শাদ্বল




শাদ্বল
অরূপ রতন

বাতাসের বেগ এতই বেশি যে, কাশেম যত বারই ঠোঙ্গা থেকে মুড়ি মুখে তুলছে তত বারই তা বাতাসের ধাক্কায় চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। কাশেম অত্যাধিক বিরক্ত। সে বাতাসের এমন বে-আব্রু হয়ে তার উপর চড়াও হওয়ার মতো কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। বাতাসের এমন অবিবেচক আচরণে কাশেম খুবই নাখোশ। সে আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড় বিড় করে বলল ‘শালার বাতাস আমার সকালের নাস্তাডার বারডা বাজায়ে দিল।’ এই কথা শেষ না হতেই হাতের ঠোঙ্গাটি ঢিল ছোঁড়ার মতো বাতাসে ছুঁড়ে দিয়ে সে বলল, ‘লে শালার বাতাস পাঁচ ভূত মিলায়া খা।’ কা-টা ঘটিয়ে কাশেম কিছুটা তৃপ্তি পেল। নিজেকে খুবই সুখী মনে হতে লাগল তার। এমন ভাবে জমিদারের মতো খাবার বিলিয়ে দিতে কার না ভালো লাগে। পরক্ষণই একটা ভিলেনী হাসি দিয়ে সে বলল, ‘যাহ্ শালা, আইজ আর কিছুই খাব না।’ কাশেমের এক কথা। যখন সে কোন পণ করে তার যথার্থ মর্যাদা সে রাখে। আজও এর ব্যতিক্রম হবে না। সে সত্যিই কোন খাবার আজ মুখে তুলবে না। তার নিজের সাথে নিজের এই অলিখিত চুক্তি কেবল মাত্র তার নিজের কাছেই চূড়ান্ত সংবিধান। বাতাস এখন কিছুটা শান্ত। মুড়িগুলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার কারণে উড়ন্ত কিছু কাক মাটিতে নেমে এসেছে। কাশেম বটগাছের নিচে স্থির ভাবে দাঁড়ানো। দূর থেকে কাকগুলো মুড়ি ঠোঁটে নেওয়া মাত্রই উড়ে যাচ্ছে। কাশেমের এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ভয় পাচ্ছে তারা। ব্যাপারটা ভালোই বুঝতে পারছে কাশেম। কিন্তু সে সরে যাচ্ছে না। বরং বেশ উপভোগ করছে। রাজার সামনে প্রজারা যেমন নতজানু অবস্থায় ভয়ে সন্ত্রস্থ হয়ে থাকে, কাকগুলোর অবস্থা এখন ঠিক সে রকমই। কাশেম নিজেকে কিছু সময়ের জন্য রাজা ভাবতে লাগল। তার নতজানু প্রজারা ভয়ে সন্ত্রস্থ। না, কাকগুলো আর আসছে না। পেছনের দিকে সরে যাচ্ছে। কাশেম কাকগুলোর দিকে তাকিয়ে বেশ ধমকের স্বরে বলল ‘ঐ ব্যাটা কাক, আমি দাঁড়ায়ে থাকলি দোষের কী? মুড়িগুলান খায়া যা।’ হঠাৎ শব্দে কাকগুলো চমকে উড়ে গেল। কাশেমের মেজাজ এবার সত্যিই চটে গেল। সে কিছুতেই আবিষ্কার করতে পারল না যে, কাকগুলো তাকে দেখে ভয় পেল কেন? হঠাৎ মুচকি হাসি দিয়ে সে বলল, ‘যাইক আমারে দেইখা তাইলে কেউ ভয়ও পায়।’ তারপর উড়ে যাওয়া কাকগুলোর দিকে লক্ষ করে খিস্তি করতে করতে বলল, ‘শালার কাক ভয় পাওয়ার আর লোক পাইল না।’

বাইপাসের পূর্ব পাশে শাহজাহান আলীর হোটেল। বেশ রমরমা না হলেও খুব যে মন্দ চলে তার ব্যবসায় তা নয়। ইদানীং তার ব্যবাসায়ে কিছু বাড়তি আইটেম যুক্ত হওয়ায় বেশ ব্যস্ত থাকতে হয় কাশেমকে। তার কাজ যে খুব বেশি তা নয়। চা তৈরিতে শাহজাহান আলীকে সাহায্য করা। অথবা খরিদ্দারগুলোকে চাহিদা মোতাবেক পানি সরবরাহ করা। মাঝে মাঝে সে টেবিল পরিষ্কার করার কাজটাও করে থাকে। আবার কখনও কখনও স্ব-উদ্যোগে কাপ পিরিচগুলোও পরিষ্কার করে রাখে সে। তাই কাজের বেলায় কাশেম যে খুব কাজী তা বলা অমূলক হবে না। তবে মাঝে মাঝে সে এমন ডুব দেয় যে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন শাহজাহান আলী টের পায় কাশেম আসলে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন আজ সকাল থেকেই কাশেম লাপাত্তা। শাহজাহান আলী খুবই বিরক্ত হয়ে কাশেমের গুষ্টি উদ্ধার করছে। এখন পর্যন্ত চায়ের পানি গরম হয়নি। সিঙ্গাড়া তৈরির ময়দা আনা হয়েছে অনেকক্ষণ কিন্তু এখন পর্যন্ত তা মাখানো হয়নি। আবার বেলা এগারটা বাজতেই ভাত চরাতে হবে। গুড়পট্টির ভ্যান গাড়িওয়ালারা শাহজাহান আলীর প্রধান খরিদ্দার। যথা সময়ে তাদের সামনে ভাত মাছ পরিবেশন করতে না পারলে বেশ বিপদেই পড়তে হবে তাকে। গফুর মিয়া তিন ছেলেকে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নেমেছে। বর্তমানে যে বাজার যাচ্ছে তাতে কোন ভুল করতে চায় না শাহজাহান আলী। কারণ তার সামান্য ভুলেই খরিদ্দারগুলোকে বাগিয়ে নিতে পারে গফুর মিয়া। তাই মনে মনে কাশেমের গুষ্ঠি উদ্ধার করলেও সে চাইছে এই কালবেলায় যেন কাশেম দ্রুত ফিরে আসে।
বেলা গড়িয়ে প্রায় দুপুর। কাশেম এখনও এলো না। শাহজাহান আলীর এখন লেজে-গোবরে আবস্থা। কোন রকমে ভাতটা সে নামিয়েছে। কিন্তু তরকারি এখনও চুলোয় তোলা হয়নি। মাছগুলো বাড়ি থেকেই কুঁটে আনতে বাধ্য হয়েছে সে। না এনেই বা কী করবে? তরকারি কুঁটাকুঁটি করতেই অনেক সময় লেগে গেল। তার উপর মাছ কুঁটার দায়িত্ব নিলে তার আজ হোটেল চালানো সম্বব হবে না। ইতোমধ্যে অনেক বেলা হয়েছে। কাশেম না আসায় চা বিক্রি আজ বন্ধ। একা মানুষ কতদিক আর সামলে উঠবে। অন্যদিন কাশেম সকালে না আসলেও অন্তত দুপুরের এই সময়টাতে চলে আসে। একটু বিবেচনা বোধ আছে তার। তবে আজ সে একেবারেই অবিবেচকের মতো কাজ করছে। শাহজাহান আলীর চোখেমুখে অন্ধকার।
দুপুরের এই সময়টাতে কাশেম খরিদ্দার নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আজ সে সকল ব্যস্ততা থেকে মুক্ত। অনেক দিন ধরেই সে এই রকম একটি সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। খোদার অশেষ মেহেরবাণী। সে আজ সুযোগটা কাজে লাগাতে পারছে। তার হাতে মরিচা ধরা পুরাতন একটা শাবল। বেশ যতœ করে সে এটিতে শান দিচ্ছে। মরিচাগুলো তুলে তাতে যথেষ্ট পরিমাণ ধার দিয়েই সে কাজে নামবে। শাবলটির যথার্থ ব্যবহার সে আজই করবে। আজ কোন বাঁধাই মানবে না। কেউ মানাতেও পারবে না। যদি কেউ পোদ্দারী করতে আসে তবে তার মু-টাও আস্ত রাখবে না কাশেম। আজ সে বড়ই তেজী। নিরীহ গোবেচারা বলে সবাই তাকে ঠকিয়েছে। কিন্তু কাশেম আর সহ্য করবে না। সে এবার একটা হেস্ত-নেস্ত করেই ছাড়বে। শাহজাহান আলী অবশ্য মাঝে মধ্যে শান্তনা দিয়ে বলেছে,‘তুই এ্যাতো টেনশন করিস ক্যা? আমরা তো গেরামের দশজন আছিই। একটা বিলি ব্যবস্থা ঠিকি হবি।’ কাশেম শাহজাহান আলীর এই কথাগুলো আর বিশ্বাস করে না। এখন সে শাহজাহান আলীর উপরও বিরক্ত। অনেকদিন হল সে শাহজাহান আলীর হোটেলে কাজ করছে। কোন বেতন ভাতা সে আজ পর্যন্ত পায়নি। শুধু পেটে ভাতে দিন। মাঝে সাঝে অবশ্য চুল দাঁড়ি কামানোর জন্য শাহজাহান আলী তাকে দশ পাঁচ টাকা দেয়। তার এখন এতে পোষায় না। সে এখন আকিজ বিড়ি খাওয়া ধরেছে। বিড়ি খাওয়ার জন্যও তার দু’চার পয়সার দরকার হয়। এ ক্ষেত্রে শাহজাহান আলী বড়ই অবিবেচক। সবদিক বিবেচনা করেই সে আজ শাহজাহান আলীর দোকানে যায়নি। কাশেম মনে মনে তৃপ্তির হাসি হাসছে। বিড় বিড় করে বলছে, ‘দ্যাখ বুইড়্যা শাহজাহান কেমন ঠ্যালা। আমি না থাকলি তোর চলবিইন্যা।’ বলতে বলতেই কাশেম ফিক করে হেসে ওঠে। যেন শাহজাহান আলীর করুণ দৃশ্য সিনেমার মতো তার সামনে ভেসে উঠেছে।
বড় বট গাছটার নিচের দিকে অনেকটা ফাঁকা জায়গা। তার সামনের দিকে খোলা মাঠ। পাশ দিয়ে রয়েছে কাঁচা পাকা রাস্তা। কাশেম প্রায়ই এই বট গাছের নিচে ফাঁকা জায়গাটুকু জুড়ে  বসে থাকে। দূর থেকে কারো বোঝার উপায় নেই যে, এ জায়গায় কোন মানুষ থাকতে পারে। কেবল কাছে আসলেই তা স্পষ্ট হয়। সবাই জানে ও জায়গায় কাশেম ছাড়া আর কেউ থাকবে না। তাই ভুলেও কেউ ও পথ মাড়ায় না। বলা চলে এটা কাশেমেরই রাজত্ব। দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। চড়া রোদ। কাশেমের সাদা হাফ হাতা গেঞ্জি ভিজে জবজবে হয়ে গেছে। হাতের শাবলটির দিকে স্ব বিস্ময়ে বার বার তাকাচ্ছে সে। এইতো মরিচাগুলো উঠে যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চকচকে ভাব চলে আসবে। কাশেমের চোখে হাসি। সে হাসি বড়ই তৃপ্তির। আজ সে ঠিকি তার মনোবাঞ্চা পূরণ করবে। কাশেম লক্ষ্য করল একটা সাদা গাড়ি কাঁচাপাকা রাস্তা ধরে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। সে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। তারপর গুটিসুটি মেরে বসে রইল গাছের কুঠরির মধ্যে। আশ্চর্য! সাদা গাড়ির খোলস থেকে বেরিয়ে এলো দু‘জন মানুষ। কাউকেই চেনে না কাশেম। জীবনে আর কোনদিন দেখা হয়েছে কিনা তাও ঠাওর করতে পারল না। চড়া রোদ পড়ায় দুজন আগন্তুকই বট গাছের পাশ ঘেঁসে ছায়ার মধ্যে এসে দাঁড়াল। সামনের খোলা মাঠের দিকে তাকিয়ে অনেকটা তৃপ্তির রেখা ফুটে উঠল তাদের চোখে-মুখে। মুগ্ধ চোখে ঘাসে ঢাকা জমির দিকে তাকিয়ে অপেক্ষাকৃত বয়স্ক ব্যক্তিটি বলে উঠল, ‘তসলিম হাজী বলেছিল এক দাগে নাকি ত্রিশ কাঠা। এখানে দেখছি বার কাঠাও হবে কিনা সন্দেহ।’ পরেরজন বলল ‘ত্রিশ কাঠা বলেছিল কী?’
‘তাইতো বলল।’
‘আমাকে বলল, সব মিলিয়ে ছত্রিশ কাঠা। এক দাগে আছে পনের আর এক দাগে একুশ।’
‘আমাকে তো এভাবে বলেনি। লোকটা দেখছি সুবিধের নয়।’
‘আমিও তো জানতাম না। গতকাল সন্ধ্যায় আলাপ করে সব জানলাম।’
‘গতকাল সন্ধ্যায় দেখা হয়েছিল নাকি?’
‘দেখা হয়েছে বলতে আমিই দেখা করতে গিয়েছিলাম। বোঝেনই তো জমি-জমার ক্রয়-বিক্রয় বিলি-বাটোয়ারা নিয়েই থাকি। একটু চোখ-কান খোলা রাখতেই হয়। সবদিক বিবেচনা করেই তো আজ আপনাকে জমি দেখাতে নিয়ে এলাম।’
‘কিন্তু হে, আমার তো ভাঙ্গা ভাঙ্গা  জমি দিয়ে চলবে না। একদাগে মিনিমাম চলি¬শ কাঠা চাই।’
‘তাও দেখবেন। তবে এটাকে যদি অল্প দামে খরিদ করে দিতে পারি। তাতে লাভ-ই হবে আপনার।’ বলেই একটু হেসে উঠল লোকটি। তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটু হাসতেই স্তব্ধ হয়ে গেল দু‘জনই। তারা ভূত দেখার মতো দেখল একজন লোক বট গাছের কুঠরি থেকে বেরিয়ে আসছে। প্রথমে ভয়ই পেয়েছিল তারা। তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ নিরব রইল। কাশেম ঘাসে ঢাকা মাঠের মধ্যে যেতে যেতে চোখে মুখে বিরক্তি নিয়ে তাকালো আগন্তুকদ্বয়ের দিকে। তারপর বিড় বিড় করে বলল, ‘শালারা গাড়ার মতন আমার জমির দিক তাকায়্যা  আছে। শালাগো চোখ ঘ্যাতা কইরা দেওন দরকার।’
দেখতে দেখতে ঘাসে ঢাকা জমির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল কাশেম। আগন্তুক দু’জন তখনও দাঁড়িয়ে ছিল। তারা তসলিম হাজীর জন্য অপেক্ষা করছে।

শাহজাহান আলীর ব্যস্ততা কিছুটা কমেছে। কাশেম দোকানে না আসায় বেশি আইটেম করতে পারেনি সে। চা-সিঙ্গাড়া আজ বন্ধ। শুধু ভাত মাছ আজ তার হোটেলের প্রধান আইটেম। যা হোক, দেরীতে হলেও গুড়পট্টির ভ্যানওয়ালাদের সামনে যে ভাত মাছ উপস্থাপন করতে পারবে এতেই সে খুশি। বর্তমানে যে বাজার যাচ্ছে তাতে শাহজাহান আলী কোন ক্রমেই গুড়পট্টির এই খরিদ্দারগুলোকে হাত ছাড়া করতে চায় না। কাশেমের হঠাৎ অনুপস্থিতিতে সে যে এক হাতে সবদিক সামলাতে পারবে তা ভাবতেই পারেনি। শাহজাহান আলী এতেই তৃপ্ত।
ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে গেঞ্জি শরীরে পেঁচিয়ে কাশেম ধীরে ধীরে দোকানের মধ্যে প্রবেশ করল। শাহাজাহান আলী তখন খরিদ্দার বিদায় করতে ব্যস্ত। কাশেম কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা পেছনের বেঞ্চটাতে গিয়ে বসল। তার শরীর ঘামে ভেজা। রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে শাহজাহান আলী জিজ্ঞেস করল,‘এতক্ষণ কই আছিলি?’
কাশেম ধীরে উত্তর দিল, ‘জমিত’।
‘জমিত মানে?’
‘তোমাক মনে হয় নতুন কইর‌্যা মনে কর‌্যা দেওয়া লাগবি?’
‘তোক অনেকবার কইছি ঐ জমিত আর যাইস ন্যা।’
‘ক্যাঁ, যাব না ক্যা ? আমার জমিত আমি যাবই।’
‘শোন, হাজী মানুষটা ভালো না। কখন যে তোর কোন বিপদ হয়।’
‘আমার জমিত আমি গেলি হাজীর কী?’
‘ঐ জমি এখন হাজীর দখলে। ট্যাকা খাওয়াইয়া নিজের নামে দলিল কইর‌্যা লিছে।’
‘দলিল করলিই হয়, সবাই জানে ঐ জমি আমার।’
‘সবাই জানলিই কী, সবাই এখন হাজীর পক্ষে। তোর কথা কেউ শুনবিন্যা।’
‘ঐ শালা হাজীক আমি ছাড়ব না।’ বলেই কাশেম দাঁড়াল।
‘কী করবু তুই?’ শাহজাহান আলী হতবাক।
কাশেম দ্রুত পায়ে চোখ বড় বড় করে হোটেল থেকে বেরিয়ে গেল। শাহজাহান আলী চিৎকার করে জিজ্ঞেস করল ‘এখন আবার কই যাস?’ কাশেম একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। কিন্তু কোন উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করল না। সে দ্রুত সামনে এগিয়ে গেল।

পরদিন সকালেও কাশেম অনুপস্থিত। শাহজাহান আলী চোখ মুখ অন্ধকার করে বসে আছে। এমনটি সচারচার হয় না। কাশেম পর পর দুইদিন কখনই অনুপস্থিত থাকে না। অবশ্য কাশেমকে খোঁজার জন্য সুরুজ মিয়াকে পাঠানো হয়েছে। অবস্থা সুবিধার নয়। তসলিম হাজী কখন কী করে বসে বুঝা মুশকিল। জমি-জিরাতের ব্যাপার। পাগলাটা যে কোথায় যায়? শাহজাহান আলী সামনে তাকিয়ে চমকে গেল। সুরুজ মিয়া দৌড়ে তার হোটেলের দিকে আসছে। শাহজাহান আলী আতংকৃত হয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে এলে সুরুজ মিয়া হাফাতে হাফাতে বলল, ‘বট গাছের কুঠুরি ক্যাঁ, কোথাও কাশেম নাই। তবে বট গাছের সামনে যে ঘাসে ঢাকা জমিটা আছে তাতে অনেক মানুষের জটলা। রাতের আঁধারে তসলিম হাজী খুন হয়েছে ওখানে। একটা ধারালো শান দেওয়া শাবল বুক এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছে তসলিম হাজীর।’ সুরুজ মিয়ার কথায় শাহজাহান আলী হতবাক হয়ে গেল। তার চোখে মুখে বিস্ময়...


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট