পত্র
আমি আকাশ থেকেও কঠিন নিরাশ হব
হে বন্ধু,
নৈরাশ্য, নৈরাশ্য
তুমি কি জানো?
এখানে মেঘ কোনো বর্ষণ করেনা
সূর্য আলো দেয়না
নতুন কোনো চারাগাছ রোপিত হয়না
ভূমি ফাঁপা ও ফাকা
একটি শুষ্ক তৃণও নেই
নিরাপত্তায়
লাঙ্গলের ফলার কোনো চিহ্ন নেই
আমি আকাশ থেকেও কঠিন নিরাশ
হ্যাঁ!
এই নিস্তব্ধ মরুভূমিতে
একজনকে স্মরণ করি।
কী নির্মল লাবণ্যময়ী প্রসূন !
কী মুক্ত সারভ!
কী চপল সমীরণ!
কী সূর্যহীন উইলো গাছ!
কী উম্মাদ হরিণা যে ঝোপে নিদ্রাচ্ছন্ন!
কী চমৎকার!
এই নিস্তব্ধ মরুভূমিতে স্মরণ রেখেছি
যে বিহগেরা ভ্রমণগীত সাজাচ্ছিল
পরিবেশ গভীর আধার ও নিঠুর হলো
তুমি বললে যে মরুভূমির নিনাদ গগনে হলো।
সেখানকার কথাও স্মরণ আছে
শরৎ হলো
ফুলগুলো অনাবৃত হয়ে মাটি ফুরে অঙ্কুরিত হলো
নাম না জানা ফুলগুলো!
ভূমিতে
উৎগত হলো না
অন্য সারভগুলো চিহ্ন হয়ে রইল
অন্যদের জন্য
আসমানের থেকে জাঁকজমকপূর্ণ নির্মল নয়
আবারো আমি আকাশ থেকে কঠোর নিরাশ হব
নৈরাশ্য, নৈরাশ্য
হে বন্ধু।
দর্পণগুলো শূণ্য
রাতের বেলা পুতুলগুলো
লুন্ঠিত হয়েছে
শহরে কোনো চিহ্ন নেই
নগরে বিপনিগুলো খোলা আছে
খোলা, শূণ্য ও আধার
সুবিধাভোগীরা সমীরণ থেকে সুবিধা নিচ্ছে
বৃষ্টি হতে সুবিধা নিচ্ছে
কর্মহীন লোকদের ঢল নেমেছে
সুবিধাভোগীরা সুবিধা চাচ্ছে
বলছেঃ বৃষ্টি?
কোন ধরনের বৃষ্টি তারা পছন্দ করে?
জানো কি?
ভারী বৃষ্টি এসেছে
আর খদ্দেরগণ
শহরের মেরুদ-হীনতার সঙ্গে
মিলিত হবে
তাকগুলোর পিছনে
প্যাকেট করবে ও ফুলেল কাগজে মোড়াবে
আর
নীল টায়েলস এর উপরে
রোহিত মাছের ছবি মুছে দিয়েছে
নগর দ্রাক্ষারসগুলোকে মাটি করে দিল
সুবিধাভোগীরা নগরের শুন্য ক্ষত গুলোকে
রাস্তার ফুটপাতগুলো
উজ্জ্বল আলোয় ভরে গেছে
নগরের চেহারাগুলোকে ঘুমিয়ে দিয়েছে।
চেনা ফুলবাগানগুলো
আমার ফুল পাখি হলো
ও একটি বাগানের মাঝখান দিয়ে গেল
একটি কলি হলো ও সমান্তরাল জলে বসল
গুলবাগিচায় আমার পরিচিত ফুল কোথায় ফুটেছে?
কোনো চিহ্ন দেখছি না
তার এই বাগানভূমিতে?
না কোনো কপোত?
অগ্নি প্রজ্জ্বলকারী ফুলে নয়
বেগুনি ফুলে নয়
জুঁই ফুলেও নয়
কোনো অনর্থক কথা নয়
দূত কবুতরগুলোও নয়
জাঁকজমক কাননগুলোও নয়
আমার ফুল এই সাধারণ ফুলগুলোর মধ্যে কোনটি?
তুমি কোন পথ বলবে?
তুমি কোন পথে যাবে?
আমার ফুল
তুমি আমাদের রহস্যে কোন ভূত?
বলো?
ভগ্নকাচের টুকরার শেকড় কর্তন করো
আমি শুধুমাত্র এরকম প্রস্ফুটিত ফুলের অপেক্ষায়
সকল শাখাগুলো ভেঙ্গে গেছে
আশায় বসে আছি ও স্মৃতিগুলো রোমন্থন করছি
ঐ আধার ঘরে
সহস্র প্রতিশ্রুতি করেছিলাম
এখন ধোকা খেলাম।
কবির পরিচয়ঃ
মীম আজাদ ইরানের রাজধানী তেহরানে শামসি ১৩১২ সালে
জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা তেহরানে শেষ করে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের উপর শামসি ১৩৩৬ সালে সফলতার সাথে সম্মান শেষ করেন।
তিনি শিক্ষকতা করেছেন প্রায় দশবছর। মূলত মীম আজাদ একজন শিশু সাহিত্যিক। তিনি
ইংরেজি ভাষা ভাল জানেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার কবিতা তিনি অনুবাদ করে শিশুদের
মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তার কিছু শিশুতোষ এবং অন্যান্য গল্প সংকলন প্রকাশ হয়েছে।