অভাব



অভাব
মোহাম্মদ জসিম

গাঢ় সুন্দর গায়ের রঙ, আটাশটা চকচকে দাঁত (তিনটা কালচে, একটা নাই), প্রমাণ সাইজ দৈর্ঘ্যে সবল ও স্বাস্থ্যবান- এই হইলাম আমি।
আমারে কিনুন।
বিজ্ঞাপন টানাইয়া দিলাম, শহরের আনাচ কানাচ, দেয়ালে, গাছে, এইহানে ওইহানে। নিয়ম কইরা সকাল সন্ধ্যা বটতলায় দাঁড়াইয়া থাহি, ওইডাই দোকান। নিজেরে বেইচা দিমু।
বিজ্ঞাপনের আছড় ভালমতোই পড়তাছে। লোকজন আইতাছে, দরদাম করতাছে। কিন্তু, সমস্যা হইতাছে গিয়া কেউ পুরা শরীরডারে কিনতে চাইতাছে না। কেউ হাত কিনবো, কেউ পা। কেউ কেউ নিলোম বুকটায় হাত রাইখা ছুঁইয়া টুইয়া দেখতাছে, কেউ কয় বুকে লোম থাকলে ভালা হইতো।
এক বয়রা আইছে, একখান কান কিনবো। অন্য কানডারে কি ধুইন্যাক্ষেতে হালাইয়া রাখুম নাকি!  মর জ্বালা, কান বেচলাম না।
একজন বুইড়া আইছে চোক্ষু নিবো, তাও একখান।
কাইল্যা কুচকুইচ্যা এক মাইয়া আইলো, হ্যায় কিনবো লিঙ্গডা। বেলাজ, বেশরম  যা-ই কন, তারে আমার সাহসী মনে হইলো, ভাল্লাগলো। কিন্তু কথা হইতেছে, পুরুষ মাইনষের লিঙ্গ না থাকলে বাকি শরীরডার দাম ঠিকঠাক পাওন যাইবো না।
অহন ভাবতাছি, দুনিয়ার মাইনষের অভাবের শ্যাষ নাই। কিছু না কিছু একটার কমতি হগ্গলেরই আছে। অথচ মনে হইতাছে দিনে দিনে খয়রাতি হইতাছে মানুষগুলান। আস্তা একটা বডি কিনবার ক্ষ্যামতা কারো নাই।
বরিশাল



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট