পদাবলি - ৩

 

     

    



বৃষ্টি বপনের দ্বার 

খৈয়াম কাদের 


চুম্বনের শিহরণ মানে 

সৃষ্টি-যোজনার শুভ-উদ্বোধন 

গোপন নদীর জল 

বৈঠার আস্বাদে কেঁপে ওঠে 

কিনারে আছড়ে পড়ে 

ফেনার প্রবাল!


গাঙের তরঙ্গ তটে 

মাঝি ও নৌকোর মাঝে ঘটে 

সূর্য-যাপনের মিথস্ক্রিয়া 

প্রণয়ে পত্রস্থ হয় শঙ্খের সঞ্চার 

যামিনীর জাজিম তখন মুখরিত হয়

ভূমিতল খুলে দেয় বৃষ্টি বপনের দ্বার!



বনপরী

রহিত ঘোষাল


এবার তুমি চলে যাবে,

কাল তবে কখন, কতক্ষণ...

ডুবু ডুবু অপেক্ষায় প্রিয় সমাগম,

বহুশ্রুত গল্পগাছা হয়ে আছে ফুলের নিগড়,

এক দেবতরুর নীচে আমাদের মেলামেশা,

ছায়াম-পের তলায় আমাদের লজ্জাশীল 

বায়বীয় তূর্ণ তোড়জোড়, 

বনপরী তোমার জন্য খেয়াল-কল্পনা হিল্লোল,

আশ্চর্য উজ্জ্বল সব শামাদান।



ক্লান্ত পথিক 

রুদ্র সাহাদাৎ 


ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত পথিক-

পাহাড় ঝর্ণা সমুদ্র দেখে- হারিয়ে যাই অজান্তে অন্যভুবন

আদালতপাড়ায় নিঃস্ব মানুষ, বারেবারে জিতে যাওয়ার স্বপ্ন খোঁজে

                                  হারিয়ে অর্থবিত্ত জীবন খোঁজে ।

রঙিন মানুষ- ভূমন্ডলজুড়ে ঘুরে ডান-বাম উত্তর-দক্ষিণ 

কে কখন কোনদিক হারায় কেউই জানে না....


রিভলভিং চেয়ার

সাকিব জামাল


ভেবেছিলাম ফিক্সড পলিসি ফলোয়ার

অথচ চরিত্র সূর্যমুখী! ভৌগোলিক সূত্রে-

অদ্ভুত অস্থিতিশীল মন। 

দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্য ইকোনোমিক ব্যাকরণে 

সাজানো রিভলভিং চেয়ার।

বড়রা বোধহয়, এমনই হয়! 

দিনশেষে, ক্লান্ত সব ‘এলডিসি’ প্রাণ!



কালো গোলাপ

তাকওয়া আনজুম তামান্না


আমি ঝড়ো হাওয়ার মত বেগবান, আমি কাঠফাটা আগুন, বিরোধী আমি শরতের স্নিগ্ধ শুভ্র মেঘ হতে। যে মেঘ ছায়ায় স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলবে। সকল ক্লান্তি-শ্রান্তি অস্থিরতা মুছে যাবে আমি আগুন ঝরা ফাগুনে তোমায় পোড়াতে রাজি, আমি রয়েছি বসন্তের দখিনা হাওয়ায়, মৃদু মহনায় দুজনে হারিয়ে যাওয়ার বাঁধা হতে। আমি কালো গোলাপ, আমি একগুচ্ছ লাল গোলাপের চির !


মর্নিংস ইন জেনিন

মূল: সুসান আবুলহাওয়া

অনুবাদ: নাহিদ্র ইমন


হে আকাশে উড়ে যাওয়া পাখি;

তোমাকে ভুলিনি আমি।

আমাকে এনে দাও তাজা আপেল

হাইফার,

আর জয়তুনদানা

কদুসের।


শুভেচ্ছা জানিয়ো পাহাড়কে

এবং উদীচী উপত্যকাকে।


হে আমার পূর্ব পুরুষের মাটি;

তোমায় ভালবাসি খাটি।

তোমাকে ভুলিনি কভু নার্গিসফুল

ভুলিনি জীবনভর লেমনফুল।


সুপ্রভাত ফিলিস্তিন 

মর্নিংস ইন জেনিন। 



খরাইত্তা

এবি ছিদ্দিক 


ডাল ভাত যখন জিন্দাবাদ 

তখন প্রেমিকাও উপাধি দেয় খরাইত্তা! 

বিত্তহীন অথচ সুখী- কে আর জানে, বলো? 

বিত্ত ছাড়া সুখ প্রমাণ দুষ্কর- কেউ বিশ্বাস করে না 

বরং সুযোগের অভাবে সৎ ... 

এমন অপবাদ ও ধিক্কার জুটবে ঢের!


সরকারি চাকুরী হলেই যত সুখ লোকে বলে

এর মর্ম না বুঝে সুযোগ হাতছাড়া করলাম

আজ নিন্দুকেরা ওঁৎ পেতে বসে

দেদারসে মুখরোচক গল্প তৈরি করছে!


আমি আমার পরিণতি নিয়ে অতোটা ভাবি না

অথচ তাদের মাথা ব্যাথা কিছুতেই কমছে না



প্রিয় 

মিনহাজ উদ্দিন শপথ 


প্রিয়, সে তো খুব যতনের হয়। ভোরের মতো সবুজ বিভোর বসন্তের আকাশ। শরতদুপুরের শান্ত সিলভার রোদ। প্রিয়, সে তো ক্লান্ত দুপুরে এক সতেজ ছায়া। চৈত্রের শীতল ঘর। হাওয়ায় ভিতর এক সুগন্ধি জগৎ। অন্ধকার গহ্বরে জোনাকির টিপ। প্রিয়, সে তো  আটকে থাকে না সারাক্ষণ চলে গিয়েও ফিরে আসে বারবার। এ পথের রোদ কখনো শুকোয় না । কখনো পাথর ঘষতে শিখে নাই। জলে ঢেউ খেলা নদী জোছনার নরম আদর আরো আরো আপন আপন বেলা সময়ের কণ্ঠস্বর দিগন্তের না হারানোর কুসুম

প্রিয়, সে তো, চোখের সম্মুখে বুকের খোলা জানালা সাদা ফুলের  টান সে তো মানে না মানা...



পাপের শহর

শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া জয়


এই পাপ যুক্ত শহরে আমি আর থাকতে চাইনা,

যে শহর প্রতিটি ইট-কংক্রিট অবৈধ অর্থে গড়া,

যে শহর ছড়া সুদে নির্মাণাধীন ব্যাংক লোনে কেনা।

যে শহর ময়লা আবর্জনা দূষিত বায়ু, ক্ষুদার্ত কুকুর।

যে শহর ইলেক্ট্রিসিটিতে ভরা, চাঁদহীন আলোরশ্মি।

সেসব পথের আর পথচারী হতে চাইনা।


এই পাপ যুক্ত শহরে আমি কাউকে নেতা মানিনা,

যে শহর মৃত মানুষের ভোট, গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই

যে শহর অলিতে-গলিতে মসজিদ, ঈমানহীন মুসলিম উম্মাহ। 

সেসব বেঈমানী শহরে মুখোশ হয়ে থাকতে চাইনা।।


এই পাপ যুক্ত শহরে আমি আর থাকতে চাইনা,

যে শহর বর্ণবাদী মসজিদ-মন্দিরে ভেদাভেদ, শিক্ষিত-মূর্খের নেই তফাৎ

যে শহর বিচারক জ্ঞানহীন, আর জ্ঞানী হয় খুনী,

সেসব শহরে সবে সম, পয়সা ছেটালে সবি সম্ভব। 


এই পাপ যুক্ত শহরে আর বাঁচতে চাইনা,

যে শহর আত্মমর্যাদা আর লজ্জা বলতে কিছুই নেই,

যে শহর নগ্নতায় মূল্যবোধ, নর্তকীর আবার প্রতিযোগিতা।

সেসব নগ্নতার শহরে আমি দর্শক হয়ে দেখতে চাইনা।


এই নগ্ন শহর পাপে মগ্ন থাকতে আর চাইনা,

যে শহর চামড়া ব্যবসা আজ রমরমা, ভোগেই যেন সুখ।

যে শহর পরকীয়ায় ব্যস্ত, বিচ্ছেদ যেনো সামান্য ব্যাপার।

সেসব নর্তকীরা আবার সেলিব্রিটি ওরা আবার দিনশেষে সংসারী, ওরা অসুখী, আবারও অসুখী।




এক পলক দেখে যাওয়া

আদনান আল মিসবাহ


সেদিন

আলাপনের শুভ্রতা প্রদীপের মতো ছিল না 

সিঁড়ির শেষবিন্দুতে উপনীত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে

কোলাহলের বিরক্তিকর শরীর ক্ষতবিক্ষত করেছে 

নাতিদীর্ঘ পথ পেরিয়ে তোমার 

এক পলক দেখে যাওয়া


বাঁ দিকের গলি থেকে উদ্ভাসিত 

প্রেয়সীর মুখ 

চোখাচোখি হওয়ার মত বাহারি দৃশ্য ছিল না 

নদীর মতো নিরবধি বয়ে যাওয়া বিস্ময়ের মাথা

কুঠারাঘাতের নির্মমতায় থমকে দিয়েছে 

ভ্রুকুঞ্চিত শ্রীমান মুখাবয়বে তোমার 

এক পলক দেখে যাওয়া


সময়ের পরিসীমা 

বাঁধন ছিন্ন করার মতো তীব্র বেগবান ছিল না 

অসংখ্য প্লেটের ঝনঝনানি 

কোনরূপ পূর্ব সংকেত ছাড়া আচমকা মরে গেছে

এমনকি-

মিনিট সেকেন্ডের অমোঘতাকে হত্যা করতে পারে 

কৌতুহলী মননের মৃদু তাড়নায় তোমার 

এক পলক দেখে যাওয়া


ক্ষনিকের ম্রীয়মান কথকতা

খুব বেশি রসালো আবেগপূর্ণ ছিল না 

বাক্য শেষ হওয়ার আগেই প্রশ্ন চিহ্ন 

শরীরের লোমগুলো দন্ডায়মান যেন-

ডিসেম্বরের কুচকাওয়াজ 

আতঙ্ক, ত্রাস, হুমকির মতো ভয়াবহতা ছড়িয়েছে

ঈর্ষান্বিত রক্তচক্ষু নিয়ে তোমার 

এক পলক দেখে যাওয়া



ওরা কি আর জানে

ইসলাম মুহাম্মদ তৌহিদ 


বেদনার দেওয়াল তুলে বিষাদের চোখরাঙানি ঘিরে থাকে চারিদিক, বজ্রপাত অকারণেই শাসায়, 

আমি এসব নস্যি করি হেসে

ওরা কি আর জানে সুখকে আমি পর করেছি তোমায় ভালোবেসে!



ভালোবাসার রক্ত গোলাপ

তারিফা হায়দার


পতঙ্গের ডানা পোড়ে 

আলোর সন্ত্রাসে

বড্ড মরণপিয়াসী যেন

সমুখে মৃত্যু সুনিশ্চিত জেনেও 

ঝাঁপ দেয় আগুনের বুকে।


আথচ মানুষ অধিকতর দুঃখবিলাসী 

কলঙ্কের দাগ কপালে লাগবে জেনেও প্রেমে পড়ে

ঠোঁটে তুলে নয় আর্তনাদের চুম্বন।


কাঁটার আঘাতে শতছিন্ন হয়ে যাওয়া বুকে 

নিত্য চাষ করে ভালোবাসার রক্ত গোলাপ 

সেচ্ছায় আলিঙ্গন করে কষ্টের মোহন যন্ত্রনা

মরণ উপত্যকায় মৃত্যুর মুখোমুখী দাড়িয়ে 

পান করে প্রেমের অমৃত গরল।



দুঃখের দরজা

আফরিতা তাহসিন তাশফি


মৃত গোলাপ প্রেমের সুগন্ধি গায়ে মেখে বেঁচে থাকে বহুকাল 

মানুষ বাঁচে নির্দিষ্ট কিছু দিন অব্দি। অতঃপর এক সময় অঘোষিত মৃত্যুর মতো থমকে যায়।

ক্রমশ অকারণে হেঁসে ওঠা ঝুপসি অন্ধকারের দিকে ধেয়ে চলে। যেনো এই পৃথিবী তার কাছে বিপুল বিচ্ছিরি।


বিবর্ণ হাহাকার ঠেলে সামনে এসে দাঁড়ায় এক লবনাক্ত ঢেউ। 

অদূরে পড়ে থাকে জমাট বাস্তবতা, 

জীবন সংগ্রামে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে 

নামতে হয় দুঃখের শরবরে।

একগুচ্ছ আঙ্গুল পৌছে 

অবিন্যস্ত দুঃখবোধের দরজায় 

জীবন এখানে পরাস্ত; এখানেই সমাপ্ত।

আর যতোটুকু বাকি থাকে একে জীবন বলে না; 

জীবন থেকে করুণা করে চেয়ে নেওয়া সংবেদনশীলতার বিন্দু বিন্দু অন্তক্ষরণ।




বুকফাটা কলাপাতা

তোফায়েল আহমেদ 


দেবদারু পত্রের সজ্জিত প্রাচীর ভেদ করে বৈশাখী হাওয়ার পরিণতি কেমন বুকফাটা কলাপাতা। 

চাঁদও কেমন আত্মগোপন করে মাঝে মাঝে- পঞ্চদশী চাঁদ কৃষ্ণপক্ষে ধাপিত হবে বুকফাটা কলাপাতার নিঃশব্দ মৌনতায়! 

কথাগুলো থেমে থেমে রয় শৃঙ্খলাবদ্ধ সীমারেখায়। 


ব্যথিত হৃদয়ের অনেক দিনের পুরনো কথা...! 

শরতের নীল আকাশ আছে- আছে কাশফুল- ধূসর পড়ন্ত বিকেল আছে- আছে আকাশভরা তারা- অথচ চাঁদ কেমন আত্মগোপন করে প্রকৃতির নিয়মে। 

প্রকৃতি যেমন শূন্যস্থান পছন্দ করে না তেমনি প্রকৃতির কল্যাণেই শূন্যস্থান পূরণ করে। 


আহা, কেউ যেন কিছু কথা বলতে চায়- কেউ যেন চোখে হরিণী চোখ রাখতে চায়- স্নিগ্ধ ওষ্ঠ্যধরের সীমানা পেরিয়ে কিছু কথা বলতে চায়।

অথচ বুকফাটা কলাপাতা ভীষণ ভয় পায় বৈশাখী হাওয়ার- এক দমকা হাওয়ায় বুক ফেটেছিলো তাঁর! 



ইন্ড অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড 

মোহাম্মদ আল রাহাত 


পৃথিবীর শেষ রাস্তা আছে

রাস্তা মিশে গেছে অসীমে 

আকাশ যেখানে মিশেছে। 

‘ই-৬৯ হাইওয়ে 

বা নরওয়ের নর্থ কেপ’

নর্থকেপ সংযুক্ত হয়েছে সমুদ্রতলে

দুঃসাহসীরা সেখানে পৌঁছায় দলে-দলে

যেখানে-

গাড়ির চাকায় লেগে থাকে বরফ;

শীতকালীন বরফে ঢাকা বৃষ্টির ঝড়

ভয়ানক চ্যালেঞ্জ হৃৎপি- করে থরথর। 

তবুও, 

বিযুক্তিতলের শীতল সীমান্তে

উত্তরমেরুর মেরুজ্যোতি দেখার বিস্ময়ে

কালান্তরিতে কিছু মানব হারিয়ে যায়।



শিকার

দয়াময় পোদ্দার


একটি শিকারী পাখি সোনামুখী আলোর অরণ্যে উড়ে যায়,

যেতে যেতে সে পিছনে ফেলে যায় ধূসর পালক, পুচ্ছ, আর

বিগত সকাল। বুকের ভিতরে তার ধনুর্বান রাখা পিঠ।

গুজরাটের গির অরণ্য থেকে আনা হরিনের চামড়ায়

তৈরী ছিলা, হিমাচল প্রদেশের পাথর ঘষে বানানো ফলা,

আর ছত্তিশগরের আদিবাসীদের থেকে আনা গুপ্ত বিষ;

শিকারের বিষয়ে সে রুদ্র-নিষাদ, হৃদয় বলে কিছু নেই,

ইগলের থেকে ধুর্ত এবং একাগ্রতায় পেরোচ্ছে সৌরকাল

একজন্ম আলোভুখ নিষাদ বালক পার হয় চন্দ্রকাল

সে অরণ্যে সন্তর্পনে নুপুর বাজে পাতায় হাওয়ার গান,

বেজেই মিলিয়ে যায় চোখের পলকে, স্থিত হও ফুলে- ফলে

সোনামুখী প্রিয়তমা আলো, তোমাতে স্নান একমাত্র শিকার!




নিশীথের অর্চনা

নূর মোহাম্মদ সোহান

 

অবিনশ্বর এ জীবনে তোমাকে চাওয়া

জগৎ চাইবেনা এ ভেবে সংকীর্ণতা,

কতকাল অভিশংসন হৃদয়ের,

পেতেছি ইন্দ্রজালে অধির অপেক্ষায়।


যে জলে কমল ফোটে

গিরিশ সমবেদনা বিষাদের,

হৃদয় গরলে ধ্বনি বাজে সুরের

একি খোদ প্রেম-ভালবাসা।


হৃদয়ে জপেছি তুমিই আলিঙ্গন-

বসন্তের ভাঁটফুলে সুবাসহারা’

অখিলেশ জানে তোমার প্রার্থনা

রোজ, ক্রন্দনে সমাপ্তি হয় নিশীথের অর্চনা!



ধূলোর আস্তরণ 

অভিষেক


স্মৃতির সুতোয় জড়িয়ে আছে 

প্রিয়তমার কাজল-হরিণ চোখ

ঘন অমাবস্যার মতো

আজানুলম্বিত কেশ 

নূপুর ঝংকৃত পায়ের ছাপ 

কোমল হাতের শিহরণ জাগানো

স্পর্শ...

স্মৃতিরা মনের মণিকোঠা 

থেকে পুরোপুরি মুছে যায় না

শুধু সময়ের আবর্তে

স্মৃতির গায়ে ধূলোর আস্তরণ 

পড়ে। 


প্রিয়তমা, তুমি আজ দূরতর দ্বীপ

ভালোবাসায় “প্রাক্তণ” বলে কিছু হয় না।


অভিমান

মিশির হাবিব 


একদিন আমাদের দেখা হবে- 

হয়তো কোনো ব্যস্ত শহরের নির্জন  গলির মোড়ে।

ব্যতিব্যস্ত হয়ে তুমি হেঁটে যাবে তোমার কাজে। 

আমি সেদিন সব কাজ ফেলে রাখবো। 

তোমার থেকে একটু দূরে চুপ করে থাকবো দাঁড়িয়ে 

তন্ময় হয়ে তোমাকে দেখবো- তোমার অবহেলা, 

তোমার দীর্ঘ বুকে কঠিন হৃদয় দ্রুত পরখ করে নিবো একবার। 

তুমি হম্বিতম্বি করে হেঁটে যাবে 

আমি ঠিক দাঁড়িয়ে রইবো

অনেক বছর পর দেখা হলে মানুষ পরিচিত মানুষের দিকে ছুটে যায়।

অনেক রাতের পরিচিত শুকতারা আমি তবু অনড় দাঁড়িয়ে থাকবো, 

তোমার দিকে এক পা এগোবো না।

আমাকে দেখা মাত্র এগিয়ে এসে অনেককিছু জিজ্ঞেস করবে, 

আমি অন্যত্র তাকিয়ে থাকবো নিরুত্তর যেন আমি কিছু শুনছি না, দেখছি না, 

তোমাকে চিনি না, আগে কোনোদিন দেখিও নি! 


মানুষ সেদিন জানবে- কতটা আঘাত পেলে অনেক বছরের লালিত ভালোবাসা অনেকদিন পর 

চোখের সামনে হেঁটে গেলে মানুষ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকে।

তুমিও সেদিন বুঝবে-সহজ মানুষের অবহেলা ভীষণ কঠিন।





শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট