বৃষ্টির কবিতা : মিসির হাছনাইন
বৃষ্টির কবিতা
মিসির হাছনাইন
বৃষ্টি নাচা উঠানে
বৃষ্টি নাচা উঠানে একটা ফুল দেখছি
তখনও ঠিক তুমি এই ফুলটা ভাবছি
মেঘলা দিনে গল্পের বই তোমাকে পড়ছি
টিনের চালে গাওয়া গান তোমাকে শুনছি
হঠাৎ কখন ঘুমিয়ে তোমাকে দেখছি
একটা ফুল পাশে আমি একসাথে ভিজছি
কৃষ্ণপক্ষের অন্ধকার চাঁদ হরিণী ডাকছি
মেঘে মেঘে লেখা চিঠি তোমাকে লিখছি
ভুলে গেছি কবে তোমায় কথায় একবার হাসছি!
টিপ টিপ
রাত দিন মিলাইয়া কত হাজার বার তোমার পাঠানো ছবিখানা দেখেছি- বিকেল থেকে বৃষ্টির ফোটা গুনতে গুনতে এখন মধ্যরাত- পুরনো দেয়ালের ঘাড় ভাঙা বুকের উপর খোলা চুল, তোমাকে বেয়ে ওঠা লতা, হাসিহাসি একটা ফুল বাঁকা ঠোঁটথ ভেংচি কাটে কচুরিপানা ফুলের গন্ধ, তোমার নিশ্বাস টানা নাক, বললে, যখন বাহিরে যাবে..আমায় কি আর সাথে নিবে! চেহারা খারাপ এমন পাগল দেয়াল বাওয়া লতা, একা একা রাতদিন বৃষ্টি গোনে টিপ টিপ... আহা! কেমন সাজে বেরিয়ে গেলে বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি পড়ে... তুমি শুধু হাসলে, আমি পাগল তাকিয়ে থাকি ভেবেছি- খসে পড়বে শুধু আদর করা যায় কপালের টিপ।
যে নদীতে রাতদিন
যে নদীতে রাতদিন হাওয়ায় উড়ে চুল
শুধু দেখি, এই দুলছে ঝুমকো জবা দুল
চরের উপর পাহাড় দেখি, মনে হয় মেঘ না
সমুদ্র আমার চোখে সমুদ্রে যেতে চাও না?
তোমার চোখে চাঁদ ওঠেছে তুমি যখন ডাকো না
পাগল আমি বদ্ধ পাগল- তুমি আমার পাবনা
কেমন মানুষ এই হেসেছে বুকের ভেতর দেখো না
আমি দেখি, ঢেউে ঢেউে তুমি, তুমি আমার মেঘনা।
শহরে শহরে
সস্তা ফুটপাতের বাহারি রঙের চুড়ি
আর, গঞ্জ থেকে আনা আলতাথ চিরুনি
দেখি, আয়নায় কত সুন্দর চাঁদ হরিণী
বৈয়াম ভর্তি আমের আচার শহরে শহরে ঘুরি
বিলবোর্ড পোস্টারে আশেপাশে শুধু তোমার ছবি
চোখের সামনে একটা পাখি হয়ে গেছে কবি
আমি তাঁর পিছন পিছন আজিমপুর গোরস্থান দেখি,
কবর থেকে ওঠে আসা মানুষ হয়ে গেছে পাখি
তোমার বাড়ির ছাদে আমি কেমন করে যাই
রাতদিন ঘুম নাই চোখ খুলে তারপর, ঘুমাই
সে চোখ কে করেছে চুরি তোমার দেখা নাই
শহরে শহরে ঘুরি বাদাম খোসা বাতাসে উড়াই
বৃষ্টির পদাবলি - ০১
আষাঢ়, তুই এবং মৃত্যু
সাজেদুর আবেদীন শান্ত
একদিন কোথাও যাবো না,
একদিন সারাদিন তোর কথা ভাববো।
একদিন কোথাও যাবো না,
একদিন তোর সাথে বৃষ্টিতে ভিজবো।
একদিন খুব ভোরে তোর সাথে হাটবো,
একদিন মরে যাওয়ার সময় ঈশ্বরকে বলবো
হে ঈশ্বর! আরো কিছুদিন সঙ্গ পেতে চাই তার,
সেদিন হয়তো ঈশ্বর হাসবে,
দিবে না সময়, আকুতি যাবে বিফলে
একদিন মৃত্যু চলে আসবে এমন বৃষ্টিমুখর আষাঢ়ে
একদিন মৃত্যুকে সাথে নিয়ে ছেড়ে যাবো তোকে
কারণ আষাঢ়, তুই এবং মৃত্যু ভীষণ প্রিয় আমার।
নেই কোন দোটান
লাভলী ইসলাম
নয়ন স্বপ্ন কাজল গলেছিল
আষাঢ় ঝর ঝর ঝরেছিল
শ্রাবণ সন্ধ্যায় কিছু বলার ছিল
রোদ্দুরে দুপুরে রুক্ষতা জ্বলেছিল
বুকের খরতাপে তপ্ত জল ফুটেছিল
কান্নার গোপন কক্ষে বরষা এসেছিল
মেঘলা বিকেল কত অপেক্ষায় ছিল
গাঙ্গচিল জলের বুকে উড়ছিলো
অপেক্ষায় সমস্ত প্রহর কেটে গেল
এখন শূণ্য মন করেনা আনচান
লিখাহীন পাতা, নেই কোন দোটান ।
আমার কবিতারা
রাজীব হাসান
আমার কবিতারা আমাকে বড্ড বেশি জ্বালায়
কখনো স্বপ্নের মাঝে নিজেকে ভাসায় ভেলায়
আবার কখনো বানায় উদাসীন
কখনো বা করে মনটা মলিন।
আমার কবিতারা আমাকে বড্ড বেশি ভাবায়
কখনো নিজেকে কখনো বা অন্যকে চায়
কখনো এককী থেকে নিজেকে
একাকীত্বের গহীনে হারায়।
আমাদের বটবৃক্ষ
মাসুদ পারভেজ
কখনো কখনো মনে হতো বাবার পরিচয়-
একজন পুরুষ, একজন শাসক।
তার কন্ঠনালী থেকে নির্গত শব্দধ্বনি যেন বজ্রপাত
চোখের আক্ষিগোলকে খেলা করত জ্বলন্ত সূর্য
তার পদধ্বনিতে বেজে উঠত যুদ্ধের দামামা।
ঘরের চৌকাঠ পেরোনোর বয়স হলো-
পথে পথে দেখি বাবার পদচিহ্ন, আমরা নির্বিঘেœ হেঁটে যেতাম ।
পুকুর ভরা পানির জলতরঙ্গে বাবার রক্ত খেলা করত-
আমরা হাঁসের মতো এপার থেকে ওপারে সাঁতার কাটতাম।
তীব্র গরমে যখন একটু ছায়া খুঁজতাম-
বাবা হাত প্রশস্ত করে বটবৃক্ষ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত,
কনকনে শীতে উষ্ণতার চাদর হয়ে যেত।
গাঢ় অন্ধকারে বাবা ঝলঝলে চাঁদ হয়ে ঝুলে থাকত মাথার উপর ।
ফসলের মাঠে সবুজের গায়ে শিশিরবিন্দুর মতো বাবার ঘাম লেগে থাকত।
জীবনের প্রচ- খরায় বাবা মেঘ হয়ে যেত, আমরা আনন্দে ভিজতাম;
ক্লান্তির শরীরে ঝিরিঝিরি বাতাস হয়ে গায়ে লেগে থাকত।
আমাদের গায়ে কাদা লাগতো বলেই বাবা সাবান হয়ে যেত,
পানি দিয়ে ঘষলেই সুগন্ধি ফেনা হয়ে ঝরে ঝরে পড়ত।
আমরা মসজিদভিটায় যেতাম না বলেই বাবা কবরস্থানে শুয়ে গেল
দিয়ে গেল দুরন্ত ঘোড়ার মতো চলার শক্তি।
আমরা ঘরের বাইরে এসেই জেনেছি বাবা একটি বটবৃক্ষ,
আরেকটু দূরে গিয়ে দেখেছি বাবা একটি নীল আকাশ ।
আমি যদি এই মহাবিশ্বের বাইরে গিয়ে দেখতে পারতাম বাবা আরো কত্ত বিশাল হতে পারে!
সমস্ত বিশালতার বাইরে গিয়ে যদি দেখতে পারতাম তবে বুঝতাম-
বাবার পরিচয় আর কত কী থাকতে পারে!
বৃষ্টির কোন দাগ নেই
রাকিবুল হাসান রাকিব
বৃষ্টির কোন দাগ নেই; এ-ই শহরে
ধূসর রঙের আকাশে নীলাভ-সাদা।
মেঘের কোন আনাগোনা নেই;
এখানে বৃষ্টির কোন দাগ নেই;
হাহাকার বনভূমি রৌদ্রময় দিনে-
রৌদ্রছায়ার লুকোচুরি খেলা।।
কোথাও ছায়া নেই, কোন চিহ্ন নেই;
কোথাও বৃষ্টির কোন দেখা নেই!
চোখের জল শুকিয়ে সেই কবে-
বৃষ্টির কোন দাগ নেই; এ-ই শহরে...
কোন বৃষ্টির দাগ নেই;
শতজন্মা বয়সী বটবৃক্ষে
নেই কোন বৃষ্টির দাগ সে-ই পুরনো
দুই শতাব্দীর সেই কুটে ঘরে।
ভাদর মাসের পদাবলি
দ্বীপ সরকার
এই ভাদ্র মাসÑ এই রুপোলী বর্ষা ও গৃহস্থালী রোদ্দুর
ধানের ঠোঁটে আটকে থাকা রৌদ্রের কিচিরমিচির
এই সমস্ত ভ্রুকুটি ছেড়ে আমরা সবুজ হই চলো
এই গাঢ় বৃষ্টির দুপুর এবং কাদামাটির রং থেকে
আমাদের এই প্রতারক মন সবুজ হোক
আমরা খাঁটি শ্যাওলা হই
সরের মতো সবুজে সবুজে ভাসি,চলো
এই ভাদরের একটা ইতিহাস আছে
হিজল তমালের অরণ্যেরা ভিন্ন ইশারায় ডাকে
‘শ্রাবণের মতো করে না কেঁদে বরং কাশফুল হয়
ব্যঙের মতো না ঘেঁঙ ঘেঁঙ করে বরং পিঠাপুলি হয়’
এই বিরুক্তিকর বর্ষা বরং কেটে যাক
লেবাসে ফুটুক কলমি কদমের রোদ
আমরাও পরিবর্তিত হইÑ
মৃত্যুর চে একটু ভালো বরং অপমানিত হওয়া
বদলে নেই জৈবিক কালাকানুন
চোখের আরেক নাম দেই হরিৎ বনভূমি
ভাদরের পদ্য আজ মিশে থাক মাস মাসান্তর
বৃষ্টিগুচ্ছ : অসীম মালিক
বৃষ্টিগুচ্ছ
অসীম মালিক
মনকেমনের নদী
মনকেমনের বৃষ্টি শুরু,
ইচ্ছেকুঁড়ি ফোটে।
আজীবনের দায় লিখেছি
বৃষ্টি ভেজা ঠোঁটে।
মনকেমনের বর্ষা দিনে
ইলসেগুঁড়ি ঝরে।
জলনুপুরের শব্দ শুনে
তোমায় মনে পড়ে।
মনকেমনের জলছবিতে
উছলে ওঠে মন।
জানলা খুলে চেয়ে দেখি
ভেজে পলাশ বন।
মনকেমনের আষাঢ় মাসে
বৃষ্টি হতাম যদি।
তোমার চোখেও চাঁদ ভাসাত
আমার চোখের নদী।
তানপুরা
রোদে পুড়ে
জলে ভিজে
সীমানা ভুলেছি।
চোখে-চোখ
হাতে-হাত
জানলা খুলেছি।
দূরে মানে
দূর নয়।
রোদ ছায়া ঘর,
জল মাটি
মাখামাখি
কেউ নয় পর।
ভেজা স্মৃতি,
বেলি ফুলে।
বকুল মনের দ্বারে।
মেঘে বাঁধা
তানপুরা
কোনো দিন হারে !
তার নেই দেখা
আষাঢ়ের ঘনঘটা,
মন উচাটন।
ভাঙা সাইকেল, ফুটো ছাতা
মন করে টনটন।
রিমঝিম বারিধারা,
গুরু গুরু মেঘ।
শেডের ছায়ায় প্রেমিক-প্রেমিকা
অসীম আবেগ।
জল পড়ে মনে,
মন ভেজে একা একা।
ল্যাম্পপোষ্টে ভিজছে শালিক
শুধু তার নেই দেখা।
তুমি মেঘ হলে
তুমি মেঘ হলে
আকাশের কোলে।
একা একা ভেসে যাই
আষাঢ়ের জলে।
মেঘ মাটি যা যা বলে,
চোখে সব ফলে।
দু’টি চোখ এক হলে
কত তারা জ্বলে।
বর্ষায় বেড়ে ওঠা,
সবুজের সমারোহ।
দু’টি বুকে পাতা ঝরে
ফাল্গুনে অহোরহ।
বৃষ্টির পদাবলি - ০২
বৃষ্টির রেণু
মহাজিস মণ্ডল
বৃষ্টির অঝোর রেণু মেখে নিচ্ছি
প্রশস্ত দুই ডানার মধ্যে অবিরত
আজ কোথাও একটুও অন্ধকার লেগে নেই।
হৃদয়ের গহীনে তিরতিরে নৌকা
ভালবাসার প্রহরগুলো স্বপ্নময়
দিগন্তবিসারী ভাবনাসমূহ-
অ-আ-ক-খ-অক্ষরের বুকে ঝরে...
বর্ষা বন্দনা
শেখ একেএম জাকারিয়া
মেঘ দেখলেই মন আনন্দে নেচে আসে
আকাশ হয়ে যায় পুরোটাই বর্ষার কবিতা
এমন দিনে চোখের ওপরে সিকি সাইজ টিপ
দপ করে জ্বলে আর নেভে
গলায় পাতার মালা-হাতের বৃষ্টির চুড়ি
দাগ-দাগিয়ে যায় মনের মানচিত্রে
বাড়ির পাশেই কদমের আলতো শরীর বেয়ে
সতেজ ঘ্রাণের হাসি টুপটাপ নেমে আসে
ঐতিহ্যদের পুরোনো টিনের চালে
সবুজের এমন হাসিতে
প্রাণীকূল সুখে মাতোয়ারা
শাখায়-শাখায় পাখনা মেলে
নাচে গানে মাতাল দেখি প্রজাপতি রঙের পরীরা
জগতের এমন চোখধাঁধানো ঐশ্বর্য
কাগজে আর কতটা ওঠে আসে
ঝিলিমিলি মন বর্ষা এলে
এভাবেই হারায় বর্ষা বন্দনায়
হোয়াইটবোর্ডে লিখে রাখি এক্স ইকুয়ালটু অর্পিতা
গাফফার মাহমুদ
ফিজিক্সের অর্পিতা তড়িৎ প্রত্যয়ে অনর্গল বলে যান বিনয়-গায়ত্রীর বাঙময় কথা সব
যাবতীয় সূত্রতথ্য মনে থাকে খুউব, সবে বলে প্রজ্ঞাবান ফিল্যসফার অর্পিতা গাইন
কলেজে সেইতো হাসে ওই ; বসে রোজ লাস্ট বেঞ্চে পড়াটা খুব তার দখলে!
তারাপদ মহাশয় সদাশয় প্রশ্ন করে যান ওকে রোজ ক্লাসের পড়াতে
আমরাও ভাবি বসে অনায়সে কী করে কবিতাটা দখলে যায় মেয়েটার...
কথা বলে খুব কম চাহনী তারায় খচিত; পড়াটাই সবচেয়ে বেশী প্রিয় তার
এখনও কথা-সূরে অদূরে বসে ভাবি বিপ্লবী মেয়েটা গায় গান সুরেলা গিটারে!
রঙতুলি ছোপছাপ বিমূর্ত ক্যানভাস আঁকে ওই মূর্তলা অনিন্দ্য ছেলেটা
সাদা কাগজ রেখাটান নিমিষেই ছবি হয় সহসা মনে ভাবে ওই চোখ
হাফটাইম ক্লাসে কথা হয় কতো যে থিয়োরেটিক্যাল ইনভার্টেট কমাময়
কতো কিছু হিসফিস তারাপদ বাবু সেঁজে হোয়াইটবোর্ডে লিখে রোজ ছেলেটা!
চলচ্চিত্র
গৌরব ঘোষ
আমাকে অক্সিজেন দেয় একটা ফার্ন,
আমার চোখের অন্ধকার
মুছে দেয় অসংখ্য অট্টালিকা ।
ছুটন্ত পৃথিবী যেন এখানে নীরব ।
পশ্চাদ্ সঙ্গীত হীন
একবিংশ শতাব্দীর
নির্বাক চলচ্চিত্র যেন আমার দর্শণীয় ।
বাদলের ধারাপাত
অনন্ত পৃথ্বীরাজ
বিরামহীন বৃষ্টির ক্যানভাস রচনা করতে
কচুপাতার কাছে জলধার চাও?
পাবে না তুমি সেখানে জ্ঞাতিস্বর। জলের তলে
পড়ে আছে কত শত রং পেস্টাল, এ্যাক্রেলিক আরও নাম না জানা কত ডিজাইন!
তোমার জমিনে মেঘ নেই, বাদলের ধারাপাতের জন্য লিউনার্দোদা ভিঞ্চি, ভ্যানগগের সাথে
মিলিয়ে নিও জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান।
তোমার কাছে আষাঢ় নেই, ধার করা শৈশব দিয়ে বৃষ্টি রচনা করতে চাও!
অথচ এই বর্ষায় অঝরে ঝরছে কান্নার সিনড্রোম।
দেখে যেও রাতপরীর দেশে চাঁদের আলো নিভে গেলে
ঘুমের বদলে কান্না নেমে আসে!
অন্য আষাঢ়
দিপংকর ইমন
আষাঢ় এসেছে আষাঢ়
বাদলের অঝোর ধারা,
পোয়াতি কদমের আগমনী,
কামার্ত পা-ুলিপি,
চাতকের তৃষ্ণার্ত চোখের আল্লাদ।
আষাঢ় এসেছে আষাঢ়
ফসলের ক্ষেত জলে ভরে আছে।
দেনার দায়ে নিঃস্ব হয়েছে যে কৃষাণী
কেউ কি দেখেছি,
একাকিত্ব হয়ে পরা তার চোখের ধারাপাত?
আষাঢ়
সোহেল রানা
স্ফুট পুষ্পপাপড়ি-বৃষ্টিভেজা-সদ্য কদম।
রংবদল।
সফেদ আকাশ। প্রতিবিম্ব-
কী দারুণ, স্নিগ্ধ-শান্ত-কোমল বাতাস!
ফুল-পাখি-তৃণলতা- চুপচাপ
দাঁড়িয়ে।
নদী উথলে আকুল
যেন খই খেলছে!
জাহাজযাত্রীরা পারাপার-
দূরের কুয়াশারাও চুপচাপ!
যেখানে
জনজীবন বিপর্যস্ত- পুড়ে-ধসে তামাটে!
জীবনে প্রাণ বিভীষিকাময়-
এক অদ্ভুত আশ্চর্য ‘নিরুপায়’
প্রায়!
সেখানে এক মূহুর্তেই
সূর্যেকে হনুমানের মতো বগলদাবা করে
সারা আকাশ আজ মেঘাচ্ছন্ন
স্বমহিমায় ভাস্বর :
পুলকশয্যায়- আষাঢ়।