পদাবলি : ০১



কোনো একদিন
সাদ্দাম মোহাম্মদ

কোনো একদিন এভাবেই সংক্রামক হয়ে উঠবে ভালোবাসা,
কোনো একদিন এভাবেই সংক্রামক হয়ে উঠবে উন্নত চরিত্র,
কোনো একদিন এভাবেই সংক্রামক হয়ে উঠবে মানবতাবোধ,
কোনো একদিন এভাবেই সংক্রামক হয়ে উঠবে দেশপ্রেম,
কোনো একদিন থেমে যাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার লুটপাট,
কোনো একদিন নীচু হবে মানুষের মুখোশে ঢেকে থাকা অমানুষগুলো,
কোনো একদিন শুদ্ধতায় ছেয়ে যাবে ধরণী;
কোনো একদিন.. .


ছিলো
শাহীন খান

একদিন এ গ্রাম ছিলো শোন আমাদের
ছায়া মাখা ঘর ছিলো প্রিয় মামাদের।
বুক ভরা আশা ছিল, অনাবিল ভাষা ছিলো
সবুজের ছোঁয়া ছিল, মায়েরই দোয়া ছিলো
সাম্যপ্রীতি ছিলো, সুখেরই গীতি ছিলো
টলমলে জল ছিলো, কতো কোলাহল ছিলো
পড়শির টান ছিলো, মান অভিমান ছিলো
পাখিদের গান ছিলো, মায়া ভরা প্রাণ ছিলো
হাসি ছিলো বাঁশি ছিলো, দীদা ছিলো মাসি ছিলো
ভাইয়ে ভাইয়ে প্রেম ছিলো, বন্ধন ফ্রেম ছিলো
বাড়ি বাড়ি যাওয়া ছিলো, কতো কি যে খাওয়া ছিলো
স্বপ্নের নিঁদ ছিলো, স্বপ্নীল ঈদ ছিলো
যৌথ খানা ছিলো, শোনা ছিলো জানা ছিলো
কথারই দাম ছিলো, গাছে গাছে আমি ছিলো
নদনদী ভরা ছিলো, হাতে হাত ধরা ছিলো
কোরআনের পাঠ ছিলো, গজ্ঞ ও হাট ছিলো
ছিলো কাদা মাঠঘাট পদ্মপুকুর
আঙ্গিনাতে শোয়া ছিলো লক্ষ্মী কুকুর।
বিড়ালও ছিলো ঘরে, খাঁচাতে টিয়ে
মাইকে গান শুনে হতো যে বিয়ে।
ন্যাকড়া পুতুল ছিলো, ছিলো বনভাত
গল্প ও পালা গানে যেতো কেটে রাত।
মৌমৌ জোছনার ছিলো মাখামাখি
তাই দেখে ভরে যেতে সকলের আঁখি।
বাউলের একতারা,  আইসক্রীম লাল
জাম রসে একাকার মেখে যেতো গাল
বৃষ্টি বাদল হলে হাঁটা ছিলো দায়
নায়ে চড়ে বঁধূ যেতো দূর তার গাঁয়।
বর্ষা দুপুর হলে ডিঙে নিয়ে খেলা
কলাগাছ দিয়ে কতো বানিয়েছি ভেলা
হা-ডু-ডু দাঁড়িয়াবাঁধা খেলেছি কতো
আজ সব কি করে যে হয়েছে গত!
মন বলে কেঁদে কেঁদে ফিরে এসো সব
ফিরে এসো ফিরে এসো মধু শৈশব।


আত্মহত্যার আগে
এমরান হাসান

দূরেই তো আছি সবকিছু থেকে
আড্ডায় নেই, তর্কে নেই
তোমাদের করুণায় দিব্যি বেঁচে আছি বুকে নিয়ে অলীক পাহাড়।

দূরেই তো আছি
আমার কণ্ঠস্বর চেপে ধরে বেঁচে আছে জলপাইরঙা দেশ
মতবাদ মাড়িয়ে চলে যাচ্ছে পতাকা শোভিত গাড়ি।
আমি নিশ্চুপ...দেখে যাই অর্ধমৃত স্বদেশের ভাঙাচোরা মুখ।

মৃত্যু,
চলো এইবার শুয়ে পড়ি
মুখোমুখি তুমি আমি
আমাদের কবরে পা রেখে জেগে উঠুক উৎসবের পাললিক ভূমি


চুম্বনরত ঠোঁট বিবস হতে হতে
দ্বীপ সরকার

পানের পিক মাখা ঠোঁট- কম্পমান ও শিহরিত ভীষণ
বয়সের ভারে ঘারমোটা হওয়া ষাট বছর বয়সী এক নারী
তেরছা মার্কা পাছার চওড়া
কালের আবর্তে লুপ্ত হওয়া স্তনের বায়বীয় গুণাগুণ

চোখ আছে তার- সব দেখে
মন আছে তার- সব ভাবে
স্পর্শ তুলে নিকটে যেতেই সরে যায় আবেগ ও তাড়না
শিহরণ তুলে উঁচিয়ে ধরে আবেগিক মোটা ঘার
আলিঙ্গনের নিকটে এসে মুখ থুবড়ে প’ড়ে বেগ ও বোধের কোরাস
ফের কামনা আসে-ফের যায়
অনুভূতিতে কমে গেছে জল ও  দীপ্তমান খরা- স্রোত নেই
বয়স বাড়ে- কমে যায় সব
চুম্বনরত ঠোঁটও বিবস হতে হতে সেকেলে হয়ে যায়- পুরনো হয়ে যায়


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট