মাহে রমজানের গুরুত্ব ও পবিত্রতা


মাহে রমজানের গুরুত্ব ও পবিত্রতা
মীম মিজান

আরবি বর্ষপঞ্জির নবম মাস মাহে রমজান। মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য একটি শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। মহান আল্লাহ্ তায়ালা এই রমজান মাসকে করেছেন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বছরের বাকী এগারটি মাসের থেকে এই মাসটি সমহিমায় উদ্ভসিত। এই মাসটি যে সকল কারণে গুরুত্বপূর্ণ সেগুলি হলো:
১. রমজান হলো কুরআন নাজিলের মাস : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন: “রমজান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কুরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী।” (সূরা বাকারা : ১৮৫) রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কুরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করিম (সা) -এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল রাসূলুল্লাহ (সা)-কে পূর্ণ কুরআন শোনাতেন এবং রাসূল (সা)-ও তাকে পূর্ণ কুরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দুই বার পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহি মুসলিমের হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত।
২. এ মাসে জান্নাতের দ্বারসমূহ উন্মুক্ত রাখা হয়, জাহান্নামের দ্বারসমূহ রুদ্ধ করে দেয়া হয়। নবী (সা) বলেন : “রমজান মাসে এলে জান্নাতের দ্বারসমূহ উন্মুক্ত রাখা হয় জাহান্নামের দ্বারসমূহ রুদ্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১৮০০)
৩. এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল ক্বদেরর ন্যায় বরকতময় রজনী : মহান আল্লাহ বলেন, “লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাত্রে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হন প্রত্যেক কাজে, তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিময় এ রজনী, ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’’ (সূরা আল ক্বদর : ৩-৫)
৪. এ মাস দোয়া কবুলের মাস : নবী (সা) বলেন, “(রমজানের) প্রতি দিন ও রাতে (জাহান্নাম থেকে) আল্লাহর কাছে বহু বান্দা মুক্তিপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। তাদের প্রত্যেক বান্দার দোয়া কবুল হয়ে থাকে (যা সে রমজান মাসে করে থাকে)।’’ (সহীহ সনদে ইমাম আহমদ কর্তৃক বর্ণিত, হাদিস নং ৭৪৫০)
৫. রোজার পুরস্কার আল্লাহ স্বয়ং নিজে প্রদান করবেন : একটি হাদিসে কুদসিতে রাসূল (সা) বলেন, আল্লাহ বলেন, “বনি আদমের সকল আমল তার জন্য, অবশ্য রোজার কথা আলাদা, কেননা রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর পুরস্কার দেবো।’’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১৮০৫)
৬. রোজা রাখা গোনাহের কাফফারা স্বরূপ এবং ক্ষমালাভের কারণ : রাসূল (সা) বলেন, “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রামাদান মাসে রোজা রাখবে, তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১৯১০)
৭. রোজা জান্নাত লাভের পথ : রাসূল (সা) বলেন, “জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে বলা হয় ‘রাইয়ান’। কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে রোজাদারগণ প্রবেশ করবে। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না, রোজাদারগণ প্রবেশ করলে এ দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ (সহীহ বুখারি, হাদিস নং ১৭৯৭)
৮. সিয়াম রোজাদারের জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে : রাসূল (সা) ইরশাদ করেন: “কিয়ামতের দিন রোজা এবং কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘হে রব! আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও প্রবৃত্তির কামনা হতে বাধা দিয়েছি;  সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন।’ কুরআন বলবে, ‘আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুমাতে দেয়নি; সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। ফলে এ দুয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’ ’’ (মুসনাদ, হাদিস নং ৬৬২৬)
৯. রোজা জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তিলাভের ঢাল : রাসূল (সা) ইরশাদ করেন : যে বান্দাহ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোজা রাখে আল্লাহ তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরি করেন। (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১৮৯৪)
১০. এ মাসের রোজা রাখা একাধারে বছরের দশ মাস রোজা রাখার সমান : রাসূল (সা) ইরশাদ করেন, “রমজানের রোজা দশ মাসের রোজার সমতুল্য, ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান, এ যেন সারা বছরের রোজা।”
১১. রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম : রাসূল (সা) বলেন, “যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ তার শপথ! রোজাদারের মুখের গন্ধ কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মিসকের চেয়েও সুগন্ধিময়।’’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১৮৯৪)
১২. রোজা ইহ-পরকালে সুখ-শান্তি লাভের উপায় : রাসূল (সা) বলেন, “রোজাদারের জন্য দুটো খুশির সময় রয়েছে। একটি হলো ইফতারের সময় এবং অন্যটি স্বীয় প্রভু আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়ার সময়।’’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১৮০৫)
রোজার আরো ফজিলতের মধ্যে রয়েছে এতে ইচ্ছা ও সঙ্কল্পে দৃঢ়তা সৃষ্টি হয়, চারিত্রিক মাহাত্ম্য অর্জিত হয়, শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায় এবং সর্বোপরি তা মুসলিম উম্মাহ্ একতাবদ্ধ হওয়ার এক বাস্তব নিদর্শন।

উপর্যুক্ত গুরুত্বসমূহ ছাড়াও আরো যে সকল গুরুত্ব আছে সেগুলি হলো, দরিদ্র-অসহায়দের সহযোগিতার (দান-খয়রাত) মাস, বদরের মাস, জিহাদের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাস, এতেকাফের মাস, যাকাত ও দান-সদকা বেশী বেশী দেয়ার মাস, চরিত্র গঠনের মাস, আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের শপথ নেয়ার মাস ইত্যাদি।
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের দেয়া তাঁর বান্দাদের জন্য গুনাহ্ মাফ করণের এ মাসের যেমন গুরুত্ব রয়েছে; ঠিক তেমনি সেই গুরুত্বসমূহ অর্জনের কতিপয় পবিত্রতা দাবী করে রমজান আমাদের কাছে। নইলে আমরা হব সেই মাঝির মতো যে কিনা নদীতে একটি মূল্যবান জিনিস ভাসতে দেখে সঠিক উপায় অবলম্বন না করে শুধু চিৎকার জুড়ে দিল আমি অমুক জিনিস দেখেছি, আমি অমুক জিনিস দেখেছি। আর মাঝি এতেই ভাবলো যে সে ওমুক বস্তু পেয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা সম্পূর্ণ এর বিপরীত।
এক হাদিসে আছে, “আমার উম্মত যদি জানতো রোজা কী জিনিস, তাহলে রোজা রাখা এতো কষ্টকর হওয়া সত্তেও সারা বছর রমজান মাসের কামনা করতো।” সূতরাং আসুন এই ফজিলতপূর্ণ রমজানের পবিত্রতা কিভাবে রক্ষা যায় তা জেনে নেই।
১.ফেইসবুক:
তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে আজ দূরত্ব হয়েছে জয়। আর দূরত্ব জয়ের জন্য যে সকল মাধ্যম আমরা ব্যবহার করি তার অন্যতমটি হল ফেইসবুক। কতিপয় উ™£ান্ত যুবক-যুবতীদের দেখা যায় নানা কুরুচি পূর্ণ ছবি টাইম লাইনে আপলোড দেয়। যা তার বন্ধুদের নিউজফিডে অনিচ্ছা সত্তেও চলে যায়। যা রোজাদার ফেইসবুক ব্যবহারকারীগণের রোজাকে করে হালকা ও রমজানের পবিত্রতাকে করে ক্ষুণœ। এহেন খারাপ ছবি পোস্ট থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে রমজানের পবিত্রতাকে রক্ষা করা যাবে।
২. টুইটার:

ফেইসবুকের ন্যায় আরেকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো টুইটার। ঠিক এখানেও টুইটের মাধ্যমে রোজাকে হালকা করবে এমন ছবি আপলোড দেয়া হয়। টুইট করার ক্ষেত্রে বা ফলো করার ক্ষেত্রে এরকম অশালিনতা থেকে বিরত থেকে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা যাবে।
৩. পত্র-পত্রিকার বিনোদন পাতা:
দৈনিক, সাপ্তাহিকসহ পত্র-পত্রিকার বিনোদন পাতা গুলিতে বিভিন্ন নায়িকাদের সাক্ষাৎকার প্রচার বা তাদের নিয়ে আলোচনার জন্য তাদের নানা ভঙ্গিমায় আবেদনময়ী ছবিগুলি তুলে ধরা হয়। যা যে কোনো বয়সের পুরুষের রোজাকে হালকা করতে পারে। সূতরাং এ রকম ছবি বিনোদন পাতাগুলিতে না ছাপালে রোজাদারদের মনের পবিত্রতা রক্ষা পাবে ও রমজানকে সম্মান করা হবে।
৪. পর্নোগাফি ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ:
উঠতি বয়সের যুব সম্প্রদায়সহ অনেকেই একটু আড়াল বা সুযোগ পেলেই পর্নোগ্রাফি সাইটগুলোতে ঢু মারে। অন্যান্য সময়ের মতই রমজান মাসে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে। যা রোজাকে ভঙ্গ করবে এমন কাজে নিমগ্ন করবে। এক্ষেত্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় অন্তত এই পবিত্র মাসে এই সাইটগুলো বন্ধ করে রাখতে পারে। তাহলে পবিত্র রমজান মাস সমূহ পবিত্রতার সাথে পালন করা যেতে পারে।
৫.এফএম রেডিও ও কমিউনিটি রেডিওতে গান-বাজনা:
দেশে এখন অনেকগুলি এফএম রেডিও ও কমিউনিটি রেডিও আছে। যারা বছরের অন্যান্য সময় প্রায় সারাটাদিন বিভিন্ন ধরণের গান শুনিয়ে থাকে তাদের শ্রোতাদের। রমজান মাসেও এই রেডিও গুলিতে গান-বাজনা চলে সারাটা দিন ধরেই। শুধুই ইফতারের আগ মূহুর্তে কুরআন তেলায়াত প্লে করে। যদি এই রহমতের মাসে এই রেডিও সেন্টারগুলি এহেন গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকে ও সারাটা দিন কুরআন-হাদিস, ইসলামী সংগিত পরিবেশন করে তাহলে রোজাদারগণ পবিত্রতার সাথে রোজা পালন করতে পারেন।
৬. অর্ধনগ্ন ও রোজা হালকা করে এমন সিনেমা পোস্টার:
বছরের অন্যান্য সময় দেয়ালে দেয়ালে ছেয়ে যায় অর্ধনগ্ন সিনেমার পোস্টারে। আর মাহে রমজানেও তারা এ সকল ব্যবসা বন্ধ করেনা। যার ফলে নতুন নতুন সিনেমা তারা মুক্তি দেয় প্রেক্ষাগৃহ গুলিতে। যে গুলোর প্রচারের জন্য পোস্টারিং করে লোকজনের নজর অনায়াসে পড়ে এমন স্থানগুলিতে। রোজাদার সকল বয়সের মুক্তিকামী মুসলিমের রোজা গুলো হালকা করে এ সকল পোস্টারিং। অধিকন্তু রমজানের শেষের দিকে এসে ঈদকে উদযাপধের জন্য একবারেই নতুন সিনেমা মুক্তি দেয়া হয় প্রেক্ষাগৃহ গুলিতে যে গুলির ও রমরমা পোস্টারিং হয়। এ ধরণের অর্ধ উলঙ্গ পোস্টারিং থেকে বিরত থাকলে ও প্রেক্ষাগৃহ গুলি বন্ধ রাখলে রমজানের পবিত্রতা অনেক খানি রক্ষা হবে।
৮. সরকারি-বেসরকারি সকল টিভি চ্যানেলে গান-বাজনা:
এফ এম রেডিও এবং কমিউনিটি রেডিওগুলির পাশাপাশি দেশীয় ও বিদেশীয় টিভি চ্যানেলগুলিতে দিনভর চলে গান, সিনেমা নাটক ইত্যাদি অনুষ্ঠান। এ সকল প্রোগামেও অর্ধনগ্ন নায়িকাদের আবেদনময়ীতা প্রদর্শন করা হয়। যে গুলি রোজাকে হালকা করে ও রমজানের পবিত্রতার বিপরীত। যদিও তারা নামমাত্র কিছু ইসলামিক প্রোগাম দেখায়। এ ধরণের প্রোগাম ও চ্যানেলগুলি মাহে রমজানে বন্ধ রাখলে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা পাবে।
৯. বিভিন্ন টকশো ও লাইভ প্রেগ্রামে মডেল কন্যা-নায়িকাদের অর্ধ উলঙ্গ কাপড় পড়ে আসা:
ঈদ উপলক্ষে কার কী কী সিনেমা, গান, নাটক ইত্যাদি রিলিজ পাচ্ছে সেগুলি নিয়ে চলে চটকদার লাইভ প্রোগাম বিভিন্ন টিভি চ্যানেল গুলিতে। আর এখানকার হটসিটে বসা মডেল কন্যারাও আসেন রমজানের পবিত্রতাকে ক্ষুণœ করে এমন পরিধেয় নিয়ে। তারা কিন্তু দাবী করছে যে তারাও তাক্বওয়াহ অর্জনকারী রোজা পালন করছে। এরকম প্রোগাম গুলি না করলে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা পেয়ে মুসলিমগণ একনিষ্ট ভাবে তাদের সিয়াম সাধনা করতে পারেন।
এ ছাড়াও মদের বারগুলি বন্ধ রাখা, দিনের বেলা হোটেল রেস্তোরা বন্ধ রাখা, বেরোজাদারদের প্রকাশ্যে পানাহার থেকে বিরত থাকা, মহিলাদের শালীন পরিচ্ছদ ধারণ করা, মার্কেটে-মার্কেটে না ঘুরে এবাদত করা ইত্যাদি দাবী গুলোও রমজান আমাদের কাছে দাবী করে তার পবিত্রতা ও গুরুত্বের জন্য।
উপর্যুক্ত গুরুত্ব গুলি যদি আমরা গুরুত্বের সাথে পালন করি ও রমজানের পবিত্রতা কে ক্ষুণœ করে এমন কাজ গুলি থেকে বিরত থাকি তাহলে ইনশা আল্লাহ্ আমরা তাক্বওয়াহ্ অর্জন করে পবিত্র দেহ ও মন নিয়ে এ ধরাধাম ত্যাগ করতে পারব। যার ফলে ক্বিয়ামতের কঠিন বিচার দিবসে নিশ্চয়ই সফলকাম হয়ে সন্তুষ্ট চিত্তে চিরসুখের আকাক্সক্ষীত জান্নাতে প্রবেশ করব। আমীন! সুম্ম-আমীন!



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট