পদাবলি : ০২

 

    অলঙ্করণ : জাহাঙ্গীর হোসেন বাদশাহ


রূপালী ইলিশের উপকথা

দীপঙ্কর ইমন


মাঝ পথে কথা থেমে যাবে সব

এমন কি অগণতান্ত্রিক হয়ে উঠে স্বপ্ন দেখার বৈদিক তিথী।

রূপালী ইলিশ; চোখ বন্ধ করবে কি?

সমুদ্রে ধরেছে ফাঁটল... জল শুঁকাবার অপেক্ষায় আহত ঈশ্বর।


আবার মাছরাঙা খেয়ে নিবে ইলিশের সুস্বাদু দেহ

নিরব মৎস বিভাগ 

ঝুলবে মুখস্ত তালা, দায়সাড়া মনিহারি।


আবার সব কথা থেমে যাবে

মাছরাঙার রাজত্বে ইলিশের চোখ বুঁজে যাবে

স্বয়ংক্রিয়।


পূর্ণিমার জোৎস্নারা আবারও ধর্ষিত হবে

বারোমাসি আমাবশ্যায়।



জীবনের আলপনা

এ বি ছিদ্দিক


ঠিক বিষুব রেখা বরাবর দাঁড়িয়ে

নৈমিত্তিক মুদ্রার পরিপাকতন্ত্র পরখ করি!

কাঁধে গার্হস্থ জোয়াল...

একটু আগপাছ হলেই দর্শনীয় যাদুঘর!

হলদে রঙের শাড়িতে ঝিঙে ফুলের রঙ

উপভোগ করার সময় থাকবে না এতটুকু!


চিরহরিৎ বৃক্ষ যেমন ঠায় দাঁড়িয়ে

তুগলকী ইতিহাস বিদ্যার পাঠ দেয়

ঠিক তেমনি নীল বাতিঘরে রান্না হয় সাত নম্বর ডাল!

প্রশস্ত বুকের জমিনে এঁকে যাই জীবনের আলপনা।



ভালোবাসা রঙিন, ভালোবাসা ধূসর!

তাওহিদ ইসলাম


ভালোবাসা রঙিন। অনবদ্য। প্রাণময়। 

বেঁচে থাকার কারণ। 

হাজারটা স্বপ্নের পর বিনম্র মিলন। ইচ্ছেদের অপ্রাপ্তির আধাঁর মুক্ত। 


কখনো বা ধূসর! 

ধূসরিত মলিন। অনাপ্রাপ্তির সুখ।

অপেক্ষার দীর্ঘশ্বাস মৃত্যু অব্দি। 

অপূর্ণতার সাক্ষী। 

অপেক্ষা, কান্না, আক্ষেপ বেলা ফুরিয়ে যাবার সাথে বয়স বৃদ্ধি। 

শারিরীক প্রত্যাবর্তন। পাল্টে যাওয়া সব। পৃথিবীর রঙ। তবুও পুড়তে থাকা। 

পিছুটান হয়ে ভুলতে না পারা। 

স্মৃতির আদলে ভুলে যাওয়া মানুষটিকে সযতেœ আগলে রাখা। 


একটু অদ্ভুত! 

এই গল্পখানা ভালোবাসা। 

ভালো সবাই বাসে। বাসতে চায়। 

মনের ক্যানভাসের এক কোণে আগলে রেখে দিতে চায়। 

আজন্মকাল। কেউ পেয়ে ধন্য হয়। পবিত্র বন্ধনে রবের দুয়ারে মাথা নত করে। 


আবার কেউ?

ধূসরিত আক্ষেপে যাতনার সাগড়ে ডুবুরি হয়। মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে স্মৃতি চারণ। 

কান্নার জলে নির্বিকার চিৎকার! 

আহা! 

ভালোবাসা দয়াহীন। কি নির্মম!


অতএব। এক জীবনে রব বিনে কাউকে ভালোবাসতে নেই। দুঃখজলে ডুবুরি হতে নেই। 



কাফনে মোড়া জীবন 

সুশান্ত  হালদার 


ঈগল থাবায় জীবন 

তিন টেক্কায় জুয়াড়ি রেখেছে হাত 

ভবঘুরে জীবন মেপেই চলে পথ 

অথচ সময়ের হাত ধরে

ঈশ্বরকে ভ্রুকুটি করে চলে এক বদ্ধ উন্মাদ


চৈতন্য বোধে 

যাদের কেটে যায় জীবন নির্দ্ধিধায় 

পুকুর ভর্তি জলে তাদের কিইবা আসে যায়?

নদী প্রেম আচ্ছন্নতায় জীবন তুচ্ছ মনে হয় 

অথচ পাতাঝরা রাত্রির কান্নায়

জেগে উঠে ফিলিস্তিন ইসরায়েল হামলায়


ঋষি বেশ

হাতে বজ্র চিহ্নিত তাসখন্দের আকাশ 

মরুঝড়

হুঙ্কারিত বাংলাদেশের অবরুদ্ধ বাতাস 

বুকে কুরুক্ষেত্র

সারাদেহে হিংস্র ব্যাধের ক্ষতবিক্ষত শরাঘাত 

তবুও কাফন মোড়া জীবন আমার 

দ্রোহে নজরুল

প্রেমে হাফিজ

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা উত্তর ‘বাংলাদেশ’!  



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট