কল্পনা





কল্পনা
শফিক নহোর

সে বহু বছর আগের কথা, এখন এ সব কথা কেউ মনে রাখে না । মানুষের জীবনে সব কথা মনে রাখতে হয়না । বিশেষ কোন কারণ ছাড়া। যেমন আমাকে কেউ মনে রাখেনি। কিছু স্মৃতি আমি সেচ্ছায় ভুলতে বসেছি, কখনো কখনো নিজের অজান্তে বড্ড মনে পড়ে । তখন সত্যি নিজেকে ছেলেমানুষি মনে হয়। এ সব কথা অরনী শোনলে বড্ড মন খারাপ করবে। মানুষ এত অভিমানী হয় । অরনীকে না দেখলে কেউ সহজে বুঝবে না। খুব সাদাসিদে , কিন্তু প্রচন্ড অভিমানী একটি মেয়ে। আমাকে মাঝে-মধ্যে খুব আবদার করে বলে- আজ সারারাত তোমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমাবো, আমাকে পিছন থেকে ছোট মানুষের মত জড়িয়ে ধরে ।
আমি সেদিন ওকে খুব জোরে সরে ধরতে গেলাম । ওয়ালের সঙ্গে খুব জোরে ধাক্কা খেলাম ।
অরনী খুব নদী পছন্দ করতো , আমাকে নিয়ে সে নদী ঘুরতে চাইত নৌকায় ! আমি তাকে বলেছিলামথথ, বিশেষ কোন এক ছুটির দিনে তোমাকে নদী দেখাতে নিয়ে যাবো ।
এ নদীতে-ই অরনী বছরের পর বছর ধরে কী ভাবে ডুব মেরে আছে ।
নদীর তীরে গেলে মনে হয়। এ পদ্মা যতটুকন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তার চেয়ে ঢের বিলীন হয়েছে আমার হৃদয়। কোন ভাবেই তোমাকে পুরাতন স্মৃতির পাতা থেকে সরিয়ে ফেলতে পারিনা । পাল তোলা নৌকা, নববধু চলছে, দূর অজানা কোন গাঁয়ে। আমি অবাক হই । আমি তোমাকে বেনারসি কিনে দিবো কবে !
 তবে কী আমি তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। তুমি তোমার নানী বাড়ি বেড়াতে আসতে! আমার সঙ্গে, তোমার দেখা হতো যত বেশি, কথা হত তার চেয়ে অনেক কম। আমার বন্ধুর ফেসবুকের পাতায় তোমার পোষ্ট দেখলাম। আমি ইচ্ছে করে দেখতে চাইনি। সে আমাকে তোমার ছবি দেখিয়ে- বলছে দোস্ত, মেয়েটা চাঁদের মত না? আমি বললাম না! তবে সে চাঁদের চেয়ে বড্ড সুন্দরী ছিল !
এই চাঁদমুখ গুলো নদীর পানিতে ভেসে যায় যখন, তখন আর নিজের বলে কিছুই থাকে না ।
পার ভাঙা নদীর মত আমিও পড়ে আছি ।
হঠাৎ অরনী আমাকে ই-মেইল করেছে । আমি কোন ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না । অরনী কি ভাবে বেঁচে আছে । আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে । 
সুজানগর, নওয়াগ্রাম, পাবনা





শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট