পদাবলি

 



কাঠগোলাপের ঘ্রাণ

বনশ্রী বড়ুয়া


জল হয়ে যায় পাথর

নুড়ি ভেঙে চুর 

এখানে পানকৌড়ি দেয় ডুব

কোথাও কেউ নেই আজ সবটাই চুপ।


জল নামে ধীরে

বৃষ্টি কাঁদছে দূরে 

ওরা জানে কান্নার নেই রঙ

আজ একলা থাকার শহর।


একা

পাঁজরের ভাঁজে চুল

খানিক অগোছালো

আমি আজ জলে দিয়েছি ডুব।


এখানে বর্ষা এসেছে ঘরে

কাঁপছে দূরে কেউ

তার কাঁপছে ঠোঁটের কোণ।




তুমি ভালো থেকো

রেজাউল করিম রোমেল


তোমাকে নিয়েই লিখছি, হ্যাঁ তোমাকে নিয়েই।

অনেক দিন হলো তুমি চলে গ্যাছ,

সেকথা ভাবতে ভাবতে এখন আর ভাবি না।

তোমাকে না পাওয়ার ব্যর্থতা এখন আমাকে আর কষ্ট দেয় না।

আমার মনের মণিকোঠায়, হৃদয়ের অতল 

গভীর থেকে গভীরতম স্থানে যে জায়গা জুড়ে তুমি আছ;

সাধ্য কার সেখান থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নেবে!

তুমি কি পারবে সেখান থেকে ছিনিয়ে নিতে তোমাকে?


কে বলে তুমি নেই! তুমি আছ-

আমার আকাশে বাতাসে, সাগর নদী মহাসাগর

আমার পৃথিবী মহাবিশ্বে, আমার প্রতিটি শিরায় শিরায়,

রক্তের প্রতিটি কণায় কণায়।


তোমাকে হারিয়ে আমি কষ্টে আছি আমি বেদনাহত,

একথা ভেবে যদি তুমি কষ্ট পাও!

তারপর-ও আমি বোলবো,-

তুমি ভালো থেকো প্রিয়তমাষু, তুমি ভালো থেকো।




নগর জীবন

গৌর চন্দ্র


নগরমুখী জীবনে রোঁদ এসে লুফে নেয় আমাদের নগর জীবন,

জনজীবনে গরম গরম বাতাস গায়ে গায়ে ছড়িয়ে পড়ে!

রাস্তায় হর্ণ বাজিয়ে তান্ডব চালায় লুকাল বাস

জীবিকার জন্য ছুটে চলে কতোনা মানুষ,

কেউ রিস্কা নিয়ে, কেউ অটো নিয়ে, কেউ আবার টিফিন বাটি হাতে নিয়ে চলে ফেক্টরীতে।

এই অসম জীবনে সকালের কড়া রোঁদ যেন এক অশান্তির আগুনের গোলা!

যার, যার, কর্মক্ষেত্রে এসে,

এখানে গ্রামীণ কৃষককে সবাই মিস করে

গ্রামের,

আলা-ভোলা জীবনে কতো না শান্তি, কতো না সুখ,

শহরের নিয়মে ঘেরা জীবন দেখে তাই তাদের  লজ্জা লাগে,

এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে, এভাবে নয়, ওভাবে নয়, কতো বাহানা শহরমুখি মানুষের  মনে!

এখানে গ্রামের মানুষগুলো শহরমুখী মানুষের জীবনের ধারণা নিয়ে একটু হলেও দুঃখ পায়, মনের ভিতর মোচর মেরে উঠে চাপানো কষ্টের কঠিন সময়ে,

গলার জল, শুকিয়ে আসে শহরের পঁচা ধূলো বালির গন্ধ শুকে-শুকে।


অবশ্য, মাঝে -মাঝে রাস্তায় পেন্ট পড়া, রমনীরা পায়চারি করে মনের ঘরেতে বিনোদন দিয়ে যায়,

ওসব সুময়ে ভালো লাগে-

কষ্ট হলে আবার গুলিয়ে যায়

আর এই শহরের খোলা মেলা সুন্দরীরা এখাকার ইট পাথরের বুকেতে ফুটানো তাজা তাজা ঘাস ফুল.....



ধ্রুপদী জীবন

আমিনুল ইসলাম 


জীবনের চপল মায়ায় ডুবে আছি।

দূর হতে ভেসে আসে মিথ্যা মায়ার 

আশ্বস্ত বেঁচে থাকার প্রাণ-বায়ু।


কিছু জীবন চৈত্রের খরার ন্যায় 

পাতাহীন বৃক্ষের মতো।

দ্রৌপদী মায়ায় জীবন হয় 

শুক্র তারার রঙিন প্রতিচ্ছবি। 


জীবন নামের বৃক্ষ টাও একদিন 

শুষ্ক রুগ্ন হয়ে পড়ে সদল স্বাদ 

পান করে চিবিয়ে অর্জুন বৃক্ষের মতো।

শেষ অব্দি পরে রয় নিথর বৃক্ষের দেহ খানা।



নগ্নবসন্ত

বনশ্রী বড়ুয়া


ঠোঁটের অনুচ্চারিত শব্দাবলী,

বিদীর্ণ করেছে হৃদয়

সেদিনের ছুঁড়ে দেয়া মাদল,

আজ ডুবেছে কুয়াশায়।


আঁখি জুড়ে নগ্নবসন্ত,

বেঁচে থাকা মৃত্যুসম যন্ত্রনা

মূহুর্তে ভাবনায় পাচ্ছি সুখ,

ফিরছো স্বপ্নিল কামনায়।



মোহনীয় মিহিন অসুখে 

 মমতাজ রোজ কলি 

          

ভস্ম হতে হতে আগুন হয়ে গেছি 

কয়লার বুকে শ্বাস রেখে.... 

ঘোর লাগা দহন-এ 

উত্তাপের চেয়ে উষ্ণতা বেশি। 

তাই জ্বলে ওঠার চেয়ে পুড়ে যাই আগে

মোহনীয় মিহিন অসুখে.... 

পুষ্প ফুটিয়ে তোলে ফাগুন 

আমি তা দিয়াশলাইয়ের কাঠির মতো 

জিইয়ে রাখি বুকে...






শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট