অমুসলিমদের প্রতি উদারতা বিশ্বনবীর অনন্য দৃষ্টান্ত...

 




অমুসলিমদের প্রতি উদারতা 

বিশ্বনবীর অনন্য দৃষ্টান্ত 


মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন 


মানবজাতির আদর্শ ও মডেল হিসেবে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আগমন। তিনি শুধু  মুসলমানদের জন্য নয়,অন্যান্য ধর্মাবলম্বী সহ সমগ্র বিশ্ব জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ। এক্ষেত্রে আল্লাহ রাববুল আলামীন কুরআনে ঘোষণা করেছেন- ‘‘হে নবী আপনি নীতি-নৈতিকতা ও উত্তম চরিত্রের সর্বোচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত’’। আর মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন-  ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর আদর্শ তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ২১)।

আল কুরআনে এসেছে, ‘আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত করে পাঠিয়েছি।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ১০৭)।

আল কুরআনে আরো আছে, ‘আপনিই সেই মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী, যাকে আমি বিশ্বমানবতার জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা সাবা : আয়াত ২৮)। সংখ্যালঘু অমুসলিমদের প্রতি ভালেবাসা কিংবা উদারতা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা)। 

ইসলামে কোনো অমুসলিমকে জিহবা বা হাত পা দিয়ে কষ্ট দেয়া, গালি দেয়া এমন কি গীবত করাও অবৈধ। আল্লাহ তাআলা  ইরশাদ করেন, ‘তারা আল্লাহ তা‘আলার বদলে যাদের ডাকে, তাদের তোমরা কখনো গালি দিয়ো না, নইলে তারাও শত্রুতার কারণে না জেনে আল্লাহ তা‘আলাকেও গালি দেবে, আমি প্রত্যেক জাতির কাছেই তাদের কার্যকলাপ সুশোভনীয় করে রেখেছি, অতঃপর সবাইকে একদিন তার মালিকের কাছে ফিরে যেতে হবে, তারপর তিনি তাদের বলে দেবেন, তারা দুনিয়ার জীবনে কে কী কাজ করে এসেছে’। (সূরা আল আন‘আম, আয়াত : ১০৮)

দুর্রুল মুখতারে আছে, “তাকে কশঝট দেয়া থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব এবং তার গীবত করা মুসলমানের গীবত করার মতোই হারাম।” (৩য় খন্ড, পৃঃ. ২৭৩-২৭৪)

অমুসলিমদেরকে জোর প্রয়োগ করে ইসলামে দীক্ষিত করার কোনো বিধান নেই। আল্লাহ বলেন, ‘দ্বীন সম্পর্কে জোর-জবরদস্তি নেই; সত্য পথ ভ্রান্ত পথ থেকে সুস্পষ্ট হয়েছে। যে তাগুতকে অস্বীকার করবে ও আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে সে এমন এক মজবুত হাতল ধরবে, যা কখনো ভাঙবে না। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫৬)।

ইসলাম অমুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করেছে। ধর্মপালনের পূর্ণ স্বাধীনতা তাদের দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন , ‘তোমাদের দ্বীন তোমাদের, আমার দ্বীন আমার।’ (সুরা : কাফিরুন, আয়াত : ৬)। তবে অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে  মুসলিমদের অংশগ্রহণ করার কোন  সুযোগ নেই। হযরত উমার (রা) বলেন, তোমরা আল্লাহর দুশমনদের উৎসবগুলোতে অংশগ্রহন থেকে বেঁচে থাকো। (আসসুনানুল কুবরা ১৮৮৬২) অন্য বর্ণনায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাসূল (সা) থেকে বর্ণনা করেন, যারা বিধর্মীদের মত উৎসব করবে, কিয়ামত দিবসে তাদের হাশর ঐ লোকদের সাথেই হবে। (আসসুনানুল কুবরা, হাদিস ১৫৫৬৩) 

উমার ইবনে খাত্তাব বলেছেন “তোমরা মুশরিকদের উপসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করোনা। কারন সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে। (বায়হাক্বী)।

মুসলিম জনপদগুলিতে অমুসলিমদের যেসব প্রাচীন উপাসনালয় থাকবে, তাতে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। উপাসনালয় যদি ভেংগে যায়, তবে একই জায়গায় পুননির্মাণের অধিকারও তাদের আছে। তবে নতুন উপসনালয় বানানোর অধিকার নেই। (বাদায়ে, ৭ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১১৪; শরহু সিয়রিল কবীর, ৩য় খন্ড, পৃ. ২৫১)

ব্যবসায়ের যেসব পন্থা মুসলমানদের জন্য যা নিষিদ্ধ, তা তাদের জন্যও নিষিদ্ধ। তবে অমুসলিমরা শুধুমাত্র শূকরের বেচাকেনা, খাওয়া এবং মদ বানানো, পান ও কেনাবেচা করতে পারবে। (আল-মাসবূত, ১৩শ খন্ড, পৃ. ৩৭-৩৮)

কোনো মুসলমান কোনো অমুসলিমের মদ বা শূকরের ক্ষতি সাধন করলে তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। র্দুরে মুখতারে আছেঃ “মুসলমান যদি মদ ও শূকরের ক্ষতি করে তবে তার মূল্য দিতে বাধ্য থাকবে।” [৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৭৩] 

তবে এব্যাপারে ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, “যেসব জনপদকে মুসলমানরা বাসযোগ্য বানিয়েছে, সেখানে অমুসলিমদের নতুন মন্দির, গীর্জা ও উপাসনালয় বানানো, বাদ্য বাজানো এবং প্রকাশ্যে শূকরের গোশত ও মদ বিক্রি করার কোন অধিকার নেই।

ওাসুলুল্লাহ (সা) অমুসলিমদের ওপর জুলুম করতে নিষেধ করেছেন, তিনি বলেন, ‘তোমরা মজলুমের বদ-দোয়া থেকে বেঁচে থেকো, যদিও সে কাফির হয়। কারণ তার (মজলুমের) মাঝখানে আর আল্লাহর মাঝখানে কোনো পর্দা থাকে না। অর্থাৎ তার বদ-দোয়াও দ্রুত কবুল হয়ে যায়।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) অমুসলিমদের সুরক্ষা এবং জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল  (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করল, সে জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না, অথচ তার সুগন্ধ ৪০ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়।’ (বুখারি, হাদিস : ২৯৯৫)।

আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আবী বাকরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন 

‘যে ব্যক্তি চুক্তিতে থাকা কোনো অমুসলিমকে অসময়ে (অন্যায়ভাবে) হত্যা করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন’। [আবূ দাঊদ : ২৭৬০; নাসাঈ : ৪৭৪৭)।

আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রাসূল (সা) নিজের কোনো বাহিনী যুদ্ধে প্রেরণ করলে বলতেন, ‘তোমরা গির্জার অধিবাসীদের হত্যা করবে না।’(ইবন আবী শাইবা, মুসান্নাফ : ৩৩৮০৪; কিতাবুল জিহাদ)

 হাদীসে শরীফে এসেছে, ‘সাবধান! যদি কোনো মুসলিম কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে তার অধিকার খর্ব করে, তার ক্ষমতার বাইরে কষ্ট দেয় এবং তার কোনো বস্তু জোরপূর্বক নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার পক্ষে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ উত্থাপন  করব।’ (আবূ দাঊদ : ৩০৫২)।

 ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ ও মানবিক আচরণ প্রদর্শন মহানবী (সা) এর  অন্যতম নির্দেশনা। হাদীস শরীফে  এসেছে, একদিন সাহল ইবনে হুনাইফ (রা.) ও কায়েস ইবনে সাদ (রা.) কাদেসিয়াতে বসা ছিলেন। তখন তাঁদের পাশ দিয়ে একটি লাশ নিয়ে কিছু লোক অতিক্রম করল। তাঁরা দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাঁদের বলা হলো, লাশটি অমুসলিমের। তাঁরা বলেন, মহানবী (সা.)-এর পাশ দিয়ে একসময় একটি লাশ নেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। তাঁকে বলা হলো, এটা তো এক ইহুদির লাশ। তখন তিনি বলেন, ‘তা কি প্রাণ নয়?’ (বুখারি, হাদিস : ১২৫০)।

হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একদা এক বেদুঈন মসজিদে প্রসাব  করলো। লোকেরা উঠে (তাকে মারার জন্য) তার দিকে গেল। মহানবী (সা.) বললেন, তার প্র¯্রাব  বন্ধ করো না। তারপর তিনি (সা.) এক বালাতি পানি আনলেন এবং পানি প্রস্রাবের  ওপর ঢেলে দেয়া হল।’ (সহীহ বোখারী, কিতাবুল আদব)।

অমুসলিম প্রতিবেশী বিপদগ্রস্থ হলে মুসলমানদের উচিত তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের স্বদেশ থেকে বহিষ্কার করেনি তাদের সঙ্গে মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না। আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।’ (সুরা : মুমতাহিনা, আয়াত : ৮)।

সাহাবায়ে কেরামগণের জীবনী থেকেও  অমুসলিমদের প্রতি সহযোগিতার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়।


(১) সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.-এর  ঘরে একদিন একটি বকরি জবাই করা হল। খাবার রান্না হলে তিনি তার গোলামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে কি এ খাবার দিয়েছ?’ এরপর তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, প্রতিবেশীর বিষয়ে জিবরাইল আমাকে এত উপদেশ দিচ্ছিলেন, আমি মনে করছিলাম, তিনি হয়ত তাদেরকে ওয়ারিশই বানিয়ে দেবেন।’ (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৯৪৩)

(২) হযরত উমর (রা.) তখন খলীফাতুল মুসলিমীন। একদিন এক ইহুদি বৃদ্ধকে দেখলেন মসজিদের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা করে বেড়াতে। তখন তিনি ইহুদিকে লক্ষ করে বললেন, আমি আপনার ওপর ইনসাফ করতে পারিনি যদি আপনার যৌবনে আমি আপনার নিকট থেকে জিয়্যা গ্রহণ করে থাকি আর আপনার  বার্ধক্যে আপনাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেই। এরপর তিনি তার জন্যে বায়তুল মাল থেকে প্রয়োজনীয় ভাতার ব্যবস্থা করে দেন। (কিতাবুল আমওয়াল, ইবনে যানজূয়াহ্, ১/১৪৩, হাদীস ১৭৯)।

অমুসলিমদের সাথে আর্থিক লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সেবার আদান-প্রদান  পরিচালনা করতে কোনো বাধা নেই। 

ইমাম নববী  বলেন, জিম্মি (মুসলিম দেশে মুসলিম সরকারের জিম্মা বা নিরাপত্তায় থাকা অমুসলিম) এবং অন্যান্য কাফেরের সাথে পারস্পারিক লেনদেন ও আদান-প্রদান বৈধ-যদি এর সাথে সাথে এমন কিছু না থাকে যা  হারাম হওয়া সুনিশ্চিত। কিন্তু হারবি (মুসলিমদের সাথে যুদ্ধরত কাফির) এর নিকট অস্ত্র এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম বিক্রয় করা নাজায়েজ।

হাদীস শরীফে এসেছে, আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সা) যবের বিনিময়ে তাঁর বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন।” (সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ৪০/ বন্ধক, হা/১৫৭৬)

হাদীস শরীফে  আরও এসেছে, আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসূল (সা) জনৈক ইহুদির কাছ হতে নির্দিষ্ট মেয়াদে খাদ্য শস্য খরিদ করেন এবং নিজের বর্ম তার কাছে বন্ধক রাখেন।” (সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৪৮/ বন্ধক (كتاب الرهن), পরিচ্ছেদ: ৪৮/২. যে ব্যক্তি নিজ বর্ম বন্ধক রাখে। হা/২৫০৯)

হাদিসে আরও বর্ণিত হয়েছে, দীর্ঘ দেহী এলোমেলো চুল ওয়ালা এক মুশরিক এক পাল বকরী হাঁকিয়ে নিয়ে এলো। নবী করীম ( সা) জিজ্ঞেস করলেন:  বিক্রি করবে, না উপহার দিবে? সে বলল, না, বরং বিক্রি করব। অত:পর নবী করীম ( সা) তার নিকট হতে একটা বকরী কিনে নিলেন।” (সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৫১/ হিবা ও এর ফযীলত৫,পরিচ্ছেদ: ৫১/২৮।)

 অমুসলিম রোগীকে দেখতে যাওয়াও সুন্নত। নবী করীম (সা.) অমুসলিম রোগীদের দেখতে যেতেন এবং তাদের ঈমানের দাওয়াত দিতেন। তাদের সেবা করতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ইহুদি নবী (সা.)-এর খেদমত করত। সে অসুস্থ হলে নবী (সা.) তাকে দেখতে গেলেন। তার মাথার দিকে বসে নবীজি বলেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ করো। তখন সে তার পিতার দিকে তাকাল। পিতা বলেন, তুমি আবুল কাসেমের (নবীর) অনুসরণ করো। ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করল। তখন নবী (সা.) এই বলে বের হলেন, ‘আল্লাহর শুকরিয়া, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১২৯০)

সব ধর্মের মানুষ প্রতিবেশী হতে পারে। প্রতিবেশী যে ধর্মেরই হোক প্রতিবেশী হিসেবে তাদের প্রতি সদয় আচরণ, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা প্রদর্শনে কোনো প্রকার ত্রুটি করা যাবে না। প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষায় বিশ্বনবী (সা) অত্যন্ত গুরুত্ব  দিয়েছেন। তবে শর্ত হল, কোন হারাম কাজে যুক্ত হওয়া যাবে না বা হারাম কাজে সহায়তা করা যাবে না। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সৎকর্ম ও আল্লাহ ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।’ (সূরা মায়িদা: ২)

ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিবরাঈল (আ.) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে অবিরত উপদেশ দিচ্ছিলেন, এমনকি আমি ধারণা করলাম যে, আল্লাহ তাদের ওয়ারিশ বানিয়ে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৬৮; মুসলিম, হাদিস : ৬৮৫৪)

আত্মীয় অমুসলিম হলেও সম্পর্ক রক্ষা করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সমকক্ষ দাঁড় করাতে যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তুমি তাদের কথা মানবে না, তবে পৃথিবীতে তাদের সঙ্গে বসবাস করবে সদ্ভাবে।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৫)।

আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলেন, রাসুলের যুগে আমার মা আমার কাছে এলেন মুশরিক অবস্থায়। তখন আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, আমার মা এসেছেন, তিনি অমুসলিম। আমি কি তাঁর আত্মীয়তা রক্ষা করব? নবী (সা.) বলেন, হ্যাঁ, তাঁর সঙ্গে আত্মীয়তা রক্ষা করো। (বুখারি, হাদিস : ২৪৭৭)

তাছাড়া ইসলামী রাষ্ট্রে একজন মুসলমান যেমনি বাক স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, সমাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা এবং মতামত ও বিবেকের স্বাধীনতা ভোগ করে, অমুসলিমরাও  তেমনি স্বাধীনতা ভোগ করবে। এ ব্যাপারে যেসব আইনগত বিধি নিষেধ মুসলমানদের ওপর থাকবে, তা তাদের ওপরও থাকবে।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট