গ্রাম
সোহেল রানা
ছায়ার ভেতর দিয়ে উঠে আসছে মায়া!
মায়ায় আঁচল হাওয়ায়, হলুদ গন্ধে
টুনটুনির টুনটুন ভারা দুপুর...ভরদুপুর!
কুটুম পাখি ডেকে ডেকে আগাম অনুষঙ্গ জানান-
গৃহস্থবাড়ি!
মাঝি পাল বেয়ে ফিরছে, গোধূলি গোধুম...
চাঁদনিরাতে - কবিগান-পালাগানের আসার বসেছে
পিঠাপুলি সাজিয়ে হাত বাড়িয়ে ডাকছে
আমার মায়াভরা সেই চিরসবুজ কায়া!
২
এই ছায়া-মায়া-কায়া -
ধুলোমাটি, ঘাস, শিশির -
দোয়েলের শিস, ঘাসের বুকে ফড়িং নিবিড়!
খালে, বিলে, ঝিলে -
আমি মাছরাঙা মন, হড়াই নদীর হাঁটুজলে
উড়ছি উড়ছি বাঁকে বাঁকে -
মাছ মাছ মাছ মাছ।
শারদ-সুন্দর কাশফুলের আকাশ!
ডানা মেলেছে শাদা-শাদা বকের পাল!
আর এখানে দক্ষিনা বাতাস।
আর যদিও তুমি গাছ
এখানে তার অটুট বন্ধনে শিকড়।
ভিজে ফুল
বনশ্রী বড়ুয়া
এমনও মুষলধারা-
অকারণ বুকের পাঁজরে কথা বলে কেউ
নদীর সাপিনী শরীর থেকে উঠে আসে চপলা ঢেউ।
ভিজে উঠে শিরীষের বাঁকল
বিমর্ষ পাখির পালকে লেগে আছে জল
স্মৃতির গর্ভাঙ্কে ধূপগন্ধীর সুতীব্র ঘ্রাণ।
পৃথিবী ডুবে থাকে নীলাভ প্রেমে
জল গুনে নিভে যায় আগুন
সাদা মুখে লেপ্টে থাকে আরও একটি শঙ্খমালা।
গতরাতে জোনাকির আলো ফিরে আসে নি
তাই বিষন্ন ভোরের ঠোঁটে-
বৃষ্টি হয়ে এলে তুমিও শ্রাবণ।
মাটি
ছাদির হুসাইন
আমি হলাম মাটির মানুষ
মাটি আমার ঘর,
মাটির কোলে সুখে-দুঃখে
আছি জনম ভর।
মাটির প্রেমে পাগল আমি
মাটি আমার সব,
মাটির দ্বারা’ই এই পৃথিবী
সৃষ্টি করেন রব।
মাটির মাঝে ঘাঁটি আমার
মাটির মাঝে ঠাঁই,
মাটির পরশ পেয়েই আমি
মাটির গানই গাই।
মাটি আমার জীবনযাপন
মাটি’ই চলার রেশ,
মাটির বুকেই জীবন শুরু
মাটির বুকেই শেষ।
চোখ
সাব্বির হোসেন
মুক্তি চাই মুক্তি,
দেবে-
আমি বিষাক্ত অনলে জ্বলে যাওয়া
দুর্ভিক্ষের বিপ্লবী চোখ।
অভিমান
সোলায়মান জয়
জোছনার প্রতি হিংসা করে আকাশ দেখিনি
করিনি নিদানি কালের করুণ আর্তনাদ
তুমি আকাশ দেখাতে চেয়েছিলে বলে বলেছি-
এ গভীর বেদনার প্রতিষেধক তোমার নেই
তুমি কোন মহা যন্ত্রণার মায়াবিনী নও।
আজ গভীর বিষাদের আস্বাদে ডুবন্ত হৃদয়
প্রেমবৃক্ষ মরে গেছে ভালোবাসার অভাবে
এক ভোররাত্রির স্বপ্নের দেনায় ডুবে গেছি
অন্ধকারের আদরে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি।
একবার যদি তোমার চোখে তাকাতে পারতাম
তাহলেই হয়ে যেত সকল অংকের সমাধান
মিলে যেত সকল ভগ্নাংশ, সরল রেখার সূত্র
দেখতে পেতাম ফলাফলে কার নাম বসা।