দীর্ঘ কবিতা



 তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না
অসীম মালিক

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না ,
তোমাকে আর ‘জলপরী’,‘নীলপরী’বলতে ইচ্ছে করেনা ।
এবার তোমাকে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে লক্ষ্য করব,
এতকাল তোমাকে দেখে এসেছি খ-গ্রাস চাঁদের মত ।
অশরীরী আত্মায় তোমাকে খুঁজেছিÑ
সিংবিহীন বাইসনের মত ।
আবার খুঁজতে খুঁজতে চলে গেছিÑ
ইতিহাসের আলতামিরা গুহায় ।
আসমুদ্র হিমাচল তন্ন তন্ন করে খুঁজেও
তোমাকে খুঁজে পাইনি ।
আগামী পৃথিবীর স্বপ্ন ধারন করা যে মেয়েটি
লালন করে মমতা । সেই মেয়েটির চোখের তারায়
এক রোদ ঝলমলে আকাশ ।  যে আকাশের নীচে
আসন্ন নবান্নের সোনালী ফসল,
আর চেতনার ওম নিয়ে অপেক্ষা করে ভ্যালেন্টাইনস ডে ।

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না ,
এবার তোমায় বৃষ্টি বলেই ডাকব ।
মেঘের গর্ভেই তো বৃষ্টির জন্ম ,
ঊৃষ্টি বলে ডেকে যদি তোমার সৃষ্টিকে খুঁজে পাই
পোয়াতি ধানের নিঃশব্দ চেতনায়
শব্দের খামারে, শব্দের গোলায়,
চেতনার অক্ষরে পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায়
আর কলেজস্ট্রিটের অদৃশ্য ইশারায় ।

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না,
তোমাকে রাগিণী বলেও ডাকব না ।
আবার বাঘিনীর উপমাও হৃদয়ে ধারণ করতে পারব না ।
এবার তোমায় অনুরাগ বলেই ডাকব ,
আর অনুরাগ বলে ডেকে যদি তোমাকে খুঁজে পাইÑ
আমার রোমান্টিক কবিতায়Ñ রেফ, কমা, কোলন !
সেমিকোলন আর অপরিহার্য পূর্ণচ্ছেদের বার্তায় ।
কালজয়ী কবিতার বিস্ময়সূচক চিহ্নে । 

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না,
তোমায় অভিমান বলেই ডাকব।
আর অভিমান বলে ডেকে, যদিÑ
আমি খুঁজে পাই, আমার উহ্য অতীতকে ।
যেখানে অভিমানী মেয়েটি
ম্যাসেজ পাঠালে রিসিভ করে না ।
অথচ বিনিদ্র রাতের বিছানায় সারারাত জেগে,
আমায় মিসডকল মারে ।
আর কলেজ ক্যাম্পাসের ছাতিমতলায় ইশারা করে ।

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না,
তোমাকে মায়াকাজল বলেই ডাকব।
আর মায়াকাজল বলে ডেকে যদি আমি খুঁজে পাইÑ
কাজললতার ঠিকানা । আমি দুচোখে পড়ে নিয়ে
সমস্ত মায়াবী চোখের কাছে;
আজন্ম নতজানু হয়ে থাকব ।
আর মায়ার পাথ নিতে নিতে
সমব্যথী পাখির মত জেগে থাকব ।

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না,
তোমায় রাঙাপথ বলেই ডাকব।
আর রাঙাপথ বলে েেডকে, যদি
আমি খুঁজে পাই চরাচর ।
যে চরাচরের একটিই পথ ,আমাকে হাতছানি দেয়
আর ভালবাসার সিগন্যাল দেখিয়ে
জীবনের প্রোতাশ্রয়ে,
জোয়ারের জলে ভাষায় শব্দের ভেলা।

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না,
তোমায় রোদ্দুর বলেই ডাকব।
যদি রোদ্দুর বলে ডেকে প্রাণের উৎসে পৌঁছে যাই,
আর খুঁজে আনি অঙ্কুরোদগমের শর্ত ।
অথবা রোদ্দুরে ভিজতে ভিজতে
আকাশগঙ্গা পথে দাঁড়িয়ে,
যদি পৃথিবীর জন্য লিখি মনকেমনের কবিতা ।

তোমাকে আর মেঘবালিকা বলে ডাকব না,
তোমায় চেতনা বলেই ডাকব ।
আর চেতনা বলে ডেকে যদি
আমি ছুঁয়ে ফেলতে পারি ।
সমস্ত সম্পর্কের ভগ্ন-হৃদয় ।
আর বিপ্লবের তাজারক্তে ভেজা নদীতে
যদি গড়ে দিতে পারি সম্পর্কের সাঁকো
যে সম্পকের সাঁকো পার হতে হতে তুমি বলবে-
না, আমায় মেঘবালিকা বলে ডেকোনা ।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট