পদাবলি

 





এখন কোথায় থাকে

মাজরুল ইসলাম


দিনকাল বড়’ই অদ্ভুত

মৃত্যুর পথে নতুন নতুন পথিক।


বুনো বাতাস লাগায়

কটিভূষণ হারানো লোকগুলি

কোথায় যাবে , এখন

ঘর ঘর আর্তনাদ।


লাল মেঘের ভেলার নীচে ছিন্নমূল মানুষ

ভিটে মাটি হারাবার আগেই

                      মরে বাঁচতে চায়।


অবহেলার স্তুপে প্রবিষ্ট লাশ

দিনকাল বড়ই অদ্ভুত

মৃত্যুর পথে নতুন নতুন পথিক...



একটা নীলাঞ্জনা ঢেউ

দ্বীপ সরকার


বহমান নদীতে নীলাঞ্জনা ঢেউÑ মানে সেই নীলাঞ্জনা আমার! 

জাহাজ ভাঙ্গা তরঙ্গÑ আকাশে উড়ন্ত বলাকাদের খেউড় 

            পুরষবাদী মেঘ এসে থেকে থেকে ছায় দ্যায়


কি যে অপরুপ মেঘ, বাতাসে চুলের উপদ্রপÑদাপায়,

জাহাজের পাটাতনজুড়ে দৈব্যরেখার রোদ

জাহাজ থেমে, আনতে গিয়েছিলাম দুরে ‘শরতের হাওয়া’ 

আমি ছুঁতে যাই তাকে, শরতের হাওয়া হয়ে

অথচ অস্পৃশ্য সুখগুলো কেবলি কায়া

আমার মধ্যে কে যেনো আসে যায়Ñ যায় আসে

               হাতের কব্জিজুড়ে শুধু নীল দূরত্ব


সেই নীলাঞ্জনা আমার, টিশার্টের ভাঁজে খুঁজে পেয়েছিলো সুখের উপমা

প্রকারান্তরে, কামিজের সান্নিধ্য পেয়েছিলো আমার বেহায়া আঙ্গুলও 


ঢেউ আছড়ে আস্তাকুঁড়ে পাটাতনÑদোলে আর দোলে

         আমিও দুলছি ভেতর বাহির দোলে একসাথে 


সারা পৃথিবী দুলে উঠেছিলো সেদিনÑনীলাঞ্জনাও অকপটে স্বীকার করেছিলো 

                                                                   বিশ বছর পর



মৃত নক্ষত্ররাশি

অলোক আচার্য


আমি এসেছি ভাঙতে কালের দেয়াল

সহ¯্র বছর ধরে ম’রে যাওয়া

নক্ষত্ররাশিকে অক্সিজেন দিতে,

আজ যা তোমাদের কাছে

ব্ল্যাকহোলের তকমা পেয়ে গেছে।

পঁচতে থাকা শরীরের দুর্গন্ধটাও

ক্রমাগত সয়ে গেছে তোমাদের নাকে

সভ্যতার আঁচলে লুকিয়ে থাকা

অসভ্যরা আজ খ্যাপাটের দল।

আজ আমি ডাষ্টবিন ঘেঁটে

দু’বেলার খাবার খুঁজি

ঘেন্নায় চোখমুখ কুঁচকে আসে আমার।


আমি আজ এসেছি তাই

নক্ষত্ররাশিকে অক্সিজেন দিতে। 



তুমি প্রেমের পুষ্প কাননের মালি

মোহাম্মদ আবদুর রহমান


অনেক বছর ধরে প্রেমের সুপ্ত বীজ গুলি 

গুচ্ছিত রেখে ছিলাম হৃদয় উপত্যকায়

সংসার নামক ভুবনে পা রেখে

প্রেমের আলো, বাতাস ও জল দিয়েছ।

অঙ্কুরিত হয়েছে সুপ্ত বীজ গুলি

আসতে আসতে বড় গাছে পরিণত হয়েছে

গড়ে ওঠে এক বিশাল প্রেমের পুষ্প কানন

আর সেই তুমি প্রেমের পুষ্প কাননের মালি।


দহন

কবির কাঞ্চন


যে তোমারে মায়ার জালে

বন্দি করে পালায়

তারই জন্য কান্দো কেন

পোড়া মনের জ্বালায়।


যে কখনো দেয়নি তোমার

ভালোবাসার মূল্য

তারে আবার করছো কেন

প্রাণপাখির তূল্য।


যে তোমারে আঘাত দিয়ে

দূরে গেছে চলে

মিছামিছি লাভ কী বল 

তারই কথা বলে।


নিমগ্ন স্মৃতির কুহক

রফিকুল ইসলাম


চায়ের  কাপের বিকেলটা আজ আর নেই

আয়েশি চুমুকে ঠোঁটের ছাপের বিন্যাস,

আর স্বপ্ন বুনা বুকভর্তি কত কথার বিকেল

নিয়ে গেছে ঘরে ফেরা পাখিদের দল

হাজারও স্বপ্নের দোল খাওয়া ফসলের মাঠে। 

ডুবে গেছে আঁচল-ভরে স্বপ্নবুনা  প্রহরগুলো...

নেমে আসা নীলচে নিস্তব্ধ সন্ধ্যার বুকে,

আঁধার নির্জনতায় নিমগ্ন স্মৃতির কুহকে-

মৃত পুষ্পের ঘ্রাণ ভেসে আসে উষ্ণ অনুরাগে।

কে জানতো— অচেনা দ্বীপের মায়া...

আরাধ্য হয়ে উঠবে তোমার!

অধরা চাঁদকে ছুঁতে বড় ইচ্ছে করে, 

রাতের আকাশ ছুঁয়ে একফালি চাঁদ ঝুলছে,

পাতলা মেঘগুলো চাঁদকে রেখে-

বাতাসের সাথে দূরে কোথাও ভেসে যাচ্ছে।

জানালার পাশে শতাব্দীবয়সী লেবু গাছটি

ঝিঁঝিদের গানে ঘুমে ঝিম ধরে আছে 

রাতভর জাগে কিছু নিশাচর পাখি গাছে।

আর কেউ জেগে নেই শুধু আমি একা-

আর সাথে জাগে রাতের নিস্তব্ধতা।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট