স্মৃতি বড় বিষণ্নময় !



স্মৃতি বড় বিষণ্নময় !
ফৌজিয়া লীনা 

ঈদ মানে হাসিখুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদকে ঘিরে প্রত্যেকেরই কিছুনা কিছু স্মৃতি থাকে ; আমারো তাই। প্রত্যেক ঈদে ঘুম থেকে উঠে মায়ের হাতের পিঠা-পায়েশ খেয়ে তারপর আস্তে আস্তে ঘর-দোর সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে বরাবর ঈদে আমার প্রধান কাজ ছিল দাদীকে সাজানো। উনাকে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে বসিয়ে রেখে তারপর নিজের কাজে যাওয়াটাই ছিল রুটিনমাফিক কাজ। অনেক সময় মা দাদীকে গোসল করিয়ে বলতেন যা তুই বাকী কাজটুকু সেরে নে। তখন নিজেকে খুবই দায়িত্বশীল মনে হত। এ যেন এক অসীম তৃপ্তি, ঈদের দিনে বাড়তি কিছু আনন্দ।

কিন্তু, গতবছর থেকে মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমার কাঁধ থেকে মহৎ এই দায়িত্বটি চিরতরে কেড়ে নিয়েছেন। ২০১৭ সালের ৩১ মে আমার দাদী আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন ওপারে, না ফেরারই দেশে। সে বছরের দু’টি ঈদই ছিল আমার জন্য সীমাহীন যন্ত্রণাদায়ক। দাদীকে ছাড়া ঈদ; এটা ভাবতে গেলেই কেমন যেন শিহরিত হই, শীতল হয়ে আসে পুরো শরীর, অদ্ভুত এক টান লাগে কলিজায়, এমন কষ্ট অনুভূত হয় যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
দাদীকে ছাড়া এটি আমার চতুর্থ ঈদ। এখনকার ঈদের সকালটা কেমন জানি অসম্পূর্ণ লাগে। মা আর আমাকে বলেন না
‘যা তোর দাদীর গোসলটা সেরে নে অথবা গোসল করানো শেষ তুই শুধু কাপড়টা পরিয়ে চুলটা আঁচড়িয়ে দিয়ে আয়’। এখন আর মুচকি হাসি দিয়ে কেউ আমায় বলেনা, ‘পিনআপ করে কি করবি আমার আর ওসবের বয়স আছে নাকি’! এসব ভেবে ভেতরটা কেমন খাঁ খাঁ করছে।

দাদী নেই ঠিকই কিন্তু দাদীর উপস্থিতি আমি সবসময় টের পাই। আমি অনুভব করি উনি আমার আশেপাশেই আছেন।
কেন যে এমন হয়; এত মায়ার মানুষগুলা কেন কাঁদিয়ে চিরতরে চলে যায়। খুব কাছের কেউ, অতি আপনজন হারানোর যন্ত্রণা কেমন হয় দাদীকে হারিয়ে আমি তা বুঝেছি।
দাদীকে আমি খুব বেশি মিস করিওপারে ভালো থেকো, অনেক বেশি ভালো থেকো।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট