পদাবলি



মুষ্টিভিক্ষা প্রেম
ফখরুল হাসান

স্তনের কালো বৃত্তের পুরোহিতরা প্রেম জুয়াড়ী
স্তনবৃত্তের সুইচ টিপে জ¦ালিয়ে দেয় যৌন বারুদ।
কথার জাদুতে কামনার জোয়ার তুলে ম্যাজিকওয়ালারা
কুলকুল জল তরঙ্গে শস্য বুনে অসংখ্য যুবক,
দুই উরুর মাঝে ডুবে মুক্তা খোঁজে দস্যু ডুবুরী।
ভ্রমণে উরুদ্বয়ে নি¤œ ভাগে জ¦ালায় নগ্ন টর্চলাইট।
ধৈর্যহীন যুবক, ঠোঁটে ঢেলে দেয় সোহাগের বিষ
নাভির গর্তে যে খুঁজে শান্তির ছায়া, সে পাগল।
নারীর ঘ্রাণে যার তুমুল নেশা হয়, সে জন্মান্ধ বধির।
চোখের নদীতে ¯œান করে, লোভী বাউ-ুলে বাউল।
প্রেমিক তাই তোমার কাছে একমুষ্টি প্রেম ভিক্ষা চাই।


মহেশখালীল মুখ   
মিজান মনির

সমুদ্রের গর্জন দূর পাহাড়ে প্রতিধ্বনি তুলে
ছড়িয়ে পড়ে তামাম লোকালয়ে-জেলেদের ছোট্ট নৌকো
দোলখায় ঢেউয়ের পরতে পরতে,
তেমনি সারাক্ষণ দোলা দেয় হৃদয়ে আমার মহেশখালীর চিহ্ন।
পাহাড়ের সব নীল অশ্রু ঝর্ণাধারার মতো গড়িয়ে পড়ছে নীচে
মিশে যেতে সমুদ্রের সাথে।
তদ্রুপ অশ্রু ঝরে গড়াগড়ি করে বুকে আমার
শুধু মহেশখালীর রুপের লাবণ্যময়ী ভালবাসার টানে।
পাহাড়ের শুষ্ক ঠোঁটে আনমনা হয়ে খেলা করে মেঘের ছায়া,
সূর্যাস্তের ক্লান্ত আলো
সমুদ্রের গর্জনের সাথে মিশে যায়
রুপালী সৈকতের কাছে।
এমনি আনমনা থাকে দু’নয়ন আমার
ভাসে শুধু মহেশখালীর মুখ।


পাতা বাহার
দাউদুল ইসলাম

জলসা ঘর আহবান করছে নতুন সাজসজ্জায়, অজর গানে, নিপুণ নৃত্যে,
গরগরে চেতনায়, দীর্ঘ পুরনো জল সাগরে... সুরে- ছন্দে মোহিত
হেরেমের অন্দরে! আসুন, পরম অভিসারে
নবালোকের সুষম বণ্টনে ভাসুন প্রাচীন রওশনে!... আসুন সুনসান জ্যোৎস্নায়;
দুধে আলতার মিশ্রণে অভিভূত হওন! সুরভিত হওন!
ঘুঙুর তালে সমাহিত মন। মদন মোহন দোলায় সৃজন রজনী...
পর্দার আড়ালে মিথের দর্শনে উদ্ধার করুন সম্প্রীতির মর্ম, শিল্পের বাণী, রমণীয়া মন;
স্বর- সরলার টানে হয়ে উঠুন আসরের মধ্যমণি। কর্পোরেট মোড়ল।
সবার অগোচরে হয়ে উঠুন সুযোগ সন্ধানী শিকারি!... গোপন মন্থনে
মোক্ষগ্রাসে, পরম সৌষ্ঠবের সূক্ষ্ম সূত্র ধরে খুলে ফেলুন বন্ধনীর গিট...নন্দনসাধনে!

ভাববেন না-
আপনাকে অভিনন্দন জানাতে জমকালো আয়োজনের অভাব হবেনা।
সমাজ সৃজনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফুটবে আপনার আদর্শের বাহার, পাতা বাহারে...



স্নেহের ধারাপাত
বিটুল দেব

স্নেহের ধারাপাতে জমিয়েছে পিতামহ সমাজের মর্যাদা । তিলে-তিলে গড়ে তুলে সামাজিক সন্মান । দাপটে চলেছে ফুলিয়ে বুক । স্বয়ং বিগ্রহ হয়ে হৃদয়ে স্থাপন করেছে মমতার মন্দির । প্রতিটা মধুর কথায় আদর্শের আবাস ধ্বনি ছুঁয়ে দেয় অন্তর । সেই গাল্পিক দাদা ভাই দান করতে শিখিয়ে ছিল দয়া । বুকে জড়িয়ে নিতো পাহাড়ের ঝোপ-ঝাড়, লতা-পাতা আর বিশাল বট বৃক্ষ ।
বুদইল্লার বাপ ব্যতীত পৈতৃক আদর্শের বীজ সকল সন্তানের অন্তরে নিহিত হয়নি । শাদামাটা বুদইল্লার বাপ মনে করে, ভিটে মাটিতে সন্ধ্যা প্রদীপ চেয়ে-চেয়ে মৃত্যুতে  সাধের সুখ আছে ।
না হয়, সেও অনন্যা কাকের ন্যায় নগরে বাসা বুনার বাসনায় মগ্ন থাকতো ।  




হিসেব করা হয়নি
শরীফ সাথী

শুধু ভালোবেসে গেলাম।
প্রতিদানে কতটুকু পেলাম
হিসেব করা হয়নি।
আঘাতের পরিমাণ হয়তো;
চোখে ক্ষয়ে ক্ষয়ে
দু’গাল বেয়ে বেয়ে
বুকের সাগরে ঢেউ তুললো,
আনন্দের পরিমাণ
দু ঠোঁট হেসে হেসে
ভালবেসে প্রকাশ করলো কিনা?
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
দেখা হয়নি?



অনন্ত দুই হাত
 মহাজিস মণ্ডল

যে নদী কাছে আসে ভালোবেসে অপার
অনেক দূরের রঙ হয় তো তখন বিকেল
একটা সে েেকান পাখি একটা সে গান গায়
জীবনের জানালা খুলে বসে থাকে অঢেল আলো

কত শব্দ কত শূন্যতার জন্ম হলে
দিনের খোলসে বাড়ে দিন রাতের খোলসে রাত
শান্তি শুধু চেয়েছি আবাদ শান্তির পারাপার
আজো আছে হূদয় বাড়িয়ে তার অনন্ত ওই দুইহাত !


কবিতার শহরে
সাঈদ চৌধুরী

এই কবিতার শহরটি এমন হয়েছে
এখানে কাকেরা খাবার পায়
শিশুগুলো দাঁড়িয়ে থাকে অসহায়ের মত
এক পাশে আলাপ হয় বিয়ে বাড়ির দাওয়াতের,
কোন জমকালো জলসা ঘরের অথবা মদ্যপ কোন নগ্ন পার্টির
শিশুগুলোর দৃষ্টি তখন রসালো আলাপে
তারা ঐ সভ্য লোকগুলোর রসালো আলাপ খায়
মুখে খাবারের রুচিতে লালা ভরে ওঠে
তারপর প্রশান্তির ঢোক গেলে
অভিজাত খাবারের তীব্র গন্ধের কথা মনে করে
কাক একটি কালো পাখি বিশেষ
ময়লায় তার বিচরণ, ময়লায় তার বসত
এখন এই শহরে ময়লার স্তুপে সদ্যজাত মানব ভ্রুণ
অথবা শিশুর কোমল দেহ পলিথিন পেচানো হয়ে পড়ে থাকে
আগে শকুন খেতো পার্থক্য শুধু এখানেই
এখন কাকে খায়
অসম প্রতিযোগীতার ফলগুলোর বিস্তৃতি
সভ্যতার দেয়ালকে আঠালো করে
আর মানবতা নামক চিরাচরিত নিয়মটি
বিতারিত হয়
এভাবেই হয়ে আসছে, হয়ত এভাবেই হবে
তবুও আমরা নিজেদের মানুষ বলতে শিখি
পেশাদারিত্বের বিদ্যালয়ে গিয়ে....!!



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট