পদাবলি : ০৩



হেমন্তের তলপি তলপা সমূহ
দ্বীপ সরকার

সকালের কিনারে গিয়ে রোদ কেড়ে খাচ্ছি
মুড়ি মুড়কির সাথে-- আলো বাতাসের কি যে খেউর!
উঠোনে নিষ্কৃতি পাবার ছলে একজোড়া কবুতর
ভুল সংস্কৃতি থেকে সরে দাঁড়ালো
গরমের দিনকে আর পোষা যায়না

শিশিরের ঘাড় ঘেঁষে উড়ে যাচ্ছে পানকৌড়ি
নিশানার কাছে পড়ে আছে নদীর তীর
ফুলকপির খোপে খোপে আটকে থাকা হিম--
গড়িয়ে যাচ্ছে শরীরে শরীরে
পানকৌড়ি চেটে খাচ্ছে নদীর মাখন

আহা শীত! আহা হেমন্ত!
চাদরের ভাঁজে গুছিয়ে রাখা সমুদ্রের দিনলিপি
এবং বাতাসের তলপি তলপা সমূহ
পানকৌড়ি আর আমি ভাগ করে নেই

নবী মুহাম্মদ (সা)
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন

 বিশ্ব যখনি অজ্ঞতা, অনাচার
কত কুসংস্কারে নিমজ্জিত।
মানবতার মুক্তির বার্তা নিয়ে,
মা আমেনার কোলে তখনি
আগমন করেন নবী মুহাম্মদ (সা)।
সৃষ্টি যদি তাঁকে না করত খোদা তাআলা,
সৃষ্টিই না হয়ত এই বিশ্ব জাহান।
হলেন যিনি সৃষ্টি জগতের সেরা,
মানবতার মুক্তি ও শান্তি স্থাপনে
করে গেছেন বিরল দৃষ্টান্ত।
কে ধনী, কে গরীব? 
কে হাবশী গোলাম, কে কুরাইশ?
নেই কোনো ভেদাভেদ।
এই মর্মে ঘোষণা দিলেন যিনি,
তিনিই নবী মুহাম্মদ (সা)। 

ধাগ্রস্ত হৃদে তবু হাঁটি
আহেদুল ইসলাম আদেল

আমি শতগ্রহের শোকের পলিতে অঙ্কুরিত চারা
তুমি বিষফুলে বিচ্ছুরিত দমকা হাওয়া
অভিমানের কপাট খুলে দেখ প্রিয়া
আমি সেই হারিয়ে যাওয়া শেষ ইচ্ছা।
দুরন্ত ছেলেবেলা, গাভীনক্ষেতের নিরব হিমকণা
নীল প্রজাপতির ঝাপটা ডানা
তুমি তবু কেন বুঝ না?
যে বসন্ত গেছে, একেবাড়েই কি গেছে?
প্রতি ফাগুনে ফের তো যুবতি রূপে আসে
তবে তুমি কেন চির দিধান্নিত থাকবে?
তোমার দিধাগ্রস্ত হৃদে তবু হাঁটি
যদি কোন বসন্তে বুঝ মিলে।

জলতরঙ্গ
অনিন্দিতা মিত্র

কিছু সংলাপ বিস্মৃতির অন্ধকারে তলিয়ে যায় জীবনের রিমঝিম জলতরঙ্গ, আহত পাখির ডানায় লাগে শূন্য হেমন্ত কালের আপাত বৈভবের ছবি। রূপাশালী ধানের বুকে জমা হতে থাকে শত শত বছরের নবান্নের আক্ষেপ । থেমে যেতে চায় বাউলের একতারার মেঠো সুর ,অবসন্ন দেহ নিয়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষায় থাকে তথাগত, কুশীনগরের পথে পথে শুধুই বিষ ধোঁয়া।সময়ের আল পথ ধরে বয়ে চলে করুণ মালকোষের  সুর। পুড়ে যায় জোছনা, জীবনযুদ্ধের বাঁকে পোড়ে মন। বিশ্বাস হারিয়ে যায় অবিশ্বাসী নক্ষত্রের ভিড়ে।  ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকে ক্ষয়িষ্ণু প্রত্যাশা। আমার কবিতা কখনও কবিতা হয়ে  ওঠে না, মূক হয়ে বেঁচে থাকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতির আশায়।



অবহেলা
ইস্রাফিল আকন্দ রুদ্র


তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখবো এমন কোনো কথা কখনো ভাবিনি
তোমার প্রতীক্ষায় পথে প্রান্তরে অশ্বথের মতো দাঁড়িয়ে থাকি ওগো প্রেয়সী
ওগো প্রেয়সী, ওগো রূপসী, ওগো অবহেলা ভালবাসি, ভালবাসি তাই বুঝি কোরো হেলার মেলা!

ঘড়ির কাঁটার চেয়েও দ্রুত ভাঙ্গে, গড়ে আমাদের অভিমান-
অনড় বিশ্বাসে প্রতি নিঃশ্বাসে শব নিস্তাব শরীরে তুমি চির প্রতীক্ষমাণ।
ওগো প্রিয়তমা গুণবতী আমার, প্রেমের কসম নিও
হৃদয়ের নিভৃতে শুধু তোমার নিবাস তা তুমি জানিও!

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট