ঝুলন্ত জীবন

ঝুলন্ত জীবন


ঝুলন্ত জীবন
স্বপন শর্মা

ঝুলে আছি...
তোমার প্রেমের সুতোয় বাঁধা পেন্ডুলামের মতো
মধ্যার্কষণ শক্তি নিয়ে স্বাধীনভাবে দুলতে পারি
ঘড়ির কাটার মতো সীমাবদ্ধতায় ঘুরতে পারি

আর কি পারি...!
তোমার আঁকা বৃত্তের মাঝে কেন্দ্র ছাড়া জ্যা হয়ে
ব্যাস, ব্যার্সাধের লুকোচুরি খেলা দেখতে পারি।
প্রেম সাগরে ঝুলন্ত সেঁতু; ঝুলে থাকি চিরকাল
তুমি মহান সেজে আমার বুকে পদ চিহৃ রাখ বার বার।

আমি ঝুলে আছি...
মাকড়সার জালে, প্রাণহীন পতঙ্গের মতো।




 

শরতের দহনকাল

শরতের দহনকাল


শরতের দহনকাল
রফিকুল নাজিম

শরৎ এলো শিউলিতলায়-শরৎ এলো মনে
শরৎ এলো উদাস হাওয়ায়-গহীন হরিৎ বনে, 
শরৎ এলো ঝিলের ধারে-শাপলা শালুক জলে
শরৎ এলো ছাতিম ফুলে-হঠাৎ প্রেমের ছলে।

শরৎ এলো সবুজ মাঠে-আমন ধানের হাসি
অশ্রু মুছতে আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের রাশি,
কাশবনে ফুলে ফুলে-মাতাল প্রেমিক কবি
চাঁদের বুঁড়ির সুতা বেয়ে-নামে জোছনা পরী।

তাল পিঠার গন্ধে নাচে-সারা বিনোদপুর
পাখির গলায় ঢেউ যে তুলে-প্রিয়হারা সুর,
শরৎ আসে শরৎ যায়-আমার ঘরে মেঘ
শরৎ বলে,'বিরহ মনে তাহার কথা লেখ।'

বিজন সংলাপ

বিজন সংলাপ


বিজন সংলাপ
মৌসুমী চক্রবর্তী ষড়ঙ্গী

কিছুতেই আজ ঘুমোতে পারছে না প্রত্যুষ। জানালাটা খুলে আকাশের দিকে তাকালে ধরা পড়ে তারাময় রাতের নানা ইশারা। আকাশের অথৈ বুকে তারাদের ঝিলমিল শরীরের নানা রূপটান। কাল ৫ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস।  দেখতে দেখতে দশটা বছর কোথা থেকে কেটে গেছে ভাবতেই অবাক লাগে প্রত্যুষের। সারা রাত জাগবে বলে ইচ্ছে করেই আজ ঘুমের ওষুধ আর খায়নি প্রত্যুষ।
মনে হচ্ছে এই তো সেদিন ঘুমের ঘোরে অস্পষ্ট আওয়াজটা শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠেছিল প্রত্যুষ। দেখেছিল বাথরুমের সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে প্রিয়া। একটুও সময় নষ্ট করেনি সে। ডঃ বিশ্বাস বলেছিলেন হার্ট অ্যাটাক। অবাক হয়েছিল প্রত্যুষ , মাত্র বিয়াল্লিশ বছর বয়সে ! তাছাড়া প্রিয়াকে বেশ ফিট বলা যায়। হাই ব্লাড প্রেশার , হাই কোলেস্টরল কিছুই তো নেই। কোন আর্টারি ব্লকেজ আছে কি ? সেটা অবশ্য জানা নেই। তবে তার লক্ষণ তো থাকবে , তাও তো কখনও নজরে আসেনি।
প্রত্যুষ ও প্রিয়া পরস্পর পরস্পরের ছোট বেলার বন্ধু। স্কুল কলেজ থেকে ইউনিভার্সিটি সবই ওরা একসঙ্গে করেছে। ছোট থেকেই প্রিয়া খুব হাসিখুশি ও একটিভ। অপূর্ব নাচতে পারত প্রিয়া। নিজের যোগ্যতায় একটি নামকরা নাচের স্কুলের ইনচার্জ পর্যন্ত  হয়েছিল সে । বিদেশেও বেশ কয়েক বার নাচের প্রোগাম হয়েছে তার। 
বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে “ সূর্যকিরণ নাসিং হোম ”। টানা চারদিন প্রায় অনিদ্রায় কেটেছে প্রত্যুষের। ডঃ বিশ্বাসকে সবাই ভগবান ডাক্তার বলে মানেন। সেই হাতের স্পর্শেই হয়ত পরের দিন থেকে প্রিয়াকে একদম সুস্হ মনে হচ্ছিল। ৫ই সেপ্টেম্বর প্রিয়ার ডিসচার্জ -- ঠিক এমনটা বলে দিনকয়েকের জন্য ছুটিতে গিয়েছিলেন ডঃ বিশ্বাস। সাবধানতা হিসাবে পরবর্তীতে প্রিয়াকে শহরে নিয়ে গিয়ে কয়েকটি টেস্ট করাতে হতে পারে এমনটা বলে গিয়েছিলেন।
ডিসচার্জের খবরটা শুনে খুব ঝকঝকে দেখাচ্ছিল প্রিয়াকে। মোবাইল খুলে হোয়াটস এ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে ঝটপট কিছু ম্যাসেজ সেন্ড করার পর  প্রত্যুষকে বাড়ি পাঠানোর জন্য একেবারে অস্হির হয়ে পড়ে সে। প্রত্যুষের হাতটা ধরে রীতিমতো জেদ করতে থাকে প্রিয়া ,
_ তুমি এক্ষুনি বাড়ি যাও প্রত্যুষ। এ ক’দিন তুমি একটুও ঘুমোওনি , তোমার চোখ মুখের কি অবস্হা হয়েছে দেখেছ ? বাড়ি গিয়ে ফ্রেস হয়ে টানা ঘুমোও। প্লিজ দেরি কোরো না একদম , কাল সকাল- সকাল চলে এসো। তোমার মনে আছে ? কাল সন্ধ্যায় নাচের স্কুলে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান আছে। আমি না যাওয়াতে এ ক’দিনের রিহার্সাল সব রেখাদি একাই সামলেছেন। তুমি আর দেরি কোরো না।
মুখে হাসি নিয়ে প্রত্যুষ বলেছিল ,
