পদাবলি : ০২




শীতকাতুরে

অনার্য আমিন


ওগো শীতকাতুরে,

পরিযায়ী পাখির ডানায় ঠিকরে পড়েছে

ভোরের অল্প বয়সী রোদ্দুর

সে রোদ হেসে উঠেছে আমার উঠোন জুড়ে

তার এক কোনে চড়–ই ডানা মেলে বুত হয়ে আছে।


আলসেমী ঘুমের বিলাসিতা ছেড়ে এসো

নরম রোদের আলিঙ্গনে

রাতভর ভালোবাসার ক্যানভাসে টুপটাপ শব্দ

যে ছবি একেছে সে শিশির বিন্দুতে

তোমায় মুক্তোর মালা গেথে দেই।


শীত কথন

মিনহাজ উদ্দিন শপথ 


রোদ পোহাতে গিয়ে দেখি শীত নেই

রোদে কুসুম নেই

শিশিরে মাঠ শুকনো চরাচর

কুয়াশার তাপে সুতো ছিঁড়ে পুড়ে দিগন্তের ঘর

বাতাসের ভিতর গোল্ডেন ভেজা হেবক পারফিউমের ঢেউ

অতিথি পাখিরা এখন সমরৈখিক

আকাশে মেঘের ধুলো 

অথচ মাঘের বাঘের সাথে দেখা হয়নি এখনো

তাহলে কী শীত পুঁজিবাদের রঙ্গালয়ে উঠানে? 

ঝলমলে উৎসব বাহারী পোশাক? 

ওম বিলাসিতা 

আর আমি ঝাঁঝালো রোদের তাড়া খেয়ে 

ঝিমুতে থাকি বুড়ো অশ্বত্থের গাছের নীচে




এ শরীর প্রার্থনায় হিম

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়


শ্যামনগর উত্তর চব্বিশ পরগনা ভারত


যে রাতগুলো তোমার থেকে ফিরে আসি

সেই মুহূর্তে শহরের বুকে জেগে ওঠে

কুয়াশা ভাঙা কিছু নাম না জানা কবর

নিজেরই অজান্তে নিজে বসে আছি নতজানু হয়ে

স্হির শরীর যেন প্রার্থনায় হিম

শরীরের ভেতর জুড়ে বয়ে যায় মেঘের হাওয়া

কেঁপে ওঠে চরাচর অপরাধময়

ধীরে ধীরে তোমার থেকে আরও দূরে চলে যাই

কুয়াশা হয়ে ওঠে পাথর

প্রার্থনায় জেগে ওঠে অভিমান।



এই শীতে

হোসাইন জাহান 


এই যে এখন সময় ছ’টা

শীতের সকাল দমকা হাওয়ায়,

পাতার কোণে জমছে শিশির

ভাসছে শহর শুভ্র ধোঁয়ায়।

চড়–ইছানা জড়িয়ে রাখে

শুষ্ক কিছু গুল্ম লতা,

এই শীতে আর উঠবে না কেউ

একটুখানি অলসতা।


হেরে গেছে দুখ

মির্জা মুহাম্মদ নূরুন্নবী নূর


তোমাকে ভাবি যতো

খোলে ততো আঁখি

তুমি যতো দূরে যাও

ততো কাছে ডাকি।


তোমাকে দেখি যতো

লাগে ততো ভালো

জোনাকিরা নেচে নেচে

তাড়ায় শত কালো।


তোমাকে খুঁজি যতো

বাড়ে ততো লেখা

তোমাকে যে হয় এখন

কবিতাতে দেখা।


তোমাকে যতো বেশি

বুকে পেতে চাই

ততো বেশি এই হৃদে

সুখ আনন্দ পাই।


তোমাকে চাই যতো

বাড়ে ততো সুখ

তুমি এসে জীবনে

হেরে গেছে দুখ।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট