খুব একলা একলা লাগে...
আব্দুল্লাহ আল তানিম
পরিবারের সবার ছোট্ট মেয়েটির নাম ইরা। সবার ছোট বলে তাকে সবাই ভালোবাসে। ইরা একটু দুষ্টু, একটু চঞ্চল, একটু মিষ্টি প্রকৃতির মেয়ে। এভাবেই দিন শেষে সন্ধ্যা নেমে আসে। তারপর রাত্রি হয় নতুন একটি ভোরের অপেক্ষায়। ইরার দিন কেটে যেতো খেলার সাথীদের সঙ্গে। ইরার এভাবেই বেড়ে উঠতে লাগলো। আহারে, জীবন কত সুন্দর।
সমাজের আর দশ পরিবারের সাথে তাদের পরিবারও একটি সুখী পরিবার ছিলো। সব কিছুই ঠিকঠাক যাচ্ছিলো। কিন্তু একদিন তাদের পরিবারে নেমে আসে অন্ধকারের ঘনঘটা। যখন সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে, তার আম্মুকে সাপে কাটে । সাপে কাটার পর প্রাথমিক অবস্থায় এটাকে গুরুত্ব দেন নি কেউ। যখন সবাই গুরুত্ব দেওয়া শুরু করলেন, ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। চিকিৎসা চলতে থাকলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হেরে যান তার মা। এখান থেকেই ইরার জীবন যুদ্ধ শুরু হয়। তারা দুই বোন- এক ভাই। বড় বোনের বিয়ে হয়ে যায় মায়ের মৃত্যুর আগে। এখন ইরাকেই পরিবারের সব কিছু দেখাশুনা করতে হয়। ছোট্ট মেয়েটি কি আর করবে ও কি-ই বা সামলাবে। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সব কিছুই ইরাকে করতে হয় এখন। নিজের পড়ালেখা চালানোর সাথে সাথে একটা পরিবারের এত কাজ করা এইটুক ছোট্ট মেয়ের পক্ষে অসম্ভব । তবুও সে তার নিয়তি কে মেনে নিয়েছে।
ছোট বোন ইরার এসব কষ্ট দেখে। বড় ভাইয়াটা আর সহ্য করতে পারলেন না। এজন্য ইরার বড় ভাইয়া এখন ঠিক করেছে একটা বিয়ে করবেন। ঘরে বউ আসলে ইরার অনেক ভালো হবে। ইরাও অনেক খুশি হবে।
ইরা যখন নবম শ্রেনী উঠে তখন ভাইয়ার বিয়ে ঠিক হয় । বিয়ে ঠিক হওয়ার দিন ইরা এক দেখাতে ভাবিকে দেখে পাগল হয়ে যায়। ভাবি অবশ্য দেখতে শ্যামবর্ণের হলেও খারাপ না চেহারা, ছিলো মায়াবী। তার কিছুদিন পর ইরার ভাইয়ার বিয়ে হয়। পরিবারে একজন নতুন সদস্য আসে। তার ভাবি তাকে অনেক ভালোবাসে। পরিবারের সব কাজ এখন ভাবি একাই করে । একটা মানুষ একটা পরিবারের সব কাজ একাই করে দেখে ইরার খুব খারাপ লাগতো তাই ভাবিকে কাজে সাহায্য করে। ভাবিকেও ইরা অনেক ভালোবাসে। তাদের পরিবারে আবার সুখের ছায়া ফিরে এলো। হ্যাঁ, সত্যিই জীবন অনেক সুন্দর।
এই সুখের ছায়া বেশিদিন থাকলো না। ভাইয়ার বিয়ে কিছুদিন পর তার বাবাও বলে বিয়ে করবে। উনার দেখাশুনার জন্য তো একজন মানুষ প্রয়োজন তাই উনি বিয়ে করবেন। পরিবারের কেউ-ই রাজি ছিলো না। কেউই চায় না বাবা আরেকটা বিয়ে করুক। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে সবার অমতে বাবা একটি নতুন বউ নিয়ে ঘরে আসে। তারা নতুন মাকে কেউ মেনে নিতে চায় না। ভাই-বোন কেউই নতুন মা কে পছন্দ করেনা। সৎ মাও তাদের সাথে ভালোভাবে মিশে না। সৎ মাও তাদেরকে অন্য চোখে দেখেন। সৎ মায়েরা যেমন হয়, সব কিছু থেকেই তাদেরকে আলাদা করে ফেলে। এখন এভাবেই চলছে তাদের সংসার। জীবন খুব কঠিন।
এখন ইরার গল্পে আসা যাকঃ
ইরা যখন ক্লাস নাইনে পড়ে তখন থেকেই একটা ছেলে ইরাকে পছন্দ করতো। ছেলেটা তাদের এলাকার-ই ছিলো। সে স্কুলে যাবার পথে ছেলেটা তাকে খুব বিরক্ত করতো। এভাবে একদিন বিরক্ত করে, দুই দিন করে, তিন করে, না এত দেখি প্রতিদিন করে। ইরা কিছুই বলতো না কারণ ইরা জানে বাবার কানে অব্ধি পৌঁছলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিবে বাবা। কিন্তু হঠাৎ একদিন ইরার বাবার কাছে কে যেন বলে দিয়েছিলো। তার বাবা এসব জানতে পেরে তার স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন। ইরাকে কারো সাথে মিশতে দিতেন না। ইরা একা হয়ে যায়। জীবনে কিছু থাকুক আর না থাকুক গল্প করার মতো যদি ভালো একটা বন্ধু পাশে থাকে তাহলে আর কিছুই লাগে না। ইরা একা হয়ে যাওয়াতে সব কিছুই এলোমেলো লাগছে তার। ইরার বাবা ভাবেন, মেয়েটাকে কিছু দিনের জন্য ঢাকায় তার মামার বাসায় পাঠিয়ে দিলে হয়তো ভালো হবে। এখানে তো ইরা একা একা থাকছে। তারচেয়ে বরং মেয়েটা কিছুদিন মামার বাসায় যাক। ইরার বাবা তাকে কিছু দিনের জন্য ঢাকায় তার মামার বাসায় পাঠিয়ে দেন ।
ঢাকায় আসার কিছুদিন পর হঠাৎ করে একটা ছেলেকে ইরার পছন্দ হয়। ছেলেটির নাম ইভান। ইভানেরও ইরাকে পছন্দ হয়। যদিও তারা সম্পর্কে যায় নি। তবে তাদের মাঝে ফোন আলাপ হতো। তারপর ইরা বাড়িতে চলে আসে সামনে বার্ষিক পরীক্ষা তাই।
নবম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীতে সে ভালো রেজাল্টে উত্তীর্ণ হয়। দশম শ্রেণীতে উঠার পর সেই আগের ছেলেটি আবার বিরক্ত করা শুরু করে। ছেলেটি কিভাবে যেন জানতে পারলো, ইরা ঢাকায় একটি ছেলেকে পছন্দ করে। এটা শুনে ছেলেটি ক্ষেপে যায়। তাই এলাকায় সবাইকে বলে বেড়ায় তার সাথে নাকি ইরার সম্পর্ক। তাদের নাকি বিয়েও হয়েছে ইত্যাদি । সবাইকে ইরার নামে অনেক কিছু বলে। তখন েেথকে ইরার বাবা আবার তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এভাবে ইরা একা একা থাকতে থাকতে চলে এলো এসএসসি পরীক্ষা। অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করে ইরা। সে কারো সাহায্য পায়নি। সহপাঠীদের কাছ থেকে অনেক কিছুই জানা যায় শিখা যায়। কিন্তু তার বাবা কখনোই মিশতে দিতেন না। ইরা অনেক কষ্ট করে পরীক্ষাটা দিলো। এসএসসি পরীক্ষাতে খুব ভালো রেজাল্টে পাস করলো ইরা।
এবার সে কলেজে ভর্তি হলো । কলেজে ভর্তি হওয়ার পর কিছু দিনের মাথায় ঢাকার সেই ইভান নামের ছেলেটি আবার যোগাযোগ করা শুরু করে দেয় । তাদের ফোন আলাপ হতো। ইরার কলেজের কোনো সহপাঠী বন্ধু/বান্ধবী ছিলো না। তবে লুকিয়ে লুকিয়ে ইভানের সাথে কথা বলতো। ইভান আর ইরার মাঝে ভালো একটা বন্ধুত্ব তৈরী হয়। বলে রাখি ইরার তখনও কোনো মোবাইল ছিলো না। ইরা তাদের বাসার ফোন থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলতো। এভাবেই কিছু দিন চলে যায়। তারপর আসে এইচ এস সি পরীক্ষা । পরীক্ষা তেমন ভালো হয়নি ইরা ভাবছে যদি সে খারাপ রেজাল্ট করে তাহলে হয়তো আর পড়ালেখা করাবে না। ভাবতে ভাবতে রেজাল্টের সময় চলে আসলো। কিন্তু একি ইরা তার রেজাল্ট পেয়ে পুরোই অবাক হয়ে যায়। ইরা অনেক ভালো রেজাল্টে পাস করে। সে এখন পৃথিবীতে দশটা সুখী মানুষের মধ্যে একজন।
ইরার বাবা এবার ঠিক করেন মেয়েটাকে একেবারে ঢাকায় পাঠিয়ে দিবেন লেখা পড়া করার জন্য। সে ঢাকায় চলে আসে তারপর ইভানের সাথে আরো গভীর হয় সম্পর্কটি। এখন তারা একে অপরকে না দেখলে সময় কাটে না। ইরা নতুন একটি ফোন কিনে সারাক্ষণ ইভানের সাথে কথা হতো। তারা দুজনই মন লেনাদেনা করে একে-অপরের সাথে। তাদের গল্পটা আরো সুন্দর হতে লাগলো। ভালোবাসার মানুষের সাথে আমরা ঝগড়া একটু বেশিই করি। ইরা আর ইভানেরও ঠিক তাই সারাক্ষণ ঝগড়া লেগে থাকতো। তবে দিনশেষ তাই একে-অপরকে ছাড়া কিছুই বুঝে না। এভাবে-ই তাদের ভালোবাসা দিন দিন বাড়তে থাকলো। খুব সম্ভবত ভালোবাসা একটি সুন্দর শুদ্ধতম অনুভূতি। আহ! জীবন সুন্দর ।
একটা সময় আসে ছেলেটা ইরাকে অনেক জ্বালাতো। ইরার স্বাধীনতা দিতো না। ইরার কোনো বন্ধুর সাথে মিশতে দিতো না। ইরা ইভানকে পাগলের মতো ভালোবাসে। ইভানে প্রেমে ইরা অন্ধ হয়ে গেছিলো। শুনেছি প্রেমে অন্ধ হওয়া ভালো না। প্রেমে অন্ধ হওয়াতে সব কথা মেনে নিতো। আসলেই সব কিছু মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়াটাই মেয়েদের ধর্ম। ইরা আর কিছুই চাই না সে ইভান কে নিয়েই সুখে থাকতে চায়। সময় গড়াতে না গড়াতে ইভান ইরা কে সন্দেহ করা শুরু করলো। সন্দেহ নামক শব্দটি খুব খারাপ। সন্দেহ করলে কোনো কিছু খুব বেশিদিন ধরে ঠিকে থাকে না। সন্দেহ করলে সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কটাও নষ্ট হতে থাকে। যাই হোক ইরা সব কিছু মেনে নিয়েছে কারণ ইরা ইভানকে ছাড়া এক মুহুর্তও থাকতে পারবে না। একটা মেয়ে একটা ছেলেকে যে পাগলের মতো ভালোবাসে তা ইরাকে না দেখলে বোঝা যেতো না। আর আমরা মানুষ, আমরা বড়-ই অদ্ভুত, আমরা বড়-ই বিচিত্র। কেউ সময় না দিলে অবহেলা করলে। উল্টো তার প্রতি ভালোলাগা কাজ করে, তাকে ভালোবাসি । আর কেউ ভালোবাসলে উল্টো তাকে সময় দেই না অবহেলা করি। ঠিক তেমনি ইভান এখন ইরাকে একটু অবহেলা করে। ইরা সব কিছুই বুঝতে পারতো কিন্তু ঠোঁটে ঠোঁট চেপে রাখে কিছুই বলতো না ।
একদিন ইরা বুঝতে পারলো যে ছেলেটা ইরার কাছ থেকে কি যেনো লুকিয়ে রাখছে, বলছেনা। ইরা এসব জানারও চেষ্টা করেনি কারণ ইভানকে ইরা খুব বেশি বিশ্বাস করতো। ইরা জানে বিশ্বাস না থাকলে পৃথিবীতে কোনো কিছুই করা সম্ভব না। তাই ইভান কে অনেক অনেক বিশ্বাস করতো। এরপর হঠাৎ একদিন ইরা জানতে পারলো ছেলেটার পরিবার সম্পর্কে। মানে সে যে পরিচয় দিয়েছিলো তা সব মিথ্যা ছিলো। ইভান আসলে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। সে বলেছিলো ভালো একটা জব করে আর লেখাপড়া করে আসলেও তাও না। সে ছোটখাটো একটা জব করে কিন্তু লেখাপড়া করে না। আরো অনেক কিছু মিথ্যা বলেছিলো ।
তারপর সব কিছু জেনেও ইরা ইভানকে কিছু বলেনি। তার সবকিছু ইরা মেনে নিয়েছে। ইরা ইভানের কাছে শুধু একটু ভালোবাসা চাইতো। দিনশেষ তাই একটু ভালোবাসা দিলেই ইরার চলবে। ইরার আর কিছুই লাগবে না। কিছুই না।
আসলে ইভানের লোভ ছিলো ইরার দেহের প্রতি। ইরাকে ইদানীং বারবার বলে যে ওরা ফিজিক্যাল রিলেশনে যাবে। ইরা রাজি হত না। রাজি না হওয়াটা স্বাভাবিক। রাজি হবেই বা কেন। এজন্য ইরা অনেকবার সুইসাইড করার চেষ্টা করে কিন্তু পারেনি। তারপর ইভান ইরাকে অনেক বুঝিয়ে, অনেক কিছু বলে, বলেছে ইরাকে বিয়ে করবে হ্যান-ত্যান। তার সব পশুত্বের বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ইরাকে রাজি করালো ফিজিক্যাল রিলেশনে যেতে। প্রেমে অন্ধ হওয়া ইরা রাজি হলো, আসলেই প্রেমে অন্ধ হওয়াটা একদম বোকামি, একদম।
এরপর কিছুদিন যেতে না যেতে ইরার কাছে একটা বার্তা আসলো। বার্তাটি পেয়ে ইরার মাথার উপর থেকে আকাশটা হারিয়ে গেছিলো। তীব্র কষ্টের কিছু শুনলে সত্যি সত্যি মাথার উপরের আকাশটাও হারিয়ে যায়, কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। ইরা জানতে পারলো ইভান আসলে বিবাহিত। তার বিয়ের দুই বছর হয়ে গেছে। ইভান যে মেয়েটাকে বিয়ে করেছিলো ঐ মেয়ের সাথেও প্রেম করে বিয়ে হয় তাদের।
যেদিন এই বার্তাটা পায় সেদিন থেকে ইরা আর রাতে ঘুমায় না। রাতে না ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ইরার চোখের নিচে কালি পড়ে আছে। ইরা সেই কালি কাজল দিয়ে ডেকে রাখে। আর কান্না ? মেয়েদের কান্না আমরা কেও ই দেখতে পাইনা, শুনতে পাইনা, বোকা বোকা মেয়েরা খুব নিঃশব্দে কাঁদতে পারে। ইরা জানে চোখের জলের কোনো রঙ নেই নয়তো বালিশটা রঙিন হয়ে যেতো।
ইরার সাথে ইভানের এসব সম্পর্ক তা ইরার বাসার সবাই জানতে পেরে ইরাকে সবাই মানসিক শাস্তি দেওয়া শুরু করে। আসলে কোনো পরিবারই এসব কখনোই মেনে নেয় না। বাসার সবাই তাকে বাজে ভাবে বকা দেয়। এসব সহ্য করতে না পেরে হুট করে একদিন ইরা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। সে বাসা থেকে বেরিয়ে আসে।
তারপর একটা হোস্টেলে উঠে। হোস্টেলে আসার পর থেকে পড়ালেখা আর হোস্টেলের খরচের জন্য একটা ছোট্ট জব খুঁজে, এবং একসময় পেয়েও যায় ।
ইরা আর কখনো ইভানের সাথে যোগাযোগ করে নাই। ইভান হয়তো ইরাকে খুঁজছে অনেক কিন্তু একটা জীবন্ত মানুষকে জবাই করলে সে কি আর বেঁচে রয় ?? হয়তো বেঁচে আছে। কিন্তু মনটা অনেক আগেই মরে গেছে। একটা মানুষের বিশ্বাস নিয়ে এভাবে খেলা করা ইভানের একদম ঠিক হয় নি। একটা মানুষের মন ভেঙ্গে গেলে সব ভেঙ্গে যায়। একটা মনকে বারবার ভাঙ্গা যায় না একবার ভাঙ্গা যায়। এখন ইরার কাছে ইভান একটা ভুল নামক শব্দ। ইরা ভাবে সে এতই বোকা যে একটা মানুষকে এতদিন ধরে একটুও চিনতে পারলো না। আচ্ছা একটা মানুষকে চিনতে কত দিন সময় লাগে ?? হয়তো একজীবনেও চিনা হয় না। আসলেই পৃথিবীর মানুষ খুব অদ্ভুত ।
এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর ইরার কাছে একটা ম্যাসেজ আসে যে ইভান ইরার সব আপত্তিকর দৃশ্য ইন্টারনেটে সে আপলোড করবে ইত্যাদি।
এখন ইরা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে, কি করবে, এদিক থেকে ফ্যামিলি সাপোর্ট নেই। কাউকে লজ্জায় বলতেও পারছেনা। সে পথ হারা পথিকের মত হয়ে গেছে। সে কি করবে বুঝতে পারছিল না। তবুও শক্ত হয়ে আছে ইরা।
কিছুদিন পর লোকের মুখে শুনা যায়। ইরার নগ্ন দৃশ্য চারিদিক ছড়িয়ে পড়েছে।
সে নিজেকে প্রশ্ন করে এখন তার কি হবে ?? পরিবারের কাছে মুখ দেখাবে কিভাবে, সমাজের কাছে মুখ দেখাবে কিভাবে ?? এইসব ভিন্নরকম প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খায়। সে নিজেকে কিভাবে কন্ট্রোল রেখেছিলো জানিনা।
তার কিছুদিন পর ইরাকে আর দেখায় যায় নি। আমরা আর তার কোনো খোঁজ পাইনি। সে এখন কোথায় আছে, কেমন আছে। জানা হয় নি আর, হয়তো জানা হবেও না।
পূনশ্চ:
জীবনের চলার পথে আমরা কখনো কখনো না জেনে না বুঝে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। কাউকে পুরোপুরি ভাবে না জেনে কোনো সম্পর্কে জড়ানো উচিৎ না। একটা ভুল হয়তো আপনার জীবন সমাপ্তি ঘটাতে পারে । প্রতারকদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। নিজে ভালো থাকুক, সবাইকে ভালো রাখুন।