পদাবলি : ০৩


 


আমার সখী

মেহেরুন ইসলাম


আমার সখী রাতের বুকে জ্বলজ্বলে এক তারা,

রোজ রাতে সে আমায় ডেকে হয় গো পাগলপারা।

আমার সখী দিনের রবি ঝিলিক মারা আলো,

এক নিমিষে মনটা আমার দেয় করে দেয় ভালো।

আমার সখী রঙিন বিকেল রংধনুর ওই ভাঁজে,

হাত নাড়িয়ে ডাকে আমায় হরেকরকম সাজে।

আমার সখী কলমিলতা থাকে গাছে গাছে,

আমায় দেখে হাওয়ায় দোলে তাধিন তাধিন নাচে।

আমার সখী ছোট্ট ময়না মিষ্টি মুখের বুলি,

সুরের পরশ দিয়ে ভোলায় আমার দুঃখগুলি।

আমার সখী নদীর বুকে ঢেউ খেলানো পানি,

উঁচুনিচু ঢেউয়ের তালে দোলে হৃদয়খানি।

আমার সখী মাঝি ভায়ের পালতোলো ওই নাও,

নায়ে চড়ে এ মন ভাসে সুদূর কোনো গাঁও।

আমার সখী সবুজ পাতা, পাতায় মোড়া বাঁশি,

পাতার প্রেমে ব্যাকুল হৃদয়, পরে গলায় ফাঁসি।

আমার সখী মা জননীর দুষ্টুমিষ্টি গালি,

পড়তে বসে ফাঁকি দেওয়া, নষ্ট কলম-কালি।

আমার সখী স্নেহের বাবা, মনের মতো মানুষ,

যার আকাশে দস্যি এ মন উড়ায় স্বাধীন ফানুস।



পেয়েছি এই খোঁজ 

মো. পারভেজ হুসেন তালুকদার 


নাম না জানা সাদা রঙের ফুল,

রাঙিয়েছে পথের দু’টি কূল।

বনটি পাশেই নয়তো বেশি দূর,

ভেসে আসে পাখির মধুর সুর।

কল্পনাতে ভেবেছি যা রোজ,

আমার গাঁয়ে পেয়েছি এই খোঁজ।


ছন্দের তালে জীবন

মাহতাব উদ্দিন


প্রমিত জীবন ধ্বনির মতন দোলে-

মুক্তাক্ষরের আদলে,

ছন্দের ভাঁজের সাথে যেনো তা সংবৃত,

রাগ-বিরাগে অবনী-মাঝে প্রকাশ্যে বিবৃত।

কখনো সহাস্যে স্বরবৃত্তে কিংবা মাত্রাবৃত্তে,

আবার কখনো অক্ষরবৃত্তের মতো ধীর-লয়ে চলে।

জীবন কখনো সমচরণ বা মিশ্রচরণ ছন্দের মতো,

প্রস্বর দিয়ে তাকে লয় বা গতির চালে গড়তে হয়।

অন্ত্যানুপ্রাসের মিলন জীবনকে সুন্দর করে,

প্রতি পর্বে প্রতি পদে তা হয় সমৃদ্ধিপূর্ণ। 

উপমা বা তুলনাতে নয়, অলংকারেই জীবন, 

দামালি পাঁচালি কিংবা পয়ার-মহাপয়ারে  নয়-

জীবন তো এক কাব্যিক দ্যোতনা।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট