শব্দমিছিল : নিগার শামীমা



শব্দমিছিল
নিগার শামীমা

পরিশুদ্ধ নিকোটিন

এক হাত আকাশ নিয়েও আমি নীল সমান
ঠিক যেমন জেগে রয় তুমিময় সব অভিমান,
একরাশ মগ্নতায় গলে পড়ে বিশুদ্ধ অক্সিজেন
আর জানো তো জীবনের দামে কিনেছিলাম
তোমার মতো নেশাময় এক কঠিন নিকোটিন?

তুমি ভাবো আমি ফুরিয়ে গেছি-
পরিত্যক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইডের সাথে,
পানিতে আমি ভাসতে জানি না, আর
একথা জানো বলে কী আনন্দ তোমার
তলিয়ে গিয়েছি বলে ভেবো না
আমি মদ্যপ মাছের মতো, খামাখা
আমাকে ভাসতে দাওনি একান্ত নিজের মতো!

জল শুকিয়ে যাবার ভয়ে
তুমি আর কোনোদিন জলে আসোনি,
জলেই তো জ্বালা আর কীসে এতো মুক্তি?
তোমার চরাচরে এতো এতো যুক্তি
সেগুলো জ্বালিয়ে দাও এই জলে,
রাত বড় কষ্টের মাছগুলো তাকিয়ে বলে!

বিধিনিষেধ

পুরনো নদী আর তার অভিধান
অচল বাক্যে প্যাঁচায় লতানো মন
চারদিক অবরোধ বুঝি যায় যায় বেলা,
এমন নিষেধ যেন চারচালা ঘরের বেড়া
আমাকে নিয়ে চল্ নৌকা,
আমি ঘরহীন এক লাগোয়া সিথান
যার পাশে রাত-দিন চির সমান সমান,
আলো আসুক তীর ফুটে
জলে শামুকের গান, ভেজা আকাশ
এতো রঙহীন চারধারে অবলা বাতাস;
বেলা যায় এভাবেই বয়ে যায়
যেনো রেলগাড়ি- সুরমা, তিতাস!



আগমনী বসন্তকে বলছি

এই শিশিরেই জমিয়ে রাখছি ব্যথা,
আগমনী বসন্তের না আসা পাতা
কুয়াশার তীব্রতা, জমানো কথকতা
একথা জানে না এ বেলার নৌকা...
কোনো এক কালে শিশিরও ভিজিয়ে-
ছিলো তোমার আমার পায়ের পাতা
আর তারুণ্য মেলেছিলো তার ডানা
সেই কুয়াশার গায়ে ভেসে আমরা
চপল পায়ে হেঁটেছিলাম, একথা
শিশিরের চেয়ে আর ভালো কে জানে?
ডিঙিনৌকার পাশে পানকৌড়ির হা-করে
তাকিয়ে থাকা আর কোনো মিথ নয়,
এপার-ওপার নায়ের পায়ে জড়িয়ে থাকা
আর কোনো ভুলে যাওয়া পথ নয়
সদ্য ফোটে থাকা কলমি ফুলের ঘ্রাণ
তীব্রতা নিয়ে আজও বয়ে যায় আপ্রাণ!



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট