বিজয় বলি তাকে





বিজয় বলি তাকে
সৈয়দ শরীফ

বিজয় আমাদের খুব স্বাদের, খুব শখের, খুব পরিশ্রমের একটা রঙিন সূর্য। যাকে আমরা সহজে পাইনি; স্বাদরে পাইনি । আমাদের মহামূল্যবান এবং খুব প্রিয় কিছু হারিয়ে কিংবা প্রতুল ত্যাগ স্বীকার করেই পেয়েছি এই বিজয় । তাই এই মহান বিজয় বাঙালীর কাছের সব চেয়ে দামী এবং গর্বের । বিজয় বলি তাকে-  বাংলা ভাষায় ‘আম্মা’ ডাকি আমারই আম্মাকে.. বিজয় বলি তাকে-  আমরা ভালোবাসছি সবাই বাংলা কবিতাকে..





একাত্তর একটি অভিধান

কিছু বুলেটের শব্দে ঝলসে গেলো রাত;
বুটের আঘাতে বিধ্বস্তসবুজ প্রান্তর !
মৃত্যুর মিছিলে বিভৎসিত প্রাণ-
স্বজনহীনতায় বুক চিরে খায় আত্মচিৎকার।
ঘুমন্ত ঘাসের তলে বেজে ওঠে মৃত্তিকার ক্রন্দন-
কেঁপে ওঠে বৃক্ষ ফুল শোভিত উদ্যান;
পাখির কণ্ঠে নেমে আসে মৌনতা;
ক্রন্দন ও হাহাকারেই এসে পরে রাতের কিনার।

রোদের ইশারায় ফুটে ওঠে রাত্রব্যাপি চিরে
খাওয়া নারীর বিভৎস শরীর-
(যেন ক্ষুধার্ত শকুনের খামচানো কোনো প্রাণী)
তারপর কিছু স্বপ্নের আহ্বানে একত্র বীর;
খোঁজা শুরু ‘স্বাধীনতা’ শব্দের মানে-
চোখে-মুখে মুক্তির পিপাসা; একাত্তরের অভিধানে
টানা ন’মাস অনুবাদ করে খুঁজে পাওয়া গেলো
শব্দার্থ হলো ‘বাংলাদেশ....’


মানচিত্রের কল্পনা

তারপর পৃথিবীর বুকে একটি মানচিত্রের কল্পনা;
বিশ্বের প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহে দ্যাখানো হলো রক্তাক্ত সিনেমা-
অথচ তখনও পৃথিবী এটাকে শুটিং ভেবে তামাশা করছিল !
বিশ্বের কোনো এক রাষ্ট্রে তখনও কোনো হলরুম ছিল না;
রক্তের স্রোতে কল্পিত মানচিত্র তলিয়ে গ্যালো- পাঠানো হলো কিছু দমকল;
হঠাৎ খবর পাওয়া গ্যালো- যে দেশে তামাশা নামক কোনো হলরুম আছে,
সে দেশে স্রোত থামানোর কোনো দমকল নেই।

তারপর তলিয়ে যাওয়া মানচিত্রে কপাল ঠ্যাকালো দমকল;
মুক্তির সাথে হাত মিলিয়ে শুরু হলো স্রোত থামানোর চেষ্টা-
অতঃপর- স্বপ্নের স্রোতে ভেসে গ্যালো সে রক্ত !
শুধু রয়ে গ্যালো কিছু রঞ্জিত দাগ।
(বন্যার পরে কিছু দাগ তো লেগে থাকবেই)

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট