হেলাল হাফিজ নিবেদিত কবিতা

 



কলিযুগের কবি

মিসির হাছনাইন 

[হেলাল হাফিজ স্মরণে]


সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাবে... সময়,

রাতের অন্ধকারে শিশিরভেজা রাতে

যেমন টুপ করে ঝরে যায় একজন মানুষ।

কলিযুগের দোযখে পুড়েছে তাঁর হৃদয়

একাকী চোখের ভিতরে দেখা গেছে মৃত্যুপথ;

সেখানে হাস্নাহেনার সৌরভ কথা বলে ওঠেছিল।

পৃথিবীর সবুজে মিশে ছিল সবুজ চোখ

জীবনের পিছে দৌড়ে যে পা দুটো হয়রান;

সেখানেই ফেরে পেয়েছে যৌবনের শ্রেষ্ঠ যৌবন?

কালো যুগের অন্ধকারে হাসে কুমারী নদী

কুয়াশার চাদরে জমে থাকা শিশিরজল,

শোকের মাতমে কতগুলো ফুল ঘরছাড়া 

কতজনের ভেজা চোখের অগ্রহায়ণ শীত

জ্যোৎস্নার শাড়িতে হেঁটে চলে মৃত শরীর।

দেখি- আরো একটা জীবন কেমন করে চলে যায়

চুপচাপ অন্ধকারে ঝরে পরা শিশিরের টুপটাপ শব্দে 

চোখের নীরবতায় একাকী, পরাজিত রাজ্যের রাজত্ব ছেড়ে

কোন এক দিনের গভীরে বিষন্ন একা ঝরাপাতা হৃদয় নিয়ে

চোখ বন্ধ অন্ধকারে ঘুমিয়ে পড়েন কলিযুগের তরুণ কবি



বিদায় কবি হেলাল হাফিজ 

রফিকুল ইসলাম মানিক


তুম রবে কবিতার চরণে

রাজপথে উত্তাল শ্লোগানে।

বিরহে যাপনের অনুষঙ্গে 

ব্রহ্মপুত্রের কন্যার বিষে নীল।

অব্যক্ত যন্ত্রণায় দুমড়ে মুচড়ে 

যাচ্ছে নদের পাড়, শোকে

ঝড়ছে কুয়াশা বৃষ্টি। 

অনন্তলোকে ভালো থেকো প্রেমিক!




ঝরা পাতা ও কবি 

রহমতুল্লাহ শিহাব 


কুয়াশার দেহজুড়ে কনকনে শীত,

হলুদ সাজে ঝরে আমড়াগাছের ক্লান্ত পাতা,

ঠান্ডা বাতাসে ভেসে আসে বিষাদ,

পাতাশূন্য ডালে চির মলিন হাহাকার।

ভাবি- পৃথিবীতে কেউ স্থায়ী নয়,

সময় বয়ে চলে স্রোতের মতো


আমড়াপাতার সাথে ঝরে কিছু স্মৃতি

ঝরে পড়েন কবি হেলাল হাফিজ।

তার কবরে মাটি দিতে দিতে দেখি-

শব্দেরা কাঁদছে, কবিতারা স্তব্ধ,

বাংলার আকাশে এক টুকরো আলো,

ভালোবাসার অভাবে একাকী নিভে যায়।


কিন্তু কবিরা তো অমর,

তারা বেঁচে থাকে প্রতিবাদের মিছিলে,

অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা স্লোগানে,

কালজয়ী সেই আহ্বানের মতো-

এখন যৌবন যার, মিছিলে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়;

এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়।




শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট