পদাবলি : ০৪



মানুষ বিষয়ক প্রস্তাবনা
জারিফ এ আলম

সুরের সাথে মিলিয়ে যেতে যেতে পাশ ফিরে ঘুমোয় ঔরশের সন্তান। আর তুমি জননী হবার ইচ্ছে নিয়ে ভীষণরকম আঁকড়ে থাকো। এ রকম প্রেমকাতর ইচ্ছে নিয়ে ঢেউ তুলে নেচে যায় পরিযায়ী সময়। কিসের অভিযোগে রাত ডেকে নেয় গোপন অভিসারে। চর্যার চঞ্চল হরিণীর মতো দাপিয়ে বেড়াও নিরাপদ বুকের আকাশজুড়ে। কখনো দুর্বৃত্তের মতো হরণ করে নিয়ে যাও মধ্যরাতের ভাবনাসকল। অর্ফিউস সুর তোলে বেদনার। অভিযোগ নেই বলে, হৃদয়ের পাশটাতে দখল নিয়েছো খুব সহজে। সকল অর্চনা শেষে মানুষ যখন তোমাতেই আসে ফিরে, তোমাকে পাবার প্রস্তাব ওঠে মানুষের ভিড়ে।

অদৃশ্য বার্তা
হাসান মাসুদ 

যখন তোমার গুলিবিদ্ধ ঠোঁটে
রক্তের প্রবাহ বিছিয়ে দেয়
সবুজ রঙের গালিচা,
তখন তোমার সেই দেবীত্বটুকু
পাঠিয়ে দিও- উৎসুক কামনায়।

যখন তোমার মনের ভিতর
বেদনার ভায়োলেটে আড়ষ্ট সুর
বাজায় উচ্ছ্বল কাকাতুয়া,
তখন টেলিফোন বার্তায় পাঠিয়ে
দিও- দৃঢ় কামার্ত কন্ঠস্বর।

যখন প্রতিনিয়ত একটা অদৃশ্য
ছায়া তোমাকে আবিষ্ট করে রাখে
হলুদ রঙের বসন্তের মতো,
তখন একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস পাঠিয়ে
দিও- বাতাসের ব্যাঞ্জনায়।



কেউ একজন  
খায়রুল আলম রাজু

আমার মৃত্যু হোক, আমি না চাইলেও
কেউ একজন চায় আমার মৃত্যু হোক-
আমার আয়ু ফুরাবার আগেই।

আমি দুঃখের সাগরে নামতে না চাইলেও
কেউ একজন চায় আমি দুঃখী হই-
আমার চারপাশ, ঘিরে থাকুক তার অভিশাপ!

আমি কাঁদতে না চাইলেও
কেউ একজন চায় আমি আজীবন কাঁদি,
তার চাওয়া-পাওয়া আর প্রার্থনা জুড়ে;
শুধু এই আমির ধ্বংস...

আমার আষ্টেপৃষ্টে মৃত্যুর মিছিল,
আমার চারপাশ জুড়ে দুঃখের ঢেউ,
আমার চোখের পাতায় টলোমলো জল,
আমার জীবন জুড়ে কতোই না আঁধার...


পৃথিবী এভাবে ঘুমাক
নূরনবী সোহাগ

বাসরপালঙ্কে ক্ষুধার্ত আঙ্গুল
খাঁজে খাঁজে ছুটে বেড়ায়
ধাওয়া খাওয়া হরিণের মতো
ঘামের প্রলাপে
মোহ বাড়ে
অবোধ, সাঁজে শ্রেষ্ঠ উন্মাদ
শীতরাতে ঢুকে যায় শরীর
গ্রীষ্মের উত্তাপ ভুলে
আলো নিভে যায়
রঙিন স্বর্গ জ্বেলে
দূরত্ব নিয়ে যায় নিজস্বতা
অংশ অংশ তুলে দেয় স্বইচ্ছায়
যা কিছু একান্ত
শরীরের ফ্রেমে শরীর পুঁতেছে রাত
আলোকে ডেকো না
পৃথিবী এভাবে ঘুমাক


না বলা কষ্টগুলো
সাহিদা সাম্য লীনা

তোমার মনের পাসওয়ার্ড টা দাও,
এতো লজ্জা কিসের?
তোমার কথা অনেকে বলে,
তুমি ঘাড় তেড়া, রাগি
আমার একটুকুও বিশ্বাস হয় না।
আমার সাথে কেমন সুন্দর করে
কথা বলো, কতো উপদেশ
আমার নিজের প্রতি যতœশীল হতে বলো
আরো কতো কি!
ব্যস্ততা কমাতে, কাজ কমাতে।
তুমি আমায় নিয়ে এতো ভাবো!
 আমার লেখার প্রশংসা!
মনের যে আরো কিছু কথা তোমার
তা তো বলনা, এতো দ্বিধা কেন?
জান, আমি অপেক্ষায় সেসব শোনার!
তোমার পাসওয়ার্ড পেলে
আমি নিজেই খুঁজে নিতাম তোমার না বলা কষ্টগুলো।


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট