পদাবলি : ০২



কবিতা ও প্রেম
রামপ্রসাদ সূত্রধর

রাত যখন গভীর হয়
চারদিকে যখন কালো আঁধার ঘিরে আসে
পাখিরা যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়
তখনে তোমার কথা আরো বেশী মনে পড়ে কেন?
তাহলে কি আমি তোমারে ভালোবাসি...?
তোমার চাদের মত উজ্জলময় রূপ
আমাকে পাগল করেছে
স্পন্দন শিহরণে মুখরিত হয়েছে
কেন এমন অনুভূতি...?
কবিতা চুপ করে থেকো না
কিছু একটা বলো আমি শুনতে চাই।
তোমার নির্বাক মুখের কথা
যে কথা আমাকে শুধু ভাবায়
মাঝে মাঝে কাঁদায়ও
হৃদয় কে ক্ষত বিক্ষত করে তুলে
এই কি ভালোবাসা..?
নিরবে শুধু ব্যথাহত করে
হৃদয় কে রিক্ত করে তুলে মন কে মর্মাঘাত করে
যে যন্ত্রনা শুধু দেহ কে দাহন করে ফেলে
এই কি ভালোবাসা...?
কবিতা কিছু একটা বলো চুপ করে থেকো না
আমি একদিন মরে যাবো
ডাইরির পাতায় সাক্ষী দিবে
আমার প্রেমের পরিচয় কালো কালির চিহ্ন
জীবন ফিরে পাবে বিশ্ব নিখিলে
কবিতা তুমি কত কবি কে ঠকিয়েছো...
আমাকে ঠকাতে পারবে না
কারণ আমি তোমাকে অন্ধের মত ভালোবাসি।

দর্শন
শাবলু শাহাবউদ্দিন

দেখেছি দর্শনের পাতা
আছে লেখা হাজার হাজার কথা
মানুষে মানুষ মিলে, লিখেছে দর্শন দিলে
রাজ্য জাতে কত ভেদাভেদ তাহাতে
কী দর্শন দিনে রাতে রচিছে সবার সাথে ?

নাই সমাধান দর্শন আন
দর্শন ধর্ষণে জাতে
লোকে থাকবে কেন তার সাথে?

কালে কালে হাজার পাতার তালে
ধর্ম কর্ম মনুষ্য জাতি
মিশেছে মৃত্তিকা আছে তাদের সাথি,
মন আর হৃদয়ে আছে বিবেক কী ভাই
দর্শনের সেথায় পায় না কী ঠাঁই।

চাষ করি হৃদয়ে বিবেকের গাছ
লাগবে না আর কিছু, ভাল থাকার মাস।



আমি তাকেই ভালোবাসবো
কাব্য কবির

আমি তাকেই ভালোবাসবো যার মন
সাদা খইয়ের মতো, যে প্রজাপতি
ভালোবাসে, ফুলকে ভালোবাসে।
যে চাঁদের নরম জোছনা ছুঁয়ে মনের খামে
জমা রাখে।

শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাঁটতে
যে ভালোবাসে, পাখিদের মিষ্টি গান,
ঘাস ফড়িং এর নাচ দেখতে খুব
ভালোবাসে। বিকালের ভেজা রোদে
যে আমার হাত ধরে হাঁটবে নদীর কূলে,
যার শ্রাবনের মেঘের মতো কালো চুল,
মায়াবী হরিনীর মতো যার চোখ,
যার মন বসন্তের টুকটুকে লাল
পলাশ ফুলের মতো
আমি তাকেই ভালোবাসবো,
আমি তাকেই ভালোবাসবো।

আমাদের চাহিদা
আহমাদ সোলায়মান

লাশের মত স্বপ্ন আর হতাশার লাশ
তোমার দৃষ্টির প্রতিটি ভাঁজে মেঘের পাহাড়
নদীর মত জল কখনো ছিল না আমার

রাতের চাহিদা মেটাতে অন্ধকার আসে
যেমন , বাসর বিছানায় আসে বর-
বিছানা আর বর, দুইয়ের চাহিদায় পারস্পারিক
অথচ, তুমি আর আমি
কাছাকাছি আসি
দূরত্ব বাড়ানোর চাহিদায়!

যদিও সে যুদ্ধ আমাদের স্পর্শ করে না
হাসনাত আসিফ কুশল

এখনো মিছিলের শ্লোগান শোনা যায়
সমবেত মানুষের ময়দানে।
এখনো নগ্নপদ প্রভাতফেরি দেখি
শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে
যেন পুষ্পস্তবক অর্পণের
প্রতিযোগিতায় ক্যাডাররা,
উল্লাসে নেতারাও।

ভুল বিপ্লবে প্রগতি সংহারের
সংসদে অভাব যেন আস্থাভাজনের।
জনসভায় জনদরদীর অভিনয়ে
বিশাল সমাবেশের উদ্যানে
মহানায়কেরা স্মরণীয় বরণীয়!

বারবার এই মিছিলের সামনের কাতারে
এরাই আসে আবার এরাই
টেবিলের নিচে উপার্জন করে।

তবুও আমাদের জন্যই এরা
কখনো হয় নেতা
কখনো সন্ত্রাসী
কখনো প্রতিবাদী!

মার্কস, দস্তয়ভস্কি, মাও সে তুং এর
ধুয়া তুলে এরা কখনো পাজেরো চালায়
কখনো টয়োটা চালায়
কখনো এদের অসাম্প্রদায়িকতার ব্যানারে
সাম্প্রদায়িকতার ঝড় ওঠে।

তবুও তৈলমর্দনকারীরা এখনো ক্লান্ত হয় নি!
স্বৈরাচারীরা এখনো ক্ষান্ত হয় নি!
বিরোধী দলের ভ্রান্তনীতি এখনো পুরনো হয় নি!
প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর থেকেও নিভে যায় নি
যুদ্ধের আগুন!
যদিও সে যুদ্ধ আমাদের স্পর্শ করে না!

শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট