পদাবলি



 আমাকে বলা হলো একটি কবিতা লিখতে
জোবায়ের মিলন

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি একটি মাছের অবাধ সাঁতার কাটার কথা লিখেফেললাম

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি একদলা উড়ন্ত মেঘের কথা লিখেফেললাম, যে মেঘের
কোনো দেয়াল নেই, আকাশটাই তার বিশাল বাড়ি

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি ফুটফুটে এক শিশুর কথা লিখেফেললাম, যে শিশু
দুরন্ত চর্কার মতো চঞ্চল ও ঘাসের মতো গাঢ় সবুজ

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি মটরশুটি ও ধনিয়াপাতায় ভরা একটি মাঠের কথা
লিখেফেললাম, যে মাঠে ফড়িং ওড়ে গ্রাম্য কিশোরীর মতো
পেখম দুলিয়ে দুলিয়ে

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি নির্দ্বিধায় একটি বাবুই পাখির আত্মগল্প লিখেফেললাম,
যে পাখির ঠোঁটে শ্রমের সাহস, পাখায় দূরন্ত-লক্ষ্য, চোখে তার
সহস্র শতাব্দির অভিজ্ঞান

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি আচমকাই ‘একুশ’ শব্দটি লিখেফেললাম ইচ্ছে মতো
শব্দের গঠনে গড়নে

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি কাউকে কিছু না বলেই ‘একাত্তর’ শব্দটি লিখেফেললাম
আমার নিজের উচ্চারণ ভঙ্গিতে
আমি ন’মাসের তীব্র যন্ত্রণাক্লিষ্ট একজন মায়ের কথা
লিখেফেললাম গভীর শোকাতুর শ্লোকে

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি চৈত্রের ভোরে উদিত উজ্জ্বল সূর্য্যরে তেজস্বী রৌদ্রের কথা
লিখেফেললাম অবচেতন মনের অন্দর থেকে

আমাকে বলা হলো ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি কবিতা লিখতে
আমি তেরশত নদী আর ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের কথা
লিখেফেললাম, যেখানে আমার স্বপ্নের রেণু ও বীজে
অনাহূত হবার কোনো অধিকার নেই পৃথিবীর কোনো খড়কুটোর।







শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট