পদাবলি




মা আমার ভালো থাকুক
মোকসেদুল ইসলাম

কেউ জানে না আমার কেন বুকের ভেতর ব্যথা জাগে
কেউ ডাকে না খোকনসোনা আয় কাছে আয়
কিসের ব্যথা, কিসের ঢেউয়ে ভাঙ্গছে সুর
কেন চাঁদের সাথে বলিস কথা একা একা?

কেউ বলে না ওরে খোকা চোখে কেন জলের ঢেউ
আর্শিবাদের হাত দু’টোতোর এমন কেন মলিন হলো
চুলগুলো তোর এমন কেন লাগছে যেন পাজির মতো
এখনও কি তুই রাত্রি জাগিস পড়ার ছলে দুষ্টু ছেলে?

মাথার ওপর হাতটি রেখে কেউ বলে না ‘পাগল ছেলে’
কপাল চুমে কেউ বলে না ‘আমি তোর মা আছি না?’
‘কেউ দেখেনি’ এমন করে একটি টাকা দেয় না হাতে
চুপিসারে আদর করে কেউ বলে না আমার রতœ ‘কবি ছেলে’।

রাতটুকু আর কেউ জাগে না মাথার পাশে একলা বসে
কেউ ডাকে না রাতদুপুরে আদরপ্রিয় নামটি ধরে
মা আমার থাকুক ভালো দূর আকাশের ঐ দেশে
এখন আর কেউ বলে না ‘আমি তোর মা আছি না’।

এমন কেন হলো মাগো
চন্দনকৃষ্ণ পাল

ফোন করতেই বললে তুমি ‘সবাইকে চাই, চলে আসিস
পিঠে হবে এ পার্বণে, যে পিঠে তুই ভালোবাসিস।
শুকনো পাটি, পাটিসাপটা, পদ্মরুটি হবেই হবে
জমে যাওয়া মাছের পেটি, মুড়িঘন্ট ঠিকই রবে।’
ধনেপাতার ঘ্রাণ পেয়ে যাই মাগো তোমার ফোনটা থেকে
এ পার্বণে কে আটকাবে তোমার প্রিয় এ ছেলেকে।
মম-সিঁথি নাচতে থাকে দেখা হবে ঠামার সাথে
পিকনিক হবে সবাই মিলে শেষ পৌষের গভীর রাতে।
গরম পিঠে চুলোর পাড়ে বসে বসে হবে খাওয়া
কি আনন্দ কি আনন্দ পার্বনেতে মাকে পাওয়া।

কথা দিয়েও রাখলে না মা কোথায় গেলে একদিন পর
সবাইকে আজ রেখে গেলে শূন্য করলে তোমার এ ঘর।
হাসি মুখে তোমার ছবি তাকিয়ে থাকে দিবস রাতি
তুলসীতলায় সন্ধ্যেবেলায় জ্বলে না তো তোমার বাতি।
মুমু-কুমু বাতি জ্বালায় দুচোখ ভরা জল নিয়ে আজ
খুব কষ্টে ওরা থাকে সকাল দুপুর বিকেল ও সাঁঝ।
কি হতো আর কদিন পরে যেতে যদি কি হতো আর?
জল ফেলছে ক্যাকটাস ঝোঁপ,কাঁদছে তোমার কামিনী ঝাড়।
ফলজ বনজ বৃক্ষ তোমার কাঁদছে চেয়ে আকাশ পানে
সারা পাড়ায় হারানো সুর উঠছে ভরে করুণ গানে।

এমন কেন হলো মাগো কোন সূত্র পাই না আমি
ভালো থেকো ওপার লোকে,ভালো রাখুন অন্তর্যামী।

অন্তরালের আরশিনগর
পরান জহির

হাসনাহেনা আমার মায়ের নাম ছিলো। মা ছিলো পৃথিবীর ভিতরে আমার অবিকল্প একটি পৃথিবী।
মায়ের শরীরে বাজে সময়ের তার। আর মাতৃহারা হওয়ার আগপর্যন্তও চিনিনি সেই আরশিনগর। দেখি নিজস্ব শরীরের সহোদর অশরীর অনুভব। আমি মুছে যাওয়া কররেখায় এঁকে দেই ব্রহ্মা-। অন্তরাল থেকে নিনাদ হয় নিসর্গের উচ্চাঙ্গধ্বনি। মায়ের শরীর ফুঁড়ে বেড়িয়ে যাই কুঁড়ি মোহনায়...




অভিনেত্রী মা
হোসনা মুরাদ

কষ্টগুলো... অনলি মি
ভালোবাসাগুলো ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি
অভিনয়গুলো পাবলিকলি !

অভিনয় আমাকে মানায় না ?

কি করি বলো.......মা’র দেয়া
অমূল্য স্ক্রিপ্ট এ দুটো লাইন ছিল...
‘যত ভালো অভিনয় করবে
তত ভালো অভিনেত্রী হবে’

একধাপ বেশি মাত্রা;
কিশোরী বয়সে তরুণী হবার
তরুণী বয়সে ঘরণী হবার
আর ঘরণী বয়সে প্রৌঢ়া...

মা আমার শরৎ চন্দ্রের শ্রেষ্ঠ নায়িকা
জীবন যুদ্ধে হার না মানা যোদ্ধা
কোষ্ঠী পাথরে যাচাই করা অভিনেত্রী !
সেই মায়ের গর্ভে আমি হয়েছি
মূর্খ, গোমূর্খ, বুঝলা?

মা বলেছিলেন-
‘মেয়েদের জীবন হলো
কঁচুপাতার উপর টালমাটাল পানি,
পড়ে যেতে পারে সময়ে-অসময়ে’
একি বিস্ময় !
কয়েক যুগ পর আমি যে সেই সুর-ই শুনছি
‘আহারে জীবন, জলে ভাসা পদ্ম যেমন....'

তবে কি মা আমার জোতিষী ছিলেন..
নাকি দার্শনিক ?

তার এক নোখেরও যোগ্যতা আমার নেই
আমি আধুনিকাও নই...
বিজ্ঞান বুঝিনা, দর্শন বুঝিনা
বুঝি কানের মিথ্যা না শোনা
চোখের ভুল না দেখা
আর অন্তরাত্মার অকপটতা ।

আমার বিশ্বাস আর মা’র দেয়া
বেদবাক্য সম্বল করে
আজো আমি ভালো অভিনেত্রী হবার
নেশায় বুদ!

ত্রিভুবনের শ্রেষ্ঠ শব্দ
সৌর শাইন

আমি অনবরত শব্দের পিছু ছুটছি, যখন শব্দই আমার জীবন,
জীবন আমার শব্দের স্বরলিপি।
চারদিকে কত শব্দ... দ্রুত-মৃদু-মন্দ-মন্থর গতির শব্দ।

কোনো শব্দ পিপাসার্ত, কোনটি মলিন, রুক্ষ, দুঃখময়,
কিছু শব্দ শতাব্দীর গলা টিপে ধরে,
কিছু শব্দ সভ্যতার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে,
কটমটে কিছু শব্দ বিভীষিকা নিয়ে ধাবিত হয় ধ্বংস সাধের লক্ষ্যে।
হাস্য রহস্য কিছু শব্দের চিরন্তন স্বভাব।
কতিপয় শব্দ পারমাণবিক বিশ্বের স্নায়ু যুদ্ধের পঙক্তি সৃষ্টিতে ব্যস্ত।

এতো শব্দ থেকে আমি বেছে নিই একটি শব্দ।
এ শব্দটি আমাকে খুঁজে দেয় মাটির পৃথিবীতে স্বর্গের সন্ধান,
অমৃত স্নেহের অপার সুধা।

ঝিরিঝিরি ঝর্ণা হঠাৎ থমকে যায় এ শব্দের মাধুর্যে,
চির চঞ্চল দখিন হাওয়া বার বার তাকায় আমার মুখের দিকে,
পরম শান্তিতে আমি উচ্চারণ করি ত্রিভুবনের শ্রেষ্ঠ শব্দটি ‘মা’।



আমাদের মা
গোবিন্দ ধর

আঠারো বছর ধরে মা বিছানায় শায়িত, মাঝে মাঝে উঠতেন
বাইরে একটু পায়চারী করা
বারান্দায় হাঁটতে হাঁটতে তিনি ক্লান্ত হয়ে যেতেন।

মা আমাদের কোনদিন রান্না করে খাওয়াননি।
বাবা অফিশ যাওয়ার আগে
সকালে এক সাথে পাত পাড়তেন।
সকলের খাওয়া হলে তিনি অফিস যেতেন।
সকালের রান্না থাকতো
দুপুরে স্কুল থেকে এসে আমরা খেতাম।
বাবা রাতে বাসায় এসে ক্লান্তি ঝেড়ে
রাতের খাওয়ার হাঁড়ি চাপাতেন।
লেখাপড়া চেষে আবার একসাথে আমরা ভাইবোন মিলে
একসাথে খেতাম।
বাবা তারপর খাওয়ার শেষে
গরমকালে বাইরে বেনচ্ েবসতেন।
ক্লান্তিহীন গল্প স্বপ্ন, বিলাতেন।
মা সর্বদা মনোযোগসহ গল্প শুনতেন। স্বপ্নগুলো বুনতেন।
বাবার ছায়াসাথী মা।
মা সেরকম কোন কাজই করার সামর্থ্যে নেই।
দীর্ঘ রোগ ভোগ। দীর্ঘকাল বিছানায় তিনি।

হাপরের মতো শ্বাস নিতেন। তবুও মাকে কোনদিন রোগমুক্ত পাইনি।

বিছানায় থেকে থেকে মা
সারাবছর বই পড়তেন।
যা সামনে আসতো তাই পড়তেন।
বই পড়তে পড়তে মায়ের মুখমন্ডল অবিকল
বইয়ের মতো দেখাতো।
মায়ের ছিলো না কোন গোড়ামি।
কারো কাছে কোনো নালিশ জানাতে দেখিনি মাকে।

অসুখ মাকে শয্যাগত করলো।
শ্বাস নিতে কত কষ্ট
কোনোদিন মা তার কষ্ট পাঁচকান করেননি।

এত কষ্ট,এত অসুখ, এত অসুবিধে
আমরা তবু তিন ভাই পাঁচ বোনের সংসারে বড় হলাম।

মা এই একটি মাত্র শব্দঋণে আজীবন স্মৃতিপট লেখা আমার ললাট।


চোখের প্রতি মায়ের বিশ্বাস
অসীম মালিক


চোখের জমিতে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়তে দেখে
আমার মা, বাবাকে প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিল ।

মা বুঝেছিল, চোখের জমিতে ফ্ল্যাটবাড়ি গড়ে না উঠলেও
অস্ত্রকারখানা গড়ে উঠবে না কোনোদিন ।

চোখের প্রতি মায়ের বিশ্বাস, সোনালী ধানক্ষেত হয়ে
হাওয়ায় ভাসিয়ে দিত নবান্নের চিঠি ।

মাটির উঠোনে লক্ষ্মীর পা এঁকে কোজাগর চাঁদে ভেসে যেত শহর-নগর ।
কিন্তু নতুন ধানের গন্ধে বাবা ভেসে যেতেন না
মা’র চোখের জমিতে তুলে রাখতেন-ধানবীজ ।


মায়ের অসুখ
তৌহিদ আহাম্মেদ লিখন

ইচ্ছে করে পুরো শহর কিনে দেই মাকে ।
খরচপাতি লাগবে অনেক, সেটা সবাই জানে!
তবুও মনে ইচ্ছে জাগে;-বাবার এখন বয়স বাড়ছে।
শরীরও খারাপ হচ্ছে, আমাদের দুই ভাইয়ের প্রতি নির্ভর হচ্ছে।
মায়ের শরীর অনেক খারাপ। গলায় হয়েছে টিউমার।
কেউ বলছে অপারেশন করলে ক্যান্সার হবে,
কেউ বলছে মারা যাবে ইত্যাদি। এসব বলে ভয় দেখায়!
আচ্ছা শুনি ডাক্তার ছাড়া ওদের এসব কথা কে শেখায়?
এসব কথা শুনে বিধাতার চরণে
মায়ের আরোগ্য লাভের জন্য আকুল মিনতি করে বলি,
‘মা যেন একশ বছর বাঁচে’
আমার তো আর টাকা নাই  মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্য।
তাই বিধাতাই হোক মায়ের পরম চিকিৎসক।

সে ছায়া তোমারই
চৌধুরী নাজির হোসেন

অক্ষরহীন এক অক্ষরেখায়
ঘুরতে ঘুরতে নিজের ঠিকানা মুছে
বজ্র বিদ্যুৎ ধারণ করো,
সন্তান যেন থাকে নিরাপদে!

ঝঞ্ঝাভর্তি খাতা তোমার জীবনী
ছিন্ন আঁচলের আড়ালটুকু ইতিহাস
নোনা ঢেউ, পোড়ো মাটি ভূগোলেও..

তোমার অতীত নেই, ভবিষ্যত নেই
এমনকি বর্তমানও...
মানচিত্রে প্রতিটি রেখায় জরাজীর্ণ
ফাটলের দাগ,পাংশু বর্ণের
অথচ ত্রিকাল জুড়ে যে অনর্থ ভালোবাসা
ত্রিলোক জুড়ে নিরর্থ মায়া
চিকচক্রবালে সে ছায়া তোমারই

আমার অক্ষর জ্ঞান
নিরক্ষর মায়ের চোখের তারা
শিকড়ের মাটি
দুখিনী মায়ের ভালোবাসা
আর আলো জল হাওয়ায় বেড়ে ওঠা যেটুকু,
সে তো তোমার শুষ্ক
চোখের কোণায় স্বপ্ন প্রজ্জ্বলন ।


আম্মা, আমার ঈশ্বরের সাক্ষাৎ প্রতিনিধি
জোবায়ের মিলন

‘একটা শাড়ীকাপড়, একটা ব্লাউজের পিছ্ দরকার। যদিও জরুরি না।’
জানিয়েছিলেন আম্মা। উত্তর করিনি, বলেছি, দেখি-
মাস শেষে কারখানা বন্ধের ঘোষণা এলো
আট মাসের বকেয়া পরের মাসেই দেবে বললেও
তালা বন্ধ ফটকের ভিতর ঢুকা গেল না,
দরজার’পরে নোটিশ ঝুলানো- দুঃখিত।

দু:সংবাদটি ঘরে জানাতে পারিনি
একাজ ওকাজ করে অফিস পাড়ায় ঘুরে ঘুরে
ক্লান্তি চলে আসলে শেষ সাক্ষাতকারে জানলাম-
চাকরির বাজার ভালো না, সময়টা মন্দা।

আব্বা তাঁর পেনশন বিক্রি করে দিয়েছিলেন
আম্মা তাই চিরকালের মতো অসহায়ত্বের ঘোর ছেড়ে
আনন্দালোকে ভাসতে পারেননি কোনো বেলায়,
আমার হাতেই তাঁর তৃপ্তি-
হাতপোড়া আমি শ্রমের বদলে উপার্জন খুঁজে
চষে বেড়াই পিচের শহর।
ইট আর পাথরেরা জানে, দেয়াল ও প্রাচীরেরা জানে
রোদে গলা বিটুমিন জানে আমার একটা গল্প আছে-
দিন গত হয়, রাত গত হয়, সূর্যের তপ্ত বমি
মাথায় নিয়ে ফিরি বিবর্ণ বাড়ির সীমানায়
আম্মা ভাবেন, পুত্র তাঁর, শেষ ভরসার উষ্ণ চৌবাচ্চা;
আমি জানি, আম্মা, আমার ঈশ্বরের সাক্ষাৎ প্রতিনিধি।

-তা’ই ভেবে, আমি বিক্রি করতে থাকি
সঞ্চিত সমস্ত অহংকার, আর...


হাত
লুৎফুন নাহার লোপা

শরীর জুড়ে ঘিরে আছে তাপমাত্রার শোক,
আমার চিৎকার ছড়িয়ে যাচ্ছে রুগ্ন পৃথিবীতে।
ভ্যাপসা চোখে কালো দেখাচ্ছে বৃক্ষগুলো,
তার তলে অসংখ্য শিশুবৃক্ষ হাত বাড়িয়ে
তৃলে নিচ্ছে প্রেম,সম্মুখ প্রার্থনায়,
আমার তপ্ত দু’চোখ বৃক্ষহীন, বৃষ্টিহীন ;
একটি হাতের অপেক্ষায় ভুলে যাচ্ছে সবকিছু
আমার দ্বিখ-িত শরীর সে জুড়ে দিচ্ছে বহুবার,
সেই অমসৃণ হাত দু’টো প্রতিদানহীন পূর্ণতা,
শুধুই মা হয়ে দূর করছে অন্ধকার।

গন্তব্যহীন গন্তব্য
রাহাত রাব্বানী

তোমার আশ্রয় ছাড়া-
বিষাদ ভরা এতসব পা-ুলিপি
বিষণœ বিধুর আমার কবিতার খাতা; দুর্দিনে-
কার বুকে মাথা গুঁজবে?
রৌদ্রদগ্ধ কবিতার বিশুষ্ক পঙক্তিমালা-
কার কাছে পাবে সেবা, শুশ্রƒষা?

তুমি না দিলে আশ্রয়
বেদনাহত এই কবির শূন্য ঝোলা, কার কাছে দাঁড়াবে-
                            ভিখেরির মতো?
কার কাছে পাবে সামান্য ডাল-ভাত;
                 শুকনো মরিচ, ঠা-া জল?

বোকা মানুষগুলো রক্তারক্তি বুঝে,- কবিতা বুঝে না!
বৃক্ষ জানে অনন্ত প্রতীক্ষা; নদী জানে অবিরাম ছুটে চলা।
একমাত্র তুমিই জানো-
                              কষ্টের দাবদাহ;
                              কবির নিঃসঙ্গ অভিধান, কবিতা।

এমন কোনো দীঘি নেই, যেখানে
অনায়াসে ফোটতে পারে কবিতার পদ্ম।
এমন কোনো উদ্যান নেই, যেখানে
মামুলি আদরে বেড়ে ওঠবে শব্দের চারাগাছ।
                  অথচ-
তোমার আশ্রয় পেলে মুহূর্তেই
পৃথিবীর তিন ভাগ সমান জলাশয় পূর্ণ করা যায়-
              কবিতায়, কবিতায়।
প্রতিটি বৃক্ষেই ফোটানো যায় কবিতার বকুল।

যদি তুমি না দাও আশ্রয় -
আর কোনোদিন কোনো কবিতা লিখবে না,
এ কবির বেদনাগ্রস্ত হৃদয়। উড়বে না-
অক্ষরের প্রজাপতি। ফুলে ফুলে ছুটবে না ভ্রমর।

তোমার আশ্রয় ছাড়া-
পুরো পৃথিবী ভালোবাসাহীন, খাঁখাঁ বিরান।


মায়ের কাছে চিঠি
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ

এই যে তোমায় লিখছি চিঠি জবাব দিও মা,
কেমন আছ জানিয়ে দিও
কষ্ট নিও না।

আমরা তো বেশ ভালোই আছি তোমায় ভুলি নাই
কিন্তু তোমার শীতল পরশ যাদুর তুলি নাই।

তোমার হাতের কমলা চারাএখন দিচ্ছে ফল
সেই ফলেতে হাত দিলে মা
চোখ করে ছল ছল।

তোমার হাতের নকশি কাঁথা অল্প শীতের ওম
সেই যে তোমার তাল পাখাটা ভাবনা ভোলায় কম।

ভাবছো মাগো এখন কেমন কাটাই ভয়াল রাত?
নামলে আঁধার হামলে করি
ভয়কে কুপোকাত।

এখন আমি অনেক বড় অল্পে ডরি না
ভয় গুলো সব জয় করেছি কল্পে মরি না।

রাত্রি যখন আঁধার নামায় স্বপ্ন মেলে জাল
তখন তুমি জবাব দিও
সময় পেলে কাল।


সব আয়োজন পড়ে থাকে
সজল কুমার টিকাদার

ম-এ আ-কার দিলেই মা’কে ধরা যায় না।

যিনি এক গভীর প্রত্যয়, ভালোবাসায় জাহ্নবী,
তাঁকে কি কখনও
স্বর আর ব্যঞ্জনের দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা যায়?

তাই দিনান্তে দেখি
সবকথা, সব আয়োজন পড়ে থাকে
                                      নৈবেদ্যর থালায়।
শূন্য মনে হয়, শুধু শূন্য মনে হয় !



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট