নীড়
রজব বকশী
কেউ কাউকে ভুলে না
ভুলে থাকার নাটক মাতালের অভিনয় করে
কষ্ট ভোলার মুখোশ পরিহিত সময়ের ঢেউ
তুমুল আছড়ে পড়ে
ঘাত প্রতিঘাতে
দেখেছি রোপিত গাছ
বীজমন্ত্রের অতীত কখনো ভুলে না
বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিটি দীর্ঘশ্বাস যেন পোষা পাখি
ভারি ডানায় উড়–ক্কু মনে ফিরে আসে
হোক স্বগৃহ পিঞ্জর তবু জানে মমতার নীড়
মৌরি ফুলের দানা
সাব্বির হোসেন নাফিজ
ঘুমিয়ে পড়েছ!
জেগে ওঠো সকাল- জেগে ওঠো
বহুদূরগামী জাহাজ ভিড়েছে নবীনের তীরে
ছায়া আজ না থাক তবুও পুতেছি চারা অশথের ভীড়ে।
বসন্ত এলো বলে,
মনের ডগায় আজ মুক্তির গান
নগরীর দেয়াল ঘেঁসে বয়ে যায় হিমেল কলতান
হঠাৎ বিকেল বেলায় ঘাসের পল্লবে মিশেছে রৌদ্র স্নান।
তুমি কি দেখনি?
সন্ধ্যার আঁচলে নিবেদিত প্রাণ প্রথম জোনাকি
নক্ষত্রের আকাশ পেরিয়ে লাল সবুজের দেশে
ওরা আজ মুক্ত স্বাধীন বিজয় শাণিত আঁখি।
পুকুরের জলে,
হাঁসের পালকে জল টলমল করে
বিজয় ছিনিছে ওই লাল মেঘ জয় বাংলার বলে
মৃত্তিকা কালো মানুষ চাষা সবুজ পত্র ফলায়
ফসলের দেশে আলো শুধু আলো নৌকার মাঝি মাল্লায়।
তরুণ- নবীন- যুবতী- প্রবীণ,
লাখো মুজিব সেনা-
এক হয়েছিল পাঠশালাতে চুকিয়ে সকল দেনায়
উড়ছে নিশান বিজয় মিছিল মৌরি ফুলের দানায়।
ব্যস্তময় দিন
রাতিক হাসান রাজীব
একটা ব্যস্তময় দিন গেলো আজ
ঘন্টাচারেক স্যারের বকবক শোনা,
চায়ের কাপে বিষন্নতার চাপ,
টিউশনে সেই এক নুনতা বিস্কুট,
পাবলিক বাসে চাপাচাপি,
আর মাথাভর্তি তুমি!
সংকট
সজিবুর রহমান
হৃদয়ে ভাঙন ঘটে
অনাবৃষ্টির ফলে দীর্ঘায়িত হয় খরা
অবিরত শোকে বৃদ্ধি পায় লবণাক্ততা
দীর্ঘশ্বাস জমে জমে গ্রীনহাউজে ছেয়ে যায় আকাশ
কেবল উত্তরণের জন্য কোনো
জলবায়ু সম্মেলন হয় না!
আমাদের প্রেমের অমরত্মের গাথা
শেখ ফয়জুর রহমান
তুমিই সে-
যার হাতে আমার জাহেরি ও বাতেনি আত্মা।
আমার তৃষিত প্রাণ কোরবান হোক ইসমাইলের মতো
তোমার অবিনশ্বর প্রেমে ।
হে কৃষ্ণচোখী হরিৎ ললনা,
সেই অবিন্যস্ত রাতগুলো কি মনে পড়ে ?
যখন আমাদের বক্ষ পুড়েছিল!
আজো পুড়েই যাচ্ছে !
কি এক মধুর যন্ত্রনায় অতিবাহিত হয়
দিন আর রাত,
বিদঘুটে সব স্বপ্নেরা চেপে ধরে
আমার আনাড়ি ঘুম।
বসন্ত কবেই হারিয়েছে ঋতুর স্পর্শ!
তোমার চোখ আর ঠোঁট
আমি জান্নাতে খুঁজতে চাই
তোমার পবিত্রতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়তে চাই
আমাদের অকপট প্রেমের বেহেস্ত গড়তে চাই
যেখানে দুটি হৃদয় এক অন্তরাত্মায় বিদ্যমান।
সকল বিপত্তি আর অমূলক অতীত
আমাদের ভালোবাসার উষ্ণ চাদরে ঢেকে
তোমার অন্তঃকরণের ক্যানভাসে আঁকব
আমাদের প্রেমের অমরত্মের গাথা।
ভালবাসতে দিও কিন্তু
নাহিদ্র ইমন
এই আকাশ ছাড়িয়ে আরো ঊর্ধ্বে,
এই বাতাস ছাপিয়ে আরো তীব্রে,
তোমাকে বলতে চাই- ভালবাসি বন্ধু,
বদলা চাই না; ভালবাসতে দিও কিন্তু!!
কি খোঁজো মানুষ?
আহমদ সাইফ
বাঁশ ঝাড়ের গলা বেয়ে নেমে যায় শীতের উম,
কুফরি কালাম লিখে লিখে কি খোঁজো মানুষ?
একচক্ষু হরিণীর মতো লালসার ঝড় তুলে
অমাবস্যার রাতে বৈরাগ্য হয়ে কি খোঁজো?
ফুলের সৌরভ নয়, নয় কোন পবিত্র সুর
শরাবের গেলাসে হেলান দিয়ে কি খোঁজো?
ঘোর লাগা ভোরে কুয়াশার গায়ে হাত রেখে
স্মৃতির দরজায় কি খোঁজো মানুষ?
অসহায় চোখে কামনার সুর তুলে
অভিমানে কি খোঁজো?
ক্লান্তির ভীড়ে ফোটা ফোটা ঘামে
ক্ষুধার্ত পাখির মতো কি খোঁজো?
যুদ্ধের দামামা বাজে, ঝড় উঠে তীরে
ঘোরে বে-ঘোরে কি খোঁজো মানুষ?
তরী ডুবে যায়, ডুবে যায় শেষ চিহ্ন!
বুঝে না-বুঝে কি খোঁজো মানুষ?