বিচ্ছেদ
যাচ্ছো, যাও...
শব্দ করে যেও।
করাতের কাঠিন্যে—
রক্তনদী বয়ে যাক;
শব্দ হোক; শব্দ হোক
শব্দের বেয়াদবিতে-
প্রতিবেশীর ঘুম ভাঙুক!
বৃষ্টি শেষে
বৃষ্টি শেষে-
পাতা ও পথের মতো যুবতী হয়ে উঠবে;
বৃষ্টি শেষে-
যুবতীর মতো ব্যথাতুর নদী হয়ে উঠবে!
অন্তঃপুরে যেদিন বৃষ্টি থেমে যাবে
শুকিয়ে যাবে জীবনের ঠোঁট
যেদিন ফুরিয়ে যাবে জলের যৌবন
মনে করে সেদিন ইশারা দিও...
আমি জীবনের রঙমহলে-
বৃষ্টির পরিবর্তে শষ্য হয়ে নামবো!
দূরত্ব
দরোজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছো;
দূরত্ব যদিও তেমন না
এটুকু তো থাকেই-
যেটুকু থাকলে কোনো দূরত্বের প্রয়োজন পড়ে না!
...এটুকু থাকলে, জীবন আর জীবন থাকে না!
দূরত্ব কি জানে, তার অপর নাম প্রেম?
দুরত্ব কি জানে, তার অপর নাম নরক?
কেউ না জানুক, আমি তো জানি-
দূরত্বের অপর নাম বনমল্লিকা!
খোঁজ
ম্যালা দিন দেখিনা তোমারে, তুমি এখন কই?
বুকের মইধ্যে একগোছা ধানের চারা দেখিয়ে বলেছিলা
ধানেরা যেদিন গর্ভবতী হয়ে তোমার ঘরে উঠবে
ঐদিন আমারে খুঁইজা নিও; পারলে একবার ঘ্রাণ নিও;
কৃষকের বাছা আমি;
মাথার মইধ্যে ডুইবা থাকে কালবোশেখির ভয়
ডুইবা থাকে শীতকালের জ্বর!
তোমারে তবুও খুঁইজা বেড়াই; সাহস কইরা
ধানের কাছে গিয়া, নাকের আগা বাড়াই দিলাম
তোমারে তবুও পাইলাম না; তুমি কই থাকো এখন?
বুকের মইধ্যে ঠোকা দিয়ে একবার বলেছিলা-
ঐখানে যদি না পাও, তবে এইখানেই পাবা, খুঁইজা নিও...
এখন আমি তোমারে খুঁইজা বেড়াই...
খুঁইজা বেড়াই নিজের ভেতর!
অবহেলাফুল
মরে গেলে, পাতার ফাঁক দিয়ে যে ক’টি বৃষ্টিফোঁটা পড়বে, তা আমার কবরের উপর পড়তে দিও। মরে গেলে, অনন্ত হাহাকার ফুরিয়ে যাবে; আর নরকের জানালা দিয়ে পালাবে না জীবন!
মরে গেলে, সিনার উপর ফুঁটবে অবহেলাফুল। আয়নার মতো অবিকল দেখতে। যারা রোপণ করেছিল এই ফুল, কিছু পাপড়ি তাদের দিও। তারা কাঁদবে, তোমরা তাদের ভুলে যেও।
মরে গেলে, তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও।