তারুণ্যের লেখা পদাবলি





ঢুকে পড়ছে স্বভাবে
সুজিত মান্না

কালরাতে হাজার যৌথ প্রস্থচ্ছেদ ঘটিয়েছি আমার
নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেছি
―আমাকেও কি একদিন হিমঘর বেছে নিতে হতে পারে

বিজয় এসে বলে গেছে
―জীবনের আশ্চর্য মাত্রা দিয়ে কীভাবে
     কুয়াশার স্টেশন পেরিয়ে
                                 সমতা বজায় করে চলতে হয়

আমি তো এভাবে ঘাসপাতা বেছে বেছে ঠোক্কর খেতে চাইনি
ঘুমোবার আগেও দেখে নিয়েছি
মাড়িয়ে দেওয়া দৌড়ে কতটা বিদ্যুৎ উৎপাদন হলো

এভাবে রোজই কতবার শরীরের লোডশেডিং হয়
পেছনে ছুটতে গিয়ে মনে হয়
আমিও কালিগহ্বরে ঢুকে পড়ছি স্বভাবে এবং বৃষ্টি চুষে

আমার বেঁচে থাকা
পরান জহির

চর্যাপদ লালন হাসন রাধারমণ শীতলাং ফকির জ্বালালের
গীতিসমুদ্রে সিক্ত সমগ্র বাংলাদেশের অমরাত্মাগণ।
আপামর পাখির কণ্ঠে কণ্ঠে নতুন ধানের গান।
ধানের ভিতর প্রোথিত স্বপ্নের নবান্ন।
এইসব বুকে ধরে বেঁচে আছে প্রাণ স্ব সংস্কারেই।

তাঁতি কামার কুমোর চাষার স্বপ্নে বিদেহী মাকড়।
কোন অদৃশ্য নখরবাজের কোপানলে এ শিকড়।
গানশালিকের তুলতুলে ডানায় না ছুঁক অন্ধকার
বৃহত্তর বদ্বীপের ওষ্ঠে জেগে থাক সুর কবিতারা !

পৃথিবীর জন্মদিন-০১
আহমেদ ইউসুফ

পাখিরা গান শুনাবে- পৃথিবীর জন্মদিনে, প্রজাপতিরা রঙ ছড়াবে ফুলে ফুলে, সদ্য প্রস্ফুটিত ফুলেরা সৌরভ ছড়িয়ে দিবে বাতাসে, নির্মল বাতাসের সমুদ্রে প্রত্যুষের সূর্যকুসুম এক গাল হাসি হেসে বলবে- শুভ জন্মদিন তোমার...

ঝিরিঝিরি হাওয়ার তালে তালে পাতারা নেচে ওঠবে- পৃথিবীর জন্মদিনে, মৃদু তরঙ্গে নদীতে নেচে ওঠবে ডিঙিনৌকা, পালতোলা নায়ে মাঝিরা গেয়ে যাবে ভাটিয়ালি গান, সেই গান শুনে সম্মোহিত মাছেরা বলবে- শুভ জন্মদিন তোমার...

শুভ্রনীল আকাশে মেঘের ভেলা ভেসে যাবে- পৃথিবীর জন্মদিনে, মেঘের খামে কাশফুল শুভ্রতা মেখে দিবে, শাদা বলাকা উড়ে যাবে দূর থেকে সুদূরে, বলাকার জলছায়া পথে হেঁটে যাবে দুরন্ত জলপিপি, পদ্মপাতায় বসে থাকা ক্ষুদে সোনাব্যাঙেরা সহসা হাসিমাখা মুখে হেসে বলবে- শুভ জন্মদিন তোমার...

হাওয়ার তালে তালে ধান কাউনের মাঠ জল তরঙ্গের মতো নেচে ওঠবে- পৃথিবীর জন্মদিনে, ঘাসফড়িঙ হেসে খেলে নেচে যাবে পাতায় পাতায়, ধান ক্ষেতে পুঁতা বাঁশের কঞ্চিতে বসে থেকে কালোজিরা কালো ফিঙেরা লেজ নাচিয়ে নাচিয়ে বলবে- শুভ জন্মদিন তোমার...

সর্ষে ফুলের হলুদ মাঠখানি সোল্লাসে হেসে ওঠবে- পৃথিবীর জন্মদিনে, মোহমুগ্ধ বাতাসে ছড়িয়ে দিবে আনন্দধ্বনি, হৃদয়ের মাঠে চাষ হবে গল্পের রাঁধুনী, হলুদ খাম খুলে চিঠি পড়তে থাকবে প্রিয়জন, রৌদ্রস্নান করবে শিশুফুল, দন্তবিহীন বৃদ্ধেরা শিশুর মতো মুখে হেসে বলবে- শুভ জন্মদিন তোমার...


রিং অথবা আংটি
সৈয়দ শরীফ

সেইদিন থেকে আপনাকে বড় নাট্যকার মনে হয়
হে উপভোগ্য জীবন-(অনেকটা ঈশ্বরের মতো)
যেদিন একটি আংটি কিনে দিতে না পারায়
আমার প্রথম প্রেমিকা আঙুল ভাবতে শুরু করেছে
বন্ধু রাসেলের আঙুল- আহা কী স্বর্ণের আঙুল !
ওর ছোট বোনের বিয়েতে যৌতুক দিতে না পারায়
মেয়েটিকে সহ্য করতে হচ্ছে শাশুড়ির অত্যাচার-
কিছু মানুষ খাওয়াতে ভাঙতে হয়েছে, ছোট ভাই
আতিকের নামে করা- চল্লিশ হাজার টাকার এ্যাকাউন্ট;
হঠাৎ ওর সরকারি চাকরিটা চলে যাওয়ায়,
সংসারে ভেসে উঠলো অভাবের ছায়াচিত্র;
(যদিও চাকরী চলে যাওয়ার পেছনে দায়ী রয়েছে
আঙুলবাজি অথবা নৌভ্রমণ।)
রাসেল এখন অসুস্থ-
শুনেছি হার্টের কোথায় যেন তিনটি ছিদ্র
ধরা পড়ায়, ওখানে এখন রিং বসানো প্রয়োজন;
অপারেশনেও বেশকিছু লাগবে বলে
ওর বাবা বিক্রি করে দিলেন একমাত্র রিক্সার গ্যারেজ
এবং গ্রামে অবশিষ্ট তিনকাঠা জমি।
(যদিও এসবের ক্রেতা ছিলেন প্রেমিকার বাবার একমাত্র ছোট মেয়ে)
এরপর,
প্রেমিকের নিজেরই রিং প্রয়োজন বুঝতে পেরে
অসুস্থ প্রেমিককে কেবিনে ফেলে, কোথায় যেন চলে গেলেন
মহামান্য প্রেমিকা— হয়তো নতুন কোনো
আংটির প্রয়োজনে....


সুখ ডানা
রুমান হাফিজ

দ্রুততার সাথে তুমি কাছাকাছি এসেছ
খুব কাছে বসে তুমি প্রাণ খুলে হেসেছ

সুখ, দুখ, রাগ ক্ষোভ সবটাই বলেছ
আনমনা হলে পরে কানটাকে মলেছ!
স্বাধীনতা ছিল তাই ইচ্ছাতে চলেছ
আধারেই ডাকা মনে আলো হয়ে জ্বলেছ।

মান অভিমান করে দূরে কভু ঠেলেছ
পড়ে যাই ভয়ে তাই সুখ ডানা মেলেছ।

তৃষ্ণার্ত
সাজিয়া সুলতানা মিম

রঙ্গিন গ্রীল তবু ময়লা
আকাশ বোবা মেঘে ঢাকা,
ফাল্গুনে গাছ নগ্নতার শিকার
রংচটা দেয়ালে ভুলেও টিকটিকি আসেনা।
মাকড়সা পরিবার খুঁজে নির্জন স্থান
নৌকার পেরেক জলকে ছিন্ন করতে ভয় পায়
স্বপ্ন মাতাল বাস্তব হওয়ার নেশায়!
মুহূর্ত যুদ্ধ করে স্বার্থপর ঘড়ির কাটা ভাঙ্গবে বলে
অক্ষর মিথ্যের েেবড়াজালে আটকানো,
ভেজা বিড়ালের কাকের ডাকে অবাক মৃত্যু
ভালোবাসার কপাটের সামনে অনুভবের বিকৃত ছাঁই।
ইট গুলো আবারো পুড়তে চায় আত্মশুদ্ধির জন্য
বৃদ্ধের পাকাচুল সাক্ষী দিতে রাজি শতযুগের গল্প
অবাধ্য মন ও রাত্রি জাগা এলোমেলো ভাবনাই,
মুক্ত মাটির বিলাসী চাওয়ার অন্ত নেই
ভাঙ্গা কন্ঠে নীল চিরকুটের মিছিল
অপরাধী সর্প ক্ষমা চায় তার বিষে মৃত ব্যক্তির কাছে।
মাইক আর পারছেনা নিত্য শোকের  ভাষা বলতে
জীবন ক্লান্ত এই দেহের চাহিদা মেটাতে
তৃষ্ণার্ত বড্ড তৃষ্ণার্ত !


মাগো তুমি ক্যামন আছো ?
নূরনবী সোহাগ

এ্যাহানে বিষ্টি নামে না বাড়তের লাহা, 
ঝরনা ঘুরাইয়া দেলে পানি পরে হাঙ্গা গা ভেজে
হাঙ্গা বুকটা ভেজাইতে পারি না এ্যাহানে ছাওয়া নাই
রৌদের গন্ধ থাহে- আন্দার অইলেও
নুন, প্যাঁজ কচলাইনা পান্তা নাই, কতদিন খাইনা মাচার হাক !
এ্যাহানে ক্যামন জানি খাওন না খাইতে না খাইতেও খাইতে অয়;
এ্যাহানে হাটবার নাই, মামাবাড়ি যাওন নাই, মাছধরা নাই,
বোনভাত নাই, গতরে জিরান নাই, মানুষগুলা ক্যামন জানি!
ইংরাজী খবরের লাহান কতা কয়
চোহে ঘুম আইতে চায় না, ব্যাবাক রাইতে
রাইত্তা দুফার অইলে মনে চায় নাড়ায় ঘুমাই; জন্মের লাহান
বিদ্যাশ মরণের লাহান এতো দূর ক্যান?
কতোদিন মায়রে দেহিনা, ডাহিনা- মাগো তুমি ক্যামন আছো ?




ভালো আছি
আলমগীর কবির

একশত আলোকবর্ষ দূরের
মিটিমিটি জ্বলে থাকা
তারাটির মতো,
মুখে হাসি নিয়ে
আমি ভালো আছি।

না চঞ্চলা না কাব্যিক,
সাগরকে জানবার
সাধ নেই তিলেকমাত্র
সে নদীটির মতো,
বুকে ব্যথার ঢেউ নিয়ে
আমি ভালো আছি।

প্রেমিকা
অনন্ত পৃথ্বীরাজ

মাঝরাতে মিস কল !
শিশুর কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে গেলে
যেমনটা বিরক্ত আসে
ভ্রু কুচকে তেমনই প্রতিক্রিয়া আমার ।
পরপর আরও তিন বার !
তখনও  বুঝতে পারিনি কে হতে পারে-
ফের নিজেই ডায়াল করি এগারো ডিজিট
শুধু হ্যালো.... !
অদ্ভুত মায়া-জড়ানো একটি নারী কণ্ঠ- 
কেমন আছো তুমি ?
আমি আদৌ ভালো ছিলাম না
কিন্তু ভালো হয়ে গেলাম।
চিরচেনা সেই পুরানো স্বর
কেমন আছ তুমি ?
বুকের ভেতর কেমন যেন মোচর দিয়ে উঠল
আমি কী সত্যি শুনলাম ? না কল্পনা !
নিজেকে নিজেই চিমটি কাটি ।
ভালোবেসে ভালো থাকা দায়-
আমি পারিনি ধরে রাখতে
ধরে রাখা দায় না, অপরিণত প্রেম ।
কিছু আলাপের পর-
পুরাতন দিন মনে পড়ে, কিছু পুরানো স্মৃতি।
বাঙালির গৃহস্থ কেচ্ছা, লবণ ভাত
অতঃপর, ভাড়াবাড়ি তাদের
মাস তিনেকের সংসার মাত্র।
গত তিন দিন হলো-
স্বামীকে খুঁজে পাওয়া  যাচ্ছে না। 

বৃষ্টি
মিসির হাসনাইন

চৈত্রের মাঝরাতে যখন বৃষ্টির শব্দ শুনি
বুকের ভিতরের বৃষ্টি হঠাৎ থেমে যায়।
মেঘে উড়ে কালো মেঘের মেঘচিঠি
আচমকা, আলো চমকায়, বিবট এক শব্দ হয়।
মনে হয় কোন এক রাজমিস্ত্রি হাতুড়ির
আঘাতে কেটে নিচ্ছে বুকের হাঁড়।
তবুও, খুব ইচ্ছে হয় বৃষ্টিতে কাকভেজা হই।
তোমার বৃষ্টি নিয়ে পথিক সেজে ছাতার খোঁজে
শৈশবের বৃষ্টিতে উঠানের রাজহাঁসের পাল
হঠাৎ উড়ে যায় আকাশের উদ্দেশ্যে...

রাজহাঁসের দলনেতা ঈশ্বরের ভূমিকায়
অভিনয় করেন, জন্ম নেয় মানবশিশু
তাঁর চোখের ইশারায় ধ্বংস হয় নগর।
তবুও,নারীর প্রেমে মাতাল দেবতারা
গান গায়, উড়ে আসে মর্ত্যের উদ্দেশ্যে...

তোমার ভিতরে আমাকে খুঁজতে গিয়ে
দেখি- মেঘে উড়ে কালো মেঘের েেমঘচিঠি,
বুকের ভিতরের বৃষ্টি হঠাৎ থেমে যায়।
তোমার বৃষ্টি নিয়ে ভেজা রাস্তা হেঁটে যায়
গাছের পাতায় বৃষ্টির শব্দ শুনে মনে হয়-
                                       নূপুরের আওয়াজ।
এসব বৃষ্টিতে যেদিন তোমার ভিজতে ইচ্ছে হবে
বুঝবে, বুকের ভিতরের বৃষ্টি
কতটা ভয়ানক কষ্টের হতে পারে।

স্বর্গের বৃষ্টিজলের নহরে ভেসে থাকা
পদ্মফুল অবিকল এক মর্ত্যের নারী।
ভুল করে, দেবতারা শরাব পান করে
এবং ঢেলে দেন মর্ত্যের মাতালদের উদ্দেশ্যে...
বোধ হয়, এই বৃষ্টিতে ঝিনুকে মুক্তা জন্মে?
চাতাক পানি পান করে?
একজন প্রেমিকের ইচ্ছে হয় বৃষ্টিতে কাকভেজা হই

আর ঐ দিকে,
মর্ত্যের কিছু বেকুব মাতাল এসব বৃষ্টির নাম খোঁজে
ঈশ্বরের দরজায়।

বুনোফুল
মাহদী হাসান

অযতেœ বড় হচ্ছে পাহাড়ের বুনোফুল। একটু ছোঁয়ায় তারা লজ্জাবতী গাছের মতোন নুয়ে পড়ে। মায়া পেলে অঙ্কুরোদগম হতে হতে ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। কালবোশেখি ঝড়ে তাদের চুল বেয়ে অশ্রু নামে সুডৌল পাহাড় গড়িয়ে সোজা চেঙ্গী নদীতে। এখানে বিন্নি চালের রঙিন স্বপ্নেরা হামাগুড়ি খায় তাদের পায়ের নিচে। তাদেরও দীর্ঘশ্বাস আছে। সুযোগ পেলে, তারা কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর বিপরীতে ছড়িয়ে দিবে ফুলের সৌরভ।

আকাশ বদল
সুমন আহমেদ

পৃথিবী, তোমাকে ঘিরে কতইনা স্বপ্ন ছিলো আমার !
তোমার সীমাহীন বিশালতা নীলাভ আকাশের নিচে হবে-
সুখের স্বপ্নপুরী; যেখানে থাকবে অনন্তকাল বেঁচে থাকার
প্রশান্তির আয়ুকাল- সুখের স্বর্গের অসীম দরিয়া।

রাত্রির শহর আলোকিত হয়ে থাকবে জোনাকির আলো,
অসলতার ঘুমভেঙে মুক্ত নভপ্রঙ্গনে ছুটে যাবে ভোরের পাখি।
সূর্যের মিষ্টি কিরণ গায়ে মেখে পুষ্পের নব জীবন...
হৃদ সাগরে অবিরাম সুখের উচ্ছ্বাসে বয়ে যাবে ছলাৎছলাৎ ঢেউ।
উদাস দুপুর পেরিয়ে- মৃদু সমীরণ বয়ে যাওয়া সোনালি বিকেলে
মনের উঠোনে অনন্ত সুখে পাখনা মেলে নেচে উঠবে ময়ূরী।

ভাবতেও পারিনি; পৃথিবীর সমস্ত আয়োজন মিথ্যে করে-
গোধূলি লগ্নে রঙধনুর সাজ হারিয়ে- হয়ে যাবে আকাশ বদল। 


সুকন্যা
সালমা নাসরীন এনডিসি

যে কন্যা স্বপ্ন দেখে সন্তর্পণে শৈশবে
বড় মানুষ হবে, শুধু মাতা-জায়া নয়
পরিপূর্ণ আত্মপরিচয় ! নয়, ‘কেয়ার অফে’
একান্ত নিজস্ব পরিচয়ে হবে সুকন্যা !

সে কন্যার সামনে বাঁধার প্রাচীর
থাকে অচলায়তন তবুও অকুতোভয়
আছে তার মমতায় উষ্ণ হৃদয়
শীতল মস্তিষ্কে ভর করে চলে বহুদূর...

বিশ্বাসের আলোয় কেবল নিজেকে বদলায়
কোন প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে নয়
মানেনা সে পরাজয় নির্ভয়ে পথচলে
পেছনে তাকায় না, শুনেও না কে কি বলে!

সে যখন হাসে গোটা দুনিয়া হাসে
প্রতিকূল অবস্থায় থাকে বাবা-মার পাশে।
সে আর কেউ নয় আমাদেরই কন্যা, সে
আমাদের চারপাশে- জয় সুকন্যার জয়।



পরিমাপ
বিটুল দেব

খুন করার পরে
দুধের চৌবাচ্চা ডুবে
ধুয়ে সারা শরীর!
নাইট পার্টিতে আমোদে ভুলতে
মৃত মানবের মুখ।

দান করে, জ¦ালাই মোম
হারিয়ে গেলে পরাণ হাওয়া
দাঁড়িপাল্লায় হিসেব
পাপের পরিমাপ।

আমি প্রেম
নূরে জান্নাত

আমার চোখে তাকিও না, প্রেমে পড়ে যাবে।
আমার হাসির মানে খুজো না, দিশেহারা হয়ে যাবে।
আমার এলো কুন্তলের মায়ায় পরো না, লোভী হয়ে যাবে।
আমার সৌন্দর্য আবিষ্কার করতে এসো না, অন্ধ হয়ে যাবে।
আমার স্বাদ নিতে এসো না, মৃত্যু হবে, ঠিক মৃত্যু হবে।
আমি যে প্রেম, আমি প্রেম, হ্যা আমিই প্রেম।
আমার হীম শীতল প্রবাহে ডুঁব সাতারের ইচ্ছে পোষণ করো না
তলিয়ে যাবে আরো অতল থেকে অতলে।
মরে যাবার পর ও ভেসে উঠতে চাইবেনা।
বাঁচতে হলে ভাসতে হবে
বাঁচার জন্য প্রয়োজন তাপ ও অক্সিজেন।
আমাতে যে আগুন আছে তাও শীতল,
যে আগুনে পোড়ালে তুমি তাপ অক্সিজেন দুটোই পাবে।
তবে সাবধান!!! শীতল আগুনেও অদৃশ্য প্রগাঢ় উত্তাপ
যাতে জ্বলে পুড়ে ভস্ম হয়ে যাবে তোমার অস্তিত্ব।
পরিশুদ্ধতা পেতে তোমার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলার পরেই
প্রমাণিত হবে ‘তুমি ও প্রেম’
প্রমাণ শেষে আমার সফেট আলিঙ্গনে
ফিরে পাবে চির অমর, নব উদিত তোমাকে !



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট