শব্দমিছিল
মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম
বেসামরিক দিয়াশলাই
ছদ্মবেশী শালিকটি চূর্ণ হচ্ছে
ভেঙে যাচ্ছে বয়ঃসন্ধি পেরুনো সাঁকো
আধ খাওয়া কামরাঙা
সিলিকন রোদ
তাকিয়ে আছে স্নানঘরের নিস্তব্ধতায়
ফুঁসে উঠছে জন্মের দাগ
যদিও কোনওদিন হেঁটে যাই নি
ভ্রমরজাত বিকেলের দিকে
লকলকে তামাক পাতার দিকে
কেউ হয়তো জেনে গেছে
শীতের ওমের ভেতর লঘু অন্ধকার
বড় বেশি অনুর্বর ছিল
অথচ যাবতীয় স্বপ্ন নাইলন বস্তায় ভরে
বসে আছি নিজেরই মুখোমুখি
অধরা ঘ্রাণ
তবে দখলে নিক বেসামরিক দিয়াশলাই
মিহি প্রসাধন
ডাগর অন্তর্বাস আর প্রেতসাধনার বাঁকা লাঠি,
প্রতœনীল সাজঘরে, আয়ুর্বেদিক কিতাবের পাশে
রেখে, যে তুমি জরির অক্ষরে লিখে যাচ্ছো-
ভূগর্ভস্থ প্রেমপত্র;
সে তোমার জবজবে শরীরেই তো দেখেছিলাম,
ফেনার দাগ। সে তোমার খোঁপার গিঁট খুলেই তো
নাভির খোঁড়লে ঢেলে দিয়েছিলাম, শাদা ভ্রম।
বহিঃনোঙরের অপেক্ষমাণ আততায়ী পয়ার
বোঝে না? পরস্পরের তোরঙ্গ, অসংলগ্ন রাত্রির
লিপিতে গোপনে মুদ্রিত করে, যে তুমি জড়িয়ে-
যাচ্ছো বাহারি বোতামে;
অমাবশ্যার নর্তকীরা, ফিনফিনে শুঁয়োপোকার
সঙ্গমে মেতে থাক বা না থাক! বাসকের ছেঁড়াপাতার
বদলে আমিই হবো সে তোমার মিহি প্রসাধন।
বহুদিন থেকে যে তুমি
বহুদিন থেকে যে তুমি অঘ্রাণের নীল!
সে তোমাকেই তো দিতে এসেছি পতনের আকৃতি।
অবসাদের শেষে, যাবতীয় রূপভারাতুর দৃশ্যের ভিড়;
তবে নক্ষত্র ফোটার আগেই অশ্বতর হয়ো।
নুড়ি ঠেলে দেখে যেও যাপনের হাড়গিলে ফাঁদ।
সবুজ হ্রদের ধারে ওঁৎ পেতে থাক দাঁড়ের শব্দ।
সুরতহাল হোক বা না হোক, আমি তো জেনেই গেছি-
বেঁচে থাকার অপরাধে প্রত্যহ আমাকে খুন করা হচ্ছে।
বহুদিন থেকে যে তুমি রোমহর্ষ অন্ধকার!
সে তোমাতেই তো নির্মাণ করতে চেয়েছি কুহকপুরাণ।
পরিত্যক্ত হবার আগেই দেখাতে এসেছি ভিখিরিভ্রমণ।
যদিও গোপন রেখেছি জ্যোৎস্নায় শানানো চাকু।
অস্মীভূত খুলির কাছে আমিই তাহলে কুয়াশারুমাল?
সুদীর্ঘ অস্ত্রোপচার শেষ হয় মূলত বুকের নিকটে এসে।
আয়নার প্রতিবিম্ব কুড়িয়ে কেউ ফিরে যায় করাতকলে?
কেউ কী বনঘুঘুর ছদ্মবেশে ভুলে থাকে মুখোশের মায়া?