পদাবলি : ০২



প্রাণভিক্ষা 
কাজী জুবেরী মোস্তাক

না রাষ্ট্রপতির কাছে আমি আমার প্রাণটা ভিক্ষা চাইবোনা
এখানে আইন টাকা আর ক্ষমতার কাছে জিম্মি
তাই বাঁচতে চাইনা
যে রাষ্ট্র আজও মিথ্যার চামচামি করে সে রাষ্ট্রে
প্রাণভিক্ষা চাইনা।

না এই সুউচ্চ প্রাচীর কিন্তু আমার সমাধীর জন্য
তৈরি করা না
এ জেলখানা কিন্তু অনেক বড় কিন্তু আমার ঘর
বেশি বড় না
আগামীকাল আবার জন্ম হবে আমার তাই আজ বাঁচতে চাইনা

বদ্ধভূমির জেলখানায় ঘুমটা আসলে বিশ্বাঘাতক
এক অপরাধী
আর কয়েদিরা একেকজন যেন ঘুমহীন একেকটা চাতক পাখি
আর জেল পুলিশগুলো পাখিদের উপরে রেখেছে
তীক্ষè নজরদারি ।

জেলখানার খুপরিঘর গুলোর দেয়ালে বন্দী রয়
চাপা আর্তনাদ
সু-উচ্চ প্রাচীরেই আটকে থাকে ভেদহীন শতশত
বন্দীর দীর্ঘশ্বাস
তবুও স্বপ্নগুলো কয়েদিদের দিচ্ছে বেঁচে থাকার
জন্য আশ্বাস।

যে সমাজটা আমার সু-শৃঙ্খল জীবনকে করেছে
উশৃঙ্খল সন্ত্রাসী
যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতি পদেপদে জন্ম দিচ্ছে আমার মতো সন্ত্রাসী
সে সমাজে বাঁচার জন্য অযোগ্য রাষ্ট্রে প্রাণভিক্ষা চেয়ে লাভ কি ?

আমাকে নাহয় বন্দীই করেছো এই সুউচ্চ প্রাচীর
ঘেরা জেলখানায়
কিন্তু আমার চিন্তা চেতনা মস্তিষ্ককে বন্দী করবে কোন জেলখানায়
মনে রেখো এই মৃত্যু চিরস্থায়ী নয় প্রতি সকালেই আমার জন্ম হয়।


মানুষের ধবলমুখ রক্তহীন
নূরনবী সোহাগ

জরায়ুর নিপুণ রক্তাক্ত পথ ছেড়ে নেমে এলাম
পৃথিবীর সহজ ও সুন্দর আলপথে
হরিৎ কারুকার্যে আমিই ঘুরে বেড়াই
বাসি রক্তের ঘ্রাণ নিয়ে।
জল বলতেই মনে হয়; গর্ভে ভেসে থাকা পবিত্রদিন
নেমে আসি জলের কাছে; পবিত্রতা শুঁকে
আঁজলা আঁজলা নরমডুব মাখি গায়ে
সরল তের আবদারে, ভেসে আসে
কাটামুখ, কাটাচোখ,কাটামাথা ও শরীর

রক্তের ঘ্রাণ পাই এখানেও।

পিছুছুটে পালাই নব্যসভ্যতার দিকে
মন ও মানুষের দিকে

শরীরপেষা চাকার মুখে মানুষের পরাজয় শুনি
ছায়া খুঁজি-খাদ্য খোঁজার মতো হন্যে হয়ে
দূরে দেখি রক্ত ফুটে আছে ছায়াসূত্র নিয়ে
ছোপ ছোপ রাস্তা ছেয়ে আছে দীর্ঘ রক্তে

মানুষের অন্তিম গন্তব্য জেনে
জীবন বন্দনা করি

যেদিকে তাকাই জরা-মৃত্যুর আস্তিনে ঢাকা
হলঘর, রাজপথ এমনকি জীবিত মায়ের বুক

আমি গর্ভদেশ খুঁজি
ধবল মানুষের রক্তহীন মুখ সরিয়ে

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট