ই-পেপার : ধানশালিক : সংখ্যা ১৩৮ : ভালোবাসা দিবস সংখ্যা

ই-পেপার : ধানশালিক : সংখ্যা ১৩৮ : ভালোবাসা দিবস সংখ্যা
তারুণ্যের শিল্প সরোবর : : ধানশালিক : : সংখ্যা ১৩৮
শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০


ভালোবাসার শব্দমালা : সোহেল রানা

ভালোবাসার শব্দমালা : সোহেল রানা










শব্দমালা
সোহেল রানা


প্রেমত্তা

পুরোনো মাটির ঘ্রাণ আসে :
লকলকে কচিডগায় প্রাণের স্পন্দন,
গুল্ম লতাপাতায় জড়ানো মায়ার আবরণ।

বলি: দয়া বি. ‘মিছে এ জগৎসংসার' -
যতবারই বলি, বোঝেনা সে
বারবার পিছন ফিরে চায়!
বলি: সে তোমাকে ভুলে গেছে
রাখেনি মনে! ততবারই বলে এ হৃদয় -
সে নাকি তাতে জড়িয়ে আছে।

জানিনা বুঝিনা আমি, এর নাম বুঝি
ভালোবাসা - হৃদয়পোড়া ব্যথা!

অমলিন ক্ষণ 

তুমি আমি হেঁটেছিলাম একদিন
নদীর বুক চিড়ে জেগে উঠা চরে
পাশাপাশি আমরা দু’জন হাতে হাত
পায়ের তলে নরম নরম সবুজ ঘাস।

নীলাভ আকাশ শান্ত সমীরণ
ক্লান্ত পাখির ডানা
বেখেয়ালী কিছুটা সময়
অবশেষে সন্ধ্যা নামে

কিছু না বলা কথা
কিছু মুগ্ধতা
কিছু বিস্ময় আর শিহরণ
আজও স্মৃতিপটে উজ্জ্বল অমলিন।


ভালোবাসা বুঝতে হয় 
 

কিছু ফুল
কিছু সুবাস
কিছু কথা
কিছু হাসি
কিছু গান
কিছু কবিতা -
এই নিয়ে পথ চলা।

২.
নানান ঋতুর নানান ভাষা,
প্রেমিক হতে হলে
বুঝতে হয় তাদের কথা।
দেখতে হয়
জানতে হয়
বুঝতে হয় -
পাহাড়ের মতো শান্ত থেকে, বৃষ্টির জন্য
অপেক্ষা করতে হয়।

৩.
গোলাপ কাঁটায় হাত রাঙিয়ে, গোলাপ ফুলের
সুবাস নিয়ে - তাকে রাখতে হয় সযতনে।

৪.
মনহারা পাখি বোঝে - ভালোবাসা হারিয়ে গেলে
তার কেমন কেমন লাগে।

৫.
ভালোবাসা সযতনে রাখতে হয় -
ভালোবাসা হারিয়ে গেলে, তাকে কি খুঁজে পাওয়া যায়?

স্মৃতি 

মনে পড়ে তুমি আমি পাশাপাশি
দু’জনে হাত ধরাধরি করে
খোলা আকাশের নিচে হেঁটেছিলাম,
নদীর বুকের মধ্যখানে, জেগে উঠা চরে
শিশিরভেজা ঘাস ছিল,
আমার হাতে ছিল তোমার কোমল তালুর পরশ।
নরম ঘাসে তোমার পায়ের
নূপুরের ঝঙ্কার-- এখনও হৃদয়ে শিহরণের ঢেউ তোলে।

স্মৃতিময় আকাশে-- দিগন্ত থেকে দিগন্তে
হৃদয়মেঘ ভেসে ভেসে যায়
স্মৃতির নদী মেশে মোহনায়,
সন্ধ্যার পাখি ফেরে নীড়ে
আকাশ মিশে যায় আরো ঘন নীলে।
কেবল তুমি রয়ে গেছ আমার হয়ে নয়, আমার স্মৃতি হয়ে।


তোমারই ভালোবাসাতে 

হৃদয়ে বেজেছে বাঁশি, রিনিঝিনি রিনিঝিনি
তোমারে দেখি

জীবনে ভাবিনি
কখনো, কোনদিন আগে 
এভাবে, আমি যে তোমারই প্রেমেতে...

আমি দেখেছি আমার দু নয়নে
যাকিছু লেগেছিল ভাল, হৃদয়-মদিরে
‘সে-ই ভালোলাগা ভালোবাসা তোমাতে’...
তাই তো, আমার এই হৃদয়                                                                           
তোমারই ভালোবাসাতে.।







ভলোবাসার শব্দমালা : ইব্রাহীম রাসেল

 ভলোবাসার শব্দমালা :  ইব্রাহীম রাসেল







শব্দমালা
ইব্রাহীম রাসেল


কেবল ভালোবাসার জন্য

একবার হাত ধরে যদি ফের ছেড়ে দাও
এই অন্ধকার গলিতে তবে বলো কী করে হাঁটি!
স্পর্শের সুখটুকু শিখিয়ে যদি দেয়াল তুলে দাও
ভালোবাসার এই কাঙাল বলো কী করে বাঁচি!
নীলিমা! পাথরের বুকে সবুজ বাগান করে
ফের কেন পাথরেই ফিরিয়ে দাও!
এই অবুঝ অনুভূতিকে লাই দিয়ে দিয়ে স্ববুঝ করে
আজ কেন গলা টিপে শ্বাস রুদ্ধ করতে চাও!
চেয়ে দ্যাখো এখনও রয়েছি দাঁড়িয়ে একা নিঃস্ব
অন্ধকার সেই অচেনা গলিতে
তোমার তোলা দেয়ালের কার্ণিশে কাঙাল এক,
এই স্ববুঝ অনুভূতিরা আজ আমায় কুঁড়ে কুঁড়ে খায়।
কেবল ভালোবাসার জন্যই এই আকুতি
এর জন্যই তোমার কাছে হেরেছি বারবার।



তোমার হাতের জাদু

নীলিমা! তোমার কাননের ফুল জানে
তোমার হাতের জাদু, তোমার স্পর্শের গভীরতা;
ওফুলের দিকে তাকিয়েই বলে দিতে পারি
একবার তুমি ছুঁলে পরে কী হয়, কী উর্বরতা
ছড়িয়ে পড়ে শিরায় শিরায়, মুকুলে-মুকুলে।

যেখানেই তুমি রেখেছ হাত, ফুটেছে গোলাপ
ফুটেছে জুঁই, চামেলি, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ;
মরতে বসা গাঁদা গাছেও তোমার স্পর্শের পরে
গাছময় ফুটেছে হলুদ গাঁদা, একটি দুটি ফুল ধরা
অপরাজিতা গাছও ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে।

নীলিমা! একটিবার যদি ওহাতে আমায় ছুঁয়ে দিতে
পৃথিবীতে আমিও হতে পারতাম সুন্দর কোনো ফুল।



মহাজীবন

নীলিমা! কেবল একটি গোলাপের প্রত্যাশা ছিল,
তোমার কাছে হাত বাড়িয়ে চাইতেই
পৃথিবী অবাক করে দিয়ে এত্ত এত্ত ফুলে ফুলে
ভরিয়ে দিলে আমার দু’হাত, আমার আঙিনা
পা ফেলে আমার হাঁটার পথ, আমার বসত ভিটা
যে দিকেই যতদূর চোখ যায় যেন ফুলের অরণ্য।

এক আঁজল জল চাইতেই দিয়েছ এক মহাসমুদ্র
একমুঠো জোছনার বাসনায় দিয়েছ মধুপূর্ণিমা।
একটি মুহূর্ত চেয়েছি কেবল ভালোবাসার জন্য
অনন্ত জীবন তুমি নিরঙ্কুশ সপেছ আমায়।

এতোটুকু স্বস্তি নিয়ে বেঁচে থাকতে চেয়েছি বলে








ভালোবাসা শব্দমালা : ইসরাফিল আকন্দ রুদ্র

ভালোবাসা শব্দমালা :  ইসরাফিল আকন্দ রুদ্র











শব্দমালা
ইসরাফিল আকন্দ রুদ্র


উপেক্ষা

তুমুল বৃষ্টিতে লুকায়িত অশ্রু বাষ্পায়িত চোখ
হতাশার কালিমায় লেপন করা ইচ্ছে সব
অতি নিকটবর্তী এই পরিস্থিতি! কান্না, কান্না ও কান্না।

সবকিছুকে উপেক্ষা করে ঝুলে থাকে বেয়াদব
শাদা ঘরের ভেতর থেকে দ্যাখে ভবিষ্যত।
‘হিমুর নীল জোছনা’র উপরে নিকোটিনের কারখানায়
ওষ্ঠ ও অধর চেপে ধরে তার ; শেখায় ভালোবাসা


প্রশ্ন

হাতে হাত রেখে পাশাপাশি সমান্তরালে হাঁটা
হাত ধরে রাস্তা পার হওয়া, রিক্সায় করে ঘুরে বেড়ানো হাতে চুড়ি পরিয়ে দেওয়া, অযথা কারণে যেখানে সেখানে রাগ দেখানো সব কী অতীত হবে?
দীর্ঘ সময় হবে না দেখা, যতদিন যাবে!
এইসব ভাবতেই শিউরে উঠে আমার ভাবনার দেয়াল
কেবলই যাতনাময় অতীতে উদ্বেলিত করবে কী আমায়?
না, তা হবে না, তা হবে না। অন্য কোনো অবলার দিকে তাকালে আমার মুখ, চোখ চেপে ধরা-
এ ছাদ থেকে ও ছাদে হাত বাড়িয়ে তোমায় নেওয়া
গিফটের পরিবর্তে প্রচুর ভালোবাসা নেওয়ার দাবি
দাঁড়ি ভর্তি গালে আদর মাখা স্পর্শ, আড়ালে চাহনি
আমার কক্ষের বই বোঝাই করা নির্লিপ্ত সাধারণ টেবিলে- তোমার পড়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা
হঠাৎ গভীর রাতে আমাকে দেখার তীব্র পিপাসা
আমার মাথা থেকে পাকা চুল এনে দিয়ে
নানান বিশ্লেষণ ধর্মী হাস্যকর বয়ান। এইসব কী ক্রিয়ার কালের - পুরাঘটিত অতীত হবে?
তখন কী আমরা দুজনেই বলবো- তাম, লাম ?
এসবের কিছুই চাইনা, কিছুই না।
আমার মনের বিচরণ যত স্থান জুড়ে
ততদূর ভেবে কী স্মৃতি রোমন্থন হয়ে পড়বে?
আমার প্রতিটি লেখা জমা করছো তোমার নিকট, ভাবতেই ভয় লাগে- সেগুলো কী কখনো আগুনে ভস্মীভূত হবে কিংবা অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মতন পড়ে থাকবে কোনো এক ভালোবাসা খেকো রাস্তায়


ভাসোপ্রেসিন

ফুসফুসের মাঝখানে অবস্থিত ত্রিকোণাকার ফাঁপা অঙ্গ
যেখানে তোমার বিচরণ সর্বদা তাতে অনৈচ্ছিক পেশিতে টান পড়ে।
আমাকে ভালোবাসার দায় হতে তুমি মুক্ত। এখন দুজন দুজনার ছায়া দেখলেই ঘৃণায় মাতি
বলো, আর কতকাল তোমারই উপহারকৃত আদো ডায়েরিতে গল্প লিখবো- ‘তুমি স্বৈরাচারী’

গভীর নিশুথ রাতে একচালা ঘরে শুয়ে শুয়ে তোমায় ভাবি
সে ভাবনায় একচালা সরে প্রদর্শন করায় খোলা নীলাকাশ।
‘আর কতটা ভালোবাসলে প্রেমিক হবো আমি?’
অবশ্য প্রেমিক হতে গেলে নারীর মন বুঝতে হয়। অথচ মন চেনা, বোঝার ব্যাপারে আমি অপরিপক্ক।
তবে চরম সত্য এ বাণী- ‘অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হতে নিঃসৃত ভাসোপ্রেসিন হরমোন মস্তিষ্কে উদ্দীপনা জাগায় শুধু তোমায় ভালবাসতে ’
ভালবাসি। বলো ‘আর কতটা ভালোবাসলে প্রেমিক হবো আমি ’





জলপাই রঙের ভালোবাসা

জলপাই রঙের ভালোবাসা









জলপাই রঙের ভালোবাসা
যাহিদ সুবহান

ওর নাম ইমন। গ্রামের নি¤œবিত্ত পরিবারের ছেলে। বাবা পুরোদস্তুর কৃষক। নিজের জমিজমা নেই বললেই চলে। অন্যের বর্গা জমিতে চাষবাস করে সংসারটা চালায়। ইমন বাপের একটাই ছেলে। ছেলেটা বাবার স্বপ্ন সফল করার জন্য খুব চেষ্টা করছে। বলা যায় জীবনের সাথে লড়াই করছে। কৃষক বাবার বড় স্বপ্ন; অনেক বড়। ইমনকে একদিন অনেক বড় মানুষ হতে হবে। স্বপ্নবাজ বাবার পাহাড় সমান স্বপ্ন থাকলেও সামর্থ্য খুব অল্প। ছেলেটাকে ঠিকমত যোগান দিতে পারে না। অভাবের সংসারই ঠিকমত চলে না। বর্গা নেওয়া অন্যের জমি চাষ করে আর কত রোজগার হয়! জমির মালিককে দিতে হয়। সেঁচের পানি, সার আরো কত খরচ! তাই ইমন বাবাকে মাঠের কাজে সাহায্য করে সকাল-বিকাল। ইমন স্কুলে যায় আবার বিকেলে ফিরে এসে বাবাকে সাহায্য করে। বাপটা অশিক্ষিত হলে হবে কী লেখাপড়ার মর্ম সে বোঝে। স্কুলে যাওয়ার সময় হলে বাবাই তাগাদা দেয় স্কুলে যাওয়ার জন্য। ছেলেটা বাপের মত মাঠের কামলা হোক তা সে চায় না। ইমনের মাও খুব কষ্ট করে। ঘর-গেরস্থালী দেখাশোনা করার পাশাপাশি ছাগল-মুরগী পোষে ছেলের জন্য। তারও খুব স্বপ্ন ছেলেটা তার অনেক বড় হবে। ইমনের বাবা রাতে খেতে বসে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন আর বলেন, ‘তোর ম্যালা বড় মানুষ হওয়া লাগবি বাপ!’

ইমন এখন ত্রিশ বছর বয়সী এক যুবক। নিজেকে সে অসফল মানুষ মনে করে। তবে হাল ছাড়ে নি। বড় মানুষের সংজ্ঞা সে জানে না। বাবার স্বপ্নগুলোর হয়তো মৃত্যু হয়েছে। কিন্তুবাবা এখনো বেঁচে আছেন। বাবা চেয়েছিলেন ইমন বড় হয়ে বড় সরকারি চাকরি করবে। বাবার দৃষ্টিতে সেটিই হয়তো বড় মানুষের সংজ্ঞা। বাবার সে স্বপ্নে গুড়েবালি।  বি,এ পাশ করে একটি ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি সে। শহরে থাকে একটা ম্যাসে। মাসে একদুইবার সুযোগ করে বাড়ি আসে। বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখে যায়।

একটা মুখ সহসাই ইমনের চোখে ভেসে আসে। কিশোর বয়সের দুটি চোখ ইমনকে খুব ভাবায়। লাউয়ের কচি ফুলের মত একটা চেহারা ইমনকে স্মৃতির অনুরণনে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। একটা প্রায় অস্পষ্ট মুখ ইমনের ঘুমে ব্যঘাত ঘটায়। ইমন বুঝতে পারে না তার এমনটি কেন হচ্ছে। দূর্বায় জমে থাকা শিশিরের মত একটা নরম হাত যেন ইমনকে ছঁয়ে যায়। ইমন ভেসে যায় অন্য এক জগতে। ডুবে যাওয়া শেষ রাতের চাঁদের মত একটা মুখ ইমন কখনোই ভুলতে পারে না। যখন ইমন সম্ভিৎ ফিরে পায় তখন বাবার স্বপ্নের কথা মনে পড়ে। বাবার স্বপ্ন আর একটা মুখ একাকার হয়ে যায় ইমনের ঘুমুঘুমু চোখের সাথে; জীবনের সাথে।

মুখটা একজন কিশোরীর। হাইস্কুল জীবনে যাকে দেখার জন্য মনটা সবসময় ছটফট করতো। সেবার ইমনের বান্ধবী সুরভীর পাশে স্কুলের একটা অনুষ্ঠানে দেখেছিল সে। ইমন তখন এসএসসি পরীক্ষার্থী আর ঐ মেয়েটা; ওর নাম শোভা। অন্য একটা স্কুল থেকে এসে ইমনদের স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। এই প্রথম কোন মেয়েকে দেখে ইমনের বুকটা নড়েচড়ে উঠলো। এর কারণ ইমন জানেনা। এর আগে কোন মেয়ের জন্য ইমনের এমনটি লাগে নি। ইমনের কত বান্ধবী আছে সুরভী-মিম-রীতা ওদের জন্য এভাবে মনের টান অনুভব করেনি ইমন। কী যেন আছে মেয়েটার মধ্যে! সেই থেকে শুরু। শোভার জন্য ইমনের মনের গভীরে একটা বসতবাড়ী গড়ে ওঠে। সে যেন দিগন্তের মাঠে হাঁটছে। সবুজ মাঠের মধ্যে লাল রঙের একটা ফুটন্ত গোলাপ ইমনকে বার বার ডাকছে। ইমনের কিশোর মনে এ এক অন্যরকম অনুভ’তি। এই অনুভ’তির নাম কী ইমন তা জানে না। শোভা যেন কঁচি লাউয়ের ডগার মত শুভ্র সুন্দর!

সুযোগ পেলেই শোভার পিছু নেয় ইমন। শোভার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে। কী যেন কী বলতে চায়! কী বলতে চায় ইমন নিজেও জানে না। শোভার কিশোরী মনও সব বোঝে। ওর মনটাও এক অজানা আনন্দে নেচে ওঠে। সেও হয়তো কিছু বলতে চায়। কিন্তু বলা হয়ে ওঠেনা। ইমন আর শোভার এসব কীর্তি দেখে সুরভী শুধু মিটমিট করে হাসে। সুরভী শোভার মামাতো বোন। শোভার ওর নানীর বাড়ি অর্থাৎ সুরভীদের বাড়িতেই থাকে। এতো কিছুর মধ্যেও ইমন বাবার স্বপ্নের কথা ভোলেনা। এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ভাল রেজাল্টও করে। মফস্বলের একটা কলেজে ভর্তি হয়। কলেজে যায় আসে আর শোভার খোঁজ রাখে ইমন। শোভা আরো অনেক সুন্দর হয়ে উঠছে আজকাল।

একদিন কলেজ থেকে ফেরার সময় মাঝপথে একটা বাড়ির সামনে থেমে যায় ইমনের বাইসাইকেল। বাড়িটিতে উৎসবের আমেজ। একটা বিয়ে হচ্ছে। এটা কনের বাড়ি। বড় এসেছে কাঁচা ফুলে সাজানো একটা গাড়ি নিয়ে। এই বাড়িটি ইমনের খুব চেনা। অনেকবার এসেছে এখানে। এটা শোভার নানীর বাড়ি। কনেকে খুব ভাল করে চেনে ইমন। কতক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার পর ইমনের মনে পড়ে বাবার কথা; বাবার স্বপ্নের কথা! ইমন বাইসাইকেলে চড়ে বসে। তার কানে বাঁজতে থাকে বাবার সে কথা, ‘তোর ম্যালা বড় মানুষ হওয়া লাগবি বাপ!’
আটঘরিয়া, পাবনা।