পদাবলি : ০২

 



সাড়ে তিন হাত মাটির ঘর                      

রিয়া সাহা অর্পা


সাড়ে তিন হাত মাটির ঘর কিনেছি তো জন্মতেই,  

ধরা যখন খুব ক্লান্ত নিয়ে আমায়, 

ঠাঁই সে ঘরেতেই,

অতলে একলা কায়া আমার ,

ভবঘুরে আত্মা খুঁজে চেনাজন না পায় ।

নাই প্রদীপ,

তো অন্ধকার-ই বা কই !

চিৎকার নেই কাঠের বাক্সের বাইরে,

অন্দরে নিস্তব্ধ সংসার।

আধভেজা হয় না মাটি ,

আসে না দ্বারে কেও !

আসে তো অতীত !!

ডাকে আমারে,

ফুসরত নাই একলা সঙ্গের !

দেখো তবে সঙ্গ দেয় আজ কে তোমারে !!


এলোমেলো চুল, ফ্যাকাশে দাগ 

মা দেখলে শাসনে টেনে নিতো আঁচলে।

অচেতন মন, 

কোথায় গেল শত নিয়ম !

বাবা থাকলে রাগ করতো বেশ করে।

প্রিয় যদি আজ কথা মিটাতে আসেই-বা,

গভীর অতলে দেখেও দেখে না আমারে। 


নিসর্গ ঘরখানা আঁকড়ে ধরে বলে,

শান্তির ঘুম দাও, রজনী !

কায়াও যে থেকে যাবে ধরণীর-ই।

অনন্তকাল নয় সকল তা তো তুমি জানতে ! 


আপন আমার,

নিঃশেষ চিহ্ন অক্ত ,

সাড়ে তিন হাত মাটির ঘর !!!

আমার অজানা অন্বয় !!



ধাওয়া

সুজন আরিফ


অঘোষিত সিস্টেম দাঁড়িয়ে যায়

কার ইশারায়?

পুঁজির মিছিল বের করে

কেউ লুকিয়ে কেউবা বন্দনায়।


শতভাগ জয় নিয়ে ঘরে ফিরে ঈশ্বর

নেই কোনো হাওয়া

আহা! মানুষ সন্ধ্যার মত মরে যায়

খেয়ে রাত্রির ধাওয়া।



উদয়াস্ত

 সেলিম খান


সূর্য ডুবে যাচ্ছে, আমিও যাবো।

শুধু সময়ের অপেক্ষা।

পাখিরা সারাদিন ঘুরে ফিরে একসময় তার আপন নীড়ে ফিরে যায়,

শুধু জেগে থাকে নিশাচররা।

আমিও আমার আপন নীড়ে যাবো,

অবশ্যই যাবো, সময়টা আসতে দেও।

তখন হয়তো তোমার অপেক্ষা করে,

কফির মগটা হাতে নিয়ে অপেক্ষা করা হবে না।

কে জানে ওখানে কফির ব্যবস্থা আছে কিনা?

থাকতে পারে, জানা নেই।

আমি চলে গেলে পৃথিবীর ভার কমবে না হয়তো,

আমার জায়গা দখল করবে অন্য কেউ।

হয়তো পৃথিবীর ভার কমার নয়।

 আমি অস্ত যাবো নিশ্চিত, আজ হোক, কাল হোক, কিংবা পরশু।

এসেছে নতুন সূর্য জায়গার অভাবে করছে আনছান,

আমি বরং অস্ত যায় বাঁচুক নতুন প্রাণ।




ব্যবধান ভুলে হৃদয়ের চাওয়া

মহিউদ্দিন বিন্ জুবায়েদ


অনেক ব্যবধান মধ্যিখানে..

তুমি অনেক দূরে নাগালের বাইরে

কুয়াশাবেদে মেঘপুঞ্জ সপ্তআকাশ ওপরে

তবু.. ডাকলেই যেন কাছে পাই

একান্ত নিভৃতে নিরবে কথোপকথনে।


প্রতিরাত তুমি খুব কাছাকাছি আছো..

ব্যবধান ভুলে হৃদয়ের চাওয়ায়। মন

থেকে মনের গভীরে...খুব কাছে।



রঙহীন মরিচীকা 

রুদ্র সাহাদাৎ 


মানুয়ের ভিড়ে থেকেও আজও মানুষ চিনি না 

জীবন জীবন চিল্লাতে চিল্লাতে জীবনের অর্ধেকই কেটে গেলো অজান্তে কেউ জানে না


প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠে দেখি রণক্ষেত্র, যে যার মতন গন্তব্যের সন্ধানে ছুটছে

মুখোশের মেলায় হাট বসে রঙিণ আয়োজন 

মাঝেমধ্যে সব কিছু অচেনা লাগে ফ্যাকাশে চারিধার রঙহীন মরিচীকা

কেমন করে বেঁেচ থাকছি,কেউ জানে না ।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট