শব্দমালা

 


শব্দমালা

মমতাজ রোজ কলি


ডাঙা


এক সাদাসিধে নদী তুই...

ঢেউ নাই, গর্জন নাই, ভাঙনের ক্ষিধেও নাই।

একবার মাছ হয়ে পুচ্ছ ভিজে’ই ছিলাম

পাখির মতো ওড়াউড়ি ছেড়ে...


হাত বাড়াইয়ে ছুঁই জমানো আক্ষেপগুলো তোর

পড়ি অনামিকা রেখে বৃদ্ধাঙ্গুলে অক্টোপাস রিং।

দু’হাতের ঝিনুক মুঠোয় আগলেই তোর

বালুকাময় মুক্তোর উচ্ছ্বাস।


তাঁরার মতো...

ভেসে থাকবো বলে শিখেছি সাঁতার!

অথচ ডাঙা ছুঁতে গেলেই আঁটকে দিস পা

বুকে জমানো শেওলার ঝাঁকে...



দেয়াল


জবরদস্তি!

কেরে নেয় রাজ্যপাট লুন্ঠন করে সম্ভ্রম

ছিনিয়ে নেয় অর্থ; কণ্ঠস্বরও...

তাইতো! ময়না, টিয়া খাঁচায় বুলি হারায়

শেখে অন্যের কথা...


শঠ-কপট-লোভীর নৃশংসতা কেরে নেয় অস্তিত্ব।

কিন্তু! অধরা কোকিল, বউ-কথা-কও মুক্ত ;

ডাকে আপন ভাষায়...


আমরাও দেইনি কথার ঝুড়ি-

তাই তো! বুকের সবুজ ঘরে লাল দরজা আঁকি....



বন্ধন


সবুজাভ হলদে নীল। কতো নামে ডাকি তোকে!

কতো আদরে আদার গেলাই। এক বালিশে গল্প বুনি, এক আহারের কাব্য চষি। 

অথচ দিনশেষে ফসলের নামে চিটা তুলি ডোলে! 


তুই হয়ে যাস সবুজ শর্ষে ক্ষেত! দূরের কোন আবাদি মাঠে। 

আমি নিরন্ন চাষির ফুসফুস বুকে দাঁতে খড় কামড়ে ক্ষয়ে যেতে থাকি 

কৃষ্ণকায় জোস্নার মতো কোনো ঘন গাঢ় অন্ধকার স্পর্শে...



আগুনে আগুন জ্বলে 


ভীষণ দাবানল...

সে ঘুমে আমারও নিষ্পত্তি ছিল বটে। 

শিশিরের হিমানী মেখে কলা পাতার ভোজন কাকজ্যোৎস্না ভালোই জানে...


তবু পুড়ছে বুক- আগুনে আগুন জ্বলে! 

ধ্রুপদ রাগে তান্ডব কৈলাশে চষে বেড়ায় 

আপন ভূমি নিশ্চিহ্ন শালুকের ডাটা.... 


ঠিক যাতা নয়; ছাঁকন ছিদ্রই জানে 

আটার আকার সকার.....




শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট