মা আমার জন্মধাত্রী মা
জুবায়ের দুখু
নাভি ছিঁড়ে- ভূমিষ্ঠ হল তোমার উদর থেকে মা
আমি তোমার সাতরাজার ধন।
যুগে যুগে কত তাপস্য করে-- আমাকে ডাকলে
অবশ্য এর একাংশ বাবার দায়িত্ব।
মা আমার জন্মধাত্রী মা
পৃথিবীতে আমাকে আনতে তোমার এতো কষ্ট আমি
কিভাবে পরিশোধ করব- তুমিই বলে দাও
চুমকে দিয়ে চুমু দাও ওষ্ঠরে
এলিয়ে দাও তোমার কোল আবারও প্রাণ জুড়াই
দুদন্ড সেই কোলে মাথা রেখে।
মা আমার রাগ করো না
আমি সইতে পারি না তোমার বিষন্ন মুখ গম্ভীরতা।
ডবভ্রান্তিকর তুচ্ছ আবেগের কফিলতে
যারা মাকে ভুলে যায়- তার অবিশোধিত ঋণ
ওরা মানুষ নয় এক-একটি করোনা ভাইরাস।
অপূর্ণতা
সানাউল্লাহ বিপুল
পূর্ণতা পেলো না মন পূর্ণতা পেলো না
বেলা বয়ে গেলো তবু পূর্ণতা পেলো না
ছোট ছোট আশা কত পূর্ণতা পেলো না
আশায় ছিলাম আশায় আছি
দূরে বহু দূরে গেছি
লক্ষ্য ছুতে পারি না
কালের ¯্রােতে দাড়িয়ে আছি
হিসাব নিকাশ বেজায় কৃষি
শূন্য তো মেলে না
খেয়া পাড়ে বসে আছি
মাঝি তোমার আশায় বাচি
তবু তুমি এলে না।
অন্য চোখ
লুৎফুন নাহার লোপা
একবার চোখদুটো রেখে এলাম যেখানে
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় আবিষ্কারের পর
সেই পথে পরে রইল তার অমোঘ ঘ্রাণ।
মেহগনি, আম কিংবা কাঠালচাপার ডালে
যে উদ্বেগ পাশাপাশি হেটে ফিরে গেলো
বাড়ি ফিরে নানা আসবাব হাতরিয়ে
খুজে দেখলাম তার পরিচয় মেলে কিনা।
পরিবর্তে চোখের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এলো
একটি নিগূঢ় গল্প।
যেমনটা সময়ের ব্যাবহার শিখে নিয়ে
দুর্বোধ্য হয়ে উঠে ভালোবাসা।
ভাষণের অপেক্ষায়
শরিফুল ইসলাম
বাংলার আকাশে ঝলমলে সূর্য!
পূর্ব কোণের হলদে রঙের রং খেলায়-
শুরু যে হয় একটি দিনের দিন হিসাব।
আজকে আকাশ চুপ করেছে এই বেলায়
চুপ করেছে আকাশ আলো সে কার্যকলাপ।
বাংলায় আজকে স্তব্ধ আলোয়-
নিবুনিবু সে, ঘটছে কি ভাই স্তব্ধ আলোয়?
নীরব বাওয়ে সুর পড়েছে কিসের লাগি?
এখন দেখো ছুটছে সবাই রুদ্ধ কালোয়
ময়দাতে যে যাচ্ছে সবাই, সবাই জাগি।
বাংলায় আজকে সূর্য উঠবে!
ভাষণ হবে শাসন ভেঙে বজ্র প্রপাত-
আসছে তুফান লব্ধ কেতন জয় করিতে।
হাত তুলেছে বঙ্গবাসীর লৌহ সে হাত
তৈরি সবাই বঙ্গবন্ধুর ডাক শুনিতে।
আমার সরল ইচ্ছেগুলি
সাজেদুর আবেদিন শান্ত
১
বেশি কিছু চাওয়া পাওয়া নেই আমার
একটা ছাচের বেড়া আলা ঘর চাই
ঘরে একটা কাঠের টেবিল চাই
যার দুই-তিনটা পাওয়া ঢোকা আর ব্যান্ডেজ এ দারানো।
যার উপর কয়েকটি বই থাকবে
রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা, নজরুলের অগ্নিবীণা, বিভুতিভুষনের পথের পাচালি, জীবনানন্দের বনলতা, জসিমউদ্দীনের নকসীকাথা, হুমায়নের শ্রাবণ মেঘের দিন।
একটা মাটির কলস চাই, একটা মাটির পেয়ালা চাই।
ছোট একটা উঠান চাই, বাশ ঝাড় চাই, ঝাড়ের নিচে একটা টঙ চাই,
গ্রীষ্মে ফ্যান কিংবা এসি না
চাই বাশঝারের নিচে টংগের উপর বসে মৃদু শীতল বাতাস
২
শীতকালে রুম হিটার চাই না
চাই বেলকুনিতে আসা রোদ কিংবা উঠানে আসা রোদে গা এলিয়ে দিতে
প্রযুক্তিময় যুগে আমার বেশি কিছু চাই না।
টুঙ্গিপাড়ার রাজপুত্র
কাব্য কবির
টুঙ্গিপাড়ায় সোনার চামুচ মুখে নিয়ে
জন্মেছিলো এক রাজপুত্র।
সব সময় তার মুখে থাকতো শিউলি
পুষ্পের মতো হাসি। ভালোবাসার জালে
বেধে রাখতো সবাই কে।
বৃত্তহীনদের অশ্রুজল দেখলে
মুছে দিতো ভালোবাসার রুমাল দিয়ে।
আকাশের মতো খোলা মন
ছিলো তার।
ছোটবেলা থেকেই অন্যায়ের শিকল
ভেঙে ফেলতো।
একদিন পাকিস্থানী শকুনেরা ঝাঁপিয়ে
পড়ে এদেশের মানুষের ভালোবাসার মানচিত্রে।
সবাই হয়ে গিয়েছিলো দিশেহারা,
চেয়েছিলো মুক্তির আত্মতৃপ্তি।
রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে রাজপুত্র
শোনালেন মুক্তির এক কবিতা
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার
সংগ্রাম।
কবিতার প্রতিটি শব্দ ছিলো আগুনের
ফুলকার মতো। কবিতা শুনে মানচিত্রের প্রতি
ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, অন্যেয়ের বিরুদ্ধে
রুখে দাঁড়াবার শত্তি, মুক্তির চেতনা
খুঁজে পায়।
রাজপুত্র দূর আকাশে চলে গেছে, রেখে
গেছে কালজয়ী কাব্য, এদেশের ষোল কোটি
ফুল কখনো ভুলবেনা রাজপুত্র কে, হৃদয়ের
গভীরে তার ছবি একে
রাখবে কাল, মহাকাল.........
একটি কন্ঠ
মহিউদ্দিন বিন্ জুবায়েদ
একটি কন্ঠে গর্জে ওঠে
যেন নদীর ঢেউ,
একটি কন্ঠেই পালাবদল
জানতো নাতো কেউ।
দমকা বাতাস কণ্ঠে ওড়ে
একটি বিশাল ঝড়,
ভাষণ শুনে আমজনতা
ছাড়ছে তাদের ঘর।
আঙ্গুল তুলে ডাক দিয়ে যায়
ফুটে মুখের বোল,
স্বাধীনতার জন্য সবাই
করে হুলুস্তুুল।
সেই যে কন্ঠ চিনে সবাই
মুজিব নামটি যার,
স্বপ্ন তাদের একটি দেশের
স্বপ্ন পতাকার।
শোক
কিশলয় গুপ্ত
হাত গুটিয়েছে শব্দরা- আমিও মূক
রাত বেড়ে চলে মন্থরে- অলীক সুখ
সহজিয়া সুর যন্ত্রনাতে আত্মীয়
জানালায় দুটি চোখ রেখে রোজ দেখে নিও
হিসাব ছাড়া বদলে চলে দৃশ্যপট
দর্পন ভাঙে, বর্ষনে ভাসে লক্ষ্মীঘট
দর্শন ধরে শব্দরা শব- নিষ্পৃহ
ঘর্ষনে আর আগুন জ¦লে না, ছাই গৃহ
অট্টহাসির উল্লাস বাড়ে ধড়কনে
হাতে হাত বাঁধা সাত পাকে চুপ বরকনে
মূকের এবং বুকের লেখা মরমিয়া
ছাই’ এর স্তুপে রুপকথা খুঁজি, জ¦লে জিয়া