বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় করোনার প্রভাব
লাভলী ইসলাম
চীনের উহান প্রদেশ থেকে যে বিষাক্ত করোনা ভাইরাসের উত্পত্তি হয়েছে তা আজ বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে অতি দ্রুত। চায়না থেকে যে মৃত্যু ফাঁদ সৃষ্টি হয়েছে তা আজ কেড়ে নিচ্ছে শিশু কিশোর থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল শ্রেনীর সকল ধরনের মানুষের প্রাণ দেশ থেকে দেশে। তবে আক্রান্ত অনেকেই সুস্থ হচ্ছে এটাই আশার কথা ।
বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাস আতংকে সুস্থ সুন্দর মানুষ গুলো চরম অস্বস্তি অশান্তি আর মানসিক চাপে ভেঙ্গে পড়ে অনাআক্রান্ত মানুষেরাও মানসিক শক্তি হারিয়ে দ্রুত অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা।
এ রোগ শনাক্ত হবার পর রোগীকে সম্পূর্ণ আলাদা করে রাখতে হয় সবার কাছ থেকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে। এ এক নতুন জীবন্ত বনবাসের মত।
অনেক দেশ তাদের স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। জন সমাবেশে একত্রিত হতে বারন এসেছে।
অনেক দেশ এ সংক্রামক ভাইরাস ঠেকাতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করেছে। পৃথিবীময় আকাশ যাত্রীদের অবাধ চলাফেরার উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে ভয়ে ডরে নিজেদের নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করেছে।
ইউরোপ আমেরিকা সহ ভ্রমণ বিলাসী মানুষদের ভ্রমণ কমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়।
আমার চেনা দেশ চেনা শহর ইটালীর রোম সহ অন্যান্য দেশের টুরিষ্ট এলাকায় লোকজন নাই বললেই চলে। যেখানে টুরিষ্টদের পদভারে মুখরিত হতো পিয়চ্ছা নাভানা, পিয়চ্ছা ভেনেসিয়া, ফোনটানা ডি ট্রেভি, কলোসিয়াম ভ্যাটিকান সিটি সহ সব ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহের জনপ্রিয় স্থাপনা ও ইতিহাসের প্রসিদ্ধ স্থান গুলো। সেখানে পথ ঘাট হয়ে আছে বলা যায় অতি ফাঁকা।
পৃথিবী জুড়ে এখন প্রাণ বাঁচাতে এই মরন ভাইরাস এড়াতে সবাই যতটুকু সম্ভব আত্মগোপন করার চেষ্টা করছে পথ ঘাট জনপদে মানুষের সংস্পর্শ থেকে।
আর এ সুযোগে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা ধপাস করে নেমে যাচ্ছে নীচের দিকে দ্রুত বেগে।
টুরিষ্ট প্রধান দেশ গুলো টুরিষ্ট শূণ্য হয়ে পড়ছে প্রায়। রমরমা হোটেল ব্যবসা জিরো পয়েন্টে নেমে আসছে। খাবারের দোকান রেস্টুরেন্ট সহ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে নেমে এসেছে খুব খারাপ অবস্থা। বিশেষ করে চায়না রেস্টুরেন্ট সহ সকল চায়না প্রতিষ্ঠানে লোক সমাগম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
অনেকেই ইতিমধ্যে চাকরি হারিয়েছে অনেকে হারানোর পথে।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে লক্ষ লক্ষ কর্মচারী কর্মকর্তা অচিরেই বেতন ভাতা না পেয়ে পড়ে যাবে বড় ধরনের অর্থ সংকটে।
সারা পৃথিবীতে শুরু হয়ে যাবে অর্থনৈতিক মন্দা।
এক দেশ আরেক দেশের সাথে আসা যাওয়া বন্ধ করে হয়ে যাচ্ছে একেলা।
আর ধারনা করা হচ্ছে এ খাতে সব চেয়ে বেশি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে চায়না।
চায়নার খাদ্য পোষাক সহ যে সব জিনিস বাইরের দেশে রপ্তানি করে রমরমা বানিজ্য করতো তা বর্তমানে বন্ধ হয়ে আছে।
এক দেশের সাথে অন্য দেশের সম্পর্ক পৃথিবীর এই নিয়মের চাকাটা হঠাৎ এ ভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে যা সহসায় কাটানো সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
চায়না চরম অভাব অনটনে পড়লে সেখানে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ এক দুর্ভিক্ষ। যা একদিন হয়ত পৃথিবীতে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। আর তার খেসারত হিসেবে পৃথিবীর অনেক দেশেই পড়বে তার প্রভাব।