পদাবলি : ০১


 


বিষমভাবে বেঁচে উঠুক

নাসিমা হক মুক্তা


দাঁড়াও পথিক! 

পালকখানি আলগা করে ছুঁঁয়ে দাও- জমিন

ছিটেফোঁটা ধানি গাছে ফুল না আসলে

দুঃসহ এই বাস পুজোর আগে শ্রাবণ জলে ভাসিয়ে দাও।


গা ভর্তি নতুন পরাগ বিটপীর ভাঁজে ভাঁজে

শাড়ি পড়–ক নব কুঞ্জে

গোপনে গোপনে বাসর অস্থির বৃষ্টি হয়ে

ঝরুক- টিপটিপ

ক্রমশ দেহভা-ের দল সীমানা ছাড়িয়ে 

বিষমভাবে বেঁচে উঠুক- ভুমির আয়ুতে!




পাললিক জীবন

শাদমান শরীফ


কবিতারা খুন করে বারবার ফিরে দেখে কামনাজমিন

প্রিয়বাসীনির চোখের সমাধিতে জমে আছে আকাক্সক্ষার পাললিক 

প্রাচীরে বরফফুলের সাজানো বাগান ছিল আতর-লোবানে

অথচ দিনশেষে আমার বুকের কাঁটাতারে ঝুলে থাকে অবুজ ফেলানী।


শহরের পথে পথে নিয়ন আলো গড়িয়ে গেছে মাইলের পর মাইল

লুণ্ঠনে নিরোধ বিউগল জ্বলে অপ্রত্যাশিত ভোরের দরজায়

কান পেতে শুনি আহত পাখির গান।


হায়! আমাদের আগামী জন্মগ্রহীতারা যদি জানতো

খুন হওয়ার চেয়ে বেঁচে থাকা কতটা কঠিন।



ফিউ মোমেন্টস

ইয়াসির আরাফাত 


এইসব মুহুর্তগুলো

মেহগনি ফুলের মতো ঝরে গেলে-

জুতোর তলায় পিষে যতটুকু দাগ রেখে যায়

তার মতো রেখেছো কি দু’ফোটা জল

যখন কাজল পড়ো, চোখ ভিজে যায়?


কান্নার পাশে যে থাকে প্রাচীন, সফেদ বকের

মতো দল বেঁধে এসেছিল যারা

এই সব বুক ভাঙা পাখি

মাস্তুলে লেগে থাকা দাগ

তোমার ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা রঙ

অশ্বথ জেনেছিল যে নদী প্রবীণ 

যার কাছে হারিয়েছ কিশোরী জামার দুটো হুক

যে বেদনা গভীর আঙুলে তোলে বিবাগী সিঁদুর

তার কাছে নিয়তি রেখে-

গমস্ত রঙের ছিপি খুলে গেছে আজ।



হারিয়ে যাচ্ছে এক একটি দিন

আখতারুল ইসলাম


হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনের শুরু, ভোর

ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন দিনের সকাল

খোঁজে পাই না রাতভর, 

অকৃত্রিম ভালোবাসার মোহ মায়া।

কীভাবে চেনা যায় সকালের রোদ

পাখির ডাক, ফুলের গ্রাণ

স্বপ্নরাঙানো এক একটি দুপুর

নির্জন জীবনের রাশি রাশি বোধ।

হারিয়ে যাচ্ছে বিকেলের সোনালি আভা

ক্লান্ত পাখির মতো অনায়াসে

নদীর ¯্রােতের সুর ছন্দে যায় ভেসে।

শরীর মনে জীবনে ক্রমশ সন্ধ্যা

ক্রমশ রাত। কখনো নিকষ কালো

কখনো অনন্ত কালের ঘুম।



একটি আস্ত মন চাই

 অনুকূল বিশ্বাস


একটি আস্ত মন চাই

কোনোদিন যার বাটোয়ারা হয়নি।

নীলাকাশের ন্যায় উদার যার হৃদয়

সমুদ্রের ন্যায় ধৈর্য্য তার অহঙ্কার,

যেখানে নিকুঞ্জ বনে নিঃশর্তে ফোটে ফুল,

নদীর ন্যায় নিষ্পাপ কলঙ্কহীন চরিত্র যার গর্ব;

এমনই এক মন চাই যে চির অবিক্রিত।


একটি আস্ত মন চাই

যে মনের নীলাম হয় না কখনও 

যে মনে ধরে না সন্দেহের জং,

নেই ক্রেডিট কার্ড বা বিপিএল কার্ডের সীমারেখা;

থাকবে না অন্ধকার চিলেকোঠার দূর্ভেদ্য কারাগার

কেবল থাকবে ভালোবাসার রোদ্দুরে সেকা প্রেম

এখন যা আসলে অলীক স্বপ্ন ডাইনোসর।



বৈদেশে নাগর

নীহার মোশারফ


কলিম শিক্ষিত ছেলে

               মেধাবীও খুব

বিয়ে থায় গরিব ঘরের আনবে ফর্সা মেয়ে।

       যেমন কথা তেমন কাজ

সুন্দরী এলো ঘরে

চাকরি নিয়ে কলিম বৈদেশে যাবে

দেশে মন্দা অর্থের বাজার।

         প্রেয়সী একা

           দেখা নেই নাগরের

ক’মাস পরপর টাকা আসে

সে টাকায় লটুয়া গন্ধ নেই 

                   থেকে থেকে হাসি নেই।

একা একা কত রাত

প্রেমের বরাত দিয়ে

              প্রহর পোহায়।

ঘরের আলো কালো করে

                     জিন, কবিরাজ।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট