎ, তবে আমি দিতে পারবো না। কারণ আমার টাকা নাই। টাকা ছাড়া কি আর সম্মাননা দেওয়া যায়? আমার প্রথম এবং দ্বিতীয় সত্তা বলবে,  সম্মানের প্রশ্নে টাকা কোনো কিছুতেই মেটার করে না। কিন্তু মি. মিরা হয়তো টাকাকে প্রাধান্য দেবেন। কারণ তিনি আইনজ্ঞ কিন্তু মিথ্যা ছাড়া আদালতে তার দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। তিনি বুদ্ধিজীবী তার মানে তিনি মিথ্যা কথা প্রায় বেশিরভাগ সময় শিল্প রূপ দিয়ে বলেন। তিনি টকিস্ট মানে টাকার বিনিময়ে কোনো একটি পারপাস তিনি সার্ভ করেন। স্বার্থ হাসিল করে টিভি টেলিভিশনে এসে জাতিকে ছাত্র বানিয়ে দক্ষ শিক্ষকের মতো তিনি নৈতিক কথাবার্তার আড়ালে অনৈতিকতার চাষবাস করেন। মি. মিরা’র মতো টাকা হলে আমি দক্ষ পাঠকদের পুরষ্কৃত করবো। 


কুসুম আজ আর থাকবে না। আমার হাতে কিছু টাকা গুজে দিয়ে চলে যাবে। আমি তাকে যেতে দিবো না। কারণ সে আজ আমার পছন্দের নীল শাড়ি পড়েছে। হাতে নীল চুড়ি, খোঁপায় গাঁদাফুলের মালা। পায়ে কিছুটা হাই হিলের জুতা। আজ তাকে অসম্ভব সুন্দরী লাগছে। হাতে আল মাহমুদের সোনালী কাবিন। পড়েছে কি না সে কথা জানি না। এ যুগে এসে মেয়েরা বই নিয়ে হাটে ভাবতেও ভালো লাগে। কুসুম মি. মিরাকে পছন্দ করে না। কারণ বুদ্ধিজীবী টাইপের এই লোকটা আসলে বুদ্ধিজীবী না। খাটাশ। খাটাশ একটা গালি। বেতালা রকমের অপমানজনক ভদ্র গালি। আরো অনেক ভালো মানের গালি আছে কিন্তু সব গালি সবাইকে দেওয়া যায় না। যেমন ধরুন, কুকুর। কাউকে কুকুর গালি দিলে কুকুর জাত খুশি হয়। কিছু বলে না। কিন্তু মি. মিরা টাইপের খাটাশ প্রকৃতির ছদ্মবেশী লোকদের কুকুর গালি দিলে শহরের কুকুরগুলো আবার প্রতিবাদ করে উঠবে। বলবে, আমরা নিকৃষ্ট প্রাণি হতে পারি, কিন্তু কিছু কিছু মানুষের চেয়ে আমরা ভালো। তাদেরকে গালি দিতে চাইলে আমাদের সাথে তুলনা করতে পারবেন না।


কুসুম দাঁড়িয়ে আছে। আমি রিকশা মামাকে ডাক দিলাম। দু’জন উঠে বসলাম রিকশায়। হুড তুলতে চাইলাম কিন্তু কুসুম তুলতে দিলো না। আমাদের রিকশা ছুটে চললো দাড়িয়ার পাড়ার ছোট গলি হয়ে ক্বীনব্রিজের দিকে। সেখানে সুরমাপাড়ে বসে সুরমার গোলা পানিতে দেখবো তথাকথিত স্বচ্ছ মানুষদের নোংরা চেহারা। কুসুম তখন গপাগপ পুচকা গিলতে থাকবে। আমি মনের বেখেয়ালি হয়ে চটপটি খেতে থাকবো। কারণ, আমি মনে করি পুচকা মেয়েলি খাবার আর চটপটি পুরুষালি। অনেক কিছুরই কারণ থাকে না। আমরা এই ভাবনারও কোনো কারণ নেই।


সুনামগঞ্জ 




পদাবলি

পদাবলি

 



যৈবতীনাভি

নীহার মোশারফ


আগামীতে কেমন হবে কবিতার ভাষা?

ফাগুন, আগুন, বর্ষা বাতাস, শরতের কাশ

ঢেকে দিবে ছাইচাপা কথা? থাকবে না পাখির গান?

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণীর অপেক্ষা খুব...


এখন আর আগের মতো খোলামেলা যাবে না চলা

নারীদের পরতে হবে বোরকা, শাড়ির সুতো ভেদ করে

দেখা গেলে যৈবতীনাভি, শূলে চড়বে কেউ কেউ; 

চোখের দৃষ্টি বেহায়া হলে পুরুষ বেওয়ারিশ হবে।

মুফতির ফতোয়ায় দ- ভয়ানক।


কার কথায় নারী ঘরের বের হয়? চাকরির নামে

অফিসে গেলে হাওয়া লাগে বুকে বারবার, ধুঁকে ধুঁকে মরে কত

কাপুরুষ হৃদয়। পালটে দাও কবিতা বিষয়। ছন্দ, মাত্র, লয়

বিদ্যালয়ে প্রতীকী সংসদ অধিবেশন বসলে দূর হবে অবক্ষয়


এসো নতুন করে গানের কবিতা লিখি। নতুন পঙ্ক্তিতে সাজাই দেশ

শরতের শুভ্র আকাশে গ্রাফিতিতে গ্রাফিতিতে ভাঙি নীরবতা

সময় এসেছে নতুনদের হাল ধরার, পেছনে ফেউ আছে জানি

তবুও পথ দেখাতে হবে ওদের। আমার মাথার ওপর ছায়া সুশীতল।



প্রাচীন হরিকেল জনপদ ধরে হেঁটে যাওয়া মানুষ 

রুদ্র সাহাদাৎ 


প্রাচীন হরিকেল জনপদ ধরে হেঁটে যাওয়া মানুষ 

কিসের ভয় দ্যাখাতে চাও 

বুঝি মুখ ও মুখোশের তফাৎ

বুঝি ঘৃণা আর ভালোবাসার খেলা 

বুঝি বৈশাখী হাওয়া- বৈশাখীঝড়- 

আমাকে কিসের বাণী শোনাতে চাও 

জিততে জিততে হেরে যাওয়া আমি আর আমার চোখ

অনেক দ্যাখেছি একজীবনে

প্রাচীন হরিকেল জনপদ ধরে হেঁটে যাওয়া মানুষ 

চেয়ে দ্যাখি উড়ে যাওয়া লালনীল রঙিন ফানুস...



ভীষণ দুঃসময়ের পদধ্বনি 

হিলারী হিটলার আভী 


সামনের শতাব্দীগুলো শতবর্ষী ভীষণ ক্রুসেডের

সামনের বছরগুলো ভীষণ খরা ও ঝরা’র

সামনের মাসগুলো ভীষণ কষ্টের ও নষ্টের

সামনের পক্ষগুলো ভীষণ অর্ধাহার ও অনাহারের

সামনের সপ্তাহগুলো জীবনক্ষয়ী বুলেট ও বোমা’র!


সামনের দিনগুলো ভীষণ দূর্দিনের

সামনে সময়গুলো ভীষণ দুঃসময়ের

সামনের ঘণ্টাগুলো ভীষণ শব্দময়ের

সামনের মিনিটগুলো ভীষণ নাভিশ্বাসের!


সামনের সেকেন্ডগুলো ষাট ভাগে বিভক্ত হবে

এক-একটি ভাগ এক-একটি ডিনামাইট হবে

অর্থাৎ বিশ্বে এক সেকেন্ডে ষাটটি করে স্থাপনা নিশ্চিহ্ন হবে!



সুদিন

হাফিজুর রহমান


তুমি এসো

আমার জন্যেই আসবে, 

আসতেই হবে একসময়- একদিন;

না-হলেও ভালোবেসে!

আশাহত, হতে দিও না আমাকে।


ছোট হতে দিও না

হতে দিও- না কখনও অপমান,

বাঁচতে দিও সম্মানটুকুই নিয়ে-

মানুষ হিসেবে ধরে রাখতে মর্যাদা;

উপভোগ করাতে এ জীবনটাকে।



মায়ের হাসি

সোহান মেহরান 


কেউ পারে দিতে? মায়ের হাসিতে থাকে যতটুকু সুখ!

ও হাসিতে তার সুখ সমাহার দেখলেই ভরে বুক।

রোজ ভোরে হাসে মেঘেদের পাশে সোনালী রবির আলো,

উঠি তাই গেয়ে সে হাসির চেয়ে মায়ের হাসিটা ভালো।


ও হাসিতে তাই মনটা ভরায় সুবাস ছড়ায় ভারি,

ভেসে ওঠে মনে ঘুম জাগরণে ভুলতে না কভু পারি।

ও হাসি রঙিন চির অমলিন থাকে হৃদয়ের পাতা,

মায়ের ও হাসি কত ভালোবাসি রূপোলী মলাটে গাঁথা।


যাই যত দূর ও হাসি মধুর কানে রিনিঝিনি বাজে,

পূর্ণ কোমল নেই কোনো ছল মায়ের হাসির মাঝে।

ঐ হাসি খাঁটি খুব পরিপাটি সেরার চেয়েও সেরা,

মায়ের হাসিতে এই পৃথিবীতে থাকি মমতায় ঘেরা।


মুগ্ধতা সারা হাসির ফোয়ারা অপলক দেখি আমি,

সোনা বা রূপার দাম নেই তার, মা’র হাসি যত দামি।

ও হাসি সরল নিবিড় তরল দুঃখ লুকিয়ে হাসে,

হাসি তার শোভা কীযে মনোলোভা হৃদয় গহীনে ভাসে।



বেদনাবলয়

আজিজ বিন নুর 


অমন গহীন বেদনাবলয় এঁকে দিয়েছো দুই চোখে

পৃথিবী- প্রবাসে আমি নোনাজল নোনামুখে

আবৃত্তি করি অমিয় মৃত্যুর সুধা

বিষাদের পিঠে চড়ে নিষেধের দ্বিধা নিয়ে

ভাসায়-ডোবায় আমায় করুণার বসুধা।


ধোঁয়াশার দিগন্তে টানিয়েছো নিষেধের নিয়ন

পথের ভীড়ে আমি হারিয়েছি পথ

সুখের ভীড়ে আমি সুখ

হারিয়েছি আমাকেই- বেদনার বাথানে

আমি এক চির হাঁড়িমুখ...


যুদ্ধের ভেতর আমায় আরেক যুদ্ধ ডাকে

বরণ করে নিতে পরাজয়-

দৈন্যতার প্রেয়শ খদ্দের আমি

ডেকে ডেকে দিয়েছে শূন্যতার প্রলয়

কষ্টের হিমালয় কাঁধে চেপে বলে

‘নুয়ে পড়ো, হেরে যাওয়ার হয়েছে সময়’


অমন গহীন বেদনাবলয় এঁকে দিয়েছো দুই চোখে

পৃথিবী- প্রবাসে আমি নোনাজল নোনামুখে

আবৃত্তি করি অমিয় মৃত্যুর সুধা

বিষাদের পিঠে চড়ে নিষেধের দ্বিধা নিয়ে

ভাসায়- ডোবায় আমায় করুণার বসুধা।



গভীর রাতের প্রেম

মিজান ফারাবী


শিশিরের টুপটাপ শব্দে নেমে আসা ভোর। এই রাত থেকে ভোর অব্দি কেবলই তোমার ভাবনা। হৃদয়ের সমস্ত আকুলতা নিয়ে প্রার্থনায় হাজির হই গভীর রাতের প্রেমে। এ যেন তোমাকে আরো কাছে পাবার, আরো কাছ থেকে দেখার অস্থিরতা বুক জুড়ে। জোছনার এই তারাসুদ্ধ রাতের আকাশ জানে আমার আকুলতা, আমার প্রেম ও আবেদন। আমি দরদ নিয়ে আওড়াতে থাকি- এই একটা রাতই তো তোমার হতে চেয়েছি। তুমি শান্তি পাও, আমায় একান্তে ভালোবাসো।



সন্তুষ্ট

মিনহাজ উদ্দিন শপথ 


আজ আমার কুকুরটার কী যে হলো। কিছুই বুঝি না। খায় না ঘুমায় না। ঘেউ ঘেউ করে মাতিয়ে তোলে না সারা ঘর। কেবল ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে- চোখে। সকাল-দুপুর-সন্ধে যে হয়ে এলো। এখন কী করি কোথায় যাই। রিতা এলো চুল ছড়িয়ে গন্ধ বিলিয়ে দেখালো নাচ হিজিবিজি- উলঙ্গ জোছার ঢেউ। মুগ্ধমুখ। ওফ! কুকুরটা এবার শান্ত হলো ঘুমাল সারারাত।


শব্দমালা : শোভন মণ্ডল

শব্দমালা  : শোভন মণ্ডল

 


শব্দমালা

শোভন মণ্ডল 


শূন্য এ বুকে... 


যত এগোই জীবনের দিকে

মৃত্যু ছায়া ফেলে পায়ের নিচে 


যতই আলোর দিকে মুখ করে থাকি 

অন্ধ করে দিতে চায় এই প্রিয় চোখ

আমাদের চলা আসলে হেঁটে যাওয়া হোঁচট খেতে খেতে 

বিছানো লাল-নীল মার্বেল পাথরে ঘষে নেওয়া এ শরীর

ঝলমল করে,  সারা জীবন ধরে


কোথাও কি আঁচল ভরে গেছে উপহারে? 

কোথাও কি মুঠোর মধ্যে ধরা আছে স্নেহ আর ভালবাসাখানি? 

এ প্রশ্ন করতেই হবে 


যতই এগিয়ে যাই মৃত্যুর দিকে 

জীবন আলিঙ্গন করে শূন্য এ বুকে 



শরীর 


ঘামের বিন্দুগুলো বুকের আনাচে লুকোয়

দেখেছি আদর-বেলায়

শুধু এক প্রেমের আখ্যানে আরও কিছু বাকি থাকে দেহ

মন্ত্রের মত নিটোল সন্দেহ

চোখের ঘেরাটোপে মেঘ নামে 

পুরনো জানালায় পর্দা ওড়ে হাওয়ায়

সে সব তো অছিলার মত মেলা থাকে সাজ


ব-দ্বীপে সাজিয়ে রাখা চর

আর ছোট ছোট লতা-গুল্ম-গাছ




উড়িয়ে দেওয়া যায় সব


সবই তো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যায়


এই মাত্র পাখির পালক উড়তে উড়তে নেমে এল ঝিলে

জলে কোনও সত্যিকারের ছায়া নেই

সবটাই মায়া বলে মনে হয়


এক এক দিন শুধু ঘুমিয়ে থাকে মন

মনে হয় এভাবে কেটে গেলে বেলা 

আমাদের আর হেরে যাওয়ার গল্প থাকবে না 

ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবো কষ্টের পালক


শুধু মায়াগুলো উড়ে যাবে আকাশ গঙ্গায়...