পদাবলি



সৌভাগ্য
শোয়াইব শাহরিয়ার

বুকের ভেতর বৃষ্টি হয়ে, ক্রমাগত নামছো তুমি
বিষাদের দিনের
ফোঁটায় ফোঁটায় ডুবিয়ে দিচ্ছো রোজনামচা।
করুণ কাহিনী হয়ে—
শূন্যে মিলিয়ে দিচ্ছো ছায়ার কুণ্ডলী।

জুয়ার আসর ডিঙিয়ে, নামছো ক্রমশ স্বপ্নে
শব্দের অশ্লীলতায়—
ডুবে থাকা চোখে চোখ রাখছো
বিষণ্ণতায় বিকল হৃদয়ে প্রণয়ের ঢেউ তুলছো
তবুও তুমি বুকের ভেতর—
 ক্রমশ হয়ে উঠছো কবর!

কী পরম সৌভাগ্য আমার—
বুকের মধ্যে রেখে তোমাকে রোজ ভালোবাসছি...



মানুষের ডাক নাম জীবন না কবর?
জুবায়ের দুখু

দ্বিধাগ্রস্ত জননী-
ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রাত্তি পূর্ণিমা।
একটি নতুন লাশের কবরে।
ওটা মানুষের জীবন না’কি-কবরেরই কবর
এসব বুঝতে হিমশিম খাচ্ছে চন্দ্র দেব।

প্রহর ক্রমে ক্রমে গহীন! ঝড়ে ঝড়ে ঝাড়ছে জোছনা শুক্রাণু। চির নিদ্রায় সমকক্ষ কয়েকটি কবর।
হতে পারে আবরার-নুশরাত অথবা তনু।
ওসব কবরের নাম বাংলাদেশ
ওসব আত্মার নাম জীবন নয়-জন্ম থেকেই কবর।

চিবুক ছুঁয়ে দেই
মজনু মিয়া

কামরসে রতœ সাগর ভরে গেলে হাবুডুবু
করে দেহের ভাঁজে জল
উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে জড়িয়ে
ধরি নরম হাত কালো কেশ

চুমুয় চুমুয় ভরে দেই ওষ্ঠদ্বয় বুকের উপর
জাপটে ধরি মায়াসুধার লালসায়
কাম সাগরে সাঁতরে কূল খুঁজি নিথর
দেহের অবায়রণ্যে

বিবস্ত্র কামতায় মগ্ন থেকে জয় হতে চেয়ে
নিরুপায় আদরের ছুঁয়া দেই চিবুকে
দুনিয়ার সারতম মৌল চাহিদার আর কি
হবে দগ্ধ মনে ভাবি নিরবধি!


বিনিদ্র রজনী
নীলিমা শামীম

দুপুরের খাবার শেষে অপেক্ষা রজনীর
মধুময় রাত্রির আপেক্ষিক সূর্যাস্থ ধমনীর
শুধু তোমার প্রতিক্ষা প্রিয়তম!

এতো মিষ্টি সময়ের কাছে আমি ঋণী
তোমার বক্ষের বোতামগুলো আমি প্রিয়
চোখের পাপড়িগুলো ছোবে হা হা হা!

বুকের বাম পাশ টায় চিন চিন করছি
ভুলতে দিবনা এই আমাকে তাই বলছি
হাতের মুঠোয় ধরে রেখ, পালাতে দিওনা!



নৈঃশব্দ্যে- সমুদ্রপাঠ
রুদ্র সাহাদাৎ

জলের উপর জলের ঢেউ
জলের ভাঁজে নীলজল জোয়ার ভাটার উচ্ছ্বাস
উৎসুক কিছু মুখ উৎস খুঁজে ভালোবাসার

ঝাউবনের বাতাসী সুরে লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি খেলা
পোয়াতি ইলিশও মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়ায়

রুপচান্দার রুপে হাসে জলপুত
সোনাদিয়া, নাজিরারটেক দৌঁড়ে হোসেন মাঝি

পর্যটক হাসে সমুদ্র নিকটবর্তী হলে প্রতি ঢেউে ঢেউে
আমিও নৈঃশব্দ্যে- সমুদ্রপাঠ করি অজান্তে
 বালিচরে বসে

প্রেমিকা ছিনতাই
তারেকুর রহমান

কত বিনিদ্র রজনী কেটেছে আলেয়ার পেছনে
মফস্বল শহরে তখনও শীত নামেনি
ধোঁয়া উঠানো চায়ের কাপে ঠোঁট লেগেছিল
পেঁচার কণ্ঠে বিষাদের ছায়া
সাইরেন বাজিয়ে চলে গেল এ্যাম্বুলেন্স
বুকের এক কোনে জমে ছিল একটুখানি কষ্ট
হৃদয়ের ভেতরের ঘুঘু পাখিটা মরে গিয়েছিল
কষ্টের পাহাড় বুকে নিয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ল্যাম্পপোস্ট
প্রেমিকার শীতল হাত কারো হাতের উষ্ণতা খুজছে
বিষাদের ছায়া নেমে এলো প্রেমিকের বুকে।

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট