লজ্জাবদ্ধতা
হাফিজুর রহমান
লজ্জা দিও না আমাকে
নিচু মাথা নুইয়ে পড়বে, অনলে পোড়া মোমের মতো!
লাজুক আমার এই মস্তক, দাঁড়াতে পারে না স্থির হয়ে
দেখতে পারে না উঁচু মস্তকে ভূপৃষ্ঠ, সবুজ পৃথিবীর!
কারণ, আমার লজ্জিত মাথার মেরুদ- নেই।
কষ্ট দিও না আমাকে লজ্জা দিয়ে
কষ্ট রাখার জায়গা নেই আমার, কষ্টের গুদামঘরে!
কষ্ট নিতে আসে না কেউ, দিয়ে যায় সকলে
তবে, কী করে করি সে কারবার?
লজ্জা নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই, আমি ভাসছি -
লজ্জাবদ্ধতায় আটকে গিয়ে, পারি না নির্লজ্জ হতে।
সাম্যবাদ
মুহাম্মদ ইয়াকুব
পুঁজিবাদী জুয়ার টেবিলে
কেউ জীর্ণশীর্ণ, কেউ পাল্লা দেয় ঐরাবতে
ব্যবধান; আকাশ সমান
কী পেটে, কী মাথায়, কী শরাবের পাত্রে
এসো, মানুষের বিবেকে রোপণ করি সম্মানের চারা
সৌন্দর্য ভালোবাসি বলে
বাগানের উঁচু-নিচু এলোমেলো গাছ কেটে
ছেঁটে সমান করি সব মাথা
পুঁজির দেবতা ভেঙে সাজাই সর্বহারা দেহ।
কুয়াশা বেচা হয় রোদের হাটে
জহুরুল ইসলাম
আঁধার কেটে গেলো বৃষ্টির সাথে,
মেঘ কাটেনি।
কু-ুলি পাকিয়ে ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
সোনালিরোদের মুখে।
বেড়াভাঙ্গা রোদ বেরিয়ে আসে
চঞ্চল কিশোরীর মতো।
বাঁশ পাতার আড়ালে ঝলমল করে।
চালতার মরা ডালে একটা দোয়েল এসে শিস দেয়।
এখন কুয়াশা বেচা হয় রোদের হাটে।
কুসুমবাগে প্রজাপতি নাচে।
মধ্যরাতের পদ্ম
রোমানুর রোমান
মধ্যরাতের পদ্মপুকুর ঘুম দেবেনা প্রেম দাও!
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নচূড়ায় বুকের ভেতর বেল দাও।
কথা দাও, কষ্ট দাও, হস্ত দাও, স্বপ্ন দাও,
মধ্যরাতের পদ্মপুকুর প্রেম দেবেনা ঘুম দাও।
নিয়ন আলোয় একলা একা মোবাইল দেখা,
শূন্য ঘরে অকপটে নীল বেদনার গান লেখা!
দুঃখ দেখা, জল দেখা, পেটের সমতল দেখা,
মধ্যরাতে পদ্ম দেখা! এক খেয়ালে চিরঞ্জীব।
কখনো আসেনি সে
অলোক আচার্য
কখনো আসেনি সে
শ্রাবণের বৃষ্টিতে-
ভিজে থাকা এক নিঃসঙ্গ শালিক
অপেক্ষায়,
গুণছে প্রহর-
প্রহর শেষের শরতের আকাশ ভেঙে
নেমে আসা হেমন্তের সন্ধ্যায়,
নবান্নের ধান ভানা রাতে
হৃদয় ভাঙার শব্দ
শেষ প্রহরে ভেসে আসে লক্ষী প্যাঁচার ডাক।