প্রেম হয়ে যায়
মাহবুব এনামী
সুনাইনার ফেসবুক ওয়ালে কবিতা পড়ে মুগ্ধ হয় কবিমানস রাজ। ২টা শব্দ ঠিক করার জন্যে সুনাইনাকে ইনবক্স করে।পরস্পর শাবিপ্রবিতে পড়ে এবং ব্যাচমিট,শুধু এটুকুই পরিচয় ছিল।ইনবক্সে চ্যাটিং হল আসর থেকে মাগরিব,ছেলেটা শুধুই বাঁকা বাঁকা উত্তর দিয়ে যাচ্ছিল।সুনাইনার আহ্বানে গোল চত্ত্বরে এল রাজ।রাজের মটকু সহপাঠীর সাথে আড্ডা দিচ্ছিল সুনাইনা।রাজ তার ২বন্ধুকে নিয়ে মটকুর ওপর পাশে বসল।লাজুক রাজ মাথা নিচু করে স্ক্রিনে তাকিয়ে এতক্ষণের চ্যাটিং কনভারসেশন গুলো দেখছে আর মৃদু হাসছে।কী বলবে,কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবে বালিকার সামনে?কিছু ভেবে না পেয়ে মনে পড়ছে 'ভয়ঙ্কর সর্দিকাশি' উপন্যাসের কয়টা লাইন,"বোকা হয় চালাক, চালাক হয় বোকা...."
এভাবে কতক্ষণ কেটে যাবার পর সুনাইনার পাশ থেকে সামির দাঁড়িয়ে সহাস্যে বলতে লাগল,"রাজ বন্ধু,ইনা(সুনাইনা থেকে নাইনা,নাইনা থেকে ইনা) তোর হাসির ওপর ক্রাশ। "এ সুবাধে মটকুর ঘোষণা,"তাহলে ত রাজের ট্রিট হবে,কী বলিস তোরা?হ্যা হ্যা ট্রিট হবে,ট্রিট হবে....।"
রাজঃ-দেখ ভাই,আমি ওসব ক্রাশ টাশ বুঝিনা,আমি যা জানি,ক্রাশ মানে কোন কিছু কড়মড় শব্দে ভেঙে যাওয়া।যেমন টঝ ইঅঘএখঅ ক্রাশ...।তোরা সব কটা পাগল,তাই তোদের ট্রিটমেন্ট দরকার।চল চটপটির দোকানে তোদের ট্রিট করাব!
তিন-চার ঘণ্টা আগেও যে মেয়েটিকে অচেনার ভান করে পাশ কাটিয়ে যেত,এখন সে মেয়েটি তার ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু।ইনা যে শুধু তার হাসির ওপর ক্রাশ নয়,তাকে ভালোবেসে ফেলেছে তাও বুঝে নিয়েছে রাজ(সারা রাতের চ্যাটিং থেকে)।
কিন্তু রাজের মানসপটে অন্য একটি ছবি আঁকা।গাউন পরা লম্বা-চওড়া,এলো চুলে,সোনালী খালি পায়ে সী বীচে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ বিভোর হয়ে থাকা মেয়েটির ছবি।যাকে দেখে কবি কবি ভাব জেগে উঠবে।হাত নেড়ে ইশারা করবে,হাই!চমকে গিয়ে হাসি মুখে মেয়েটিও বলবে,হাই!সহাস্যে বেলজ্জায় সোনালী পা বাড়াবে রাজের দিকে।পরস্পর পরিচিত হবে,বাতাসে চুলগুলো মুখে পড়বে,বার বার হাত দিয়ে সরাবে,নেইলপলিশ বিহীন নোখগুলো হবে রক্তলাল,উপরে সামুদ্রিক শামুকের মত শুভ্র......।
সাম্প্রতিক ২৬সেকেন্ডে দুনিয়া পাল্টে পৃথিবী করে ফেলা প্রিয়া প্রকাশের চোখের ইশারার মত রাজের ভাবনাকেও পাল্টে দেয় সুনাইনা।"আমি নারী প্রেম দিয়ে করব বিশ্ব জয়।প্রেম করে না,প্রেম হয়ে যায়,প্রেমে পড়ে যায়।"কথাগুলো আজ রাজের কাছে সচ্ছ সত্য।