শুধু তোমার জন্য
রাকিবুল হাসান শ্রাবণ
কয়েকটা বসন্ত পেরিয়ে যাবে তোমার অপেক্ষায়।
রাষ্ট্রীয় কর পরিশোধ কোরে,
ঢুকে যাবো সেরা করদাতার তালিকায়।
জমানো টাকা থেকে অল্প অল্প কোরে
কিনবো আসবাব, সাজাবো ঘর
দেয়ালে করবো নতুন চুনকাম।
উঠোন সাজাবো ফুলে ফুলে
বাম পাশে হাসনাহেনা, ডানে গন্ধরাজ
সদর দরজায় থাকবে সন্ধ্যামালতী
গোলকচাঁপার শাদার মায়া মিশিয়ে
করবো চৈত্র উদযাপন।
অন্ধকার রাত গুলো
তুমি আমি পাশাপাশি বসে রবো,
কাছাকাছি বসে রবো,
হাতে হাত ছুঁয়ে করবো অন্ধকার মৈথুন।
এমন করেই আরও কয়েক বসন্ত পেরিয়ে গেলে
কার ক’টা চুল গেছে পেকে,
খুলে বসবো সে হিসেবের খাতা
পেয়ে যাবো ভালোবাসার ফলাফল।
শুধু তোমার জন্য,
মৃত্যুর সাথে হেঁটে হেঁটে করবো মার্চপাস্ট।
ভালোবাসা
সাঈদ চৌধুরী
একবার এক বিষন্ন কিশোরী বলেছিলো
আমি হাট থেকে বাড়ি ফেরার সময় যেন
তার উদ্যাম বারান্দার সামনে দিয়ে যাই
সে আমার হাঁটার সময় দোল খাওয়া চুলের সাথী হবে,
তাতে নাকি সে তার বন্দী জীবনের মুক্তি খোঁজে
আমি বলেছিলাম তোমাকে নিয়ে আমি রোদ্র ¯œানে যাবো
একবার মেঘ ¯পর্শ করে বৃষ্টির গন্ধ দেবো
পূর্ণিমা রাতে কৃষকের লাঙলে অঙ্কিত অসমান ভূমিতে দাঁড়িয়ে
তোমার কপালে চুমোর দাগ কেটে ভালোবাসার বাঁধা পেরুবো
তুমি নিয়ম করে প্রতিদিন দাঁড়িও অপেক্ষাতে....
কিশোরী এখন পূর্নাঙ্গ নারী
বলা চলে আমার শরীরে প্রাণের অস্তিত্ব
সে বারান্দায় দাঁড়িয়ে এখন আমাকে ডাকে
বলে, শুধু সামান্য এ চাওয়াটুকুর জন্য হিমালয় সমান বাঁধা পেরিয়েছি
সাগর, মনি মুক্তার অভাবে হয়ত নারীর বিলাস জীবনে ক্ষত হয়
কিন্তু তোমার ভালোবাসা না পেলে আমি
আমার অস্তিত্বের বিলীন সময় দেখতাম
তাই, ভালোবাসি তোমাকে, খুব বেশী ভালোবাসি ....
এক ঘরে
যাহিদ সুবহান
আমাকে একঘরে করার বৃথা চেষ্টায় মত্ত তুমি
জানো না আমার শূন্য ঘরে বাতাসও কথা বলে
ঘরের বাতায়নগুলো আমার পাহাড়াদার
ঘরের ফুটকির আলো আমার বার্তাবাহক
পাখিরা কিচির মিচির শব্দে আমাকে গান শোনায়
আমার ছনের ঘরে মাকড়শা কাজের ফাঁকে গল্প শোনায়
আমাকে একঘরে করার চেষ্টা করে লাভ নেই
আমি একা নই আমার সাথে আছে পৃথিবী
বরং তুমিই একা চারপাশে অনেক প্রাণী মানুষ নেই ...
অলস
মীর সাহাবুদ্দীন
শামুক আর কচ্ছপের গল্প পড়ে
পিঁপড়েকে পাঠ করি
কি ভাবে কাঁধে কাঁধে
ঠোঁটে, ঠোঁট রেখে দ্বিগুণ বহন করে পিঁপড়া
মানুষ অলসের দলে
ছায়া পেলে ঘুমাতে যায়।
কাগজের নৌকায় মাত্রাহীন আমি
ইকরামুল হাসান শাকিল
নীলাভ শাড়ীর আচঁলে বৃষ্টির শব্দে লেগে আছে
অপেলিয়ার মুক্ত ছন্দ
সমুদ্রের মৌসুমিতা ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেখি
অক্ষরবৃত্তে তার বসবাস
বিংশ শতাব্দীর হে বালিকা আমার দৃষ্টিসীমার
যেটুকু পরিধি তারও
বহুদূরে আপনার ছড়ানো লতাপাতা
মাত্রাহীন আমি বইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে
কাগজের নৌকো ভাসাই কাস্পিয়ান হ্রদে।
ইদানিং আমি
সবুজ আহমেদ কক্স
কোনো গিটার বেজে উঠলে
কোনো মিউজিক্যাল শো, বাড়ির বেডরুমে
হৃৎপিন্ডে কেমন যেনো কম্পন শুরু হয়
পেয়ে হারানোর বেদনা,
না পাওয়ার বেদনা আমাকে কাঁদায় অহর্নিশি।
মুহুর্তে মুহূর্তে চেঞ্জ হতে থাকি
ভুলে যাই আমি আমাকে
চিৎকার আসে কানে বারংবার।
কে আমি?
কে আমি?
এখন ইদানিং এসব কিছুই হয়না।
বালিশের একপাশে রবীন্দ্র সংগীত,
নজরুল সংগীত, দেশাত্মবোধ গান,
অন্যপাশে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি ব্যান্ড মিউজিক ।
অলস সময়ে মিউজিক বেজে উঠে
কখন কি শুনি উপরঅলা জানে।
যন্ত্র বাজে বাজুক,
এসো, বেজে উঠি নব আয়োজন, নব উদ্যম
সুনিপুণ আঙুলের ছোঁয়ায়
সুরমূর্চ্ছনায় চোখ সমগ্রে ঝরে পড়ুক অনুরাগ...
বিধৌত
হাবিবাতুল উম্মে
বুকের ভেতরটা খুঁড়ে দেখলাম
আগুন জ্বলছে, মৃতদের উল্লাস
দিন যায়- অহমিকায় ঘুমিয়ে পড়ি
পাপের খসড়া জারি করে
কেবল ফেরারী হই...
তারপর কেউ কখনও
আমার কথা বলে না;
আমি মৃতদের একজন !