পদাবলি : ০১

 



উপেক্ষা

মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ্


নেও, আকাশটা তোমায় দিলাম

এবার তো মুক্ত করো আমায়, 

কেন ধুকে ধুকে মারছ বলো?

মিষ্টি প্রেমের যন্ত্রনায়।


এই রে, অসময়ে বৃষ্টি এলো

এখন তো আসতে পারো বুকে,

কেন মিছে মিছে পালাও বলো?

নিষ্ঠুর উপেক্ষার মন্ত্রণায়।



প্রতিক্ষায় সুস্থতার 

রায়হান কিবরিয়া রাজু  


চারদিকে মৃত্যুর প্রতিধ্বনি শোনা যায়

আজ শিমুল মরে, বকুল মরে

কাল রজনীগন্ধার শরীর চিঁড়ে  আসবে

মৃত্যুর গন্ধথথ এমনটাই হয়ে গেছে বিশ্ব! 


ঘাসের ডগায় অথবা ধুলোর বুকে মৃত্যুর আস্তরণ

পৃথিবীটা বড়ই দিশেহারা এ সময়

চাঁদ ভালো নেই, আকাশ ভালো নেই

ভালো নেই এসময়ের দুরন্ত পথ, ব্যস্ত শহর।

ভালো নেই প্রাক্তনের অকথ্য গালি

প্রেমিকার অশান্ত বুক

প্রিয়জনের সুস্থ-সুন্দর ভালবাসা


সবাই মৃত্যুতে ভর করে ছুটে জীবনের পথে

রোদের সাথে গল্প করে ভাল না থাকার

ভোরের আলোয় রাতের অন্ধকারের মতো  মিলিয়ে নেয় 

অসুন্দর-বিশ্রী অতীত, বর্তমান।


প্রতিক্ষায় সুস্থতার

আকাশ, পথ, ব্যস্ত শহর সবার সুস্থতার! 

সবার চোখে অমোঘ বাসনা, স্বপ্ন দেখে-

পৃথিবী আবার কোলাহলে ভরবে

প্রাক্তন আবার গালি দিবে অকথ্য ভাষায়

প্রেমিকার বুকে নগ্ন উষ্ণতা খুঁজে নিবে ক্ষুদাতুর প্রেমিক

স্ত্রীর গালে-নাভিতে আবারো ঝলমল করবে সুখ


এই প্রকৃতি  আবারো নোংরা হবে একদিন।



অপেরা আজও কবিতা বোঝেনা বাল

মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম


অপেরা আজও কবিতা বোঝেনা বাল;


কেমন যেনো ভরহীনতার ভেতর

সুরক্ষিত আয়নাগুলো ভাঙছে অবিরত। 

কেমন যেনো দুমড়ে থাকা সবুজ

ছুরির আদরে রাঙিয়ে নিচ্ছে উদ্বিগ্ন ক্ষত!

জরায়ুতেই গোপন রেখে গ্রন্থের কঙ্কাল। 


অপেরা আজও কবিতা বোঝেনা বাল;


ধূলির মাধুরী কুড়িয়ে সারাটাদিন

ঢেউয়ের যাতনা মেলে ধরে বুনো ঘাসে।

ঘুড়ি কি জানে ঘড়ির আর্তনাদ ?

শ্বাসঘাত ছন্দ কখনও ফুরোয় অনুপ্রয়াসে?

যদিও চড়ুই সারাক্ষণ নিজের মধ্যে লাল।


অপেরা আজও কবিতা বোঝেনা বাল;


খড়কুটো সব ছড়িয়ে অন্ধকারে

ভবঘুরে স্থাপত্যের ভিড়ে নিভৃতে জ্বলে!

নিজের কাছে জব্দ করে মেঘ

বৃষ্টি হয়ে ঝড়ছে শুধু দারুণ কৌতূহলে।

ঠোঁটের গভীরে এঁকে পাখিদের হরতাল।


অপেরা আজও কবিতা বোঝেনা বাল;


ঈর্ষাবান্ধব বিছানাকে সে জানে,

জানেনা এখনও প্রাক্তন বীর্যের গোঙানি।

কবির নিকটে শস্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ 

আমলকী রঙের যে কোনও নারীর যোনি;

যে কোনও নারীর খুন হয়ে যাওয়া গাল।



আজ সারাদিন ছুটি

রকিবুল ইসলাম


আজ সারাদিন ছুটি ওরে, আজ সারাদিন ছুটিÑ

বাতাস মেখে আজ সারাদিন করবো লুটোপুটি। 


রাস্তাতে আজ ধুলোর গাদা 

সেই ধুলোতে শরীর শাদা

মাখবো ধুলো সেই ধুলোতে পড়বো আজি লুটি

আজ সারাদিন ছুটি ওরে, আজ সারাদিন ছুটি। 


রেললাইনের ধারে ধারে

জংলা ফুলের রঙ-বাহারে

দল বেঁধে আজ ফুলের রেণু আনবো না হয় খুটি

আজ সারাদিন ছুটি ওরে, আজ সারাদিন ছুটি। 


বিলের জলে কাটবো সাঁতার

ঘর বানাবো কলার পাতার

বিল সেচে আজ আনবো তুলে টেংরা, টাকি, পুঁটি

আজ সারাদিন ছুটি ওরে, আজ সারাদিন ছুটি। 


বন বাদারে পাখির মেলা

ওদের সাথেই কাটুক বেলা

পাখির গানে বন মাতাবো আমরা সবাই জুটি

আজ সারাদিন ছুটি ওরে, আজ সারাদিন ছুটি। 


আজ সারাদিন ছুটি ওরে

তাই উঠেছি খুব যে ভোরে

ডলতে হবে চলতে হবে সকল বাঁধা টুটি

আজ সারাদিন ছুটি ওরে, আজ সারাদিন ছুটি। 



আবার আমাদের দেখা হবে

রুদ্র সাহাদাৎ


দেহপাঠের রচনা পড়তে গেলেই রিরংসা জাগে 

উদবাস্তু মন পালাতে চায়, 

জীবনের সীমানা পেরিয়ে আরো দূর বহুদূর,

কোনো অজানায়, আমাদের দেহপাঠ হয়নি 

আজও এই বসন্তেও। 


কখন কী বলছি, কখন কী করছি, ঈশ্বর জানে। 


প্রতিক্ষায় থেকো, এই করোনাকাল গেলে

আবার আমাদের দেখা হবে।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট