পদাবলি : ০৫



পোড়া হৃদয়ে প্রেম জাগাতে নেই
রায়হান কিবরিয়া রাজু

ভুলে যেতে পারিনি আমিও।
ব্যথার জোয়ার চলছে দিনরাত,
বুক জুড়ে প্রেমিক আত্মার আত্মচিৎকার
যদিও কথা, হাসি, আড্ডার সেই লাল-নীল দিনগুলি
রংহীন বিবর্ণ ডায়েরিতে বন্ধি করিনি কখনও
কখনও মনে হয় নি তোমাকে বিরহ বাসরে বসাবো
অশ্রুর ঝরে পড়া নিঃশ্বব্দে পুরোনো আমিকে
খোঁজার বিন্দু মাত্র প্রয়াস ছিল না আমার।

অথচ আজ তুমিহীন নিঃসঙ্গতা বারবার নিয়ে যায় কল্পরাজ্যে
ধোয়াসায় ভরে যায় পৃথিবী
ভীষণ অন্যরকম হয়ে যাই আমি, ভীষণ অন্যরকম।

জানি তুমিও ভীষণ অন্যরকম হয়ে যাও
চোখ ফেটে তোমারও বেরিয়ে আসে জল
সেই মানুষটার ভীড়ে আমাকেও খুঁজতে চেষ্টা করো নির্বিকায়
শরীরের তাপে আমার নামেই বজ্র নেমে আসে তোমার হৃদয়ে
অথচ সেই তুমি জানো পোড়া হৃদয়ে প্রেম জাগাতে নেই।



মাদকতার মিছিল
রুহুল আমিন রাকিব

অবশেষে তুমি এলে, শরৎ রাতের জোছনা স্নানে;
তোমার আগমনে শিউলি বকুলের কী যে লজ্জা!
বুক এপিটাফকে যেন ষ্ট্রিম রোলার চাপিয়ে দিল।
আমার নিশ্বাস যেন গরম বীণ; তোমার ছোঁয়া পেয়ে!
মুহুর্তে নিজেকে আবিস্কার করলাম, তোমার খাঁজ-কাটা দেহর ভাজে।
আমার মৃত্যু প্রায় দেহ অবয়ব জুড়ে,
ঢেউ খেলতে শুরু করল একশ চার ডিগ্রির অধিক জ্বর।
আজ কত বছর পরে, নেতিয়ে পড়া শরীর জুড়ে খেলা করল মাদকতার মিছিল!
কিছু সময়ের জন্য আমি যেন স্বর্গিও সুখে আবদ্ধ ছিলাম।
অতঃপর নেশা কেটে গেলে, তোমাকে আবিস্কার করলাম অচল পয়সার মতো।
হে মানবী তুমি ভুলে যেওনা, পুরুষ মানেই খাঁজ-কাটা দেহর বিভোর।


নিওরের টিপ
দ্বীপ সরকার

আকাশ পেখম মেললে- পৃথিবীও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে
ছায়াঘেরা কুয়াশার চোখ ফোটে, দূর্বাঘাসের কি যে উল্লাস!
কাশবনে মেঘসমূহের দরদ ভরা হাসি-

কুকুরে কুকুরে ইশারার ঝর- অদ্ভূদ সঙ্গমের দিন ওদের
অতঃপর প্রযতেœর জোসনাসমূহ
কুয়াশার খাম থেকে বেরিয়ে আসে
খিল খিল করে হাসে জানলার কার্টেইনের কাছে

এ কারণেই শরতকে বলি- আসো ফিরে ফিরে
বহকাল ঘুরে ঘুরে ফের আসো
পৃথিবী সমর্পিত হলে- পলাতক শীতও আসে দেশে ফিরে

কুহুক জড়ানো গোধূলীরা ডুবে যাচ্ছে যাক একখন্ড ‘নিওরের টিপ’ নিয়ে
পরের সকালে খোঁপায় বেঁধে মুদ্রিত হয় নতুন করে


প্রাণোচ্ছল
কাজী মারুফ

হৃদয়ের সবটুকু আবেগ আপ্লুত অনুভূতি দিয়ে,
নিপুণ কারুকাজের সংমিশ্রণে
পঙ্তিগুলো গেঁথেছি মনের পাতায়।
শ্বাস-প্রশ্বাস যেন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে
ক্ষত-বিক্ষত করেছে হৃদয়।
বিষাদের নোনাজলে ভিজে যায় আঁখিদুটি,
মন পিঞ্জিরার পোষাপাখিটা করছে ছোটাছুটি
উড়ে যেতে চায় দূর অজানায়।

তবুও থেমে নেই ক্লান্ত পথিক
ধীরেধীরে চলছে সম্মুখ পানে-
বুকের গহীনের লালিত জমানো কথামালা,
অনায়াসে ভেসে বেড়ায় স্মৃতির আঙিনায়।
শূণ্যতা করে হাহাকার!
অতীতের দুঃস্বপ্নগুলো অস্থির করে তোলে
চলার পথ বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
আকস্মিক বন্ধ হয়ে যায় লেখনীর পাতা
হাতটা শক্তিহীন হয়ে ঢলে পড়ে যায়।
স্তব্ধ হয় কলমের শক্তি
হারিয়ে যায় মহামূল্যবান সময়!

বিরামহীন চলছে ক্ষণিকের জয়োল্লাস!
পুনরায় আবার চেষ্টা,
এ চেষ্টা যেন তেজস্বী, প্রাণপণ লড়াইয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা।
এই সংগ্রামে নেই কোন সংশয়, দুঃশ্চিন্তা, পরাজয়ের ভয়,
নেই অস্থিরতা, অপুষ্পক  হা-হুতাস,
ইচ্ছেশক্তি, আদর্শ আর সততায় কভু হয়না কেহ পরাজয়।
দুর্গম কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে বহুদূর,
এর পরই তো রয়েছে কাঙ্খিত মঞ্জিল,
যেখানে থাকবে না কোলাহল, আক্রোশ, স্বার্থের কুপোকাত,
প্রাণবন্ত সজীব নিঃশ্বাসে শীতল হবে প্রাণ
শান্তিময় হবে তামাম ধরণী।
স্বাধীনতার উদীয়মান সূর্যটা প্রোজ্জ্বল হয়ে বিলাবে আলো অজ¯্র ধারায়।


তুমি আসলেই ছদ্মনাম
শেখ আশরাফুল ইসলাম

তুমি এমন হয়েছো যে, আমার কথা শুনতে নারাজ
কেন হয়েছে এমন, বলতে আমি পারছি না ওগো সুরাজ!
তোমার নাম টা যেন একটু ভিন্ন তাই না?
তবুও কেন সরাসরি বলো না, তোমাকে আমি চাই না!
আমার ভালবাসার কথা গুলোকে,
ব্লাকহোলের মত পাঠিয়ে দাও তোমার অন্তর গহিনে!
সেই কথা গুলো আর্তনাদেই ডুবে মরে ব্লাকহোলে গহিনে।
তোমাকে মিথ্যাবাদী ও বলা যায় না,
যা বলো সত্য, না বললে নয়।
এটি আসলে কি করে হয়!
তুমি নিজেকে আড়াল করতে জানো বটে,
তুমি চিন্তায় ও থাকো, তোমার কখন কি রটে।
তুমি সূর্য থেকে ত্যাজ নাও ঠিকি,
আমি তা বারে বারে দেখি।
তুমি এক আসলেই ছদ্মনাম,
তুমি আসলে কে আমি যদি যানতাম!


শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট