গুচ্ছকবিতা
রইস মুকুল
রাতগুলো পকেটে রেখে
কয়েকটা আবছায়ার রাত
রঙ মোহে পুড়ে যেতে যেতে বিগত বছর পৌঁছোয় হাতের রেখায়
পোড়বার নিদালি নেশায়।
অনিবার্য গৃহস্থালি ব্যস্ততায় বিভোর নারীর কর্মযোগী হাত
সমস্তদিনের কাজ শেষে জ্বালে তড়িগড়ি সন্ধ্যাবাতি-
বুকেবাজে উৎসবের ঢাক ধুকবুক
বাজে ভাঙনের তালে, তখন
আদরে আঁচড়ে কাছে ধরে কষ ঝরার জঙলাফুলের বোটা, পাতা এবং পাপড়ি-
মধু মৌপোকাদের প্রিয়
কালো ভুল্লুকদেরও।
নিষিদ্ধবাসের এ গল্প
একদিন আচানক বুঝিয়ে দিলো সে
দোষ সংক্রান্ত নোটিশবোর্ডে বিশুদ্ধ ভুলে-
গল্পের স্বশব্দিত খলপুরুষ কারো অবসাদের অনুযোগ না ডিঙানোর মৌনতায়
ভয়ঙ্কর এক একাকিত্বে
দিগন্তরেখায় হাঁটছে ঘাসের দীর্ঘপথ,
একপাল বন্য শুয়রের ভয় অতিক্রম করেও বারবার তাকায় পেছনে
আবছায়ার রাতগুলো পকেটে রেখে।
পোকাগুলো থাকে নিরাপদ
পুড়ে যাবে বলেই পোকাগুলো আসে
সকাল-বিকাল আর রাত-
আমার ঘুম-নির্ঘুমের ভাজে ভাজে
ওরা এলেই আগুন জ্বেলে দিই
নরপদী-নিশং বিলে
কুড়িয়াভিটার মাঠে এবং আপন দূর্বৃত্ত মগজে ফাঁদ পেতে রাখি
পোকাদের পোড়াতে পোড়াতে নিজেই পুড়ে যেতে।
না বুঝেই নাচে ওরা
ওদের বাঁশপাতা ঠোঁট বাজে রাগ দীপক শ্রী রাগে
মাঝে মাঝে অন্যরাগেও।
সেরা সতর্কতায় থাকি চুপমেরে ফাঁদের অসৎ শিকারি
বিবর্ণ হয় বিশ্বাসের রঙ
ঢং ঢং ঘন্টা বাজিয়ে দমকল কর্মিদের গাড়ি আসে না গলির রাস্তায়
সেখানে ঘর-সংসার পোড়ে, পোড়ে গৃহিনীর গল্প
পুরুষের পোড়ে গহনা, আনমনা কিশোরীর ওড়না-
পোকাগুলো আসলে নিরাপদ দূরত্ব রেখে আসে আর যায়।
আজন্ম অসভ্য মানুষ
চোখে পথ পড়ে আছে
অথবা পথে পড়ে আছে চোখ-
এক কাকভোরের অস্পষ্ট আলোয়
হাইওয়ের নির্ঘুম রাত্রির যন্ত্রণা
উদোম ভ্যানচালকের কাঁধে চাপিয়ে এই পথেই
তোমাদের উঠোনে পৌঁছে যাবার আগে বট, বাবলা, মেহগনিদের গল্প শেষ হলো না।
অচেনা ভ্যানচালক আহ্বান করে আরো দূরে...
বরাদ্দকৃত সময় সল্প
জরুরি নেমে পড়তে হয়, সমবেত সকলে সাথে
সৌজন্য প্রকাশের দায় সেরে শর্তের যৌনাঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ার আগে
নায়েগ্রার জলে ধুয়ে নিই হাত।
প্লেটে সাজানো আপেল ধরতেই তুমি বললে- এখনই নয়
আনুষ্ঠানিকতার রয়ে গেছে কিছু বাকি,
আর আজন্ম অসভ্য আমি- পূজা কিংবা পূঁজি কিছুতেই যার বিশ্বাস নেই
তাকে নিভৃত করতে পারনি বলে
জড়িয়ে ধরে অদ্ভুত কেঁদেছিলে তুমি।
কান্নায় ভিজে বৃষ্টিতে ভিজে শেষে ফিরে আসি পথেই।