_ আচ্ছা ঠিক আছে। আমার জন্য এতকিছু ভাবতে হবেনা তোমায়। সবই আমার মাথায় আছে ।
দেরি করেনি প্রত্যুষ। নার্সিং হোম থেকে ফেরার পথে রাতের রুটি - তরকা আর পরের দিনের জন্য পূজোর ফুল , দুধ এমন কিছু টুকিটাকি কিনে ঘরে ঢোকে সে। সব কিছুই  ছিমছাম। বুঝলো কাজের বউ পাশের ঘর থেকে চাবি নিয়ে ঘরদোর সব পরিষ্কার করে রেখে গেছে।  অনেকদিন পর নিজের ঘর , ব্যালকনিময় সবুজ গাছ, তার প্রিয় বিছানা - বালিশ পেয়ে বেশ ফ্রেস ফিল করছিল প্রত্যুষ।  অসম্ভব ক্লান্তির পর গভীর ঘুুম আসাটা স্বাভাবিক । চিন্তা তেমন ছিল না বললেই চলে। তাই সঙ্গে সঙ্গে ঘুমও এসে হাজির হল। 
হঠাৎ ফোনের রিংটা বাজতেই ধড়ফড় করে উঠে বসে প্রত্যুষ । ভেবেছিল হয়ত অনেক বেলা হয়ে গেছে। ঘড়িতে তখন ঠিক চারটে। মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে নাসিং হোম থেকে ফোন ,অপর প্রান্ত থেকে সিস্টার পলির চেনা কন্ঠস্বর ,
_ অনেক চেষ্টা করেও আমরা কিছু করতে পারিনি। ফারদার অ্যাটাকে পেসেন্ট এক্সপ্যায়ার করে গেছে , আপনি একদম দেরি করবেন না। এক্ষুনি চলে আসুন - - - । বাকি কথাগুলোর আর কিছুই শুনতে পায়নি প্রত্যুষ। সবটা যেন ঘটে যাওয়া এক দুঃস্বপ্নের মত মনে হচ্ছিল।
কঠিন সত্যের প্রহার যে কি পরবর্তীতে তা প্রতিটি মুহূর্তে জীবন প্র্যতুষকে ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছে। আত্মীয়স্বজনের সাথে তেমন একটা যোগাযোগ নেই আসলে এখন যোগাযোগ রাখতেই কেউ চায় না। ঐ মাঝেসাঝে কেবল টেলিফোনের যোগাযোগ ঐটুকুই।
মাল্টি স্টোরি বিল্ডিং -এর ফোর্থ ফ্লোরের সুসজ্জিত ঘরটা ও তার সবটুকু  শূন্যতা প্রত্যুষকে যেন গ্রাস করতে থাকে। এখন কেবল নৈঃশব্দের সাথে সখ্যতা আর শুধু বিজন সংলাপ। সমস্ত খুনসুটি যেন লুকোচুরি খেলায় হঠাৎ করে লুকিয়ে পড়েছে । এমনটা হবে প্রত্যুষ ভাবেনি কখনও। তবে এটা বুঝেছে সম্পর্কের যোগ- বিয়োগ বা গুন- ভাগের ফলাফল সব সময় ঠিকঠাক মেলানো যায় না। মনে বিরামহীন স্মৃতির হিল্লোল নিয়ে প্রত্যুষ বেঁচে আছে । চারিদিকে প্রিয়ার শান্ত নিরালা প্রেম। নির্জন প্রাঙ্গনে এমন ক্লান্তি প্রহর কাটাতে কাটাতে প্রত্যুষের মতই হয়ত বেঁচে আছে হাজার হাজার মানুষ। তারা এখন প্রত্যুষের প্রেরণা।
ওয়ারড্রব থেকে পাজামা পাঞ্জাবীটা বের করে রাখে প্রত্যুষ। সঙ্গে প্রিয়ার নিজের হাতে ডিজাইন করা ম্যাচিং উত্তরীয়। শিক্ষক দিবসের এই দিনটা প্রিয়ার নাচের স্কুলেই কাটায় প্রত্যুষ। এখন স্কুলটা অনেক বড় হয়েছে আর নামডাকও হয়েছে প্রচুর। প্রিয়ার দেখা স্বপ্নগুলো তাকে যে সত্য করে তুলতেই হবে। এক গুচ্ছ চাঁপাফুল রেকাবিতে সুন্দর করে সাজিয়ে প্রত্যুষ প্রিয়ার ছবির নীচে রেখে মুখ তুলে বলে ,
-- কি , পছন্দ হয়েছে ? তোমার মত সাজাতে পেরেছি তো ?
.
Mousumi Chakraborty Sarangi
BL No 11A / 203 , Sector _ 34
Mansaravor Complex
Kamothe , Mansaravor
Navi Mumbai 410209
Maharashtra
Phone number , 8976841307

ক্ষুধিত প্রেম

ক্ষুধিত প্রেম


ক্ষুধিত প্রেম
রফিকুল 

নক্ষত্র খচিত ছিল না আকাশ চাঁদ ছিল মৃয়মাণ,
অন্ধকারের হাত ধরে হেঁটেছি অনেকটা পথ
নীলকৃষ্ণ মেঘে  জমেছিল অভিমান।
আকাশ ডাকেনি আমায় বাতাস ছিল না চঞ্চল সঞ্চারণে
অসহ তৃষ্ণায় মৃত্তিকার বুকে ফুটেছিল সুগন্ধি গোলাপ ক্ষত-বিক্ষত কণ্টক-অরণ্যে।
অযত্নে অবহেলায় নিশিদিন ফুটে ঝরে গেছে উদাসিনী বেশে
আজও তার সৌরভ লুটিয়ে পড়ে আমার ক্ষুধিত  বক্ষ দেশে।
কাঙ্খিত স্বপ্ন সুখে বেলাশেষে নিঃশব্দে খুঁজেছ কত সন্ধ্যাতারা
আজ অনাবৃত আকাশ মায়াবী নক্ষত্রের মাতামাতি, দেখি সোহাগী জোছনা ঢলে পড়া। 
মেঘহীন মধ্যদুপুর বদলে গেল, এল মেঘের ঘনবর্ষার মায়া
জলসিঞ্চনে ভরলো বকুলে নব  পত্রমুকুলে ঘননীল ছায়া। 
সে ফুলের আয়ুশাখা হতে একটি ফুল তুলে নিলে নীল অঞ্চলে, 
চোখের স্রোতস্বিনী জলে সে ফুল ভাসিয়ে ছিলে কোন মায়াছলে।  
ছুঁটেছিল সে নদী সমুদ্রের টানে যেন বিরহিণী প্রিয়া, 
কালচক্র ক্ষয়ে সে নদী শুকালো মরু-পথে 
 আমি রইলাম নির্বন্ধু—শুধু একা।

বৃক্ষ প্রীতি

বৃক্ষ প্রীতি


বৃক্ষ প্রীতি
কাজী তানভীর 

আমাদের গ্রামের অদূরে মাঠ-নদীর পাড় ঘেঁষে অবস্থিত বৃক্ষটিকে কেন যেন সবাই ভালোবাসে। ফকফকে রোদেলা দুপুর কিংবা গোধূলির পড়ন্ত বিকেল কিংবা জোছনাভরা রাতে কাউকে না কাউকে দেখতে পাই বৃক্ষতলে।
মাঝি নৌকা বেঁধে এসে বসে সেখানে । কৃষকের ঘামঝরা ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম নেয় সেখানে । বাঁশিওয়ালা রাখালের সুর বাজে সেখানে। ব্যর্থ প্রেমিকের বিরহের জল ঝরে সেখানে। নব্য প্রেমিক প্রেম সন্ধান করে সেখানে। কবির কবিতা জন্ম হয় সেখানে। পাখিরা বাসা বাঁধে সেখানে। নদীর ঊর্মিমালারা পাল তুলে সেখান থেকে। যখন কেউ থাকে না, সবাই আপনালয়ে ফিরে যায় তখনও বৃক্ষের প্রেমালাপ শুনি জিন-পরী ও ভূতদের সাথে।
আমিও কম কী! প্রেমে পড়ে গেলাম বৃক্ষটির। কী আছে এমন তার মাঝে! তাকে কেন ভালো লাগতে হবে সবার! তাকে কেন ভালোবাসতে হবে আমার! কোনোদিন তো সে বৃক্ষ বলেনি যে,  "আমি তোমাকে ভালোবাসি " না আমি বলেছি!  কী আজব কাণ্ড,কীসব অনুভূতিগুলো কুড়েকুড়ে খাচ্ছে আমার ভেতরটাকে, নিজেও টের পাচ্ছি না।
তবে বৃক্ষটিকে খুব ভালোবাসি। তা চিরসত্য।
ডাক্তারের ঔষধগুলো যেমন দৈনিক তিনবার খেতে হয়, সুখের পানে! ঠিক তেমনি প্রাত্যহিক আমাকে তিনবার করে বৃক্ষতলে যেতে হয়। প্রীতির টানে! সে তো কথা বলতে পারে না যে, তার সাথে কথা বলব। সে তো ধরতে জানে না যে, তার হাতখানি ধরবো। উপায়হীন প্রেমিকের আর কী করার! তবে, সর্বদা রবের কাছে দোআ করি যাতে তিনি যেন আমার মতো ইন্দ্রিয় শক্তিগুলো তাকেও দেন। সেও যেন বলতে পারে, বুঝতে পারে, শুনতে পারে, সবকিছুই যেন করতে পারে! আনমনা হয়ে তার পিটে পিট লাগিয়ে বসে থাকি সারাক্ষণ। তার দুলদুল পাতার নাচ দেখি অপলক দৃষ্টিতে। যখনি বাতাসের সাথে হেলে-দুলে খেলে যায়, তখনই আমার মনে প্রফুল্লতার ঢেউ উঠে! এই যেন সে সর্বস্রষ্টার ইন্দ্রিয় শক্তি উপাহার পেয়েছে!  না....না..!আজগুবি ভাবনা আমার। বাতাস বন্ধ তার নড়াচড়াও বন্ধ! নির্বাক চোখের কথাগুলো কী বুঝ না হে প্রিয় বৃক্ষ!  একটু কথা তো বল! হ্যাঁ, না, কোন সাড়া নেই!!!
বাবা বলেছেন গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে শহরে। কারণ আমার অনলাইন আবেদনে কলেজ সিলেক্ট হয়েছে টাউনের।  গ্রাম থেকে কলেজে আসা-যাওয়া বেশ কষ্টের। যে কোন মূল্যেই আমার গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে যানযট শহুরে। সব ঠিকঠাক চলে যাব শনিবার ফজরের নামাজের পর। শনিবারগত রাত অর্থাৎ জুমাবার রাত্রি গিয়োছিলাম বৃক্ষের কাছে। জানতে চেয়েছে আমার প্রতি তার অনূভুতিগুলো, জানাতে চেয়েছি আমারগুলোও! জড়িয়ে ধরে বসে রয়েছি বৃক্ষের দেহখানি। অনেক করে কথা বলতে চেয়েছি কিন্তু তার তো সেই শক্তিটুকুও নেই!
"আচ্ছা বুঝে নিলাম বা নিজে নিজে মনকলা খেলাম যা-হোক!  তুমি আমাকে ভালোবাস। আমি কিন্তু চলে যাচ্ছি গ্রাম ছেড়ে। কখন ফেরা হবে জানি না। নাও হতে পারে ফেরা!  তবে তুমি ভালো থেকো। তোমার জন্যে আমার অকাল ভালোবাসা বেঁচে থাকবে। এক ফোটাও কমবে না। হে প্রিয় বৃক্ষ! যাই, ফি আমানিল্লাহ!
পরের দিন বাবা-মা, ভাই-বোন, মাল-ছামানা সব গুঁছিয়ে গাড়িতে উঠেছি এবং  যাত্রা শুরু করলাম। এমন সময় অচেনা এক সুরওয়ালা ভাঙ্গা-সুরের ডাক যেন আমার কর্ণপাত হল । যেন কেউ বলছে।
হে প্রিয় তা....ন.....ভী....র..! আমায় ছেড়ে যেও না কোথাও। আমি রবের কাছে ইন্দ্রিয় শক্তি উপহার পেয়েছি, রব আমাকে ইন্দ্রিয় শক্তি দানেছে।  তুমি দোআ করেছ তাই! এ'টুকু বলে আর কোনো কথায় শুনতে পেলাম না!
খুব কান্না করেছি বৃক্ষটির জন্যে। প্রতিদিনই কান্না করতাম আর প্রিয় বৃক্ষের জন্য একটা করে চিঠি লিখতাম।
ফাস্ট ইয়ারের পরিক্ষা শেষে গ্রামের বাড়ি ফিরেছি! লিখিত সব চিঠি সাথে নিয়ে এসেছি!  প্ল্যান সব ঠিকঠাক।গ্রামে যাওয়ার পর প্রথম কাজ হবে লিখিত চিঠিসব তাকে পড়ে শোনানো!  গাড়ি থেকে নেমেই ঘরে যাওয়ার আগে গেলাম বৃক্ষের কাছে। দেখি না কিছুই নেই সেখানে। একটা বড় দালান দাঁড়ানো সেখানে!  খুব রেগেছিলাম হয়তো বাড়িওয়ালা জমি ক্রয় করে বৃক্ষ কেটে বাড়ি করেছে। বিষণ্ণ মনে বাড়ি ফিরছি। পথে সাজিদের সাথে দেখা, কুশলাদি শেষে জানতে চেয়েছি গাছটির ব্যাপারে ওর কাছে। সে বলল।
তুমি যেদিন গ্রাম ছেড়েছ সেদিনই তরুতাজা বৃক্ষটি মারা গেল। এসব শুনে আর চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারলাম না!  শত ব্যর্থ চেষ্টাতেও ব্যর্থ প্রেমিক আমি!!!