এক বিরল ব্যক্তিত্ব ও একটি অনন্য প্রতিভা : অধ্যাপক আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ.)

 



এক বিরল ব্যক্তিত্ব ও একটি অনন্য প্রতিভা

অধ্যাপক আল্লামা ফখরুদ্দীন (রহ.) 


প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ ছিদ্দিকী


যে সকল গুণে গুণাম্বিত হয়ে একজন মানুষ সফলতার উচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত হয়ে মহৎ ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন কিংবা মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন তাদের মধ্যে একজন আল্লামা ফখরুদ্দীন। তিনি ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ জ্ঞানসাধক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের অগণিত জ্ঞান পিপাসুদের হাদীছ, তাফসীর, ফিকহ, আরবী ভাষায় ও সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান বিতরণ করে তাদের তৃপ্ত করেছেন। বিষয় ভিত্তিক জ্ঞানের গভীরতায় পৌঁছে শিক্ষার্থীদের সকল জিজ্ঞাসার সঠিক সমাধান দিতে কখনো পিছপা হননি। শুধু একমাত্র শিক্ষার্থীদের নয় বরং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের ধর্মীয় বিষয়ের নানাবিধ জটিল প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে কখনো কার্পণ্য করেননি। তিনি ছিলেন এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ‘আলিম, খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, আদর্শ শিক্ষক, বিজ্ঞ হাদীসের প-িত এবং দক্ষ প্রশাসক। তিনি বাংলা, আরবী, ঊর্দূ, ইংরেজী ও ফার্সী ভাষার মহাপ-িত ছিলেন। তিনি নম্র, ভদ্র, বিচক্ষণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আল্লাহ তা’আলা মানুষকে সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন তার ব্যক্তিগত জীবনের কিছু স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে। এ সকল বৈশিষ্ট্য আল্লাহ তা’আলা তাঁকে দান করেছেন তার জীবন ধারায়। তিনি ছিলেন অধিক পরহেযগার এবং সকলের নিকট সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী বিজ্ঞ এক প্রশাসক। যার চরিত্র মহান ও উন্নত, সে সর্বাধিক সম্মান পাওয়ারও উপযুক্ত। আল কুরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানীত যে ব্যক্তি অধিক তাকওয়াবান। এ কারণেই তিনি তাকওয়ার  প্রতি অধিক যতœবান  ছিলেন। এ ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে যাবার সুযোগ আমার হয়নি। তবে আমার ছোট্টবেলা থেকেই মাওলানার যথেষ্ট সুনাম শুনে আসতেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে মরহুম প্রফেসর ড.আনওয়ারুল হক খতিবীস্যার থেকে উনার ব্যাপারে যথেষ্ট ধারণা পেয়েছি। স্যারের অধীনে গবেষণা করার কারণে স্যারের সাথে প্রায়ই এসব মহামণিষীদের বিষয়ে কথা হতো। বিশেষভাবে অধ্যক্ষ মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন, অধ্যাপক ড. আবু বকর রফীক, অধ্যাপক ড. সামশুল আলম, অধ্যাপক ড. ফজলুল হক এবং অধ্যাপক মাওলানা ফখরুদ্দীন (রহ.)-এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। আমি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকায় চাকুরী করার সুবাধে আল্লামার কর্মস্থল চট্টগ্রাম ছোবহানীয়া আলিয়া, ঢাকা সরকারী আলীয়া এবং সিলেট সরকারী আলীয়া মাদরাসাসহ হাজারের অধিক মাদরাসা পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছিল বিধায় মরহুম আল্লামা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। তাছাড়া শেষ জীবনে আমার এলাকার চুনতী হাকিমীয়া আলীয়া মাদরাসায় বেশ কিছুদিন শায়খুল হাদীস হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় মাওলানা সম্পর্কে অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে। সে গুলোর কয়েকটি দিক তুলে ধরার প্রয়াস পেলাম, যা আমাদের জীবন গঠন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

 আল্লামা ফখরুদ্দীন  একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, মুফতী, মুফাস্সির,বিজ্ঞ মুহাদ্দিস, দাঈ ইলাল্লাহ এবং দক্ষ প্রশাসক। তাঁর জীবন, কর্ম, মন ও মানসে স্বীয় একজন প্রকৃত ‘আলিমের প্রভাব সুস্পষ্ট।  তিনি ন¤্র, ভদ্র, বিচক্ষণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি শিক্ষকতা জীবনে তুলনামূলক কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মুকাদ্দামায়ে মুসলিম, তাফসীরে বায়জাভীসহ বেশকিছু বিষয়ের গবেষণাধর্মী দারস প্রদান করতেন। মাওলানার পাঠদান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য হল, তিনি বিভিন্ন বিষয়ের উদাহারণ দিয়ে কঠিন ও দুর্বোধ্য বিষয়কে খুবই সহজভাবে উপস্থাপন করতেন। কোন বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে নিজের পা-িত্য  জাহির না করে কিতাব দেখে পরবর্তী সময়ে এর সমাধান দিতেন। স্বীয় প্রতিভা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী মাওলানা, প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, মুহাদ্দিস, উপাধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষের পদও অলংকৃত করেন। ফলে  তিনি একজন  প্রাজ্ঞ শিক্ষক এবং দক্ষ প্রশাসক। সারা বাংলাদেশে জেনারেল বিষয়ে সনদ অর্জন না করে শুধুমাত্র কামিল পাশ করে যেই ২/৩ জন আলিম অধ্যাপক পদ লাভ করেন তন্মধ্যে তিনি অন্যতম। সিলেট সরকারী আলীয়া মাদরাসায় কর্মরত অবস্থায় সহযোগী অধ্যাপক পদে প্রমোশন লাভ করে উপাধ্যক্ষ পদে বগুড়া সরকারী আলিয়া মাদরাসায় বদলী করায় সিলেট মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং এলাকাবাসী আল্লামার বদলী ঠেকাতে মাঠে নেমে যায় এবং সিলেটের প্রভাবশালী মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে বদলী ঠেকায়। কত বড় জনপ্রিয় শিক্ষক হলে এ ভালবাসা অর্জন করা সম্ভব। অথচ সরকারী কলেজ-মাদরাসায় কত শিক্ষক আসে যায়, কার খবর কে রাখে, কেউ কারো খবর রাখে না, বাইরের কেউ চেনে না। তিনি এতই সাহসী আলিম ছিলেন সিলেটের ছোট-বড়, এমপি,মন্ত্রী কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলতেন না। সত্য কথা অপকটে সাহসিকতার সাথে বলে ফেলতেন। বিশেষ করে সিলেটে মাওলানার বিশাল প্রভাব ছিল। সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা হতে মাওলানা বিদায় নিয়ে আসার পর হতে সিলেট আলিয়ার লেখাপড়াও মনেহয় চট্টগ্রামে চলে এসেছে। মাওলানার সময়ের সেই ঐতিহ্য সিলেট আলিয়ায় আর নেই। তিনি বিভিন্ন ইসলাম বিষয়ক সংকট নিরসনকল্পে, মাদরাসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে, শিক্ষণীয় বিষয় অর্জন, বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ, তাঁদের সময়কার ও বর্তমানের পরিস্থিতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে, দ্বীন প্রচারের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানসমূহ ভ্রমণ করেছেন। তিনি ‘ইলমুল ফুরুআতে একজন পারদর্শী ‘আলিম এবং অসাধারণ মেধাবীর অধিকারী ছিলেন। তিনি আহলুস্সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের পূর্ণ অনুসারী। তিনি মাযহাবের ইমাম চতুষ্টয়কে সমানভাবে আহলে হক হিসেবে মর্যাদা প্রদানের নীতিতে বিশ্বাসী। ইসলাম পরিপূর্ণ একটি জীবন-বিধান। ইসলামে রয়েছে যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব। এতে আছে আদর্শ ব্যক্তিনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, যেখানে অন্য সবাই ব্যর্থ। একথাটি বিভিন্ন যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিতেন। মাওলানা  বলতেন, শুধু আসর জমানোর জন্য অন্যের দোষত্রুটি বর্ণনা ও অন্যের সমালোচনায় কোন কল্যাণ নেই। এগুলো বাদ দিয়ে নিজের চিন্তা করো, নিজেকে সংশোধন করো। আর আসলে সমাজ সংস্কারের পদ্ধতি এটাই। স্থান-কাল-পাত্রের উপযোগিতা অনুধাবন, অকৃত্রিম ও ইখলাসপূর্ণ বিনয়ী উপস্থাপনা, প্রতিটি সমস্যার যথাযথ সমাধান, তুলনামূলক সহজ ও গ্রহণযোগ্য সমাধানই মাওলানার বর্ণনার বৈশিষ্ট্য। তিনি ছিলেন নিলোর্ভ। টাকা পয়সার তিনি কোন তোয়াক্কা করতেন না। তিনি বেতনের টাকা দিয়ে অনেক অসহায় ও ইয়াতীম ছাত্রদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতেন। যা আধুনিক সময়ে কল্পনা করা যায় না। তিনি মনে করেন রাজনীতি ও ইসলাম এক ও অভিন্ন। রাজনীতি ইসলাম থেকে আলাদা নয় বরং ইসলামের অন্তর্ভুক্ত। তাঁর মতে, আল্লাহ তা’আলা এক একজনকে এক এক বিষয়ে খিদমাত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। যেমন কাউকে রাজনীতি, কাউকে চিকিৎসা সেবায়, কাউকে শিক্ষকতা আবার কাউকে তাবলীগে দ্বীনের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। মাওলানার সাথে সকল মতাবলম্বী এবং সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। জ্ঞানের ক্ষেত্রে মাওলানা সঠিক বিষয়টি প্রকাশ করেতেন। তিনি প্রতিটি ‘আলিমগণকে সম্মান করতেন এবং তাদেঁর যুক্তিপূর্ণ কথাকে মূল্যায়ন করতেন। মানুষের প্রতি ভালবাসা (মুরব্বীদের সম্মান ও ছোটদেরকে  স্নেহ  করতেন। নবী করিম (সা.) এর সুন্নাহ অনুযায়ী হুবহু ‘আমল করেন)  প্রদশর্নের ক্ষেত্রে তিনি সব সময় মধ্যপন্থা অবলম্বন করেন। যাকে যতটুকু সম্মান করার তিনি তাকে ততটুকু সম্মান করতেন এবং যাকে স্নেহ করা প্রয়োজন তাকে স্নেহ করতেন। লেনদেনের ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন। লেনদেনের স্বচ্ছতার প্রতি তিনি অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করে চলেছেন। সিলেট আলীয়ায় জীবনের সিংহভাগ সময় অতিবাহিত করা সত্বেও মাদরাসা কিংবা ভিন্ন কেউ বলতে পারে নাই। মাওলানার সাথে আর্থিক লেদনদেনে অসচ্ছতা রয়েছে। বিনয় ও নম্রতা তাঁর প্রধান স্বভাব। মানুষের হকসমূহ যথাযথভাবে আদায়, বন্ধু কিংবা শত্রুর সাথে তাঁর ব্যবহার, বিরোধিতা ও সহযোগিতার সীমারেখা, মুসলমানদের সামগ্রিক বিষয়ে তাঁর সংশ্লিষ্টতার কর্মপদ্ধতি, বিনীত ও কঠিন আচরণ, বিভিন্ন দায়িত্ব ও কর্তব্যের মাঝে সমতা বিধানে এযুগে মাওলানার মত লোকের বিরল। তিনি মানুষের স্বভাব, রুচি ও প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রেখে কাজ করতেন। সময়ানুবর্তিতা ও নিয়মানুবর্তিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের তিনি সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করতেন। তিনি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক এবং যুগসচেতন ‘আলিমেদ্বীন। যুগের চাহিদার আলোকে উপস্থিত সঠিক সিদ্বান্ত নিতে ও সমাধান দিতে ছিলেন বাকপটু। সারা বাংলাদেশে তাঁর হাজার হাজার ছাত্র বিভিন্ন খিদমাতে নিয়োজিত রয়েছেন। এমনকি বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর নানা প্রান্তে মাওলানার অসংখ্য ছাত্র রয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারী বড় বড় পদে মাওলানার অসংখ্য ছাত্র রয়েছে। তিনি ছিলেন উদার হৃদয়ের অধিকারী। ‘উলামায়ে কিরামদের মধ্যে ঐক্যের সুদৃঢ় সেতুবন্ধন রচনাই একমাত্র মাওলানার কাম্য ছিল। কথিত আছে যে, তোমাদের মাঝে কোন মেহমান আসলে তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলুন, তাদেরকে সম্মান করুন, তা মাওলানার মাঝে বিদ্যমান ছিল। তিনি (মাওলানা) নবী করিম (সা.)-এর হাদীসকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করতেন। আর তা হলো; নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন,  ‘যে আল্লাহ তা’য়ালা এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার উচিত মেহমানদের সম্মান ও সমাদর করা।’  রাতের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কুরআন তেলাওয়াত তাফসীর, হাদীস অধ্যয়ন এবং বিভিন্ন কিতাবাদী দিন ও  রাতের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অধ্যয়ন করতেন। তিনি কঠিন বিপদের মুহূর্তেও ধৈর্য্যহারা না হয়ে বরং সকলের সাথে পরামর্শ করে তার সমাধান করে নিতেন। তবে তিনি মনে করতেন কুরআনের বাণী “নিশ্চয় আল্লাহ তা’য়ালা  তিনি সাহায্যে বিপদের মোকাবিলা করতে সক্ষম। যেমন আল্লাহর বাণী “ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” এ  বাণী পালন করে চলার চেষ্টা করেছেন। নিম্মোক্ত আয়াতটিকেও জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে ও দু:খে সুখে স্মরণ করে থাকেন। আর তা হলো, “ কল্যণকর যা কিছু এসে থাকে, তা আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ হতে আর অকল্যাণকর যা কিছু এসে থাকে, তা নিজেদেরই কৃতকর্মেরই ফল।”    তাই এব্যাপারে কোন দুঃখ করে লাভ নেই। আল্লাহপাকের শুকরিয়া আদায় স্বরূপ বার বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ‘সুবহানাল্লাহ’ ‘আল্লাহু আকবর’ প্রকাশ করে থাকেন এবং অকল্যাণকর বা মন্দ প্রাপ্তির জন্য আল্লাহ তা’য়ালার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা স্বরূপ ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ প্রকাশ করে থাকেন।

উল্লেখ্য যে, মাওলানার জানাযায় অংশপ্রহণ করা আমার সৌভাগ্য হয়েছিল। জানাযায় প্রচুর লোক হয়েছিল। যার সংখ্যাধিক্য ছিল দেশের নামকরা ‘আলিমগণ। সমগ্র বাংলাদেশে যে বিশিষ্ট কয়েকজন ‘আলিমে দ্বীন কুরআন ও হাদীসের সঠিক পথ নির্দেশনায় পথহারা মানুষকে আলোকদীপ্ত সোনার মানুষ গড়ার জন্যে নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছিলেন এবং নিজেকে মানব সেবায় উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে আল্লামা ফখরুদ্দীন ছিলেন অন্যতম। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এক আদর্শ মানুষ। শিক্ষকতায়-প্রশাসনে, জ্ঞান সাধনায়, সমাজ সেবায়, মানব সেবায়, মেহমানদারীতে, সমাজ সংস্কারে, ইবাদত-বন্দেগীতে, পাঠদানে, লিখনীতে, গবেষণায়, কুরআন-হাদীস ও ফিকহ চর্চায়, শিক্ষামূলক রসালো ইসলামী কাহিনী বর্ণনা এবং যুক্তিতর্কে তিনি ছিলেন ঈর্ষনীয়। তিনি ছিলেন ‘আশিকে রাসুল, আল্লাহর ওলী এবং ধর্ম প্রচারক। তিনি নিষ্ঠাবান, পরহেজগার ব্যক্তি, জ্ঞান বিতরণ, আত্মীয়তার  বন্ধন রক্ষায়, দ্বীনের দাওয়াত ও ইসলামের আলো সম্প্রসারণে নিরলস কাজ করেছেন। বস্তুত: বিশুদ্ধ তা’লীম-তারবিয়্যাত, কঠোর অধ্যবসায়, পর্যাপ্ত মুজাহাদা, নির্জনে শেষ রাত্রে আল্লাহর জন্য কান্নাকাটি করা, ইখলাছ ও লিলল্লাহিয়াত ও মানব সেবায় একজন জনদরদীর তালিকায় তিনি স্থান লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন।

এ মহান জ্ঞান সাধককে আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন। আমীন।



চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবেক ডীন, ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।



শেয়ার করুন

লেখকঃ

পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট