পদাবলি



শিশমহল-২৩
মঈন মুনতাসীর

এই সময়ের ব্যস্ত সময়
আমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে-
আমার রক্ত থেকে।
ও প্রসিদ্ধ ঝড়,
ও উন্মুক্ত লালজমিন,
বলো, আমাকে কী দিয়ে সান্ত¡না দেবে !

উপমার ডালপালা
দ্বীপ সরকার

শিল্পী হতে গেলে বুঁদ হওয়া গিটারের ঋণ চাপে আমার কপালে,
সেকারণেই কোকিলের জবানে টিকে গেলো রুনার বিস্তীর্ন গলার কৃতিত্ব,
আমার আর শিল্পী হওয়া হলোনা-
সময়ের ঠোঁটে তাই ফুটলো হাহাকার ।

অভিনেতা হতে চেয়ে সালমানের মরদেহে পশম খুঁটেছি বহুকাল,
কুক্ষিগত মাদুরে লুকিয়ে রেখেছে অভিজ্ঞতার বিপ্লব
অতঃপর পারিনি নৃত্যের তালে ঢেউ ঢেউ খেলতে- তার মতোন ।

জয়নুলের বাবুই চোখে চোখ মিলিয়ে চিত্র আঁকতে চেয়েছি তার মতোন,
কিন্ত বিবশ হাতে তুলিসমূহ ছিচকে মেঘের ঘোরে
হারিয়ে যেতে থাকলে নিঃশেষ হয়ে গেলো শিল্পীত মোহ ।

অতঃপর কবি হওয়ার লোভে
প্রকৃতির ছিরিছাদে যাপমান জ্যামিতির ইতিহাস,
বৃত্তের বাইরে উস্কানির মাদকতায় ভরপুর অনুভূতির চারাগাছ !
কৃষিকলম খুঁটে খুঁটে যন্ত্রণাগুলো উবে তোলা শিখলো আমার কবিতারা...

এলার্জিফোবিয়া
রেহেনা মাহমুদ

এলার্জির ভয়ে বেরুলে না
মাখলে না গায়ে পরাগ রেনু
ফুলটি তোমার জন্যই ফুটেছিল,
পাঁপড়ি মেলেছিল এ বসন্তে তুমি ছোঁবে বলেই
বাউরি বাতাসে হলদে রেনু উড়িয়েছিল
তুমি দরজা সেঁটে রইলে
ডানা মেলে উড়লে না তার জমিনে
অথচ একটু সাহসী হলেই পেয়ে যেতে
এ ফাগুনের শ্রেষ্ঠ উপহার,
হতে পারতো ফুলটির সফল পরাগায়ন ।

দূরে কোথাও
মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম

আজ থেকে তুই একলা থাকিস!
আজ থেকে তুই একাই দেখিস পিচঢালা পথ,
কেমন করে চলছে পথিক ভরদুপুরে,
                     কেমন করে মেলছে পাখি নিজের ডানা।

একটা ঘুড়ি উড়েই চলুক নাটাই বিহীন।
একটা মানুষ ইচ্ছে করেই মেরে ফেলুক ইচ্ছেটাকে।

আজ থেকে তুই গোপন রাখিস খুনের হিসাব!
আজ থেকে তুই নষ্ট করিস উতল হাওয়া, জ্যোৎস্না-রেণু,
সুখের অুসখ জায়নামাজে লুটিয়ে দিয়ে,
                বুকের শরম উদোম করিস, খুব নিশীতে।

একটা বাউল ঘর ভুলে থাক অকারণে;
একটা জীবন ভাসতে থাকুক দূরে কোথাও, বেখেয়ালে।

তিন বসন্ত
মোঃ ওবায়দুল হক

হাতের তালুতে ঘুরতে থাকা লাঠিমের সুড়সুড়িতে বিকেলের ঠোঁটে মৃদু হাসি;
অধর চূড়াই হারিয়ে দিশা থেমে গেছে বাতাসের গতিপথ;
কাশফুলের নিরবতা খুলে দেয় প্রেম দ্বার!
সন্ধ্যার সোনালী রোদ রাতের হাতছানিতে বিলীন হয়ে যেতে দেখি রোজ;
কিন্তু আপনাকে ছাদে আসতে দেখিনা আর !
নরম আলো আর আপনার খোলা চুল বিকেল প্রেমি করে তুলছিলো আমায়!
আশা দিয়েছিলেন শাড়ি চুড়ি পরে বাসন্তি হয়ে আসবেন !
চৈতালি রায়, তিন বসন্ত খেয়ে ফেলেছেন, আজও কথা রাখেননি ।


তোমার জন্য
স্বপন শর্মা

কুকুরটা দেখেছ নিশ্চই?
                       বেওয়ারিশ;
            ফুটপাতে
        বাজারের অলিগলি,
ডাস্টবিন কিম্বা কসাই খানার পাশে।

আমার জীবনটা ঠিক এমন
তোমার প্রেমের টানে অথবা ভালোবাসায়
ঘুরে ফিরে বার বার এখানে আসে।

 তুমি দেখেছ নিশ্চই!
    গাছের মগডালে,
                       মৌচাকে;
    কিভাবে মাছি করে মধু আহরণ;
তেমন করে পেতে চেয়েছি; তোমার মন
চাতক যেমন করে থাকে পানির জন্য
তোমায় একবার দেখে আমি হই ধন্য।

তুমি নিশ্চই জানো রজকিনির ইতিহাস
আমি চাইনি হতে সে রকম চন্ডিদাস।








শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট